‘চাটুকারিতা কখনোই উপাচার্যের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না’

  • জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি- বার্তা২৪.কম

ছবি- বার্তা২৪.কম

আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব ও গবেষণা নির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় চাই। তবে সে পরিবেশ কীভাবে তৈরি হবে সেটাই মুখ্য বিষয়। অবশ্যই ‘কোয়ালিটির’ ক্ষেত্রে কখনোই কম্প্রোমাইজ করা যাবেনা, বহির্বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বিষয়ে খুবই সচেতন। উপাচার্যকে হতে হবে আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন, একাডেমিক যোগ্যতাসম্পন্ন, চাটুকারিতা কখনোই উপাচার্যের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।

কথাগুলো বলছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক শাহ নিসতার জাহান কবির।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল চারটায়  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্বিবদ্যালয়ের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পচন ধরেছে। এজন্য ছাত্রদের আন্দোলনে আমি কোনো ভাইস চ্যান্সেলরকে দেখলাম না, যে বলবে ‘স্টপ’। আমার শিক্ষার্থীদের বুকে গুলি চলবে না। আমি এমন ভিসি চাই, যার নিষ্ঠা, প্রজ্ঞা, পড়াশোনা ও গবেষণা আছে। বাইরে থেকে কেউ আসলেও কোনো সমস্যা নাই, যদি তিনি মানুষ হন।

বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতির বাজারে আপনাদের এক একজন শ্রমিক তৈরি করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বিশ্ব বাজারের পণ্য হলে চলবে না। সত্যিকারের চিন্তা কাঠামোর পরিবর্তন এনে বুঝতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়ছি? এখানে জ্ঞান চর্চা ও বিকাশ হচ্ছে না । আপনাদের প্রশ্ন করতে হবে- যারা ক্ষমতায় থাকবেন।

ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে সেমিনারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ নিজার আহমেদ বলেন, শিক্ষক রাজনীতি আসলেই সমস্যা। বর্তমানে দাবি উঠেছে শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ ও আগের সরকারের আমলে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের চাকুরী থেকে বাদ দেওয়ার। কিন্তু এটা ভুল হবে। কারণ সবাইকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। আবার যাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে, এটা কাম্য নয়।

অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতি জটিল বিষয়। ১৮ বছর বয়সে ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফলে তারা রাজনীতি করতে পারবে না, এটা ঠিক না। তবে রাজনীতির ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেন। এটাকে বলবো বিরাজনীতিকরণ। এর সমাধান হলো, যারা রাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন থাকবে, তারা ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করতে পারবে না। তবে বিভিন্ন ক্লাবভিত্তিক কাজ করতে পারে।

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমার এমন উপাচার্য চাই যিনি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক এক্সিলেন্স নিশ্চিত করবে। আমরা সবার মত ও পথকে সম্মান করেতে চাই। যার ইচ্ছা বাউল গান করবে, যার ইচ্ছা কাওয়ালী করবে, যার ইচ্ছা প্রগতিশীলতার চর্চা করবে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে তর্কের জায়গা। তর্কের মাধ্যমে একে অপরকে অবনত করবে। তাই আগামীদিনে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় চাই।