ইন্টারনেট সেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট কুবি শিক্ষার্থীরা

ইন্টারনেট সেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট কুবি শিক্ষার্থীরা
ধীরগতির ইন্টারনেট সেবার কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রায় চার বছর আগে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে স্থাপন করা হয় দ্রুতগতির ওয়াই-ফাই (ইন্টারনেট) সেবা। কিন্তু সম্প্রতি এই ইন্টারনেট সেবা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। ইন্টারনেটের ধীরগতি, সংযোগ হারিয়ে ফেলা এবং ওয়াই-ফাইয়ে যুক্ত হতে না পারার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর অর্থায়নে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) কর্তৃক ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন একাডেমিক ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ডরমিটরি, আবাসিক হলগুলোসহ কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করা হয়।
ইন্টারনেটে ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াই-ফাইয়ের অবস্থা খুবই বাজে। ওয়াই-ফাই নামে আছে, কোনো কাজে নেই। আমরা শিক্ষার্থীরা অনেক সময় ইন্টারনেট থেকে বই পড়তে হয়। কিন্তু ইন্টারনেটের কানেকশনই পাই না।’
তবে সবচেয়ে ভোগান্তিতে আছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত শেখ হাসিনা হল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বর্ধিতাংশে অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা হল উদ্বোধন হওয়ার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়নি হলগুলোতে। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই আলাদা ওয়াই-ফাই সংযোগ দিয়ে এবং মোবাইল ইন্টারনেট ক্রয় করে ব্যবহার করছে।
শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কাজী সাদিয়া মোন্নাফ অভিযোগ করে বলেন, হলে মোবাইল নেটওয়ার্কেরই অনেক সমস্যা, যেই কারনে ডাটা কেনা থাকলেও সেটা ঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় না। ওয়াই-ফাই থাকলে ক্লাসসহ যাবতীয় কাজ সহজেই করা যেত। ওয়াই-ফাই না থাকায় মাসে অনেক টাকা শুধু ডাটা কিনতেই চলে যায়।
অন্যদিকে কাজ শেষ হওয়ার অনেকদিন পার হয়ে গেলেও এখনো উদ্বোধন করা হয়নি বঙ্গবন্ধু হলের বর্ধিতাংশের।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু হলের বর্ধিত অংশের আবাসিক শিক্ষার্থী পারভেজ মোশাররফ বলেন, নির্মিত হওয়ার একবছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের হলের বর্ধিত অংশের এখনো উদ্বোধন করা হয় নাই। আবাসন সংকট নিয়েই শিক্ষার্থীরা থাকতে বাধ্য হয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবি আমাদের হলের বর্ধিতাংশের উদ্বোধন যেন অতিদ্রুত করা হয়। তাছাড়া আমাদের হলে ওয়াই-ফাই সংযোগ নেই, এই জন্যে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে দিন পার করছে।
এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের সহকারী নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম জানান, 'আমরা এটা দ্রুত দুই হলকে নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসবো। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওয়াইফাইয়ের গতি নিয়ে যে অভিযোগ তা অতিদ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি। এসব কাজের জন্য যে পন্যগুলো প্রয়োজন তা বাহির থেকে আমদানি করতে হয়। তাই একটু সময় লাগছে।'
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ধীর গতির ইন্টারনেট নিয়ে যে অভিযোগ তা আমরা অতিদ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের উন্নত মানের ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে চাই। এলসিগুলো সিঙ্গাপুর থেকে আসবে, তাই একটু দেরি হচ্ছে। তবে আশাকরি মার্চ-এপ্রিল মাস থেকে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট সেবা ভোগ করতে পারবে। একটু দেরি হলেও ভালো মানের সেবা পাবার আশায় আমরা অপেক্ষা করছি।