বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও জনসচেতনতা প্রয়োজন



মোস্তফা কামাল পাশা

  • Font increase
  • Font Decrease

 

কবির ভাষায় ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। এই উপলব্ধিটা সর্বকালে সর্বদেশে একই রকম। বিধাতা আপন হাতে প্রকৃতিকে সৃষ্টি করে সেখানে এমন এক ভারসাম্য তৈরি করে দিয়েছেন যাতে এই প্রকৃতির সন্তান হিসেবে প্রতিটি প্রাণী সহজে অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় অগ্রসরমান সভ্যতা ও মানুষের অপরিমিত বাসনার কারণে এখন প্রকৃতি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত প্রাণীকুল।

প্রাণীকুল প্রকৃতির অপরিহার্য অংশ এবং সম্পদও বটে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্যই আমাদের বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হবে। কারণ প্রকৃতি না বাঁচলে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে ৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্যা কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর উদ্যোগে জাতিসংঘের ৮০টি সদস্য দেশের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কনজারভেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেনজারড স্পেসিস অব ওয়াইল্ড ফ্লোরা অ্যান্ড ফনা (সিআইটিইএস) সনদ অনুমোদিত হয়। এই সনদে ৩৪ হাজার প্রাণী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় ৩ মার্চকে ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস’ ঘোষণা করা হয়। এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো বন্যপ্রাণী সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণের জন্য বিশ্ববাসীকে সোচ্চার করে তোলা। সেই থেকে জাতিসংঘ প্রতিবছর বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উদযাপন করে আসছে।

সারা বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ন, বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার, বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা, বন ও বনভূমি হ্রাস এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে। বাংলাদেশে একসময় প্রচুর বন্যপ্রাণী ছিল। আমাদের অজ্ঞতা ও অবহেলার কারণে গত কয়েক দশকের ব্যবধানে আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বেশ কয়েক প্রজাতির বন্যপ্রাণী। এদের মধ্যে আছে একশিঙ্গা গণ্ডার, বারশিঙ্গা, প্যারা হরিণ, রাজশকুন, বাদিহাঁস, গোলাপি শিরহাঁস, ময়ূর, মিঠাপানির কুমির, হকস্ বিলড্ টারটেল ইত্যাদি।

বাংলাদেশ বন বিভাগ দেশে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করছে। ১৯২৭ সালের বন আইনকে যুগোপযোগী করা হচ্ছে। ১৯৭৩ সালের বন্যপ্রাণী আইনকে সংশোধন করে ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন -২০১২’ প্রণয়ন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী আইনে দণ্ড ও শাস্তির বিধান বাড়ানো হয়েছে।

গত এক দশকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বাংলাদেশ বন বিভাগ বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বন অধিদপ্তর ‘স্ট্রেংদেনিং রিজিওনাল কো-অপারেশন ফর ওয়াইল্ডলাইফ প্রোটেকশন’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের আওতায় বন্যপ্রাণী উইং সৃষ্টি করা হয়েছে। রাজশাহী, রংপুর ও হবিগঞ্জে তিনটি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী পাচার ও নিধন বন্ধের লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে ঢাকায় এবং সকল বিভাগীয় শহরে ‘বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট’গঠন করা হয়েছে।

বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার বন্ধের লক্ষ্যে বন বিভাগ, পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, কাস্টমস ও বিজিবি’র সমন্বয়ে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আহত ও উদ্ধারকরা বন্যপ্রাণীকে চিকিৎসাসেবা দিতে চারটি ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট ও হটলাইন চালু করা হয়েছে। বন বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গাজীপুর শাল বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক পরিবেশে আন্তর্জাতিক মানের ‘ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে ৪১টি এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা বা প্রোটেকটেড এরিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৭টি জাতীয় উদ্যান, ২০টি অভয়ারণ্য, একটি ইকোপার্ক, দুটিটি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা ও মেরিন প্রোটেকটেড এলাকা। বন্যপ্রাণীর বংশ বিস্তার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে কক্সবাজার ও গাজীপুরে দুইটি সাফারি পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। ২২টি সংরক্ষিত এলাকাতে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে সহযোগী ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ওই সব এলাকায় বিশেষজ্ঞ দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে। সারাদেশে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও ইকো ট্যুরিজমকে সমৃদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় ‘বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও আবাসস্থল উন্নয়ন’ প্রকল্পের কাজ চলমান।

ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের গ্রহণযোগ্য বৈজ্ঞানিক ‘ক্যামেরা ট্র্যাপিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। নিয়মিতভাবে বাঘ মনিটরিং কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সুন্দরবনের চারপাশের গ্রামগুলোতে বন বিভাগ ও স্থানীয় জনসাধারণের সমন্বয়ে ‘টাইগার রেসপন্স টিম’ গঠন করা হয়েছে, যাতে লোকালয়ে বাঘ দেখামাত্র খবর আদান-প্রদান ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

সরকার ২০১০ সালে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত শিক্ষা, গবেষণা ও বিশেষ অবদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ পদক চালু করে। বাঘ ও হাতির আক্রমণে নিহত ও আহত পরিবারকে সহায়তাদানের জন্য ২০১০ সালে ‘বন্যপ্রাণীর আক্রমণে জানমালের ক্ষতিপূরণ নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হয়। ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আক্রমণে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে এক লাখ ও আহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫০ হাজার করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ২০১১-২০১৬ মেয়াদে ৪২১টি পরিবারের মধ্যে দুই কোটি ২৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান দেওয়া হয়েছে।

ফসলের বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ এবং রাশি রাশি বৃক্ষে ঘেরা নিরিবিলি, ছায়া সুনিবিড় অসংখ্য গ্রামের সমাহার হচ্ছে আমাদের এই বাংলাদেশ। এক সময় বাংলাদেশ ছিল বিপুল বনরাজির ভাণ্ডার। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ন ও অবাধ বৃক্ষনিধনের ফলে সেই সম্পদ আজ নিঃশেষিত প্রায়। এছাড়া লাগামহীন বৃক্ষনিধনের ফলে বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যাচ্ছে দ্রুত, বাড়ছে সিসার পরিমাণ, বিলুপ্ত হচ্ছে নানা প্রজাতির পাখি ও বনজপ্রাণী। দেশে বনভূমি কমে যাওয়ায় শুধু বন্যপ্রাণী নয়, আবহাওয়ায়ও অস্থিরতা শুরু হয়েছে। শীত ও বর্ষা কমে গিয়ে গ্রীষ্মের দাপট বেড়ে গেছে শুধু দাপট নয়, গ্রীষ্মঋতু বসন্তকে প্রায় গ্রাস করে ফেলেছে।

এই অবস্থায়  বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বেশি বেশি করে বন সৃষ্টি করতে হবে, বন পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, বন্যপ্রাণী নিধনের ক্ষেত্রে আইনের কঠোরতা আরোপ করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, বন্যপ্রাণী নিধনের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করতে হলে প্রথমে বন সৃষ্টি করতে হবে এবং যে সব বন আছে সেগুলোকে ঠিকমতো পরিচর্যা করতে হবে। বন না থাকলে বন্যপ্রাণীর আশ্রয়ই থাকবে না। তাই সাধারণ মানুষ সচেতন হলে সহজেই বন্যপ্রাণীদের রক্ষা করা সম্ভব। সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে বন সৃষ্টি ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল নির্মাণ করা সম্ভব। দেশ ও জাতির স্বার্থেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা দরকার। বন্যপ্রাণী যাতে নিশ্চিহ্ন হতে না পারে সেদিকে সবার নজর দেওয়া জরুরি।

বন ও বন্যপ্রাণী আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমাদের বন্যপ্রাণী আজ হুমকির সম্মুখীন। অহরহ বৃক্ষ ও বন্যপ্রাণী নিধন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরকম একটি বিরাজমান পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকার বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য একটি যুগান্তকারী আইন প্রণয়ন করেছে। তবে আইন প্রণয়নই শেষ কথা নয়, প্রয়োজন আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং জনসচেতনতা তৈরি করা। দেশ ও জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রের যুগপৎ ভূমিকা এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।

   

দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গুনগুন পরিবহন ও যাতায়াত পরিবহনের দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দেলোয়ারা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন ।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বার্থী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন ।

তিনি বলেন, দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই এক নারী যাত্রী নিহত হয়েছেন। তার সঙ্গে থাকা পাসপোর্টে পরিচয় পাওয়া গেছে। তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে গৌরনদী থানায় আনা হচ্ছে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট উদ্ধারকাজ করছে। বর্তমানে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে।

;

‘বিদেশি পর্যবেক্ষক আসুক আর না আসুক, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদেশি পর্যবেক্ষক আসুক আর না আসুক, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, নির্বাচনটা হচ্ছে আমাদের, ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকারসহ যে সমস্ত নির্বাচন হয়েছে সেগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। আমাদের নির্বাচন কেউ পর্যবেক্ষণ করল, কি করলো না এতে কিছুই আসে যায় না। এটি নিয়ে বিএনপিকেও আর দেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ দেয়া হবেনা।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনস্থ ওয়াইএনটি সেন্টারে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইইউ’র প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা উপস্থিত ছিলেন।

ভারতে যখন নির্বাচন হয় তখন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা সেখানে যান কিনা এমন প্রশ্ন রেখে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আর সেখানে এটি নিয়ে এত কথাবার্তা হয়? কিংবা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যখন নির্বাচন হয় সেখানে কি আমাদের দেশ থেকে কিংবা অন্য কোন দেশ থেকে পর্যবেক্ষক যাই? যাই না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশেই নির্বাচন আসলে কে পর্যবেক্ষণ করল, কে করলো না এগুলো নিয়ে নানা মাতামাতি হয়। যদি বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসেন, তাহলে তাদের স্বাগত জানাই, না আসলেও কোন অসুবিধা নাই। কেউ পর্যবেক্ষণ করল কি করলো না এতে কিছুই আসে যায় না। ইতিমধ্যে আমাদের দেশে স্থানীয় সরকারসহ যে সমস্ত নির্বাচন হয়েছে সেগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। আগামী নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এবং নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে ইনশাল্লাহ।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছোট আকারের পর্যবেক্ষক দল পাঠাবেন বলে বলেছে। তাদের বাজেট স্বল্পতার কথাও তারা চিঠিতে উল্লেখ করেছে। ইইউ’র পর্যবেক্ষক যে আকারেই আসুক বা না আসুক আমাদের দেশে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম আছে, সার্কভুক্ত বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবে। সুতরাং আমাদের নির্বাচন আমরাই করব, আমাদের নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।

বিএনপি লংমার্চ কর্মসুচিতে হরতাল অবরোধের মতো কঠিন কর্মসূচির জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন, এব্যাপারে আওয়ামী লীগ এবং সরকারের প্রস্তুতি কি আছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া অবরোধের ডাক দিয়ে দেশের মানুষকে এক’শদিন অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। পেট্টোলবোমা নিক্ষেপ করে শতশত মানুষ পুড়িয়েছিল, হাজার হাজার মানুষকে ঝলসে দিয়েছিল আগুনে। 

তিনি বলেন, দেশে এধরণের নৃশংস ঘটনা বিএনপি আর করতে পারবে না, দেশের মানুষ করতে দিবে না। সেই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা করলে দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে- বলেন তথ্যমন্ত্রী।

;

নিখোঁজের ১৮ দিন পর এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে নাইস মিয়ার মরদেহ ১৮ দিন পর নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় গঙ্গাচড়ার কচুয়া বাজারের পাশে সাপমারি ডাঙ্গেরপাড় এলাকায় তিস্তার ডুবোচরে নাইস মিয়া নামের ওই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ ভেসে ওঠে। স্থানীয়রা মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। এ ঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

নাইস ঘটনাস্থলের ১ কিলোমিটার উত্তরে নানাবাড়ি থেকে লেখাপড়া করতেন। স্থানীয় আনোয়ারমারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন তিনি।

গত ৬ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে ফুটবল খেলা শেষে কচুয়াঘাটে তিস্তা নদীতে গোসল করতে নামেন ছয় বন্ধু। প্রবল স্রোতে হাবুডুবু খেতে থাকেন তারা। এ সময় ঘাটে থাকা স্থানীয় লোকজন দুটি নৌকা নিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্তু চারজনকে জীবিত উদ্ধার করলেও মুন্না ও নাইস নামের দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হন। ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চালানোর পর সন্ধান না পাওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ করে দেয় ফায়ার সার্ভিস।

৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় ঘটনাস্থল থেকে সাত কিলোমিটার ভাটিতে মুন্নার মরদেহ উদ্ধার করেছিল এলাকাবাসী। তার বাড়ি আবাসন পাড়া এলাকায়। গঙ্গাচড়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিনি। আর ১৮ দিন পর মিলল নাইসের মরদেহ।

গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। দাফন কাফনের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১০ হাজার করে টাকা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সচেতনতা হিসেবে ঘাটগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

;

রাইস কুকারে দেড় কোটি টাকার সোনা, যুবক আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
রাইস কুকারে দেড় কোটি টাকার সোনা

রাইস কুকারে দেড় কোটি টাকার সোনা

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবৈধভাবে রাইস কুকারে লুকিয়ে নিয়ে আসা পৌনে দুই কেজি সোনাসহ মোহাম্মাদ আলী (৩৪) নামের এক যাত্রীকে আটক করেছে কাস্টমস কর্মকর্তারা। উদ্ধারকৃত সোনার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এসব সোনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে ছেড়ে আসা এয়ার এরাবিয়ার জি-৯৫২৬ ফ্লাইটে করে চট্টগ্রাম নিয়ে আসেন ওই যাত্রী।

আটক মোহাম্মাদ আলী চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে ছেড়ে আসা এয়ার এরাবিয়ার জি ৯৫২৬ ফ্লাইটে চট্টগ্রামে আসেন তিনি। পরবর্তীতে বিমানবন্দরে স্বাভাবিক স্ক্যানিংয়ে তার ব্যাগেজে সন্দেহজনক পণ্য থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। এক পর্যায়ে তার ব্যাগেজে থাকা একটি রাইস কুকারে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় ১ কেজি ৭০০ গ্রাম ২৪ ক্যারেটের কাঁচা সোনা ও ২২ ক্যারেটের ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর কাস্টমস ইউনিটের ডেপুটি কমিশনার মো. আহসান উল্লাহ বলেন, স্ক্যানিংয়ে ধরা পড়ার পর তার সঙ্গে থাকা রাইস কুকার থেকে এসব সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার সোনার বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

;