দুই বছরেও চূড়ান্ত হয়নি পিএসসি, থমকে গেছে সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মডেল পিএসসি-২০১৯ (উৎপাদন ও বন্টন চুক্তি) সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। ইতিমধ্যেই দুই বছর দুই মাস অতিবাহিত হলেও চূড়ান্ত করতে পারেনি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

অথচ এই সংশোধনীর উপর নির্ভর করছে সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ভবিষ্যৎ। দেশের ভয়াবহ জ্বালানি সংকটের স্বস্তিকর সমাধান এই বিশাল জলরাশির নিচে লুকায়িত বলে ধারণা করা হয়। সেই বিশাল সমুদ্রসীমা এখনও অধরা পেট্রোবাংলা তথা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ঢিলেমির কারণে।

কোভিড পরিস্থিতির কারণে সম্পূর্ণ বদলে যায় জ্বালানি অর্থনীতির চিত্র। মডেল পিএসসি সংশোধনের বিষয়টি প্রথম সামনে আসে ২০২০ সালের নভেম্বরে। পরের মাসেই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় পিএসসি হালনাগাদ (আপডেট) করার সিদ্ধান্ত হয়। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ওই সিদ্ধান্ত জানুয়ারিতে (২০২১) প্রেরণ করা হয় পেট্রোবাংলায়। রহস্যজনক কারণে প্রায় ১০ মাস সেই ফাইল চাপা দিয়ে রাখেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) শাহীনুল ইসলাম।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পরিচালক (পিএসসি) শাহীনুল ইসলামের দফতরে গেলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ খোন্দকার আব্দুস সালেক সুফী বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব পিএসসি আপডেট করে দরপত্রে যাওয়া উচিত। পেট্রোবাংলার ঢিলেমির কারণে আজকের এই গ্যাস সংকট শুরু হয়েছে। তারা যদি যথাযথভাবে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে পারতো তাহলে এই সংকট হওয়ার কথা না। দেশীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের চেয়ে আমদানির প্রতি তাদের বেশি মনযোগ দেখা যাচ্ছে। এভাবে দেশের জ্বালানি খাতকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

১০ মাস পড়ে থাকার পর কাজ শুরু হলেও পেট্রোবাংলার কাছে কখনই অগ্রাধিকার পায়নি বিষয়টি। কনসালটেন্ট চূড়ান্ত করতেই সময় নেয় ৮ মাস। ২০২২ সালের মে মাসে সিঙ্গাপুরের উড ম্যাকেঞ্জি এশিয়া প্যাসিফিককে কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়। কোম্পানিটি চার মাস পর খসড়া জমা দিলে আবার ফাইল চালাচালি শুরু করে পেট্রোবাংলা। অবশেষে খসড়া চূড়ান্ত করে গত বছরের ডিসেম্বরে লেজিসলেটিভ বিভাগে মতামতের জন্য পাঠানো হয়। লেজিসলেটিভ বিভাগ অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্কিত বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত নিতে বলেছে।

গত সপ্তাহে ওই তিন বিভাগের মতামতের জন্য পাঠানোর কথা বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শাহীনা খাতুন। তিনি জানিয়েছেন, আমরা দ্রুততার সঙ্গে কাজটি শেষ করার জন্য ব্যক্তিগতভাবেও যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। তারাও দ্রুত মতামত দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।

মতামত পাওয়া গেলে খসড়া যাবে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য। সেখানে অনুমোদন পাওয়া গেলে উঠবে মন্ত্রিসভায়। তারপর শুরু হবে বিডিং রাউন্ডের কার্যক্রম।

সব মিলিয়ে এই সরকারের সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র চূড়ান্ত করার কোনই আশা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করছেন, পিএসসি সংশোধন প্রক্রিয়া আরও দুই থেকে তিন মাসের ধাক্কা। অনুমোদনের পর কমপক্ষে ৩ মাস সময় দিয়ে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করতে হবে। সেগুলোর আবার যাচাই-বাছাই করতে লেগে যাবে আরও কয়েক মাস। ততদিনে দেশে নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হয়ে যাবে।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ অনেক ছাড় দিয়ে মডেল পিএসসি-২০১৯ (উৎপাদন ও বন্টন চুক্তি) সংশোধিত করা হচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তোলার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খসড়ায় গ্যাসের দর নির্ধারিত করার কথা বলা হয়নি। ব্রেন্ট ক্রডের আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে উঠানামা করবে। প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে বেন্ট ক্রডের ১০ শতাংশ দরের সমান। অর্থাৎ বেন্ট ক্রডের দাম ৮০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে ৮ ডলার। যা বিদ্যমান পিএসসিতে যথাক্রমে অগভীর ও গভীর সমুদ্রে ৫.৬ ডলার ও ৭.২৫ ডলার স্থির দর ছিল।

দামের পাশাপাশি সরকারের শেয়ারের অনুপাতও নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। মডেল পিএসসি-২০১৯ অনুযায়ী গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে বাংলাদেশের অনুপাত বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর কমতে থাকে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার। গভীর সমুদ্রে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের হিস্যা ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত উঠানামা করবে।

৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হলে পেট্রোবাংলার ৫৫ শতাংশ, আইওসির ৪৫ শতাংশ। উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হলে পেট্রোবাংলা ৬০ শতাংশ ও আইওসি ৪০ শতাংশ, ২৫০ মিলিয়নের ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলা ৬৫ ভাগ আইওসি ৩৫ ভাগ গ্যাস পেত। এভাবে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট উৎপাদন হলে পেট্রোবাংলা ৮০ ভাগ এবং আইওসি ২০ ভাগ গ্যাস পেত। সংশোধিত প্রস্তাবে গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে ৪০ থেকে ৬৫ উঠানামা করার কথা বলা হয়েছে।

পেট্রোবাংলার বিদায়ী চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান গত অক্টোবর মাসে বার্তা২৪.কম-কে বলেছিলেন, পিএসসি চূড়ান্ত করে ডিসেম্বর নাগাদ সাগরে পিএসসি আহ্বান আশা করছি। অতীতে বহুজাতিক কোম্পানি আগ্রহ না দেখালেও এবার তারা আগ্রহী হবেন। ইতিমধ্যেই বেশকিছু কোম্পানি যোগাযোগ রাখছেন। আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কিছুটা সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করেছি। অনেকেই বলেছেন আমাদের গ্যাসের দর কম থাকায় বিদেশি কোম্পানি আগ্রহী হচ্ছে না।

শুধু দর কমের কারণে বিদেশি কোম্পানি আগ্রহ হারাচ্ছে এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছে, দর একটি বড় বিষয় তবে আরও একটি বিষয় রয়েছে তা হচ্ছে তথ্যের ঘাটতি। সাগরের তেল-গ্যাস সম্পর্কে যেসব তথ্য রয়েছে এগুলো এক সময় উন্মুক্ত ছিল। কোন কোম্পানি চাইলে এসে কিনতে কিংবা দেখতে পারতো। তারা সেগুলো যাচাই করে দরপত্রে অংশ নিতো। এখন ওই তথ্য বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যে কারণে বহুজাতিক কোম্পানি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তারাতো আগে সম্ভাবনার আলামত দেখতে চাইবেন, তারপর টাকা ঢালবেন।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (চুক্তি) শাহনেওয়াজ পারভেজ বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, যে সব কোম্পানি দরপত্র ডকুমেন্ট নেবেন তাদের কাছে তথ্য দেওয়া হবে। কিছু বিষয় আগেও দেওয়া যেতে পারে। আশা করছি এবার সমস্যা হবে না। মূলত দরটাই ছিল বড় ইস্যু। ইতিমধ্যেই অনেক বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানি যোগাযোগ শুরু করেছে।

পেট্রোবাংলার ঢিলেমির কারণে বিশাল সমুদ্র জয়ের পর অধরা সম্ভাবনায় সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান। আন্তর্জাতিক আদালতে ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর সর্বমোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র অঞ্চলের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের। তথ্য সমৃদ্ধ করার জন্য সরকার সমুদ্রসীমায় একটি পূর্ণাঙ্গ বহুমাত্রিক জরিপ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে নাম দিয়ে ২০১৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। দরপত্র মূল্যায়নে নরওয়ের কোম্পানি টিজিএস এবং ফ্রান্সের স্লামবার্জার কনসোর্টিয়াম যোগ্য বলে নির্বাচিত হয়। নানা জটিলতায় সেই কাজও শেষ করা যায়নি।

বিশাল সমুদ্র অঞ্চল এখন অধরা


২০০৮ সালের গভীর সমুদ্রের ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ নম্বর ব্লক ইজারা পেয়েছিল আমেরিকান কোম্পানি কনোকো ফিলিপস। কোম্পানিটি দুই বছর অনুসন্ধান করার পর চুক্তি সংশোধন করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির দাবি জানায়। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় ব্লক দুটি ছেড়ে দিয়ে চলে যায় ২০১৪ সালে।

অন্যদিকে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা আন্তর্জাতিক দরপত্রে গভীর সমুদ্রের ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১ এই তিন ব্লকের জন্য যৌথভাবে দরপ্রস্তাব জমা দিয়েছিল কনোকো ও স্টেট অয়েল। পরবর্তী সময়ে কনোকো নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় ব্লকগুলো ইজারা দেওয়া সম্ভব হয়নি। একই সময়ে অগভীর সমুদ্র্রের ব্লকগুলোর জন্য ভিন্ন একটি দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। এই দর প্রক্রিয়া এসএস ১১ নম্বর ব্লক সান্তোস ও ক্রিস এনার্জি এবং এসএস ৪ ও এসএস ৯ নম্বর ব্লক ভারতীয় দুটি কোম্পানি ওএনজিসি ভিদেশ (ওভিএল) ও অয়েল ইন্ডিয়া (ওআইএল) ইজারা নিয়েছিল। সান্তোস এসএস-১১ ব্লকে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক জরিপ করার পর কূপ খনন না করেই বাংলাদেশ থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। ওএনজিসি দুই ব্লকে থ্রি-ডি ও টু-ডি সাইসমিক জরিপ চালানোর পর ৪ নম্বর ব্লকে একটি অনুসন্ধান কূপ খনন করেছিল; কিন্তু গ্যাস মেলেনি। তারা আরও দুটি কূপ খনন করবে বলে জানা গেছে। গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ৯টি ব্লক প্রস্তুত রয়েছে দরপত্রের জন্য।

সবচেয়ে উদ্বেগে বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ যতবেশি বিলম্ব করছে ততবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের পাশের ব্লকগুলো থেকে দীর্ঘদিন ধরেই গ্যাস উত্তোলন করছে মিয়ানমার।

বাংলাদেশ সীমানায় প্রথম কূপ খনন ১৯১০ সালে। গত বছর পর্যন্ত ৯৬টি কূপ খননের মাধ্যমে ২৮টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছে। এর বাইরে রয়েছে মোবারকপুর ও কশবার মতো কয়েকটি ফিল্ড। যেগুলোতে গ্যাসের আঁধার পেলেও বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য নয় বলে ঘোষণা করা হয়নি। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক ধাপেই রয়েছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

গত ১৮ মার্চ দেশীয় ২২টি গ্যাস ফিল্ডের ১১৩টি কূপ দিয়ে ২ হাজার ১৫৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় ৩ কোম্পানির ১৮টি ফিল্ড থেকে ৭৯৩ মিলিয়ন ঘনফুট ও ২ বহুজাতিক কোম্পানির মালিকানাধীন ৪ গ্যাস ফিল্ড থেকে ১৩৬৬ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ দিয়েছে। ঘাটতি সামাল দিতে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। ওই দিন ৭৯৩ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। তারপরও গ্যাসের অভাবে ধুকছে বিদ্যুৎ ও শিল্পখাত।

বাজেটের পর জ্বালানির দাম সমন্বয়: নসরুল হামিদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাজেটের পর জ্বালানির দাম সমন্বয়: নসরুল হামিদ

বাজেটের পর জ্বালানির দাম সমন্বয়: নসরুল হামিদ

  • Font increase
  • Font Decrease

আসছে বাজেটে জ্বালানির উপর ডিউটি কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট পরবর্তী সেভাবে জ্বালানির দাম সমন্বয় করা চিন্তা ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

সোমবার (২৯ মে) বিদ্যুৎ ভবনে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এখন বিভিন্ন ধরনের জ্বালানিতে ভিন্ন পরিমাণের ডিউটি রয়েছে। এই ডিউটি ইউনিক করার প্রস্তাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, কোভিডের কারনে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির সংকট চলছে, আমরাও এই সংকটের বাইরে না। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশও চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যে কয়লার দাম ৬০ ডলার ছিল সেগুলো এখন ৪০০ ডলার, তেলে দাম বেড়ে গেলে ৬০ থেকে ৭০ ডলার, স্পর্ট মার্কেটে গ্যাসের দাম বেড়ে গেলো। আমরা বড় ধরনের ভর্তুকি দিয়ে এসেছি, টার্গেড মূলক ভর্তুকি দিয়ে এসেছি, নিম্ন আয়ের লোকজন যেনো আক্রান্ত না হয়। সব মিলিয়ে একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ শুধু আমাদের একার না, অনেক ধনি দেশও রয়েছে। তারাও লোডশেডিং করেছে।

তিনি বলেন, ৫টি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দিয়েছিলাম, তারা আসতে পারেনি, বাধ্য হয়ে বেশি খরচের তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেশি চালাতে হয়েছে।

তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ধীরগতির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, বছরে ১০ টি কূপ খনন করতে গেলে কমপক্ষে ২০০ মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন। আমাদের বাপেক্সের মাত্র ৩টি রিগ এগুলো দিয়ে কতদূর যাওয়া সম্ভব!

সৌর বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে বলেন, ২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে হলে ৬ হাজার একর জমি প্রয়োজন। জমি পাওয়াটা বড় বিষয়, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন আমরা দেখেছি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতেই ১৮০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন। ভোলায় বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে, ভোলার গ্যাস খুলনা পর্যন্ত নিতে হবে। আমাদের সামনে বড় তিনটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিরবিচ্ছিন্ন, মানসম্মত ও সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি নিশ্চিত করা। নেপালের পাওয়ার আসবে, সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে। তবে এই গ্যাস পেলে আনতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। সে কারনে আমাদের আরও এফএসআরইউ লাগবে।

পাওয়ার সেল এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, আমরা কিন্তু সোলারের বিষয়ে এখন খুব সিরিয়াস, এখন দিনের বেলা সোলার থেকে ৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। আগামী দুই বছরের মাথায় ২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, আমি লোডশেডিং করছে এমন জায়গায়, যেখানে সৌরবিদ্যুৎ থাকার সুযোগ ছিল। বছরে কমপক্ষে ১০ অনুসন্ধান কূপ খনন করা দরকার। এটি করা গেলে কমপক্ষে ৫টি গ্যাস ফিল্ড আবিষ্কার করা সম্ভব। যদি ২০০ বিসিএফ করে গ্যাস পাওয়া যায় তাহলে ১ টিসিএফ, যা এক বছরের চাহিদার সমান।

বিইআরসির সাবেক সদস্য মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বলেন,  বিদ্যুতের যত সমস্যা এনার্জি কেন্দ্রীক। যতদিন জ্বালানিকে গুরুত্ব দেওয়া না যাবে ততদিন এই সংকট দূর করা কঠিন। আমরা আবিস্কৃত গ্যাস ফিল্ডে উচ্চ লেভেল থাকল দূরের কথা, সর্বনিম্ন লেভেলে উত্তোলন করা হচ্ছে না। আমাদের সিলেট গ্যাস ফিল্ডের তুলনায় অনেক কম রিজার্ভ বিবিয়ানাতে, তারা অনেক বেশি গ্যাস তুলতে পারলেও আমরা কেনো অনেক কম করছি। রশিদপুর-৯ নম্বর কূপ থেকে মাত্র সাড়ে ৩ কিলোমিটার লাইনের অভাবে পড়ে রয়েছে। সেখান থেকে ১৭-২০ মিলিয়ন গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব। বিভিন্ন জায়গায় শুধু ঘষামাজা করলে ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব।

এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, এফইআরবির ইডি রিসান নসরুল্লাহ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিপপার প্রেসিডেন্ট ফয়সাল খান।

;

ইসলামী ব্যাংক-হ্যালো পয়সা রেমিট্যান্স উৎসব শুরু



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ইসলামী ব্যাংক-হ্যালো পয়সা রেমিট্যান্স উৎসব শুরু

ইসলামী ব্যাংক-হ্যালো পয়সা রেমিট্যান্স উৎসব শুরু

  • Font increase
  • Font Decrease

হ্যালো পয়সার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এ ক্যাশ রেমিট্যান্স গ্রাহকরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে ফ্রিজ জেতার সুযোগ রয়েছে। এ অফার চলবে ১ জুন থেকে ২৭ জুন ২০২৩ পর্যন্ত। 

সোমবার (২৯ মে) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে প্রধান অতিথি হিসেবে ইসলামী ব্যাংক-হ্যালো পয়সা রেমিট্যান্স উৎসবের উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মুহাম্মদ কায়সার আলী। গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন হ্যালো পয়সার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সেইজিল ম্যাগান। অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জে.কিউ.এম. হাবিবুল্লাহ, এফসিএস এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ শাব্বির ও কাজী মোঃ রেজাউল করিম এবং হ্যালো পয়সার বাংলাদেশ কান্ট্রি হেড ফজলুর রহমান।

এ সময় ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ নাইয়ার আজম, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার ও আবুল ফায়েজ মুহাম্মাদ কামালউদ্দিন এবং ক্যামেলকো তাহের আহমেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মিফতাহ উদ্দীন।

অনুষ্ঠানে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী, সকল জোনপ্রধান, শাখাপ্রধান এবং উপশাখা ইনচার্জগণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।

;

ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১.৩১ লাখ কোটি টাকা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ প্রায় ১০ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা বেড়ে ১ কোটি ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, খেলাপি ঋণ তিন মাস আগের তুলনায় ৯ শতাংশ এবং এক বছর আগের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেড়েছে।

সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগ সত্ত্বেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যা চ্যালেঞ্জিং এবং চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে।।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে, যখন দুর্বল ব্যবসার কারণে ব্যবসায়ীকেরা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা থেকে বিরত ছিল।

মহামারি চলাকালীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের নিয়মিত পরিশোধের ওপর একটি স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেছিল, যা বিপুল সংখ্যক ঋণগ্রহীতাকে খেলাপি হতে সাহায্য করেছিল।

স্থগিতের সুবিধা প্রত্যাহারের পর, খেলাপি ঋণের পরিমাণ গত বছরের ডিসেম্বরে ১ দশমিক ২০ লাখ কোটি টাকার বেশি বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, একদল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি হয়ে যাচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।

তিনি বলেন, সুশাসনের অভাবে কিছু সংগঠিত গোষ্ঠী তাদের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি টাকা ঋণ হিসেবে নিয়েছে, যা খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ।

;

সোনার দাম ভরিতে ১৭৪৯ টাকা কমল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৭৪৯ টাকা কমিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সোনার নতুন দর সোমবার (২৯ মে) থেকে কার্যকর হবে।

রোববার (২৮ মে) রাতে বাজুসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা থেকে কমে ৯৬ হাজার ৬৯৫ টাকা হলো।

এর আগে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা বেড়েছিল।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা কমিয়ে ৯৬ হাজার ৬৯৫ টাকা করা হয়েছে।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৬৩৩ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ৩২১ টাকা করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৪০০ টাকা কমিয়ে ৭৯ হাজার ১৪০ টাকা করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৬৫ হাজার ৯৬০ টাকা করা হয়েছে।

এদিকে, সোনার দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ১ হাজার ৫০ টাকা ভরি বিক্রি হচ্ছে।

;