ফেসবুকে হাহা রিয়েক্টকে কেন্দ্র করে শেকৃবিতে মারামারি, আহত ৫
শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ফেসবুকে হাহা রিয়েক্টকে কেন্দ্র করে শেকৃবিতে মারামারি, আহত ৫
ক্যাম্পাস
বঙ্গনীতি এবং জুনিয়র তোলা নিয়ে ফেসবুক পোস্টে হাহা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাতজুড়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব সিরাজউদ্দৌলা আবাসিক হলের ঢাকা অঞ্চল এবং কুমিল্লা অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি হয়। এসময় ঢাকা অঞ্চলের ২১ ব্যাচের রাকিব, ওয়ালিদ সহ চারজন এবং কুমিল্লা অঞ্চলের রোফি ওসমানি নামের একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
২০ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) রাতজুড়ে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা এবং কুমিল্লা অঞ্চলের মারামারি এবং ঝামেলার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা একে অপরকে অভিযুক্ত করে এবং শেরেবাংলা নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে বলে উল্লেখ করে।
শেরেবাংলা নগর থানার এসআই সাব্বির আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘মধ্যরাতে গণরুমে মারামারির ঘটনায় দুইপক্ষেরই লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ঘটনা, সেখানকার প্রক্টর ঘটনাটি জানেন। তিনিই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনা স্থলে উপস্থিত এক শিক্ষার্থী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জুনিয়র তোলা নিয়ে মূলত ঢাকা এবং কুমিল্লা অঞ্চলের মধ্যে ঝামেলা অনেক আগে থেকে। জুনিয়র তোলা নিয়ে ফেসবুকে কুমিল্লা অঞ্চলের ২১ ব্যাচের কয়েকজন পোস্ট দিলে সেই পোস্টে হাহা রিয়েক্ট দেয় ঢাকা অঞ্চলের ২১ ব্যাচের মুশফিক, এনামুল হাসনাত সহ অনেকে। পরে দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে জেলা বন্টন নিয়ে আলোচনা করতে গেলে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির সময় সিনিয়র জুনিয়রদের মধ্যে হাতাহাতি পর্যায়ে চলে যায়। এসময়ে দুই অঞ্চলের পাঁচজনের অধিক মারাত্মক ভাবে আহত হয়।’
পরিস্থিতি খারাপ অবস্থায় গেলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের সহকারী প্রোভোস্ট, হলের ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর হারুন উর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘নবাব সিরাজুদ্দৌলা হলে রাতে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। এই বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত আছি, রাতে হলের প্রোভোস্ট, সহকারী প্রোভোস্ট ঘটনা স্থলে উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা। আমরা আজ রাতে বসব যদি তদন্ত কমিটি গঠন করার প্রয়োজন হয় করব এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিব। তবে দুই পক্ষের কেউই লিখিত কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে দেয় নি।থানায় তারা অভিযোগ দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমরা অবগত না’।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা পর এবার অছাত্র ও বহিষ্কৃতদের সোমবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নুর আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
জরুরী বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'জানানো যাচ্ছে যে, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ ও তার আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া যেসব শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে, এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন আবাসিক হলসমূহে অবস্থান করছেন তাদেরকে আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।'
'এছাড়া বিভিন্ন সময় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যারা বহিষ্কারাদেশের আওতায় রয়েছে তাদেরকেও একই সময়ের মধ্যে হল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।'
নির্দিষ্ট সময়ের পর এ ধরনের কাউকে হলে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
এর আগে, রোববার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
সম্পাদকের লেখা ‘কপি করে’ ১৭ বছর পর বিদায় বললেন চবি ছাত্রলীগ সভাপতি!
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
রেজাউল হক রুবেল
ক্যাম্পাস
চার বছর আগে রেজাউল হক রুবেলের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হওয়ার খবরে-বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন সবাই। কেননা, রুবেল তখন পর্যন্ত ছিলেন না কোনো অগ্রগণ্য নেতা। সংগঠনের কর্মসূচিতেও সামনের সারিতে তেমন একটা দেখা যেত না তাঁকে। আবার বয়সটাও পক্ষে ছিল না এই নেতার। কেননা ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হওয়া রুবেলের যে ছাত্রত্বই ছিল না তখন। সংগঠন পরিচালনার জন্য যেসব যোগ্যতা ও গুণ থাকা দরকার সেসব অনুপস্থিত থাকলেও কোনো কিছুই সভাপতি হতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাঁর সামনে।
এমন একজনকে সভাপতি করা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন হতাশ হলেও আশা করেছিলেন, বড় দায়িত্ব পাওয়ার পর হয়তো বদলে যাবেন রুবেল। পদের সম্মান হয়তো তিনি ধরে রাখবেন। কিন্তু সেই আশায়ও গুঁড়েবালি। বরং ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে আসীন হওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন রুবেল। কখনো নারী নিয়ে আবাসিক হোটেলে রাত্রী যাপন, কখনো আবার অধীনস্ত নেতা-কর্মীদের দিয়ে পা টেপানো, কখনোবা অশ্লীলভাবে হলের কক্ষে শুয়ে থাকা, নারী শিক্ষার্থীদের ইঙ্গিতপূর্ণ খুদে বার্তা পাঠানোর স্ক্রিনশট-ছবি ভাইরাল হওয়া থেকে নারী লাঞ্ছিতকারীদের পক্ষে নেওয়া-বারবার বিতর্ক সঙ্গী হয়েছে রুবেলের। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে এক সময়ের ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীরাও রুবেলকে ছেড়ে যাওয়ায় তিনি হয়ে পড়েন একা। এক পর্যায়ে ক্যাম্পাস থেকেই ‘আউট’ হয়ে যান তিনি। পরে ক্যাম্পাসে গোপনে ফিরলেও নিজ পক্ষের নেতা-কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় তাঁকে।
সম্পাদকের লেখা ‘কপি করে’ ১৭ বছর পর বিদায় বললেন চবি ছাত্রলীগ সভাপতি!
নানা ঘটনার জের ধরে গত তিনদিন ধরে ক্যাম্পাসে একের পর এক সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকটি পক্ষ। এর মধ্যেই সংবাদ প্রকাশের জের ধরে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রুবেলের অনুসারীরা প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেনের ওপর হামলা চালায়। এর পর পরই গত কয়েকদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এতে ছাত্রলীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে।
এদিকে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর সন্ধ্যা ছয়টায় নিজের ফেসবুকে ‘বিদায়ী বার্তা’ দেন রেজাউল হক রুবেল। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সই করা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার বিজ্ঞপ্তিতি শেয়ার করে রুবেল লেখেন, ‘আবারও দেখা হবে নতুন কোনো প্রান্তে। সবার জন্য শুভকামনা রইল। চলার পথের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ বিদায়ী বার্তায় রুবেলের লেখা এই কথাগুলো নিয়েই নতুন করে হাস্যরস হচ্ছে। কেননা, একই কথা যে বিকেল চারটার সময়ই নিজের ফেসবুকে লিখেছেন বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু। রুবেলের এই ‘কপি পেস্ট’ নিয়ে তাই মজা করছেন অনেকেই।
রুবেলের পোস্টের নিচে বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ লিখেছেন, ‘শেষ লেখাটুকু নিজে লিখতে পারলেন না। সেটাও কপি করতে হইল।’
ছাত্রলীগ কর্মী মো. সুমন সরকারও প্রায় একই কথা লিখেছেন। তিনি লেখেন, ‘শেষ অব্দি অন্যের ক্যাপশনটাও কপি করে দিলেন ভাই।’ একই কমিটির সহসভাপতি রাকিবুল হাসান দিনার অবশ্য রুবেলের সমালোচনা করেছেন ইউনিটকে বারবার বিতর্কিত করা নিয়ে। তিনি লেখেন, ‘ইউনিটটার মান ইজ্জত শেষ কইরা গেলা।’
বারবার বিতর্ক:
রেজাউল হক ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তিনি ২০১০ সালে স্নাতক ও ২০১৩ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের ছয় শিক্ষাবর্ষের মধ্যে স্নাতক শেষ করতে হবে। আর দুই শিক্ষাবর্ষের মধ্যে স্নাতকোত্তর। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ আট বছর ক্যাম্পাসে থাকতে পারবেন। কিন্তু রেজাউল প্রায় ১৭ বছর ধরে ক্যাম্পাসে আছেন।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান রেজাউল। অথচ এর ৬ বছর আগেই তাঁর ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এ পদের মেয়াদ এক বছর হলেও তিনি সভাপতির পদে ছিলেন প্রায় ৪ বছর। এই চার বছরে বারবার বিতর্ক সঙ্গী হয়েছে রুবেলের্
গত বছরের ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেছিলেন পাঁচ তরুণ। এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত আজীম হোসেন। তিনি রেজাউলের অনুসারী ছিলেন। এ ঘটনায় আজীমকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
নিপীড়নের শিকার ছাত্রীর ভাষ্য, আজীমকে বাঁচাতে ঘটনা আড়ালের নানা চেষ্টা চালিয়েছিলেন রেজাউল। প্রক্টর কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়া ও মামলা করতে রেজাউল তাঁকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন। এ নিয়ে তখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এই বিতর্ক শেষ হতে না হতেই গত ২০ মার্চ রেজাউলের একটি ছবি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয় সারাদেশে। ছবিতে দেখা যায়, রেজাউল হলের কক্ষের বিছানায় শুয়ে মুঠোফোন দেখছেন। দুই পাশে বসে তাঁর পা টিপছেন শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা শামীম আজাদ ও শফিউল ইসলাম। রেজাউলের দাবি, তিনি অসুস্থ থাকায় দুই নেতা তাঁর ‘সেবা’ করছিলেন। এরপর গত ১ জুন উপ দপ্তর সম্পাদক রমজান হোসেনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছিল রেজাউলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে রেজাউলের একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। একই সময়ে নিজের হলের কক্ষে কাপড় ছাড়া শুয়ে থাকা রুবেলে একটি ব্যক্তিগত ছবিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। এর আগে ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর এক তরুণীকে নিয়ে নগরীর আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডের একটি আবাসিক হোটেলে রাত কাটিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন রুবেল। তখন নারী নিয়ে হোটেলে প্রবেশ করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রুবেল অপ্রপচার বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত রুবেলকে ১৭ বছর পর ক্যাম্পাস ছাড়তেই হচ্ছে। কিন্তু সেই বিদায় বেলাতেও কপি-পেস্ট করে হাসির পাত্র হলেন তিনি।
কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পেছনেও রুবেলের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডকে দায়ী করছেন সাধারণ সম্পাদক পক্ষের অনুসারীরা। নাম প্রকাশ না করে এই পক্ষের দুজন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরাও চেয়েছিলাম এই শাখায় নতুন কমিটি হোক। কিন্তু এভাবে বিতর্কিতভাবে কমিটি বিলুপ্ত হোক সেটা চাইনি। মূলত রুবেলের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সারাদেশের কাছে এই ইউনিটের মানসম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বক্তব্যেও নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে যে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে, সেটির আঁচ পাওয়া গেছে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সাম্প্রতিককালে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আমাদের দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শের পরিপন্থী। ইতিবাচক ছাত্ররাজনীতি আমাদের প্রত্যাশা। সেটির ব্যত্যয় হওয়ায় আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি-২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সংগঠনের সদ্য সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ বাসার ও সাধারণ সম্পাদক সাফায়িত সিফাত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
এতে সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক রূপসী বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইকবাল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ডেইলি সানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি কাতিব হাসান মুরাদ।
এদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে 'নতুন কমিটি ঘোষণা ও দায়িত্ব হস্তান্তর-২০২৩' অনুষ্ঠানে এই কমিটি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন।
১১ সদস্যের এ কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন- দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি; বিল্লাল হোসেন স্বাধীন, সাম্প্রতিক দেশকালের শারমিন আক্তার কেয়া, যুগ্ম সম্পাদক সংবাদপ্রকাশের আবু সাঈদ ও দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের জাভেদ রায়হান। অর্থ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে- দৈনিক ভোরের আকাশ ও রাইজিং বিডির এমদাদুল হক, দপ্তর সম্পাদক চ্যানেল২৪ এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইমতিয়াজ হাসান রিফাত। তথ্য ও পাঠাগার সম্পাদক দায়িত্ব পেয়েছেন বার্তা২৪.কম এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অনন মজুমদার, কার্যনির্বাহী সদস্য-১ দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রার ফাতেমা রহিম রিন্স, কার্যনির্বাহী সদস্য-২ দৈনিক ভোরের দর্পনের আল-আমিন হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সাংবাদিকতা এমন একটা পেশা যা সম্পূর্ণভাবে স্বচ্ছ। কারণ, তারা যা জানে এবং প্রমাণ পায় তার থেকেই সংবাদ করে৷ এর মতো নির্ভীক পেশা আর আছে কিনা জানিনা। তাই সাংবাদিকদের আহ্বান করি, সততার সাথে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরেন৷’কুবি প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে ইকবাল-মুরাদ
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, 'সাংবাদিকতা একটি আদর্শ পেশা বলে মনে করি। কিন্তু এই আদর্শ পেশাটিও নষ্ট হচ্ছে এমন কিছু মানুষের কাছে গিয়ে যারা এর মর্যাদা দিতে জানে না। তারা জানে না কীভানে সম্মান দিতে হয়। সততা ও দায়িত্বশীলতার সাথে এই মহান পেশার সম্মান করতে হবে৷ প্রমাণের বাইরে নিজে থেকে কিছু লিখে দিলে তো আর সেটা সংবাদ হয় না।'
তিনি আরও বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আর সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি৷ এপিএ-তে এখন দশম স্থানে আছি, সামনেরবার প্রথম স্থানে নিয়ে আসবো। আমার শিক্ষার্থীরা এতে সহযোগিতা করবে বলে আমার বিশ্বাস।'
সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি সাজ্জাদ বাসার বলেন, 'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব আমার আবেগের জায়গা। এদের যোগ্যতা আমি জানি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে এরা সর্বোচ্চ কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ যদি দূর্নীতি করে সেটা যেমন আমরা লিখবো, তেমনি উন্নয়নের সংবাদও ফলাও করে প্রচার করবো।'
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. হুমায়ুন কবির, আইকিউএসি'র পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ, ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড.মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে শাবিপ্রবির উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিভিন্ন বক্তব্যকে নারী বিদ্বেষমূলক ঘোষণা করে তার অপসারণের দাবিতে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের আচরণ মোটেই ভিসিসুলভ নয়। বর্তমানে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারগুলোতে বসে আছেন তাদের বেশিরভাগই দুর্নীতিগ্রস্থ। বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে কোনো সরকারের অপকর্ম ঢাকার জন্য না। কিন্তু বর্তমান ভিসিরা এই কাজটাই করেন। গতবছর বাকি ৩৪টা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি তার পক্ষে দাড়ায়। এর থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার কী অবস্থা।
ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি বিল্লাল হোসেন বলেন, সাস্টের ভিসির আচরণ সম্পুর্ন নারী বিদ্বেষমূলক এবং তালেবানি। এর আগে তিনি তার বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদেরকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছেন। ভিসি ফরিদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো স্টেটমেন্ট এখনো আমরা পাইনি। সরকারি লোক বলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অথচ এক রিকশাওয়ালাও যদি খাবার পায় না বলে একটা 'স্টাটাস' দেয় পুলিশ তাদের ঘরের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে থাকে।
ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মাহিন আহম্মেদ বলেন, যে রাষ্ট্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নারী বিদ্বেষমূলক কথা বলে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীদেরকে নিয়ে খারাপ উক্তি করতে পারে সেই রাষ্ট্র আমরা চাই না। একদিকে তালেবানি সংস্কৃতির প্রচার করবেন এই ভিসিরা আর আরেকদিকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে সংকটের সৃষ্টি করে।