গত মাসেই মডেলিং নিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সফর শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের মডেল ইমাম মাহমুদ রিফাত। এবার এই তরুণ মডেল দিলেন আরও বড় সুখবর।
‘মিস্টার ইউনিভার্স ২০২৪’-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন তিনি। এবার ‘মিস্টার ইউনিভার্স’-এর আসর বসছে ভারতের লক্ষ্ণৌতে। চলতি আগস্টের ২০ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা চলবে বিশ্বের ২০টি দেশের ২০ জন প্রতিযোগীকে নিয়ে। তারমধ্যে রিফাত একজন।
বিজ্ঞাপন
এই মডেল বলেন, ‘যে কোন আর্টিস্টই চায় তার দেশকে বিশ্বের দরবারে সম্মানের সঙ্গে তুলে ধরতে। সেই সুযোগটি যদি মিস্টার ইউনিভার্সের মতো মঞ্চে হয় তাহলে আনন্দ এবং গর্ব দ্বিগুণ হয়ে যায়।’
রিফাত আরও বলেন, ‘আমি একেবারেই নিজের উদ্যোগে মিস্টার ইউনিভার্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন করি। তারা আমার কাছে নানা ধরনের তথ্য উপাত্ত চেয়ে নেয়। প্রথমে তারা ছবি এবং পোর্টফোলিওর ওপর ভিত্তি করে বাছাই করে টপ ২০ নির্বাচন করেছেন। আমি টপ ২০-এর একজন। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে মিস্টার ইউনিভার্সে, তাও আমার হাত ধরে। তাই আমি চেষ্টা করবো সর্বোচ্চ পরিশ্রম দিয়ে আমার বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে।’
বিজ্ঞাপন
ট্রান্সফর্মেশন নাইট’স আয়োজিত ‘মিস্টার ইউনিভার্স ২০২৪’-এ বাংলাদেশের রিফাত প্রতিযোগীতা করবেন আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, নেপাল, ভিয়েতনাম, হংকং, আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, কাতার, সিরিয়া, সাউথ আফ্রিকা ও নাইজেরিয়ার প্রতিনিধির সঙ্গে।
প্রসঙ্গত, রিফাত গত মাসে অনুষ্ঠিত ভারতের সম্মানজনক ‘মুম্বাই ফ্যাশন উইক’ এবং ‘ল্যাকমে একাডেমি সল্ট লেক প্রেজেন্টস ফ্যাশনোভা সিজন ৫’-এ অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়া সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সাথেও একাধিক কাজ করার দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছেন।
রিফাতের মিডিয়া যাত্রা শুরু হয় ‘মিস্টার অ্যান্ড মিস ফটোজেনিক ২০২২’-এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে।
অভিনেত্রীদের সঙ্গে হওয়া যৌন হেনস্তা দমনে ‘সুরক্ষা কমিটি’ খুলেছে টলি ফেডারেশন। এ কমিটিতে অভিযোগ জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সুপরিচিত চলচ্চিত্র পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সেখানকার পরিচালকদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’।
বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, ই-মেইল মারফত অরিন্দম শীলকে এই বরখাস্তের নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মেইলে জানানো হয়েছে, পরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছে। যার প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে এবং তা অত্যন্ত উদ্বেগের। এমন অভিযোগ সংগঠনের পক্ষে ক্ষতিকর। সে কারণেই ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিচালককে সাসপেন্ড করা হচ্ছে, অথবা যত দিন না পর্যন্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে, তত দিন এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
দিনকয়েক আগে পশ্চিমবঙ্গের এক অভিনেত্রী (পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে) অভিযুক্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ এনে নারী কমিশনের দ্বারস্থ হন। এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে ‘ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’র সভাপতি সুব্রত সেন বলেছেন, ‘‘নারী কমিশনের থেকে অভিযোগ আসার পরই আমরা বিষয়টি নিয়ে সবাই আলোচনায় বসি। সবার সম্মতিতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’ সেই অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিচালকের বিরুদ্ধে এই বিশেষ নির্দেশ কার্যকর হবে। যে দিন তিনি ‘নির্দোষ’ হিসেবে লিখিত বার্তা পাবেন, সে দিন থেকে আবার আগের মতো কাজ শুরু করতে পারবেন, জানিয়েছেন সুব্রত। অরিন্দমের নাম উল্লেখ না করে এ-ও জানিয়েছেন, ‘এরপরও পরিচালক যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে চান বা তার সঙ্গে যদি কোনো প্রযোজক কাজ করেন, সে ক্ষেত্রে কোনো বক্তব্য থাকবে না সমিতির।’’
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে কথা বলেছেন অরিন্দম শীল। দৃশ্য বোঝাতে গিয়ে অভিনেত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করার অভিযোগে তিনি দাবি করেন, বিষয়টি ‘একটি খুনির সন্ধানে’ সিনেমার সেটে হয়েছে। অভিনেতা সাহেব ও অভিযোগকারী অভিনেত্রীকে তিনি একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তা একটি ‘চিট শট’ ছিল। তার ভাষায়, সেই সময় অনিচ্ছাকৃতভাবেই একটা ঘটনা ঘটে। তখনো এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি। সেই সময়ে চিত্রগ্রাহক থেকে শুরু করে সেটের বাকি সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন।
অরিন্দম আরও জানান, ‘তিনি শুক্রবার নারী কমিশনে গিয়ে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, তার অনিচ্ছাকৃত কোনো আচরণের জন্য অভিনেত্রী যদি অপমানিত হয়ে থাকেন, তার জন্য তিনি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আমার সহকারী পরিচালক ও ক্যামেরাম্যান এবং সুরিন্দর ফিল্মসের সদস্যরা সাক্ষী হিসেবে আছেন। কিন্তু ডিরেক্টরস গিল্ড আমার সঙ্গে কথা না বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এই পরিচালক আরও জানান, অনিচ্ছাকৃতভাবেই যে ঘটনা ঘটেছে, তা তিনি লিখিতভাবেই দিতে যাচ্ছিলেন। তাতে অভিনেত্রী রাজি ছিলেন না। তখন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুরোধে তিনি অনিচ্ছাকৃত শব্দটি বাদ দেন। সেটিই এখন তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিচালক জানান, বিষয়টি আইনজীবীদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকজন শিল্পী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ফেসবুকে নন্দিত অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি লিখেছেন, ‘পাপের ঘড়া উল্টায়। ভেবেছিলাম বোধ হয় নিজের জীবনে দেখে যেতে পারব না। ভগবান, তুমি এই কথাটুকু যে রেখেছ, এ-ই অনেক। ২০ বছর সময় লাগল, সে লাগুক। আমাদের জগতের সমস্ত মেয়েদের বলছি, সময় এসেছে সম্মান দখল করার। আর ভয় নয়। গলা তুলে, আঙুল তুলে চিৎকার করে নোংরা লোকগুলোর মুখোশ টেনে ছিঁড়তে হবে। সবাই বেরিয়ে এসো। হাত ধরে একসঙ্গে সোচ্চার হই। এটা আমাদের মৌলিক অধিকার।’
স্বস্তিকার স্ট্যাটাস দেখে বোঝা যাচ্ছে, এই পরিচালকের সঙ্গে তারও তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। যদিও সেই ঘটনার কথা কোনদিন উল্লেখ করেনি এই অভিনেত্রী।
প্রসঙ্গত, অরিন্দম শীল একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা ও প্রযোজক। তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো ‘আবর্ত’, ‘এবার শবর’, ‘হর হর ব্যোমকেশ’, ‘ঈগলের চোখ’ ও ‘মিতিন মাসী’।
গত শনিবার প্রথম সন্তানের মা হয়েছেন বলিউড সুপারস্টার দীপিকা পাড়ুকোন। কন্যা সন্তান এসেছে রনবীর সিং-দীপিকা পাড়ুকোনের সংসারে। তবে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই দীপিকা জানিয়েছেন, তিনি অভিনয় থেকে লম্বা বিরতি নেবেন।
তিনি কারিনা বা আলিয়ার মতো মা হওয়ার পর খুব দ্রুত অভিনয়ে ফিরবেন না। তিনি বরং আনুশকা শর্মার মতো লম্বা বিরতি নেবেন। সন্তানকে পুরোটা সময় দেবেন।
আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রণবীর জানিয়েছিলেন, তিনি কন্যাসন্তান চান। ‘আমি চাই মেয়ে হোক, দীপিকার মতো কন্যা পেলে জীবন পূর্ণ হয়,’ বলেছিলেন তিনি। অন্যদিকে ভোগ সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দীপিকাও বলেছিলেন, তিনি বাচ্চাকাচ্চা ভালোবাসেন। এমনকি সন্তানের জন্য অভিনয় ছাড়তেও তার আপত্তি নেই।
বিয়ের ছয় বছরের মাথায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম সন্তান আসার খবর জানিয়েছিলেন রণবীর-দীপিকা। এরপর রোহিত শেঠির কপ ইউনিভার্সের নতুন কিস্তি ‘সিংহাম অ্যাগেইন’-এর শুটিংয়ে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অ্যাকশন দৃশ্যে দেখা যায় অভিনেত্রীকে, তখন অবশ্য সেভাবে তার বেবিবাম্প বোঝা যায়নি। দীপিকার বেবিবাম্প প্রকাশ্যে আসে ভারতীয় লোকসভা নির্বাচনের ভোটের দিন। এরপর গত জুন মাসে কল্কি ২৮৯৮ এডির প্রচারে কথা বলেন অভিনেত্রী।
জানান, ছবিটিতে তিনি অভিনয় করেছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীর চরিত্রে। শুটিং যখন শুরু করেন, তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন না কিন্তু ছবিটি মুক্তির সময় পর্দার মতো তিনিও প্রথম সন্তান জন্ম দেওয়ার অপেক্ষায়!
২০১৩ সালে ‘গোলিও কি রাসলীলা: রামলীলা’ ছবির শুটিংয়ের সময় শুরু হয় দীপিকা ও রণবীরের প্রেম। পরে ‘বাজিরাও মস্তানি’, ‘পদ্মাবত’, ‘৮৩’ ইত্যাদি ছবিতে তাদের জুটি হিসেবে দেখা গেছে। ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর ইতালিতে বিয়ে করেন দীপিকা-রণবীর।
এক দশক আগের এই দিনে ভারতীয় উপমহাদেশের অগণিত ভক্তদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন কিংবদন্তি নজরুল সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজা বেগম। ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি।
সরাসরি কাজী নজরুল ইসলামের কাছে গান শেখার সুযোগ হয়েছিলো এই শিল্পীর। নজরুলসঙ্গীতকে জনসাধারনের মধ্যে জনপ্রিয় করার পেছনে রয়েছে তার অসামাণ্য গায়কির অনবদ্য অবদান। তাইতো মৃত্যুর ১০ বছর পরও প্রতিদিন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বেজে ওঠে তার গান। নজরুলসঙ্গীত শিল্পীদের জন্য তার গায়কী যেন পাঠ্যবই!
অথচ প্রবাদপ্রতীম এই শিল্পীর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীতে নেই কোনো আয়োজন। পারিবারিকভাবে একেবারে নীরবে পালিত হবে এ দিনটি।
ফিরোজা বেগমের পুত্র বাংলাদেশে মিউজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বাবমা) সভাপতি হামিন আহমেদ বলেন, ‘পারিবারিকভাবেই মায়ের জন্ম-মৃত্যুর দিনটি স্মরণ করা হয়। এবারও তাই হবে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর দিনটিও স্মরণ করা হয় না। গুণী মানুষদের স্মরণ করা উচিত। রাষ্ট্রেরও একটি দায় থাকে। আমার মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।’
ফিরোজা বেগমের জন্ম ১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই তৎকালীন ফরিদপুর জেলায়। তার বাবার নাম খান বাহাদুর মোহাম্মদ ইসমাইল এবং মা বেগম কওকাবুন্নেসা। শৈশবেই তার সংগীতের প্রতি অনুরাগ জন্মে।
চল্লিশের দশকে তিনি সংগীত ভূবনে পদার্পণ করেন। ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৪২ সালে গ্রামোফোন কোম্পানি এইচএমভি থেকে তার প্রথম রেকর্ড বের হয়। কিছুদিন পর কমল দাশগুপ্তের তত্ত্বাবধানে উর্দু গানের রেকর্ড হয়। এই রেকর্ড প্রকাশের মাধ্যমে কমল দাশগুপ্তের সঙ্গে ফিরোজা বেগমের ব্যক্তিগত সম্পর্কের সূত্রপাত।
১০ বছর বয়সে তিনি কাজী নজরুল ইসলামের সান্নিধ্যে আসেন এবং তার কাছ থেকে তালিম গ্রহণ করেন। নজরুলের গান নিয়ে প্রকাশিত তার প্রথম রেকর্ড বের হয় ১৯৪৯ সালে। গ্রামোফোন কোম্পানি তার কণ্ঠে নজরুলের গানের প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করে। প্রকাশিত রেকর্ডে ফিরোজা গাইলেন সর্বকালের জনপ্রিয় দুটি গান ‘দূরদ্বীপবাসিনী’ আর ‘মোমের পুতুল’। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তিনি ৩৮০টির বেশি একক সংগীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।
নজরুলগীতি ছাড়া তিনি আধুনিক গান, গজল, কাওয়ালি, ভজন, হামদ, নাতসহ বিভিন্ন ধরনের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি কলকাতায় বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে সুরকার, গায়ক ও গীতিকার কমল দাশগুপ্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। জীবদ্দশায় তার ১২টি এলপি, চারটি ইপি, ছয়টি সিডি ও ২০টিরও বেশি অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে।
শিল্পচর্চায় অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি একুশে পদক, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র পুরস্কার, সত্যজিৎ রায় পুরস্কার, নজরুল আকাদেমি পদক, চুরুলিয়া স্বর্ণপদকসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি. লিট ডিগ্রি প্রদান করে।
দেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুস্তাফা মনোয়ার রাজধানীর বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন আছেন।
এই শিল্পীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী মেরী মনোয়ার। দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, "সম্প্রতি শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে গত ৪ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন ৮৯ বছর বয়সী মুস্তাফা মনোয়ার। শনিবার বিকেলে আরও অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।”
সব্যসাচী এই শিল্পী একাধারে চারুশিল্পী, নাট্যনির্দেশক ও শিল্প গবেষক। বাংলাদেশের পাপেট শিল্পকে নতুন মাত্রা দেওয়া মুস্তাফা মনোয়ার কবি গোলাম মোস্তফার ছেলে।
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০০৪ সালে একুশে পদক পাওয়া মুস্তফা মনোয়ারের ৮৯তম জন্মদিন ছিল গত ১ সেপ্টেম্বর।
বর্ণিল কর্মজীবনে আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন খ্যাতনামা এই শিল্পী। ১৯৯০ সালে টিভি নাটকের জন্য টেনাশিনাস পদক, ১৯৯২ সালে চারুশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে শিশু শিল্পকলা কেন্দ্র কিডস কালচারাল ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম কর্তৃক কিডস সম্মাননা পদক, ২০০২ সালে চিত্রশিল্প, নাট্য নির্দেশক এবং পাপেট নির্মাণে অবদানের জন্য শিশুকেন্দ্র থেকে বিশেষ সম্মাননা লাভসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
গুণি এ চিত্রশিল্পীর জন্ম ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর যশোরের মাগুরা মহকুমার (বর্তমান জেলা) শ্রীপুরে। তিনি নাকোল গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা কবি গোলাম মোস্তফার পৈত্রিক নিবাস ছিল ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। পাঁচ বছর বয়সে মা জমিলা খাতুন মারা যান। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
নারায়ণগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে বিজ্ঞানে ভর্তি হন। সেখানে তিনি পড়াশোনা না করে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় থেকে ফাইন আর্টসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।
১৯৬৫ সালে মেরী মনোয়ারের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক ছেলে সাদাত মনোয়ার ও এক মেয়ে নন্দিনী মনোয়ার।
কর্মজীবন শুরু করেন পূর্ব পাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে। পরে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহাপরিচালক, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ও এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।
এছাড়া জনবিভাগ উন্নয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও এডুকেশনাল পাপেট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।