বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের আগের কমিটিকে বিলুপ্ত করা হয় মাসখানেক আগে। গতকাল রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করা হয় নতুন কমিটি। তবে নতুন কমিটিতে থাকা বেশিরভাগ নামই পছন্দ হয়নি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে নির্মাতা আশফাক নিপুনকে নিয়ে। তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে সেন্সর বোর্ডের নবগঠিত কমিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন আশফাক নিপুন।
এক মাসের বেশি সময় ধরে স্থবির থাকার পর গতকাল পুনর্গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। গতকাল এক প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন বোর্ডের সদস্যদের নাম ঘোষণা করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। ১৫ সদস্যের এই কমিটিতে নাম ছিল নির্মাতা আশফাক নিপুনের। তিনি বরাবরই সোচ্চার ছিলেন সেন্সর বোর্ড বাতিল করে সেন্সর সার্টিফিকেশন চালু করার দাবিতে। অথচ নবগঠিত সেন্সর বোর্ডের কমিটিতে তার নাম থাকায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। অনেককেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিষয়টির বিরোধিতা করতে দেখা গেছে।
অবশেষে গতকাল মধ্যরাতে ফেসবুক পোস্টে নিপুন জানান, সেন্সর বোর্ডের অফিশিয়াল সদস্যপদ ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। ফেসবুকে নিপুন লেখেন, ‘সেন্সর বোর্ড আগামী কয়েক মাসের ভেতর সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ডে রূপান্তরিত হবে বলে আমাকে জানিয়েছেন তথ্য মন্ত্রণালয়। আমি আজীবন চলচ্চিত্রে বা শিল্পে সেন্সর বোর্ড প্রথার বিরুদ্ধে। আমি খুবই সম্মানিত বোধ করেছি, মন্ত্রণালয় আমাকে বোর্ডের সদস্য হওয়ার যোগ্য মনে করেছিলেন। কিন্তু একটা মিস কমিউনিকেশন হয়ে গেছে। আমি এই বোর্ডের অফিশিয়াল সদস্য পদ গ্রহণ করিনি। বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দিয়েছি। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে এই ব্যাপারে আমার কথা হয়ে গেছে।’
সেন্সর বোর্ড বাতিলের পক্ষে নিজের অবস্থান জানিয়ে নিপুন লেখেন, ‘সেন্সর বোর্ডের বাতিলের পক্ষে আমার অবস্থান সর্বদা চলমান থাকবে। নবগঠিত সেন্সর বোর্ডের বাকি সদস্যরা যারা আমার কলিগ, তাদের সেন্সর বোর্ড বাতিল করে দ্রুত সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ড বা গ্রেডিং সিস্টেম চালুর পক্ষে আমার শুভকামনা রইল।’ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নবগঠিত বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের ১৫ সদস্যের বোর্ডেও নাম আছে আশফাক নিপুনের। তবে সেটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
১৫ সদস্যের সেন্সর বোর্ডে আশফাক নিপুন ছাড়াও আছেন ড. জাকির হোসেন রাজু, খিজির হায়াত খান, তাসমিয়া আফরিন মৌ, নির্মাতা ও প্রযোজক রফিকুল আনোয়ার রাসেল, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। আরও আছেন আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি। চেয়ারম্যান করা হয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে, আর সদস্যসচিব হিসেবে আছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান।