দুই বছরেও চূড়ান্ত হয়নি পিএসসি, থমকে গেছে সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মডেল পিএসসি-২০১৯ (উৎপাদন ও বন্টন চুক্তি) সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। ইতিমধ্যেই দুই বছর দুই মাস অতিবাহিত হলেও চূড়ান্ত করতে পারেনি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

অথচ এই সংশোধনীর উপর নির্ভর করছে সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ভবিষ্যৎ। দেশের ভয়াবহ জ্বালানি সংকটের স্বস্তিকর সমাধান এই বিশাল জলরাশির নিচে লুকায়িত বলে ধারণা করা হয়। সেই বিশাল সমুদ্রসীমা এখনও অধরা পেট্রোবাংলা তথা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ঢিলেমির কারণে।

কোভিড পরিস্থিতির কারণে সম্পূর্ণ বদলে যায় জ্বালানি অর্থনীতির চিত্র। মডেল পিএসসি সংশোধনের বিষয়টি প্রথম সামনে আসে ২০২০ সালের নভেম্বরে। পরের মাসেই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় পিএসসি হালনাগাদ (আপডেট) করার সিদ্ধান্ত হয়। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ওই সিদ্ধান্ত জানুয়ারিতে (২০২১) প্রেরণ করা হয় পেট্রোবাংলায়। রহস্যজনক কারণে প্রায় ১০ মাস সেই ফাইল চাপা দিয়ে রাখেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) শাহীনুল ইসলাম।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পরিচালক (পিএসসি) শাহীনুল ইসলামের দফতরে গেলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ খোন্দকার আব্দুস সালেক সুফী বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব পিএসসি আপডেট করে দরপত্রে যাওয়া উচিত। পেট্রোবাংলার ঢিলেমির কারণে আজকের এই গ্যাস সংকট শুরু হয়েছে। তারা যদি যথাযথভাবে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে পারতো তাহলে এই সংকট হওয়ার কথা না। দেশীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের চেয়ে আমদানির প্রতি তাদের বেশি মনযোগ দেখা যাচ্ছে। এভাবে দেশের জ্বালানি খাতকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

১০ মাস পড়ে থাকার পর কাজ শুরু হলেও পেট্রোবাংলার কাছে কখনই অগ্রাধিকার পায়নি বিষয়টি। কনসালটেন্ট চূড়ান্ত করতেই সময় নেয় ৮ মাস। ২০২২ সালের মে মাসে সিঙ্গাপুরের উড ম্যাকেঞ্জি এশিয়া প্যাসিফিককে কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়। কোম্পানিটি চার মাস পর খসড়া জমা দিলে আবার ফাইল চালাচালি শুরু করে পেট্রোবাংলা। অবশেষে খসড়া চূড়ান্ত করে গত বছরের ডিসেম্বরে লেজিসলেটিভ বিভাগে মতামতের জন্য পাঠানো হয়। লেজিসলেটিভ বিভাগ অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্কিত বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত নিতে বলেছে।

গত সপ্তাহে ওই তিন বিভাগের মতামতের জন্য পাঠানোর কথা বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শাহীনা খাতুন। তিনি জানিয়েছেন, আমরা দ্রুততার সঙ্গে কাজটি শেষ করার জন্য ব্যক্তিগতভাবেও যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। তারাও দ্রুত মতামত দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।

মতামত পাওয়া গেলে খসড়া যাবে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য। সেখানে অনুমোদন পাওয়া গেলে উঠবে মন্ত্রিসভায়। তারপর শুরু হবে বিডিং রাউন্ডের কার্যক্রম।

সব মিলিয়ে এই সরকারের সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র চূড়ান্ত করার কোনই আশা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করছেন, পিএসসি সংশোধন প্রক্রিয়া আরও দুই থেকে তিন মাসের ধাক্কা। অনুমোদনের পর কমপক্ষে ৩ মাস সময় দিয়ে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করতে হবে। সেগুলোর আবার যাচাই-বাছাই করতে লেগে যাবে আরও কয়েক মাস। ততদিনে দেশে নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হয়ে যাবে।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ অনেক ছাড় দিয়ে মডেল পিএসসি-২০১৯ (উৎপাদন ও বন্টন চুক্তি) সংশোধিত করা হচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তোলার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খসড়ায় গ্যাসের দর নির্ধারিত করার কথা বলা হয়নি। ব্রেন্ট ক্রডের আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে উঠানামা করবে। প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে বেন্ট ক্রডের ১০ শতাংশ দরের সমান। অর্থাৎ বেন্ট ক্রডের দাম ৮০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে ৮ ডলার। যা বিদ্যমান পিএসসিতে যথাক্রমে অগভীর ও গভীর সমুদ্রে ৫.৬ ডলার ও ৭.২৫ ডলার স্থির দর ছিল।

দামের পাশাপাশি সরকারের শেয়ারের অনুপাতও নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। মডেল পিএসসি-২০১৯ অনুযায়ী গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে বাংলাদেশের অনুপাত বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর কমতে থাকে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার। গভীর সমুদ্রে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের হিস্যা ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত উঠানামা করবে।

৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হলে পেট্রোবাংলার ৫৫ শতাংশ, আইওসির ৪৫ শতাংশ। উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হলে পেট্রোবাংলা ৬০ শতাংশ ও আইওসি ৪০ শতাংশ, ২৫০ মিলিয়নের ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলা ৬৫ ভাগ আইওসি ৩৫ ভাগ গ্যাস পেত। এভাবে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট উৎপাদন হলে পেট্রোবাংলা ৮০ ভাগ এবং আইওসি ২০ ভাগ গ্যাস পেত। সংশোধিত প্রস্তাবে গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে ৪০ থেকে ৬৫ উঠানামা করার কথা বলা হয়েছে।

পেট্রোবাংলার বিদায়ী চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান গত অক্টোবর মাসে বার্তা২৪.কম-কে বলেছিলেন, পিএসসি চূড়ান্ত করে ডিসেম্বর নাগাদ সাগরে পিএসসি আহ্বান আশা করছি। অতীতে বহুজাতিক কোম্পানি আগ্রহ না দেখালেও এবার তারা আগ্রহী হবেন। ইতিমধ্যেই বেশকিছু কোম্পানি যোগাযোগ রাখছেন। আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কিছুটা সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করেছি। অনেকেই বলেছেন আমাদের গ্যাসের দর কম থাকায় বিদেশি কোম্পানি আগ্রহী হচ্ছে না।

শুধু দর কমের কারণে বিদেশি কোম্পানি আগ্রহ হারাচ্ছে এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছে, দর একটি বড় বিষয় তবে আরও একটি বিষয় রয়েছে তা হচ্ছে তথ্যের ঘাটতি। সাগরের তেল-গ্যাস সম্পর্কে যেসব তথ্য রয়েছে এগুলো এক সময় উন্মুক্ত ছিল। কোন কোম্পানি চাইলে এসে কিনতে কিংবা দেখতে পারতো। তারা সেগুলো যাচাই করে দরপত্রে অংশ নিতো। এখন ওই তথ্য বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যে কারণে বহুজাতিক কোম্পানি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তারাতো আগে সম্ভাবনার আলামত দেখতে চাইবেন, তারপর টাকা ঢালবেন।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (চুক্তি) শাহনেওয়াজ পারভেজ বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, যে সব কোম্পানি দরপত্র ডকুমেন্ট নেবেন তাদের কাছে তথ্য দেওয়া হবে। কিছু বিষয় আগেও দেওয়া যেতে পারে। আশা করছি এবার সমস্যা হবে না। মূলত দরটাই ছিল বড় ইস্যু। ইতিমধ্যেই অনেক বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানি যোগাযোগ শুরু করেছে।

পেট্রোবাংলার ঢিলেমির কারণে বিশাল সমুদ্র জয়ের পর অধরা সম্ভাবনায় সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান। আন্তর্জাতিক আদালতে ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর সর্বমোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র অঞ্চলের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের। তথ্য সমৃদ্ধ করার জন্য সরকার সমুদ্রসীমায় একটি পূর্ণাঙ্গ বহুমাত্রিক জরিপ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে নাম দিয়ে ২০১৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। দরপত্র মূল্যায়নে নরওয়ের কোম্পানি টিজিএস এবং ফ্রান্সের স্লামবার্জার কনসোর্টিয়াম যোগ্য বলে নির্বাচিত হয়। নানা জটিলতায় সেই কাজও শেষ করা যায়নি।

বিশাল সমুদ্র অঞ্চল এখন অধরা


২০০৮ সালের গভীর সমুদ্রের ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ নম্বর ব্লক ইজারা পেয়েছিল আমেরিকান কোম্পানি কনোকো ফিলিপস। কোম্পানিটি দুই বছর অনুসন্ধান করার পর চুক্তি সংশোধন করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির দাবি জানায়। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় ব্লক দুটি ছেড়ে দিয়ে চলে যায় ২০১৪ সালে।

অন্যদিকে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা আন্তর্জাতিক দরপত্রে গভীর সমুদ্রের ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১ এই তিন ব্লকের জন্য যৌথভাবে দরপ্রস্তাব জমা দিয়েছিল কনোকো ও স্টেট অয়েল। পরবর্তী সময়ে কনোকো নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় ব্লকগুলো ইজারা দেওয়া সম্ভব হয়নি। একই সময়ে অগভীর সমুদ্র্রের ব্লকগুলোর জন্য ভিন্ন একটি দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। এই দর প্রক্রিয়া এসএস ১১ নম্বর ব্লক সান্তোস ও ক্রিস এনার্জি এবং এসএস ৪ ও এসএস ৯ নম্বর ব্লক ভারতীয় দুটি কোম্পানি ওএনজিসি ভিদেশ (ওভিএল) ও অয়েল ইন্ডিয়া (ওআইএল) ইজারা নিয়েছিল। সান্তোস এসএস-১১ ব্লকে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক জরিপ করার পর কূপ খনন না করেই বাংলাদেশ থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। ওএনজিসি দুই ব্লকে থ্রি-ডি ও টু-ডি সাইসমিক জরিপ চালানোর পর ৪ নম্বর ব্লকে একটি অনুসন্ধান কূপ খনন করেছিল; কিন্তু গ্যাস মেলেনি। তারা আরও দুটি কূপ খনন করবে বলে জানা গেছে। গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ৯টি ব্লক প্রস্তুত রয়েছে দরপত্রের জন্য।

সবচেয়ে উদ্বেগে বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ যতবেশি বিলম্ব করছে ততবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের পাশের ব্লকগুলো থেকে দীর্ঘদিন ধরেই গ্যাস উত্তোলন করছে মিয়ানমার।

বাংলাদেশ সীমানায় প্রথম কূপ খনন ১৯১০ সালে। গত বছর পর্যন্ত ৯৬টি কূপ খননের মাধ্যমে ২৮টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছে। এর বাইরে রয়েছে মোবারকপুর ও কশবার মতো কয়েকটি ফিল্ড। যেগুলোতে গ্যাসের আঁধার পেলেও বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য নয় বলে ঘোষণা করা হয়নি। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক ধাপেই রয়েছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

গত ১৮ মার্চ দেশীয় ২২টি গ্যাস ফিল্ডের ১১৩টি কূপ দিয়ে ২ হাজার ১৫৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় ৩ কোম্পানির ১৮টি ফিল্ড থেকে ৭৯৩ মিলিয়ন ঘনফুট ও ২ বহুজাতিক কোম্পানির মালিকানাধীন ৪ গ্যাস ফিল্ড থেকে ১৩৬৬ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ দিয়েছে। ঘাটতি সামাল দিতে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। ওই দিন ৭৯৩ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। তারপরও গ্যাসের অভাবে ধুকছে বিদ্যুৎ ও শিল্পখাত।

   

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলার সংকটের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বেশষ গণনায় দেশের রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে তা ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৫৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত ২১ মার্চ সঞ্চিত বিদেশি অর্থের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের গণনা পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। যা শুধু প্রকাশ করা হয় না, শুধুমাত্র আইএমএফকে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ওই হিসাবে বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মিটবে।

অর্থাৎ, পণ্য কেনা বাবদ মাসিক প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার করে দায় পরিশোধ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বাংলাদেশেরও সেই পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে।

;

ইসলামী ব্যাংকে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সহযোগিতায় “বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ.ব.ম ফারুক, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম মেহেদী। অনুষ্ঠানে প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করার বিষয়ে যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করেছে দুই দেশ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করে বাংলাদেশ ও চীন।

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো এবং মূল্য সংযোজনের হার অন্যতম। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওই সব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলে ওই সকল দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।

কবে নাগাদ এফটিএ সই হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এখনো চুক্তি হয়নি। এখন আলোচনা শুরু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে পারলে ভালো। যদি না হয় আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনা শেষ না হলে ততোদিন যেন আমাদের এলডিসি হিসাবে এই সুবিধাগুলো তাঁরা দেয় এর জন্য বলবো।

চুক্তির ফলে বাংলাদেশ কি ধরনের সুবিধা পাবে এ বিষয়ে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টের বাইরে আরও কিছু পণ্য আছে। রাষ্ট্রদূততের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন আম ও পাটজাত পণ্যের অনেক সম্ভাবনা আছে। তারপর হস্তশিল্পের বিষয় আছে।

তিনি বলেন, এছাড়া আরও পণ্য আছে। আমরা ইতোমধ্যে চামড়া রপ্তানি করছি। আমরা মানসম্মত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারি। চীনে ১৪০ কোটি মানুষ। সেখানে যদি আমরা বৈচিত্র্য পণ্য নিয়ে যেতে পারি, বড় বাজার। চুক্তি হয়ে গেলে বিনিয়োগ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা প্রধানত তৈরি পোশাক রপ্তানি করি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা চীনে ৬৭৭ মিলিয় মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি। বিপরীতে চীন থেকে ২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এখন চীন বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। এফটিএ সই হওয়ার পর বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বাংলাদেশ চীনে আম, কাঠাল, আলু, পাটপণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এফটিএ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

;

ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার

ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করছে সরকার। আগামীকাল শুক্রবার (২৯ মার্চ) এর মধ্যে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ দেশে আসতে পারে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) রেজওয়ানুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ ট্রেনে করে দেশে আসছে। শুক্রবারের মধ্যে আসার কথা রয়েছে। অবশিষ্ট পেঁয়াজ পর্যায়ক্রমে আমদানি হবে।

জানা গেছে, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বাড়ায় দেশটির সরকার রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। পরে হঠাৎ করে পণ্যটির দাম অনেক বেড়ে যায়।

এর আগে বুধবার (২৭ মার্চ) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।

;