ফিরোজ খানের খুটির জোর কোথায়!



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফিরোজ খান

ফিরোজ খান

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম থেকে ফিরে: কে এই ফিরোজ খান, তার খুটির জোর কোথায়! কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে (কেজিডিসিএল) ঘুষ, দুর্নীতি-অনিয়মের রামরাজত্ব কায়েম করেছেন। হাজারো অভিযোগ উঠলেও তিনি থেকে গেছেন বহাল তবিয়তে।

রাষ্ট্রীয় ওই কোম্পানিটিতে একইসঙ্গে জিএম (প্রশাসন) ও অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কোম্পানির সচিব পদে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। যারাই তার দুর্নীতি অনিয়মের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদেরকেই শায়েস্তা করেছেন। তার অপছন্দের কর্মকর্তার পদোন্নতি ঠেকাতে দুদকের নামে ভুয়া চিঠি তৈরির অভিযোগ রয়েছে।

পেট্রোবাংলার দু’টি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি এবং দুদকের তদন্তে রিপোর্টে দুর্নীতির প্রমাণ উঠে এলেও রয়ে গেছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পেট্রোবাংলা শুধু দফায় দফায় তদন্ত করেই যাচ্ছেন। অন্যদিকে ফিরোজ খান তার দুর্নীতি সাম্রাজ্য প্রসারিত করে চলেছেন।

কেজিডিসিএল’র দুর্নীতির বিষয়ে সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয় পরিচালক (পরিকল্পনা) আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ এর নেতৃত্বে। চার সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয় পরিচালকের (অপারেশন এন্ড মাইন্স) নেতৃত্বে গঠিত কমিটির রিপোর্টের ‍ওপর ভিত্তি করে। আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় আগের কমিটির রিপোর্টের অধিকতর তদন্ত করতে।

আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ কমিটি তদন্তে অসংখ্য অনিয়মের পাশাপাশি কেজিডিসিএল’এ একটি সিন্ডিকেটের প্রমাণ পেয়েছেন। কমিটি তার ৩১ পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলেছেন, ফিরোজ খান জিএম (প্রশাসন) হিসেবে দীর্ঘ ৭ বছর প্রেষণে কর্মরত থেকে নিয়মবর্হিভূত ও ইচ্ছামাফিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। ফিরোজ খান উক্ত সিন্ডিকেটের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে নিম্নোক্ত কার্যাদি সম্পাদন করেছেন।

বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিনা অজুহাতে পছন্দ মতো তদন্ত কমিটি গঠন করে বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ কর্মকর্তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি। কোম্পানিতে যোগ্যতাসম্পন্ন কারিগরি কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য একই ব্যক্তিকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন, বিভিন্ন বিভাগের দক্ষ কর্মকর্তা নিয়ে গঠিত মিটার পরীক্ষণ কমিটি বাতিল করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে শুধুমাত্র মার্কেটিং বিভাগের চিহ্নিত অসাধু কর্মকর্তাদের নিয়ে কমিটি পুর্নগঠন।

পদোন্নতি কমিটির সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ ক্যাডারের সহকারী ব্যবস্থাপকদের পদোন্নতি প্রদান না করা। কারিগরি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিতকরণের ‍উদ্দেশ্যে কোম্পানির নির্ধারিত পদোন্নতি কমিটিতে সঠিকভাবে তথ্য উত্থাপন না করা, বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন না করে সুকৌশলে কার্যবিবরণী উপস্থাপন করে চেয়ারম্যানের অনুমোদনসহ অসংখ্য অভিযোগ।

কোম্পানির গেস্ট হাউজে বিনা ভাড়ায় দীর্ঘদিন অবস্থানের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। প্রকৌশলী আমির হামজা ডিজিএম থেকে জিএম পদের প্রমোশনের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ পেলেও উল্টো তাকে চাকরিচ্যুত করার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রকৌশলী আমির হামজাকে পদোন্নতি প্রক্রিয়ার জন্য ২০১৬ সালের ১২ জুলাই পেট্রোবাংলায় প্রেরিত ফাইলে কোন অভিযোগ ছিল না। উক্ত পত্রের প্রেক্ষিতে আগস্টের ২২ তারিখে আমির হামজাসহ ৪ কর্মকর্তাকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করে। পদোন্নতি কার্যকরের জন্য কেজিডিসিএল’কে অবহিত করে চিঠি দেয় পেট্রোবাংলা। ওই চিঠি মোতাবেক ৪ কর্মকর্তার পদোন্নতির ইস্যুটি ৯৯তম বোর্ড সভায় উত্থাপন করা হলে অনুমোদিত হয়। কিন্তু স্বাক্ষরিত কর্যবিবরণীতে পরবর্তী বোর্ডসভায় উপস্থাপনের নির্দেশনা ছিল।

কমিটি আমির হামজার ব্যক্তিগত নথি পর্যলোচনা করে লিখেছে, ৯৯তম বোর্ড সভায় নির্দেশনা পালন না করে আমির হামজাকে কোন ধরণের নোটিশ না দিয়ে সাময়িক বরখাস্তের নথি উপস্থাপন করেন ফিরোজ খান। ব্যবস্থাপনা পরিচালক তখন হজ্বের উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে ছিলেন (৪৭ দিন)। দেশে ফিরে প্রথম কর্মদিবসে ( সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬) কোন রকম নোটিশ প্রদান, জবাববন্দি কিংবা শুনানি গ্রহণ ব্যতিত আমির হামজাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। আমির হামজার বিরুদ্ধে কোন রকম অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র অভিযোগ গুরুতর লিখে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়।

৯৯তম বোর্ড সভার নির্দেশনা পালন না করে প্রকৌশলী আমির হামজাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশটি ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি।

পেট্রোবাংলার তদন্ত কমিটি বলেছে, সাময়িক বরখাস্তের আদেশে অভিযোগ গুরুতর লিখলেও আদেশের সঙ্গে কোন অভিযোগের অবতারণা করা হয়নি। যেহেতু প্রাপ্ত অভিযোগ গুরুতর উল্লেখ করা হয়েছিল, সেক্ষেত্রে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশের সঙ্গে অভিযোগ থাকা আবশ্যক ছিল বলে মনে করে তদন্ত কমিটি। কিন্তু তা না করে (সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬) অভিযোগ দায়ের করা পদোন্নতি না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে কমিটি মনে করে।

কমিটি তার অবজারভেশনে লিখেছে, অর্থ আত্মসাৎ ও জনরোষ ব্যতিত কোন কারণ দর্শানোর নোটিশ/ অভিযোগ গঠন/শুনানি/জবানবন্দি গ্রহণ ছাড়া কাউকেই চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার প্রচলন/নজির নেই।

তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, উপব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপক পদের কর্মকর্তাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুদকের অনাপত্তি পত্র থাকলেও সুপিরিয়র সিলেকশন কমিটির সভা আহ্বানের কয়েকদিন আগে (ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১) স্থানীয় দুদক অফিস থেকে বক্তব্য গ্রহণ ও শ্রবণ করার নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছিল। যার পত্রের অনুলিপি একমাত্র জিএম (প্রশাসন) ফিরোজ খানের নিকট সংরক্ষণ করছেন বলে প্রশাসন বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা কমিটিকে অবহিত করে।

দুদকের ওই পত্রটি সম্পর্কে তদন্ত কমিটি লিখেছে, পত্রটি স্মারক নম্বরবিহীন এবং কোম্পানি পর্যায়ে পত্রটি গ্রহণের কোন রেকর্ড নেই। এতে প্রতীয়মান হয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত করার জন্য এ ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তা ফিরোজ খান ২০১৬ সালে প্রেষণে নিয়োগ পান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে। ৩১ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্টে পড়তে পড়তে দুর্নীতি অনিয়মের তথ্য উপাত্ত উঠে এসেছে। পূর্বের কমিটিও ৯টি বিষয়ে তথ্য প্রমাণ তুলে ধরে। কিন্তু এতোকিছুর পরও তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তো দূরের কথা, বদলি কিংবা দায়িত্ব থেকে সরানো হয়নি। সে কারণে প্রশ্ন উঠেছে কে এই ফিরোজ খান, তার খুটির জোর কোথায়?

ফিরোজ খানকে একাধিক দফায় ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পর পর কয়েকদিন এসএমএস দিলেও রিপ্লাই দেননি। বক্তব্যের জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টায় তার কার্যালয়ে গেলেও সাক্ষাৎ দেননি। প্রথমে তার সহকারী বলেন, স্যার অফিসে রয়েছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাক্ষাৎ চাইলে বসতে বলেন। মিনিট দশেক পরে বলেন স্যার রুমে নেই।

পে্ট্রোবাংলার পরিচালক (প্রশাসন) মো. আলতাফ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেছেন, তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক করণীয় গ্রহণ করা হয়েছে। আপাতত এর বেশি বলতে পারবো না। সময় হলেই সবকিছু জানানো হবে।

কি ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সে প্রশ্নের দিতে রাজি হননি পরিচালক (প্রশাসন)।

   

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল



রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ভোজ্য তেলের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক-ভ্যাট) প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু, ভোজ্য তেলের ‘যৌক্তিক মূল্য’ নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায় নির্ধারিত মূল্যের চাইতেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। দাম নেবার কারণ জানতে চাইলে দায়সারা উত্তর ব্যবসায়ীদের।

গতকাল (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

সংবাদ সম্মেলনে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ৮১৮ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা করা হয়েছে।

তবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের কোন তোয়াক্কা করছে না দোকানীরা।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হলেও লিটার প্রতি ১৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা করে। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা বিক্রি করার কথা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। তবে ভিন্ন চিত্র ছিলো ৫ লিটারের বোতলজাত তেলের দামে। সরকারের বেঁধে দামের চাইতেও প্রতি ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম মূল্যে ৮০০ টাকা করে বিক্রি করছেন দোকানীরা।

সরকারের বেঁধে দামে তেল বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে রাব্বি ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী লুতফুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, গতকাল কি ঘোষণা হইছে তেলের দাম কমছে নাকি বাড়ছে তা ভালো করে জানিনা। তবে শুনছি ফেছবুকে টিভিতে। আমাদের দোকানে যে তেল আছে তা আগের দামে কেনা। তাই আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন তেল আসলে আবার নতুম দামে বিক্রি করবো। খোলা তেলে ১৮ টাকা বেশি নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ যে বললাম আগের দামে কেনা। আমি তো নতুন দামের চাইতে ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম নিচ্ছি এখনো। কিন্তু খোলা তেল আমার আগের দামে কেনা তাই ১৮ টাকা বেশি নিতেছি। দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলে যতো দ্রুত দাম বাড়ে কিন্তু দাম কমানোর ঘোষণা এলে কমেনা কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বড় বড় পাইকারদের কাজ। তারা সিন্ডিকেট করে। কিন্তু আমাদের এমন সুযোগ নেই। আমরা এক দুই টন মাল সর্বোচ্চ কিনি। কখনো আরও কম কিনি।

আরেক ব্যবসায়ী খাদিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোসলে উদ্দিন বলেন, ৫ লিটারের তেলের বোতলে যে দাম ৮০০ টাকা দেয়া সেই দামে বিক্রি করছি। এছাড়া এক লিটারের বোতলের দাম ১৬৩ টাকা দামে বিক্রি করছি। তবে খোলা তেল আমার কেনা ছিলো ১৬৩ টাকা করে তাই আমি ১৬৪/১৬৫ টাকা দামে বিক্রি করতেছি। খোলা তেল ১৪৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করছে কিন্তু সেটা কি ভালো নাকি মন্দা জানিনা। যে দামে কিনি তার থেকে এক দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করি।

একটি সিকিউরিটি গার্ডের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আলতাফ হোসেন। তার কাছে খোলা তেল কতো নিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৬৫ টাকা নিলো। খোলা তেলে দুই টাকা কমে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে জানেন কিনা প্রশ্ন করলে আলতাফ হোসেন বলেন, ভাই এসব খবর দিয়ে তো কোন কাজ হয়না। দাম বাড়লে তখন ব্যবসায়ীরা পারলে আরও বাড়িয়ে নেয়। অথচ কমলে তিন মাসেও দাম কমার খবর থাকেনা। আপনার সামনেই তো বেশি নিলো কিছু করার আছে বলেন? আমি এক লিটার তেল নিতে আসছি। এখন এদের সাথে কি দাম নিয়ে ঝগড়া করবো।

আরেকজন ক্রেতা সজিব মোল্লা বলেন, বাজারে সব কিছুর দাম বাড়ে তবে খোলা তেলের দাম কমাইছে শুনে ভালো লাগলো। তবে দুই টাকা দাম কমায় তার প্রভাব আসলে বাজারে পরেনি। তাছাড়া লোক দেখানো বাজার মনিটরিং করে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কখনো সম্ভব না। একদিকে ব্যবসায়ীদের উপর ট্যাক্স বসাইবেন। জরিমানা করবেন আবার বলবেন দাম কমাইতে তারা কিভাবে দাম কমাবে। জীবনে শুনছেন কোনকিছুর দাম বাড়লে তা আবার কমে সহজে।

;

শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রায় চিনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের করা গবেষণায় এ তথ্য মিলেছে। শিশুদের খাবারে যাতে চিনি যুক্ত করা না হয় এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মানদণ্ড পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকারক বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া বিএসটিআই’র পক্ষ থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য কোম্পানি নেসলে বেশ কয়েকটি দেশে শিশুদের জন্য তৈরি করা দুধ ও সিরিয়াল পণ্যগুলোতে বাড়তি চিনি ও মধু যুক্ত করে, যা স্থূলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক নীতিমালার লঙ্ঘন। নেসলের শিশুখাদ্যে বাড়তি চিনি যুক্ত করার আইন লঙ্ঘনের এই ঘটনা কেবল এশিয়ান, আফ্রিকান এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক থেকে একজন শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার পরিবেশন করা হয়, তাতে প্রায় ৩ দশমিক ৩ গ্রাম বাড়তি চিনি উপস্থিতি আছে।

পাবলিক আই বলছে, নেসলে সুইজারল্যান্ডে বাজারজাত করা তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনও চিনি ব্যবহার করে না। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোতে সেরেলাকে বাড়তি চিনি যুক্ত করে তারা।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নেসলের শিশুখাদ্য পণ্যের বিষয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গবেষণায় পাওয়া ফল একটি বৈজ্ঞানিক প্যানেলের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া যুগান্তরকে বলেন, খাদ্যে ভেজাল কিংবা দূষণের কারণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সব সময় ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। এক গবেষণায় নেসলের দুটি পণ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে। এটা আমরা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। বিএসটিআই’র মানদণ্ডে পরিমাপ করব। সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা সামনে এলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে পণ্য দুটি বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সুপারিশ করব। এছাড়া মামলা করারও সুযোগ আছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নেসলে ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্রর সঙ্গে কথা বলেছে। ওই মুখপাত্র বলেছেন, তারা গত পাঁচ বছরে নেসলের শিশুখাদ্যে যোগ করা চিনির পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়েছে। এছাড়া আরও কমিয়ে আনার বিষয়ে তারা পণ্যগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ভারতে নেসলের ১৫টি সেরেলাক শিশুখাদ্য থেকে একটি শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় তাতে গড়ে প্রায় ৩ গ্রাম চিনি থাকে। একই পণ্য জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে বিক্রি করা হচ্ছে বাড়তি চিনি ছাড়াই। অন্যদিকে ইথিওপিয়া ও থাইল্যান্ডে এই চিনির পরিমাণ প্রায় ৬ গ্রাম।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই সূত্র জানায়, এটি অন্য দেশের তৈরিকৃত পণ্য। তবে এগুলো আমাদের দেশের মানদণ্ড অনুযায়ী এক নাও হতে পারে। সেরেলাক ও নিডো যদি দেশের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী মান ঠিক রেখে পণ্য তৈরি করে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যেহেতু একটি প্রতিবেদনে ক্ষতির বিষয়টি এসেছে, তাই এই বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে দেখা হবে। যদি কোনো ক্ষতিকারক কিছু থাকে, তাহলে পদক্ষেপ নেব।

;

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ঈদ পরবর্তীত বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নিত্য পণ্যের দাম চড়া। ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও ঊর্ধ্বমুখী শাক সবজি ও মাছের দাম। বিশেষ করে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কাওরান কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

কাওরান বাজারের খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আজকে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা কেজি, রসুন ২০০-২২০ টাকা কেজি, আদা ২০০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ৮০-১২০ টাকা কেজি, ধনেপাতা কেজি ১০০টাকা আর আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। লেবুর হালি ৩০-৪০ টাকা।

এছাড়া শবজির বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও দাম আগের মতোই চড়া ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নাই। মিষ্টি কুমড়া ৪০, মুলা ৫০-৬০, পটল ৭০ _১২০, বেগুন ৬০ টাকা,বরবটি ৮০,  জালি প্রতি পিছ ৬০ টাকা, ভেন্ডি ৬০ টাকা কেজি, টমেটো ৫০ শশা ৫০, লাউ প্রতি পিস ৭০-৮০ করলা ১২০ টাকা, করলা ৬০-৭০, বাধাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, গাজর ৬০, ক্যাপসিকাম ৪৫০ টাকা।

তবে মাছ মাংসের বাজারে দাম এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানায় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ক্রেতারা বলছে মাছের গায়ে হাত দেয়া যায় না। বাজারে আজকে দেশি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা কেজি, মলা মাছ ৭০০ টাকা কেজি, নদীর চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা কেজি, এবং চাষের চিংড়ি ৭০০টাকা কেজি, আইর মাছ ৮০০টাকা কেজি,কাতল ৭০০ টাকা, দেশি বড় বোয়াল ১২০০ টাকা, কোরাল মাছ ১০০০ টাকা। আর ৫০০গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা কেজি।মুরগী ২১০ টাকা, গরু ৭৫০-৭৮০ টাকা,

কল্যাণপুর থেকে কাওরান বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন সুফিয়া বেগম। তিনি জানান ৫ হাজার টাকা নিয়ে এসেছি বাজারে। মাত্র ৫ জনের সংসারের বাজার করতে ইতিমধ্যে বাজারের প্রায় অর্ধেক টাকা শেষ হয়েছে শুধু মাছ কিনতে। এখনো সবজি ও ঘরের অন্যান্য বাজার করা বাকি। আগে যেখানে মাত্র ৩ হাজার টাকায় সপ্তাহের পুরো বাজার শেষ হয়ে যেতো সেখানে এখন ৫ হাজার টাকা দিয়ে কোনমতে টেনেটুনে সংসার চালাতে হচ্ছে তাকে। কাওরান বাজারে কিছুটা কম দামে কিনতে আসলে দামের পার্থক্য এলাকার বাজারের চাইতে খুব একটা কম না। তবে টাটকা পণ্য পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায় বলে তিনি জানান। বাজারের  ভয়াবহ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুইজনে মিলে কামাই করেও এখন অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে সংসারের চাহিদা মেটাতে।

কাওরান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী লতিফ বার্তা২৪.কম’কে জানান, বাজারে সরবরাহ আছে কিন্তু চাহিদার তুলনায় কম। তাই বেড়েছে সকল মাছের দাম। দেশি মাছের চাহিদা বেশি থাকায় তার দাম একটু বেশি। তবে চাষের মাছের দাম আগের মতোই আছে।

;

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে একভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

;