ঢাবিতে 'সেকেন্ড টাইম' ভর্তি পরীক্ষা চালুর দাবি, উপাচার্যকে চিঠি

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাবিতে 'সেকেন্ড টাইম' ভর্তি পরীক্ষা চালুর দাবি/ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাবিতে 'সেকেন্ড টাইম' ভর্তি পরীক্ষা চালুর দাবি/ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয়বারের মতো (সেকেন্ড টাইম) ভর্তি পরীক্ষা চালুর দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে এইচএসসি ব্যাচ-২০২৩ এর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়।

বিজ্ঞাপন

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিতে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব কায়সার এর নিকট স্মারকলিপিটি জমা দেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা কলেজের এইচএসসি-২০২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহানুর ইসলাম সোহান দ্বিতীয়বারের মতো ভর্তি পরীক্ষা চালুর দাবিতে বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্র ২য় বার পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে ছিলো কিন্তু বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যে যুক্তিগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। তাই, সেকেন্ড টাইম চালু না করাটাকে আমরা বৈষম্য মনে করি। আমরা আশা করি নতুন ভিসি স্যার আমাদের দাবি মেনে নেবে।

বি এ এফ শাহীন কলেজের এইচএসসি-২০২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফা চৌধুরী বলেন, আমাদের পড়াশোনার জন্যে সময় দরকার। এইচএসসি-২০২৪ ব্যাচ এর রেজাল্ট দিয়ে দিলে আমাদের জন্য সময় থাকবে না। তাই আমরা ভিসি স্যারের কাছে একটি সময়সীমা চাচ্ছি।

উপাচার্যের উদ্দেশ্যে দেয়া স্মারকলিপিতে লেখা হয়েছে:

আপনি অবগত আছেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দুইবার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল, যা ২৭ তম উপাচার্য জনাব অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সময়ে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাতিল করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের পিছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক তিনটি কারণ দেখানো হয়েছে:

১. দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগের কারণে বিভাগ পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু আসন ফাঁকা থাকে।

২. প্রথম বছরের পরীক্ষার্থী ও দ্বিতীয় বছরের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হয়।

৩. দ্বিতীয় বারের পরীক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির সুযোগ নেয়।


প্রশাসন কর্তৃক দেখানো অযৌক্তিক কারণের বিপক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যুক্তি দেখানো হলো:

১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী যদি দ্বিতীয় বার পরীক্ষা দিয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয় অর্জন করে, তবে এটা তার মেধার পরিচয়। সে তার লক্ষ্য পূরণের পথে হাঁটছে। মেডিকেলসহ বাংলাদেশের সকল স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে, ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ মেধাভিত্তিক সম্মাননা "ডীন'স অ্যাওয়ার্ড" অর্জনে সক্ষম হয়েছে এবং বিশ্বে অন্যান্য স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।

২. অসম প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বিষয়টি বিশেষভাবে পর্যালোচনা করে যেন পুনরায় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়।

৩. দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন জালিয়াতির কথা তুলে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজ প্রশাসনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যার দায়ভার শিক্ষার্থীদের উপরে দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়” এ বিগত এক দশক যাবৎ দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়াতে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর মেধা ও যোগ্যতা যাচাই এবং শিক্ষার যথোপযুক্ত পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যেটা মোটেও কাম্য নয়। অনেক মেধাবী ও পরিশ্রমী শিক্ষার্থী যথেষ্ট গোছালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। অধিকন্তু, মানসিক বিপর্যয় ও পারিবারিক সংকট। এমতাবস্থান্য প্রতিকূলতার দরুন অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ব্যর্থ হয় অথবা আশানুরূপ ফলাফল করতে পারে না। প্রেমতাবস্থায় একজন শিক্ষার্থীকে একবার সুযোগ দেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক বৈ কিছু নয়। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও এদেশের নাগরিকদের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল না।এমতাবস্থায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষাগ্রহণ তাদের পক্ষেক্ষা গ্রহণের সুযোগত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হলে আর্থবিদ্যায়ে অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রন্থের সুযোগ পাবে।

তাই এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকল বৈষম্য দূর হবে বলে আমরা আশাবাদী।