ধর্ম অবমাননার মামলা খেলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর ও রাসেল মিয়া!
বিনোদন
আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী, জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন ও চলচ্চিত্র শিল্পী-প্রযোজক হেলেনা জাহাঙ্গীর আর চলচ্চিত্র অভিনেতা রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে। নেসার উদ্দিন বাহাদুর নামে এক ব্যক্তি আজ (৬ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালতে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মতিঝিল থানা পুলিশকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাসেল মিয়া হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তার কথিত বোন বলে পরিচয় দেয়। নিজেকে অত্যন্ত প্রতাপশালী বিখ্যাত চিত্রনায়ক বলে দাবি করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার সাড়ে ৭ টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের পাপমুক্ত ছবির একটি বক্তব্য নেসার উদ্দিনের দৃষ্টিগোচর হয়। সেখানে হেলেনা জাহাঙ্গীর বলেন, ওযু করে হলে গিয়ে ছবি দেখে বের হয়ে নামায পড়তে পারবে। তার এধরণের বক্তব্য সমস্ত মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক ও ন্যক্কারজনক। যা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। তিনি অত্যন্ত সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিতভাবে সচেতন অভিপ্রায়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
এতে আরও বলা হয়, রাসেল মিয়া গত ২১ সেপ্টেম্বর তাদের মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে থানায় গিয়ে আবারও কোরআন শরীফ ছুঁয়ে মিথ্যা বলতে দেখা যায়। এভাবে একাধিকবার কোরআন শরীফ ছুঁয়ে মিথ্যাকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালায় যা মুসলিম সমাজে কোরআন অবমাননা ও চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীর নিদর্শন। ধর্মকে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে হেলেনা জাহাঙ্গীর ইসলাম ধর্ম বিরোধী কথা বলে এবং রাসেল মিয়া পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে মিথ্যা শপথ করে সারা দেশের মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে সচেতন অভিপ্রায় নিয়ে আঘাত করে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে মুক্তি পায় ‘ভাইয়ারে’ সিনেমা। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন রকিবুল আলম রকিব। এতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাসেল মিয়া। এ সিনেমায় হেলেনা জাহাঙ্গীরও অভিনয় করেন। সেই সিনেমাটির প্রচারণার সময় সিনেমাটিকে পাপমুক্ত বলায় সে সময়েও সমালোচনা তৈরি হয়েছিল।
ভারতীয় বহুল প্রশংসিত প্রবীণ শিল্পী মনোজ মিত্র মারা গেছেন। কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার ভাই অমর মিত্র। মনোজ মিত্রের প্রয়াণে শিল্পী সমাজ ছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে ইহলীলা ত্যাগ করে পরপারে চলে গেলেন মনোজ মিত্র। গুণী এই শিল্পী কাজ করেছেন অসংখ্য সিনেমাতে। এছাড়াও তিনি একাধারে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন মঞ্চে কাজ করেও। তার লেখা নাটকও অনেক প্রশংশিত হয়েছিল।
গত সেপ্টেম্বরেও একবার গুরুতর অসুস্থ হয়েছিলেন মনোজ। তখন অবশ্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন, তবে এবার আর শেষরক্ষা হলো না। চিকিৎসাচলাকালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছিল তার হৃদকার্যে অসুবিধা হচ্ছিল। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। অবশেষে বার্ধক্যজনিত কারণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা।
৮৬ বছর বয়সী অভিনেতা মনোজ মিত্র জন্মগ্রহণ করেছিলেন এপার বাংলায়। খুলনার সাতক্ষীরার চোক্কামোক্কাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দেশভাগের পর সপরিবারে পশি্চমবঙ্গে পাড়ি জমান তারা।
তার সবচেয়ে আলোচিত কাজ হলো বাঞ্ছারামের বাগানে, সেখানে তিনি প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। এছাড়াও, মিত্র তপন সিনহা, সত্যজিৎ রায়, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, বাসু চ্যাটার্জি, তরুণ মজুমদার, শক্তি সামন্তের মতো নামকরা পরিচালকের সঙ্গে অসংখ্য কাজ করেছেন তিনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি নাটক লেখা এবং পরিচালনার জন্যও তার বেশ সুনাম ছিল। তার লেখা নাটকগুলোর মধ্যে বহুল আলোচিত নাটক হলো- বোগল ধীমান, সাজানো বাগান , চোখে আঙ্গুল দাদা , কালবিহঙ্গো , পরবাস , অলোকানন্দর পুত্র কন্যা , নরক গুলজার , অশ্বথামা , চকভাঙ্গা মধু , মেষ ও রাখশ , নয়শো ভোজ , ছায়ার প্রশাদ , দেশ্বরম , শ্বরপদ , শ্বরপদ্ম প্রভৃতি।
কলকাতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজ থেকে ২০২৫ সালের জন্য ১৮টি সিনেমা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জমকালো আয়োজনের মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতার তাজ হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছিলেন ওপার বাংলার নামী শিল্পী ও পরিচালকরা।
পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন আবির, অঙ্কুশ, শ্বাশ্বত, জিতু, অর্ণিবান, ঋত্বিক,ঋতুপর্ণা, শ্রাবন্তী, দর্শনা৷ পায়েলদের মতো প্রথমসারির তারকা। আরও ছিলেন সৃজিত মুখার্জি, শিবুপ্রসাদ, জয়দীপ মুখার্জির মতো প্রথমুসারীর নির্মাতারা।
এতসব তারকাদের ভীড়ে মধ্যমনি হয়েছিলেন ঢাকাই মেগাস্টার শাকিব খান। এসকে মুভিজের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্কের কারণে মুম্বাইয়ের 'বরবাদ' ছবির শুটিং থেকে এক রাতের জন্য কলকাতা আসেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থাপক মীর মঞ্চে শাকিবকে বাংলাদেশিদের গর্ব মেগাস্টার সম্মোধন করে ডেকে নেন।
তখন শাকিব মঞ্চে গিয়ে তার মুক্তির অপেক্ষায় থাকা 'দরদ' ছবি নিয়ে বলেন, আগামী ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্ডিয়াসহ বিশ্বের ২০টির বেশি দেশে দরদ মুক্তি পাচ্ছে। এটি অত্যন্ত চমৎকার একটি গল্পের সিনেমা। গান রিলিজ হতে দেরি হলেও আসার সাথে সাথে সবার ভালোবাসায় এক ঘন্টায় ট্রেন্ডিংয়ে এসেছে। যা আমাকে অভিভূত করেছে।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে শাকিব যৌথ প্রযোজনা নিয়েও আলাপ করেন। তিনি বলেন, যতবারই এখানে (কলকাতা) আসি, কখনো দুই বাংলাকে আলাদা মনে হয় না। আমার কাছে মনে হয়, এখানকার সবাই ওখানে গেলেও একই অনুভব করেন। দুই বাংলায় যৌথ প্রয়াসে সিনেমা নির্মাণ বরাবরই ইতিবাচক। এতে দুই ইন্ডাস্ট্রিই সমৃদ্ধ হয়।
এদিকে, সেখানকার ১৮টি সিনেমার মধ্যে শাকিবের ছবি থাকছে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে সূত্র জানাচ্ছে, প্রাথমিক আলাপ হয়েছে। আগামীতে বড় আয়োজন করে ব্লকবাস্টার শিকারী, নবাবের পর ফের জানানো হবে এসকে মুভিজের সঙ্গে শাকিবের নতুন কাজের খবর।
দেশের তরুণ নৃত্যশিল্পীদের মধ্যে প্রসিদ্ধ নাম হৃদি শেখ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও কুড়িয়েছেন সুনাম। নিয়মিত নাচভিত্তিক কনটেন্ট তৈরি করে আলাদা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন। সমসাময়িক বিষয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ
মাসিদ রণ: যেখানে দেশের অনেকেই উন্নত দেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে যেখানে রাশিয়া ছেড়ে বাংলাদেশে চলে এলেন। কোন অনুশোচনা হয় এ নিয়ে?
হৃদি শেখ: এটা ঠিক যে রাশিয়ায় আমার বেড়ে ওঠা, পড়াশুনা, বন্ধু-বান্ধব, নাচের আন্তর্জাতিক সব প্রশিক্ষণ, কর্পোরেট জব- সবটাই ছিলো। কিন্তু দেশে এসে আমার একদমই অনুশোচনা বোধ করার কোন কারণ নেই। যারা বিদেশে চলে যেতে চান তা মূলত ভালো জীবিকার জন্য। কিন্তু আমি তো আমার বাংলাদেশেই সব পাচ্ছি। আমি কি খারাপ আছি (হাহা)? তবে এটা ঠিক যে একদম বাংলাদেশে থেকে যাবো এটা শুরুতে ভাবিনি। ‘চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে’তে ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও কিন্তু আমি রাশিয়ায় আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলাম। কিন্তু কোভিডের পর থেকে দেশেই সব প্রস্তুত করে নিয়েছি।
মাসিদ রণ: সম্প্রতি আন্তর্জাতিক কনটেন্ট ক্রিয়েটর নয়েলের সঙ্গে একটি কোলাবোরেশন করেছেন যা সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ সাড়া ফেলেছে। এর পেছনের গল্পটি কেমন ছিলো?
হৃদি শেখ: আসলে দর্শক আমাকে নানা মাধ্যম থেকে চেনেন। কেউ চেনেন ‘চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে। কেউ আবার চেনেন বলিউডভিত্তিক রিয়েলিটি শো ‘ড্যান্স প্লাস’-এর মাধ্যমে। জেন জি আবার আমার দর্শক হয়েছে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম কিংবা টিকটকের মাধ্যমে। ফলে আন্তর্জাতিক যে কোন বয়সী কনটেন্ট ক্রিয়েটর বাংলাদেশে এলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন কোলাবোরেশন করার জন্য। কোন কোন ক্ষেত্রে আমিও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তেমনি নয়েলও আমার ইন্সটাগ্রাম স্টোরিগুলো আগে থেকেই দেখতো। যেহেতু সে আমার সম্পর্কে টুকটাক জানে তাই আমি তাকে মেসেজ করে বলি যে, তুমি আমার দেশে এসেছ, যদি কোন সাহায্য লাগে বলতে পারো। অল্প সময়ের মধ্যেই সে আমাকে রিপ্লাই দেয় এবং আমরা দেখা করি। এরপর কোন প্ল্যান ছাড়াই রাস্তার মধ্যে আমরা ওই ভিডিওটি করে ফেলি।
আমাকে যেহেতু বাংলাদেশের মানুষ কিছুটা হলেও চেনেন, তাই চাইলেই রাস্তায় ওভাবে নেমে পড়তে পারি না। কিন্তু নয়েলের ভিডিও’র কনসেপ্টটাই হলো একেবারে অথেনটিকভাবে সবকিছু করতে হয়। তার স্টাইলে কাজ করে ভালো লেগেছে। পরে তো সেই ভিডিও মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হয়েছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। বাই দ্য ওয়ে, নয়েল কিন্তু আমার নাচের স্কুলের বাচ্চাদের সঙ্গেও কনটেন্ট করেছে। সেটাও আপনারা তার আইডিতে দেখতে পাবেন।
মাসিদ রণ: সম্প্রতি ‘হলুদ হলুদ ড্যান্স’ গানে আপনার আরেকটি নাচের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে চিত্রনায়িকা দীঘি, কনটেন্ট ক্রিয়েটর কারিনা কায়সারের সঙ্গে দেখা গেছে আপনাকে...
হৃদি শেখ: হ্যাঁ। ওই ভিডিওটা করেছি গত শুক্রবার মুক্তি পাওয়া ‘৩৬ ২৪ ৩৬’ সিনেমার প্রমোশনের জন্য। ‘হলুদ হলুদ ড্যান্স’ কিন্তু ওই ছবিরই গান। দীঘি তো নাচতে পারে আমরা সবাই জানি, ও খুব সুইট। কিন্তু কারিনা এভাবে দ্রুত নাচের স্টেপগুলো তুলে ফেলতে পারবে আমি ভাবতেই পারিনি। খুব মজা হয়েছে কাজটি করে। তবে এই ভিডিওটি শুধু এজন্য করিনি যে আমার সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ফলোয়ার আছে বলে। বরং তারা জানে যে আমার সেই দক্ষতা আছে যা দিয়ে একটি মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করতে পারবো। আমি এমন কনটেন্ট ক্রিয়েটর না যে ঘরে বসে ফোনের ক্যামেরার ভিডিও করে ছেড়ে দিলাম! যারা করেন, তাদেরকে আমি ছোট করে দেখি না। আসলে একটা সফল ক্যারিয়ারের পেছনে সমৃদ্ধ ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হয়। নিজেকে বরাবরই ছাড়িয়ে যেতে হয়। সেজন্যই আমি এতো বড় ফ্লোর ভাড়া করে স্টুডিও বানিয়েছি। সম্পূর্ণ প্রফেশনাল সেট-আপ তৈরি করেছি। আমার একশ’র ওপরে স্টুডেন্ট রয়েছে যারা নিয়ম করে আমার কাছে নাচ শিখতে আসছে।
মাসিদ রণ: নানা মাধ্যমে কাজ করে সফলতা পেলেও ফিল্মের কোরিওগ্রাফিতে আপনাকে দেখা যায় নি কেন?
হৃদি শেখ: আসলে আমাদের দেশে ফিল্মের গানের বাজেট খুব কম থাকে। যে দু-একটা ছবিতে ভালো বাজেট থাকে সেখানে তারা বিদেশি কোরিওগ্রাফারকে নিয়ে নেয়। বাজেট না থাকলে আমি যতো ভালো কোরিওগ্রাফি করি না কেন, সেটা ঠিকঠাক পর্দায় ফুটে উঠবে না। তাই অল্প বাজেটের ছবিতে কাজ করে আমার এতোদিনের অর্জিত সুনাম নষ্ট করতে চাই না।
এই প্রশ্নের আরও একটা উত্তর আমার কাছে আছে। সেটি হলো, ২০২৪-এ এসে আমি কোন মাপের কোরিওগ্রাফার কিংবা আমার দক্ষতা প্রমাণের জন্য শুধুমাত্র সিনেমার গান করাটাই একমাত্র উপায় নয়। আমি নিয়মিত ভালো কনটেন্ট তৈরী করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করছি। সেটি দেখেই কিন্তু কমেন্ট বক্সে অনেকেই আমাকে সিনেমার গানে কোরিওগ্রাফি কেন করছি না সেটা জানতে চান। আমার সেই দক্ষতা না থাকলে তারা এমন প্রত্যাশা করতেন না আমাকে নিয়ে।
এছাড়া আমি কিছু মিউজিক ভিডিওর কাজ করেছি যেটা চলচ্চিত্রের অনেক গানের চেয়ে বড় বাজেটের। ফলে এখন মেধা প্রকাশের অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে। সবাই অবশ্য সেই প্ল্যাটফর্মগুলো ক্রিয়েট করতে পারেন না। আমাদের দেশে অনেক মেধাবী নাচের ছেলে মেয়ে আছে, যারা হৃদি শেখের জায়গায় অন্তত আসতে চায়। তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। নয়তো তাদের মেধা মানুষের কাছে পৌঁছবে কিভাবে?
মাসিদ রণ: বলিউডের ‘ভুলভুলাইয়া ৩’ ছবির ‘মেরে ঢোলনা ৩.o’ গানের কোরিওগ্রাফি ভালো লাগেনি বলে ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন...
হৃদি শেখ: হ্যাঁ। বলিউডের কাজের মান খুবই উন্নত, তাদের কাজ দেখে আমরা অনুপ্রাণীত হই। কিন্তু সব সময় যে তাদের কাজ ভালো হবে না নয়। সেখানেও আমাদের দেশের মতো সিন্ডিকেট রয়েছে। একটা চক্র সব বড় কাজগুলো বাগিয়ে নেয়। নতুন ট্যালেন্টকে বিকশিত হতে দিতে চায় না। উদাহরণ দিয়ে বলতে পারি, নোরা ফাতেহির যে বিখ্যাত গানগুলো আপনারা দেখেনে, তার কোরওগ্রাফার হিসেবে যাদের নাম প্রকাশিত হয় আসলে কিন্তু তারা কোরিওগ্রাফিগুলো করেন না। যারা আসলেই কাজগুলো করেছেন তারা আমার পরিচিত, তারাই আমাকে কথাগুলো বলেছেন।
ওহ প্রসঙ্গ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম, সেটা বলতে চাই সেটা হলো- ‘মেরে ঢোলনা ৩.o’ গানটি শ্রেয়া ঘোষাল কি দারুণ গেয়েছেন, কম্পোজিশনও দুর্দান্ত। কিন্তু কোরিওগ্রাফি আপ টু দ্য মার্ক হয়নি। যা হয়েছে অনেকেই হয়তো পছন্দ করছেন, কিন্তু এই গানটির যেহেতু আলাদা লেগেসি রয়েছে সেই অনুযায়ি আরও মারাত্মক কিছু আশা করেছিলাম। তাছাড়া যে দুই জন অভিনেত্রী পারফর্ম করেছেন তাদের মধ্যে একজনের পারফরমেন্সও আশাব্যঞ্জক নয়। আশা করি পাঠক বুঝতে পারছেন আমি কার কথা বলছি।
মাসিদ রণ: অনেক তারকার সঙ্গে আপনি কোলাবোরেশন করেছেন। কার সঙ্গে কাজ করে সবচেয়ে ভালো লেগেছে?
হৃদি শেখ: সিয়াম আহমেদ আমার ভালো বন্ধু। তার সঙ্গে বেশ আগে ‘বন্ধুরে’ মিউজিক ভিডিওটি করেছিলাম। এখনো সেই কাজটির কথা অনেকেই বলেন। সিয়ামের ভালো কাজ করার ব্যাপারে ডেডিকেশন আমাকে মুগ্ধ করেছে। এ ছাড়া যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তাদের মধ্যে বিদ্যা সিনহা মিমকে খুব ভালো লেগেছে। তিনি দেশের প্রথম সারির তারকা, কিন্তু কাজের সময় খুব আন্তরিক। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে আামদের, তাই কাজ করতে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে।
মাসিদ রণ: এমন স্বপ্ন আছে যা পূরণ হয়নি?
হৃদি শেখ: ড্যান্স প্লাসে আমি শাহরুখ খান, হৃত্বিক রোশানের সঙ্গেও স্টেজ শেয়ার করেছি। এখন স্বপ্ন দেখি শাকিরার সঙ্গে কাজ করার। কাজ করতে না পারি, অন্তত দেখা হলে বলতে চাই, আমি আপনার নাচের অনেক বড় ভক্ত। আর অর্জনের কথা বলতে গেলে, একজন বাংলাদেশি হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার স্বপ্ন দেখি। আরেকটি স্বপ্ন অবশ্য কখনোই পূরণ হবে না, সেটি হলো মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গে পারফর্ম করা!
ভারতের আলোচিত রিয়েলিটি শো ‘ইন্ডিয়াস বেস্ট ড্যান্সার’-এর চতুর্থ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হলেন স্টিভ জিরওয়া। পুরস্কার পাওয়ার পর হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শৈশবের নানা সংগ্রাম নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশনে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানটি বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন কারিশমা কাপুর, গীতা কাপুর ও ট্যারেন্স লুইস। অন্য চূড়ান্ত প্রতিযোগীরা হলেন হার্ষ কেশরী, নেক্সশন, নেপো, আকাঙ্ক্ষা মিশ্র ওরফে আকিনা ও আদিত্য মাল্য।
ট্রফির পাশাপাশি প্রাইজমানি হিসেবে ১৫ লাখ রুপি ও একটি গাড়ি জিতে নিয়েছেন স্টিভ। তার কোরিওগ্রাফার রক্তিম ঠাকুরিয়া পেয়েছেন ৫ লাখ রুপির চেক।
জয়ের পর স্টিভ বলেন, ‘যখন আমি আমার হাতে ট্রফি তুলে নেওয়ার কথা ভাবি, গায়ে কাঁটা দেয়। এটা আমার কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার ফল। কঠোর পরিশ্রম শেষ পর্যন্ত ফল দেয়। আর কথাতেই তো আছে, ধৈর্যের ফল মিষ্টি। আমি মনে করি যে এটি বড় হওয়ার সময় আমাকে যেসব সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল, তার ফল। আমি আমার কঠোর পরিশ্রমকে বৃথা যেতে দিইনি।’
ট্রফি হাতে নেওয়ার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে স্টিভ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এ মুহূর্তটার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। এই জয়ের আনন্দ হয়তো ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’ তরুণ এই নৃত্যশিল্পী জানান, তিনি এই পুরস্কার মা ও দাদির হাতে তুলে দেবেন।
স্টিভ আরও জানান যে দাদি ও মা-ই তাকে নিজের পায়ে হাঁটতে সাহায্য করেছেন। তবে শৈশবে কেন হাঁটতে পারতেন না সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি। স্টিভের ভাষ্যে, ‘যে ছেলে নিজের পায়ে চলতে পারত না, সে ফুটওয়ার্কের জন্য বিখ্যাত হয়ে গেছে। ছোটবেলায় আমি হাঁটতে পারতাম না, নিজেও মাঝেমধ্যে বিশ্বাস করতে পারি না। আমার দাদি আর মা আমাকে সব বাধা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন। তাদের শক্তি ও উৎসর্গের কারণেই আমি আজ হাঁটতে ও নাচতে পারি।’