ভারতের শিল্পরত্ন ও সমাজ সেবক রতন টাটা স্থানীয় সময় বুধবার (৯ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে ৮৬ বছর বয়সে মুম্বাইতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এদিকে, রতন টাটা পেছনে রেখে গেছেন টাটা সন্স গ্রুপের ৩ হাজার ৮ কোটি রুপির বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য। এর মধ্যে রয়েছে- টাটা মোটরস, টাটা স্টিল, টাটা কেমিক্যালস এবং টাটা ইন্ডাস্ট্রিজসহ আরো অনেক কোম্পানি।
রতন টাটা ভারতের দুই দুটো বেসরকারি সর্বোচ্চ সম্মানজনক খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০০০ সালে তিনি ‘পদ্মভূষণ’ ও ২০০৮ সালে ‘পদ্ম বিভূষণ’ খেতাব অর্জন করেন।
বুধবার রাতে রতন টাটা মারা যাওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, তার রেখে যাওয়া ৩ হাজার ৮ কোটির রুপির ব্যবসায়িক বিশাল সাম্রাজ্যের হাল কে ধরবেন!
এর উত্তর পাওয়া যাবে রতন টাটা তার বিশাল সাম্রাজ্যের দেখভালের ভার কাকে কাকে দিয়েছিলেন, তার ওপর।
এক শতক আগে রতন টাটার প্রৌ-প্রৌপিতামহ ‘টাটা সন্স কোম্পানিটির গোড়াপত্তন করেন। এরপর ১৯৯১ সালে উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি ‘টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রতন টাটা।
তারপর থেকে ধীরে ধীরে একে বিশাল মহীরুহ হিসেবে গড়ে তোলেন। ২০১২ সালে রতন টাটা তার বিশাল সাম্রাজ্যের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে টাটা মোটরস, টাটা স্টিল, টাটা কেমিক্যালস এবং টাটা ইন্ডাস্ট্রিজের এমিরেটাস চেয়ারম্যান হন। ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর প্রয়াণের আগ পর্যন্ত তিনি এই পদেই ছিলেন।
কে ধরবেন রতন সন্সের হাল
রতন টাটা আজীবন চিরকুমার ছিলেন। যদিও তিনি কয়েকবার প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু সে সব সম্পর্ক আর পরিণতি পায়নি বিভিন্ন কারণে। ২০১৭ সালে এন চন্দ্রসেখরণকে টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান নিয়োগ দেন রতন টাটা।
নোয়েল নাভাল টাটা
রতন টাটার সৎভাই আছেন। তার নাম- নোয়েল নাভাল টাটা। পারিবারিক সূত্রে তিনিই হতে যাচ্ছেন রতন টাটা’র রেখে যাওয়া – ‘টাটা সন্স’-এর কর্ণধার। চার দশক ধরে তিনি রতন টাটার পাশাপাশি গ্রুপ অব কোম্পানির দেখভাল করেছেন।
নোয়েল টাটার সন্তানরাও রতন টাটার সহায়-সম্পদের ভাগীদার হিসেবে থেকে যাচ্ছেন। তারাও টাটা গ্রুপের অধীন বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
বর্তমান নোয়েল টাটা ট্রেন্ট, টাটা ইন্টারন্যাশনাল, ভোল্টাজ, টাটা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এর পাশাপাশি টাটা স্টিল এবং টাইটান কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।
এছাড়াও তিনি দ্য স্যার রতন টাটা ট্রাস্ট এবং দ্য স্যার দোরাবজি টাটা ট্রাস্ট-এর একজন ট্রাস্টি।
নোয়েল টাটা’র সন্তানের নাম লেহ, মায়া এবং নেভিলি। তারাও টাটা সন্সভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির দায়িত্ব পালন করছেন।
লেহ টাটা
নোয়েল টাটার সবচেয়ে বড় সন্তান মেয়ে। তার নাম- লেহ টাটা। তিনি স্পেনের মাদ্রিদ আইই বিজনেস স্কুল থেকে মার্কেটিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
২০০৬ সালে তিনি টাটা গ্রুপে যোগ দেন। এরপর তাজ হোটেলস রিসোর্টস অ্যান্ড প্যালেসের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেলস ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর পাশাপাশি তিনি দ্য ইন্ডিয়ান হোটেলস কোম্পানি লিমিটেড (আইএইচসিএল) ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও সামলাচ্ছেন।
মায়া টাটা
মায়া টাটা লেহ টাটার ছোটবোন। তিনি ‘টাটা ক্যাপিটাল’-এ একজন অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।
লেভিল টাটা
নোয়েল টাটার ছেলের নাম লেভিল টাটা (৩২)। তিনি মূলত পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত রয়েছেন। লেভিল ট্রেন্ট লিমিটেড-এর আওতাধীন হাইপার মার্কেট চেইন স্টার বাজারের নেতৃত্বে রয়েছেন। লেভিল টাটা টয়োটা কির্সলোকার গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা মানসী কির্সলোকারকে বিয়ে করেছেন।
মূল কথা, টাটা পরিবারের উত্তরাধিকারীরাই ‘টাটা সন্স’-এর পরবর্তী কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
রতন টাটা সোমবার (৭ অক্টোবর) বার্ধক্যজনিত কারণে ব্রিস ক্যান্ডি হসপিটালে ভর্তি হন। এরপর তার শারীরিক অবস্থার আরো খারাপ হলে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।
অবশেষে বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ৮৬ বছর বয়সে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতের শিল্পরত্ন রতন টাটা!
আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র বসুন্ধরা (আইসিসিবি) তে শুরু হলো তিনদিন ব্যাপী “গ্লোবাল লিফট এন্ড এস্কেলেটর এক্সপো ২০২৪”। এটি বাংলাদেশে লিফট এবং এস্কেলেটরের উপর আয়োজিত একমাত্র প্রদর্শনী। ৫ম বারের মতো আয়োজিত এই প্রদর্শনী বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) থেকে শনিবার (১২ অক্টোবর) পর্যন্ত হল ২-এ সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
দেশের ক্রমবর্ধমান আবাসন শিল্পে লিফট, এস্কেলেটর এবং এলিভেটরের বিকাশের লক্ষে আয়োজিত “গ্লোবাল লিফট এন্ড এস্কেলেটর এক্সপো ২০২৪” একটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। যেখানে চীন, জাপান, ইটালি, তুরষ্ক, ফিনল্যান্ড, স্পেনসহ দেশ-বিদেশের প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠান তাদের এস্কেলেটর, এলিভেটর, লিফট এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জামাদির প্রদর্শনী করছে।
এই শিল্প সম্পর্কে জানতে, নিজস্ব পণ্য প্রদর্শন করতে এবং দেশে বিদেশে ব্যবসায়িক সুযোগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে উৎপাদকদের জন্য এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহন একটি চমৎকার সুযোগ। ব্যবসায়ের পরিসর বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে বাংলাদেশে নতুন ব্যবসায়ের ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়া এই প্রদর্শনী আয়োজকদের প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানান প্রদর্শনীর উদ্যোক্তারা।
“গ্লোবাল লিফট এন্ড এস্কেলেটর এক্সপো ২০২৪”-এর আয়োজক প্রতিষ্ঠান ভার্গো কমিউনিকেশনস এর পরিচালক অনিতা রঘুনাথ বলেন বিশ্ব এখন প্রযুক্তনির্ভির। জীবনকে সহজ করতে ব্যবসা
প্রতষ্ঠিান থেকে শুরু করে বসতবাড়ি সব জায়গায় এখন প্রযুক্তরি জয়জয়কার। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে আমরা এনছেি বিশ্বমানরে সব লিফট এস্কলেরেটের প্রস্তুতকারক ও আমদানকিারক। এগুলো গ্রাহকদের পরিবর্তিত চাহদিা মেটাতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস”।
এক্সপোতে বিশ্ববিখ্যাত ফুজি ইন্টারন্যাশনাল, সিগমা, হিডোস, কোনে, হ্যান্ডক ইত্যাদি ব্র্যান্ডের লিফট ও এস্কেলেটর দেখে যাচাই করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ হয়ে আসে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হয় ডিমের মূল্য নিয়ে। পণ্যটির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজনে বেড়েছিলো প্রায় ৩০-৩৫ টাকা পর্যন্ত। তবে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ ও আমদানির খবরে কমেছে দাম।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) শেওড়াপাড়া, কচুক্ষেত ও কাওরান বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়। এসময় ডজন প্রতি ১৫-২০ টাকা কমিয়ে ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
এদিন কাওরান বাজারের ডিম বিক্রেতা আশরাফুল আলম বলেন, ডিমের দাম গতকাল থেকে কমেছে। এখন আমরা প্রতি ডজন ডিম ১৫৫-১৬০ টাকা বিক্রি করছি।
আমদানির কারণে ডিমের দাম কমেছে কি না জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, কিসের আমদানির কারণে কমবে? যে দুই লাখ ডিম আমদানি করছে এইগুলো তো একদিনে কাওরান বাজারেই হয় না। তাহলে আমদানির কারণে কিভাবে কমবে?
তাহলে কমছে কেন জানতে চাইলে আশরাফুল আলম বলেন, সেইটা বলতে পারি না। এইটা জানতে চাইলে বড় ব্যবসায়ী যারা আছে তাদের জিজ্ঞেস করেন।
আশরাফুল আলমের পাশেই আরেক ডিম বিক্রেতা বলেন, গতকাল থেকে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। আমি সাদা ডিম বিক্রি করছি ১৫৫ টাকায় ডজন আর লাল ডিম ১৬০ টাকা ডজন।
কাওরান বাজারে এক হোটেলে কাজ করেন আব্দুস সালাম। এখন কাজ শেষে বাসায় ফিরার পথে আসছিলেন ডিম নিতে। এসময় দুই ডজন ডিম ১৫৫ টাকা করে বললেও ডিম বিক্রেতা এক দাম ১৬০ টাকা বলে দেন। পরে বাধ্য হয়ে ১৬০ টাকা ডজনেই দুই ডজন ডিম নেন তিনি।
আব্দুস সালাম বার্তা২৪.কম কে বলেন, কোন কথা নেই, কিছু নেই হঠাৎ করে দেখি ডিমের লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে গেছে। সরকার ১২ টাকার কথা বললেও কেউ মানে নাই। এখন যখনই শুনছে ইন্ডিয়া থেকে ডিম আমদানি করবো দাম কলে গেলো। খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে সরকার কে কঠোর হওয়া দরকার। যেই দাম বাড়াবে, তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
উল্লেখ্য, সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে ডিমের দাম ছিলো ডজন প্রতি ৮০-১১০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে মুরগির খাদ্য দাম বাড়ায় ডিমের দাম ১২৫-১৩৫ টাকা হয়। গত বছরের শেষ সময়ে থেকে গত দুই সপ্তাহ আগে পর্যন্ত যা ছিলো ডজন প্রতি ১৫০-১৬৫ টাকা।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তারা বলছে, এই অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ শতাংশ ।
বুধবার (৯ অক্টোবর) প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ এ সংস্থাটি এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।
এর আগে, চলতি অর্থবছরে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে বিশ্বব্যাংক এমন পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু এখন সেখান থেকে ১ দশমিক ৭ শতাংশ পয়েন্ট কমলো। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ঘোষিত বাজেটে চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।
বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের ব্যাপ্তি ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশ পর্যন্ত হওয়া নির্ভরযোগ্য তথ্যের অভাব এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অনিশ্চয়তাকেই প্রতিফলিত করে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বল্পমেয়াদে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। এছাড়া সাম্প্রতিক বন্যা কৃষি উৎপাদনেও কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী বিশ্বব্যাংক। আর্থিক খাতের সংস্কার, উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ, দেশীয় সম্পদের আরও বেশি ব্যবহার এবং বর্ধিত বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ধীরগতির পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
আরও বলা হয়েছে, উন্নত অর্থনীতিগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক সংযোগ স্থাপন করছে। এটি দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মূল উৎসগুলো, যেমন- রফতানি, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং পোর্টফোলিও বিনিয়োগের ওপর ঝুঁকি কমিয়েছে।