বিশ্বের শীতলতম পাঁচ দেশ



হেলাল নিরব, কন্ট্রিবিউটর
অনেক দেশ আছে যেখানে বছরের প্রায় সময়ই তাপমাত্রা অসহ্য পর্যায়ের ঠান্ডা থাকে

অনেক দেশ আছে যেখানে বছরের প্রায় সময়ই তাপমাত্রা অসহ্য পর্যায়ের ঠান্ডা থাকে

  • Font increase
  • Font Decrease

শীতের শুরুতে বেশ কয়েক দিনের হাড়কাপানো ঠান্ডা আর সারাদিনের টুপটাপ বৃষ্টিতে আমাদের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছিল। এখনো সারা দেশব্যাপী চলছে কম-বেশি শৈত্য প্রবাহ। শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় নানা ধরনের শীতকালীন অসুখ-বিসুখেও পড়ছে অনেকে।
তবে পৃথিবীর এমনও অনেক দেশ আছে যেখানে বছরের প্রায় সময়ই তাপমাত্রা অসহ্য পর্যায়ের ঠান্ডা থাকে। সারাদিনে সূর্যের মুখ দেখাও একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে বরফ। তেমনই পাঁচটি চরম পর্যায়ের শৈত্য আবহাওয়া পূর্ণ দেশের কথা থাকছে।

অ্যান্টার্টিকা

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401237778.jpg

অ্যান্টার্টিকা পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুতে অবস্থিত একটি দক্ষিণতম মহাদেশ। এটি সম্পূর্ণ দক্ষিণ মহাসাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত। ১৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ এ মহাদেশে জনসংখ্যা মাত্র পাঁচ হাজার জনের মতো। ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র  ০.০০০০৪ জন! এ অবস্থার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়, সেখানের শীতলতম ও শুষ্কতম পরিবেশ। এখানে তাপমাত্রার সর্বনিম্ন রেকর্ড -৮৯ ডিগ্রী (-১২৯ ফারেনহাইট)! বছরে স্বাভাবিক সময়েও তাপমাত্রা থাকে -৬৩ ডিগ্রি (-৮১ ফারেনহাইট)! এমন শীতল আবহাওয়ার কারণে এ মহাদেশকে শীতল মরুভূমিও বলা হয়। এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ মিলি মিটার! এ মহাদেশে পেঙ্গুইন, সিল, বিভিন্ন শৈবাল এবং তুন্দ্রা উদ্ভিদ এমন চরম তাপমাত্রায়ও ‘সারভাইব’ করে। মজার বিষয় হলো এ মহাদেশের কোনো নিজস্ব বাসিন্দা নেই। বিভিন্ন জায়গায় গবেষণা করার জন্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন দেশের জনগণ। আরো অবাক করা সত্য হলো, এটাই একমাত্র মহাদেশ, যেখানে কোনো দেশ বা দেশের কোনো রাজধানী নেই!

কাজাখস্তান

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401270913.jpg

পৃথিবীর নবম বৃহত্তম ও স্থলবেষ্টিত সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র কাজাখস্তান। রাশিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করা কাজাখস্তানের আয়তন ২.৭ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। তবে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ৫.৯৪! মাত্র ১ কৌটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার এই আপেলের দেশে রাশিয়ার চেয়েও বেশি শীত পড়ে। ভৌগলিক অবস্থান, বৈরী আবহাওয়া ও অনবরত তুষারপাতের ফলে জনজীবন প্রায়ই স্থবির হয়ে পড়ে। ৭০ শতাংশ মুসলমানের এই দেশে শীতের প্রকোপে প্রায়ই মৃত্যু ঘটে অনেক বাসিন্দার।

রাশিয়া

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401291959.jpg

রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম শীতল দেশ। এখানে বছরে  মাত্র  দুই মাসের জন্য সূর্যের মুখ দেখতে পাওয়া যায়। আর প্রায় সারাবছরই হিম শীতল ও শৈত্য আবহাওয়া থাকে। গরমকালেও এখানে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শীতকালে -১০ ডিগ্রিতে ওঠানামা করে। বৈচিত্র্যহীন এ অঞ্চলে আর্কটিক বরফাচ্ছন্ন, উচ্চভূমি এবং সারাদিন শৈত্য প্রবাহ চলার কারণে এখানে জীবনযাপন বেশ কষ্টকর। রাশিয়ার প্রায় অঞ্চলই বছরের ৮ মাস বরফাচ্ছন্ন এবং ১০ মাস শৈত্য প্রবাহ থাকে। এখানকার সাইবেরিয়ায় সারাদিনই শৈত্য প্রবাহ ও প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়তে থাকে। বিশাল এই রাশিয়া, পৃথিবীর স্থলভাগের আট ভাগের ১ ভাগ হলেও এমন ঠান্ডা আর প্রতিকূল পরিবেশের কারণে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ৮.৪ জন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়ে হিটলারের নাৎসী বাহিনীর কামান-গোলা এখানকার তীব্র ঠান্ডায় অকেজো হওয়ার ফলে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন /রাশিয়া সহজেই জার্মান সেনাদের পর্যদুস্ত করতে পেরেছিল। মজার বিষয় হলো, রাশিয়ায় গা গরম করতে গরম পোশাক পরার পাশাপাশি ভদকা (নেশা পানীয়) খাওয়া হয়।

গ্রিনল্যান্ড

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401315640.jpg

পৃথিবীর বৃহৎ দ্বীপ রাষ্ট্রের মাঝে গ্রিনল্যান্ড অন্যতম। উত্তর আটলান্টিক ও আর্কটিক মহাসাগরের মাঝের এই দ্বীপ দেশটি ডেনমার্ক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। গ্রিনল্যান্ড/ সবুজ ভূমি নাম হলেও সেখানকার শীতকাল/ শৈত্য প্রবাহের কারণে পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন, ধূসর সাদা! ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টার মতো সূর্যের দেখা পাওয়া যায়। প্রচণ্ড ঠান্ডা আর অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ, কালো চাদরের মতো জড়িয়ে রাখে এ দেশকে। এমন প্রতিকূল পরিবেশ হওয়ায় এখানকার বিশাল আয়তনে মাত্র ৫৭,১০০ লোকের বাস। অবাক করা বিষয় হলো, নীল জলরাশির এ বিশাল দ্বীপ দেশটির প্রায় ৯০ ভাগ জায়গাই পুরো বরফে ঢাকা!

কানাডা

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401336445.jpg

উত্তর আমেরিকার উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির এ দেশটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। কানাডার কথা বললেই ভেসে ওঠে এক অসহ্য ঠান্ডা দেশের কথা। এখানের জলবায়ু হালকা ভ্যাপসা ঠান্ডা, ভিজে কুয়াশা এবং শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডা, বরফাচ্ছন্ন ও শুষ্ক তুষারপাত দ্বারা আবৃত থাকে। এ বিশাল দ্বীপ বহুল রাষ্ট্রে বছরের ৮ মাসই বরফাচ্ছন্ন থাকে। রাশিয়ার জলবায়ুর মতো শৈত্য প্রবাহ ও হিম শীতল আবহাওয়া হলেও মানুষের বসবাসের জন্য অতটা অনুকূল নয়। এমন বৈরী জলবায়ুর জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ দেশ হয়েও জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে তিন কোটি। ঘনত্বের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ৩.৯২ জন।

   

ভাস্কর্যে চড়ে জরিমানা গুনলেন ২০ লাখ টাকা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হাতি, ঘোড়ার পিঠে চড়ার শখ নাই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। সেটা ছোটবেলা হোক কিংবা বড় হলেও। হাতি, ঘোড়ার পিঠে চড়ার সুযোগ থাকলে সেই সুযোগ সহজে কেউ হারাতে চায় না। তবে, বাস্তবে উঠতে না পারলেও অনেকেই 'দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান'। ইট-পাথরের তৈরি বাঘ, সিংহ, হাতি ও ঘোড়ার পিঠে বসে ছবি উঠাতেও কেউ কার্পণ্য করে না। কিন্তু, এমন শখ পূরণ করতে গিয়ে এক আইরিশ পর্যটককে জরিমানা গুনতে হয়েছে। তাও আবার সেই জরিমানার পরিমান ১০০ বা ২০০ টাকা নয়, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২০ লাখ টাকা (১৯ হাজার মার্কিন ডলার)। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এমন ঘটনা ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইর্য়ক পোস্টের বরাত দিয়ে এমন বিচিত্র খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

এ ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (আগের নাম টুইটার) ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, আইরিশ ওই পর্যটক এক ব্যক্তি সিংহের মাথায় একটি হাত দিয়ে রেখেছে ও তার আরেক হাতে একটি টর্চ—এমন একটি ভাস্কর্যের সিংহের পিঠে চড়ে নামতে গিয়ে ভাস্কর্যের একটি অংশ ভেঙে ফেলেন।

নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক আইরিশ পর্যটক বেলজিয়ামের ব্রাসেলস স্টক এক্সচেঞ্জে ‘দ্য বোর্স’ নামে একটি সিংহের ভাস্কর্যে চড়ে নামার সময় ভাস্কর্যের হাতে থাকা মশালটি ভেঙে ফেলেন। যার কারণে ওই ব্যক্তিকে ১৯ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ওই পর্যটক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। ভেঙে ফেলা ভাস্কর্যটি সংস্কারের একদিন পরই এমন ঘটনা ঘটেছে। ভাস্কর্যটি সংস্কার করতে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছিল বলেও জানানো হয়। 

গণমাধ্যমটির খবর অনুযায়ী, পুলিশ ওই পর্যটককে কাছের একটি ফাস্ট-ফুড রেস্তোরাঁ থেকে গ্রেফতার করে। পর্যটক তার ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানেন না বলে দাবি করেছেন।

সংস্কার প্রকল্পের ব্যবস্থাপক নেল ভ্যানডেভেনেট গণমাধ্যম ভিআরটি নিউজকে বলেন, ব্রাসেলস স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন এবং এই ভাস্কর্যগুলো আমাদের তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যে। আমরা দ্রুত এটি সংস্কার করতে চাই, তবে এতে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসও লাগতে পারে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পুরো ভবনটির আগের সৌন্দর্য মাত্রই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভবনের দুটি সিংহের ভাস্কর্যসহ অনেক ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হয়েছে।

নেল আরও বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, ভাস্কর্যগুলোকে মানুষ অনেক গুরুত্ব দেবে। কিন্তু যা হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক।’

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভাস্কর্য মেরামত করতে বেলজিয়াম সেই আইরিশ পর্যটকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চাইছে। 

;

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা



সাহিদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা

  • Font increase
  • Font Decrease

যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত জামালপুরের ইসলামপুরের চরাঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। প্রতি বছর রবি মওসুমে ইসলামপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়ে থাকে। স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচের বেগুন চাষে অধিক টাকা আয় করে থাকেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তাই স্থানীয় কৃষকরা বেগুন গাছকে নাম দিয়েছেন টাকার গাছ।

চলতি বছর বন্যা না হওয়ায় বেগুন চাষিরা তাই আগে ভাগেই আগাম বেগুন চাষে মাঠে নেমেছেন। ইসলামপুরের চরাঞ্চলে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের বেগুন, শীতের সবজি হিসাবে দেশ-বিদেশে ব্যাপক কদর ও সুখ্যাতি রয়েছে। ইসলামপুরের উৎপাদিত সাদা, কালো ও বল বেগুন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। এছাড়া বেগুন চাষে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় বাড়ছে চাষীর সংখ্যা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরের ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছে ৪২ হাজার ২৪০ মেক্টিক টন বেগুন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন উৎপাদন হয়েছে ৪৫ হাজার ৭২৫ মেক্ট্রিক টন বেগুন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ১ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে ৫০ হাজার ৭৮০ মেক্ট্রিক টন বেগুন উৎপাদন হয়েছে।

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা 

এছাড়াও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে বেগুন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছেন স্থানীয় কৃষি অফিস। এতে ৫২ হাজার ৩৯০ মেক্ট্রিক টন বেগুন উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যে এক কেজি বেগুন ৫০ টাকা।

ফলে ১ মেক্ট্রিক টন বেগুনের দাম দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বেগুন উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ৫২ হাজার ৩৯০ মেক্ট্রিক টন বেগুনের মূল্য ৫০ টাকা দরে আনুমানিক বাজার মূল্যে ২৬১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৪০ শতাংশের এক বিঘা জমিতে সাড়ে ৪ হাজার বেগুনের চারা রোপণ করা যায়। ফল আসতে ৪৫ দিন সময় লাগে। এসময় পর্যন্ত কৃষকদের খরচ হয় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার মতো। আবহাওয়া ও জমির উর্বরতা ভালো হলে ৪৫ দিন পর থেকে টানা তিন মাস প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ মণ বেগুন তুলে বাজারে বিক্রি করতে পারেন কৃষকরা। গড় হিসাবে এ তিন মাসে বিঘা প্রতি উৎপাদন হয়ে থাকে ২২০ মন বেগুন। পাইকারি গড় হিসাবে ২০ টাকার দরে বাজার মূল্যে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৪নং চরের কৃষক শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘তার গত বছরের এক বিঘা জমিতে মোট খরচ হয়েছে ৩৬ হাজার টাকার মতো। আর বেগুন বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো। কম খরচে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় এবছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে বেগুনের চারা রোপণ করেছেন’।

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা 

একই এলাকার কৃষক আমজাদ মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বেগুনে আরও লাভ বেশী হতো । সঠিক সময়ে যদি কৃষি অফিসাররা আমাদের সঠিক পরামর্শ দিতো। তারা আমাদের কোন খোঁজ-খবরই রাখেন না। আমরা গ্রামের মানুষ চাষাবাদ করেই সংসার চালাই। সব সময় মাঠেই পড়ে থাকি। গত ১৫ দিন হলো সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বেগুনের চারা গাছ লাগিয়েছি। মাঝে খেতের কিছু চারা গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।’

গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতেরচর এলাকার সোহাগ মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা কৃষক মানুষ। এই যে আমি এক বিঘা জমিতে বেগুন গাছের চারা লাগিয়েছি, এটাকে আমি চারা গাছ মনে করি না , মনে করি টাকার গাছ। আশা করছি গত বছরের মতো এবছরেও ভালো ফলন হবে। তাই দিন রাত রোদে পুড়ে পরিশ্রম করে যাচ্ছি কিছু-টাকা লাভের আশায়।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ ও ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান আকন্দ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘চলতি বছর বন্যা না হওয়ায় কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি বেগুন চাষে। তাই তারা আমাদের পরামর্শে আগে ভাগেই আগাম বেগুন চাষে মাঠে নেমেছেন। এ উপজেলায় বারি-১ জাতের বেগুন বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়া বোম্বাই বেগুন, লম্বা বেগুন ও বাগলতি (ফম বেগুন) বেগুন নামে আরও তিন জাতের বেগুনের চারা রোপন করা হয়েছে।;

জামালপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এ উপজেলার মাটি পলি দো-আঁশ হওয়ায় এখানে বেগুন চাষ বেশি হয়। আমরাও কৃষকদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করি ও বেগুন চাষের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। সারা দেশে এ বেগুনের চাহিদা রয়েছে।’

;

সাতক্ষীরায় দেশীয় জাতের ওল চাষ, লাভবান কৃষকরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরায় দেশীয় জাতের ওল চাষ, লাভবান কৃষকরা

সাতক্ষীরায় দেশীয় জাতের ওল চাষ, লাভবান কৃষকরা

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা, পাটকেলঘাটা, ত্রিশমাইল, তালা, নগরঘাটা, মিঠা বাড়িসহ আশে পাশের এলাকার মাটি ওল চাষের উপযোগী হওয়ায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ওল চাষ।

লাভ বেশি হওয়ায় দেশীয় জাতের ওল চাষে ঝুকছেন সাতক্ষীরার কৃষকরা।

নগরঘাটা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের ফারুক হোসেন জানান, ওল চাষে তেমন খরচ হয় না। শুধু গোবর সার ও ওলের বীজ লাগে। তিনি আরও জানান, প্রতি বিঘাতে ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ করে দেড় লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এখানের ওল খেতেও অনেক সুস্বাদু বাজারে চাহিদাও প্রচুর।

মিঠাবাড়ি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি এ বছর ১ বিঘা জমিতে ওল চাষ শুরু করেছেন। প্রতি বিঘাতে তার ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিটি গাছ থেকে ৫-৭ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। যার বাজার মূল্য কেজি প্রতি ৬০-৭০ টাকা। এক বিঘা জমির ওল দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।

পোড়ার বাজার এলাকার কৃষক এলাহী জানান, ওল একটি মৌসুমি ফসল, তিনি পতিত বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। বাজারে ওলের চাহিদার পাশাপাশি দামও ভালো পাওয়ায় তিনি গতবারের চেয়ে এবার ওল চাষ বাড়িয়েছেন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নুরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলায় তালা পাটকেলঘাটা মিঠাবাড়ি, নগরঘাটাসহ বিভিন্ন স্থানে ৬৫৬ হেক্টর জমিতে দেশী ও মাদরাজি জাতের ওলের চাষ হয়েছে। এখানকার মাটি ওল চাষের উপযোগী হওয়ায় এ অঞ্চলে ওল চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওল চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা তা চাষে আরো বেশি আগ্রহ হচ্ছেন। তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগ ওল চাষে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

;

কক্সবাজারে শুরু হচ্ছে পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল 



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্ব পর্যটন দিবসকে সামনে রেখে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভাল।সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এই অনুষ্ঠান শুরু হবে, চলবে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত।

ইতোমধ্যে এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, কক্সবাজারের অর্থনৈতিক প্রধান চালিকাশক্তি ট্যুরিজম। তাই পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে নেয়া হয়েছে ভিন্নধর্মী নানা উদ্যোগ।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুল ইসলাম বলেন, পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা ও সময় কাটাতে পারে সেজন্য খোলা হবে বিশেষ কন্ট্রোল রুম।

সপ্তাহব্যাপী এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে হোটেল, মোটেল, পরিবহন ব্যবস্থা ও রেস্তোরাঁর মালিকরাও দিচ্ছে আকর্ষণীয় ছাড়। হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ ছাড় দেয়া হচ্ছে। সকল রেস্তোরাঁয় খাবারের উপর ও সকল বাস ভাড়ার উপর ১৫ ও ২০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও হেলিকপ্টার জয় রাইড, টিউভ ভাড়া, কিটকট চেয়ার ভাড়া, প্যারাস্যালিং রাইড, জেটস্কি/বীচ বাইক, লকার ভাড়া, গাড়ি পার্কিং ছাড়সহ চাঁদের গাড়ি ভাড়া ও বিমান ভাড়াতেও থাকছে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা।

এই অনুষ্ঠান ঘিরে কক্সবাজার মাতানোর কথা রয়েছে চিরকুট ব্যান্ড, নিশিতা বড়ুয়া ও ঐশির মত তারকাশিল্পীদের। 

জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরানের সঞ্চালনায় ও কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় উক্ত অনুষ্ঠানের সহযোগী আয়োজকরা উপস্থিত ছিলেন।

;