কফি বন্দনা!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
কফি, ছবি: সংগৃহীত

কফি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা বিশ্বে প্রতিদিন কমপক্ষে ১.৬ বিলিয়ন কাপ কফি পান করা হয়, যা অলিম্পিক-সাইজের তিন শ’ সুইমিং পুল ভরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। পাণীয় হিসাবে কফি শুধু মজাদারই নয়, সৌন্দর্যপ্রিয়তা ও শৈল্পিকতারও পরিচায়ক। বিশ্ববরেণ্য লেখক জোনাথন সুইফট মনে করেন, ‘কফি পান ফিলসফিকাল কালচার’।

সম্ভবত এসব কারণেই কফি এখন গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি। কসমোপলিটন শহরগুলোতে কফিশপের ছড়াছড়ি। ইয়ং জেনারেশনের ক্রেজ হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে কফি।

শুধু তাই নয়, কমোডিটি বা পণ্য হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানের অধিকার লাভ করেছে কফি। অর্থাৎ বিশ্বের মানুষের দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের তালিকায় রন্ধন তেলের প্রথম স্থানটির পরেই রয়েছে কফির জায়গা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309590456.jpeg

১২০০ বছর আগেও মানুষ শরীর-মন চাঙ্গা করার অতুলনীয় পাণীয় কফির কথা জানতো না। কঠোর পরিশ্রমের পর ঝিমিয়ে কাটতো তাদের দিন ও রাত। অকস্মাৎ আফ্রিকার প্রত্যন্ত জনপদের এক তৃণভূমিতে ঘটলো অভূতপূর্ব একটি ঘটনা।

খালিদ নামের একজন আরব ইথিওপিয়ার তৃণভূমিতে ছাগল-মেষ চড়ানোর সময় এক অদ্ভূত বিষয় খেয়াল করলেন। আফ্রিকার এই নতুন জায়গাটি সদ্য-মুসলিম আরবদের অধীনে এসেছে। ইসলামের বাণী নিয়ে আরবরা তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিজয় কেতন উড়াচ্ছে।

নতুন দেশের অনেক কিছুই অজানা-অচেনা। খালিদ দেখলেন একটি বিশেষ ধরনের গাছের পাতা ও ফল খেয়ে তার পশুদল অনেক বেশি উৎফুল্ল ও চনমনে। জাম বা বেরি আকারের ফলটি চারণভূমির যেদিকে আছে, সেখানকার ছাগল-মেষগুলোকে দলের অন্য পশুদের চেয়ে অনেক তরতাজা ও স্বতঃস্ফূর্ত দেখাচ্ছে।

খালিদ এই গাছটির নাম দিলেন আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া। আরবি থেকে অনুবাদে এর নামই কফি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309612719.jpeg

নামের এই বৈচিত্র্য প্রসঙ্গে মনে রাখা ভালো যে, ইংরেজি ভাষা যেমন ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় একসেন্ট বা উচ্চারণ বদলিয়েছে, আরবি ভাষাও মূল আরব জাহান ও উত্তর আফ্রিকায় খানিক বদলে গেছে। যেমন, গাদ্দাফি। তাকে কাদ্দাফিও বলা হয়। গাম্বিয়া/জাম্বিয়া, ক্বাওয়া/গাওয়া, নাগিব/নাজিব, খলিল/কাহলিল ইত্যাদি একই শব্দের ভিন্ন উচ্চারণ মাত্র।

অচিরেই দেখা গেলো, আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া নামের গাছের জাম-সদৃশ্য শক্ত ফলটি ইয়েমেনেও পাওয়া যাচ্ছে এবং সেখানকার সুফি সম্প্রদায়ের তপস্যারত মুসলিমরা তা জ্বালিয়ে পান করছেন। নিজেকে সজাগ, সচল ও ক্রিয়াশীল রাখার ক্ষেত্রে কঠোর ব্রতচারী সুফিদেরকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি যোগাচ্ছে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া তথা কফি।

কিছুদিন পরেই দেখা গেলো, মধ্যরাতের তাহাজ্জুদ নামাজের আগে-পরে কিংবা যিকর বা ধ্যানের সময়ে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া পান করে শক্তি ও উদ্যম পাওয়া যাচ্ছে। পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া হজ্জপালনকারী, পর্যটক, বণিক, ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের আরব ও আফ্রিকা ছাড়িয়ে পৌছে যায় পারস্য ও তুর্কিস্তানের অন্যান্য মুসলিম জনপদে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309647784.jpeg

অচিরেই মুসলিম বিশ্বের জনপ্রিয় পাণীয় রূপে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া-এর একচ্ছত্র আধিপত্য ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মধ্যযুগের পপুলার বেভারেজ বলতে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

মিশর ও উত্তর আফ্রিকা দিয়ে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ইউরোপে প্রবেশ করে। যোদ্ধা ও বণিকরা রাস্তাটি খুলে দেয় ইউরোপীয়দের কাছে।

১৬৪৫ সালে ইউরোপের প্রথম কফিশপ চালু হয় ভিয়েনা শহরে। পাসকোয় রোসি নামে একজন তুর্কি ১৬৫০ সর্বপ্রথম কফি নিয়ে যায় বিলাতে। তিনি জর্জইয়ার্ড, ল্যাম্ববার্ড স্ট্রিট, লন্ডন ঠিকানায় একটি কফিশপ শুরু করেন।

আট বছর পর জনপ্রিয়তা বাড়ায় লয়েডে আরেকটি কফিশপ চালু হয়। ১৭০০ সালে ‘এডওয়ার্ড লয়েড কফি হাউস’ নামের একটি চেইনশপ চালু হয়। এখনো যাদের অসংখ্য শাখা রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309676660.jpeg

কফি তৈরির আদি ধরণটি মুসলিম প্রবর্তিত, যাতে কফির পাউডার, পানি ও চিনি একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে না ছেঁকেই পরিবেশন করা হয়। কষা স্বাদ ও কড়া গন্ধের এই কফি ট্র্যাডিশনাল কফিপ্রেমীদের কাছে অদ্যাবধি প্রিয়।

যদিও কয়েক বছর পর কফি তৈরির নিয়ম ও শৈলীতে কিছুটা পরিবর্তন আসে, যার নাম ক্যাপাচিনো। তার পেছনেও রয়েছে অভিনব কাহিনী।

১৬৮৩ সালে ভিয়েনার মার্কো ডি এভিয়ানো নামের একজন খ্রিস্টান প্রিস্ট বা ধর্মযাজক তুর্কিদের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন। তখন ইউরোপের পূর্বাঞ্চল ছিল তুর্কি শাসনাধীন। তিনি তুর্কি-আরবদের মতো করে তৈরি কড়া কফি পানের বদলে ক্রিম ও মধু দিয়ে একটু নরম ও সুমিষ্ট কফির রন্ধনশৈলী উপস্থাপন করেন। কালো কফির রঙও বদলে বাদামী রঙ ধারণ করলো আর স্বাদও হলো অনেক সহনীয়।

এখন বিশ্বের দেশে দেশে নানা রকমের কফি দেখতে পাওয়া গেলেও কড়া ও সহনীয় ধরন দুটিই প্রধান। চা আবিষ্কারের এবং কোমল পাণীয় আসার আগে কফি যে দাপট ও প্রাধান্য অর্জন করেছিল, তা এতো শত বছরের ব্যবধানে মোটেও কমে নি। ফলে বিশ্বের এক নম্বর পাণীয় এখনো কফি এবং বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধান ভোগ্যপণ্যের স্থান কফির দখলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309865244.jpeg

মজার ব্যাপার হলো, বর্তমানে কফি উৎপাদনে লাতিন আমেরিকা সমগ্র বিশ্বের নেতৃত্ব দিলেও কফি পানের উদ্ভাবক ও বিস্তারক হিসাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন আরব-মুসলিমরা। মুসলিমরা কফিকে একটি বৈশ্বিক পাণীয়তে পরিণত করেছেন এবং নিজেরা শ্রেষ্ঠতম কফিপ্রেমী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

ফলে আরব জাহানের যে কোনও দেশে বা শহরে কফির মৌতাত এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। পবিত্র মক্কার বায়তুল্লাহ এবং মদিনা নগরীর মসজিদে নববীতে নামাজের শেষে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া দিয়ে ঐতিহ্যবাহী আরব আতিথিয়তা করার রেওয়াজ এখনো চলছে।

আরব দেশে যে কোনও গৃহে মেহমান আসার সঙ্গে সঙ্গে খেজুর আর আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া মেহমানের সামনে চলে আসে। তার পেছনে আসে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য। বস্তুত আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ছাড়া আরব জাহানের আপ্যায়ন অসম্পূর্ণ।

অপরাপর আরব ও অনারব মুসলিম দেশেও আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া তথা কফি অপ্রতিরোধ্য গতিতে জনতুষ্টি লাভ করে চলেছে। তবে আরব সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে গণ্য করা হয় কফিকে। বিশ্বে যত কফি পান করা হয়, তার সিংহভাগই আরবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309899440.jpeg

বৃহত্তর আরব জাহানের সর্ব-পশ্চিম প্রান্ত মরক্কোর ফেজ বা রাবাত শহর থেকে পূর্ব প্রান্তের পার্শিয়ান গাল্ফ কিংবা আরব সাগর তীরের ইয়েমেনের এডেন বন্দর পর্যন্ত কফির জয়জয়াকার। পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ায় কাবাব আর রুটির পাশে কফির ছোট ছোট কাপ খাদ্য সংস্কৃতির অপরিহার্য অঙ্গ। যে কফির ঢেউ আরও পূর্বে পাকিস্তান-ভারত-বাংলাদেশ ছাড়িয়ে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।

আড্ডা, আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের লীলাভূমি কায়রোর ক্যাফেগুলো কফি ছাড়া অচল। নীল নদের তীরের খোলামেলা দোকানগুলোতে রয়েছে কফির ছড়াছড়ি। নোবেল বিজয়ী মিশরীয় লেখক নাগিব/নাজিব মাহফুজের লেখার বার বার এসেছে কফির কথা।

কফির কথা এসেছেন তুর্কি নোবেল বিজয়ী লেখক ওরহাম পামুকের লেখাতেও। বসফরাস প্রণালীর পাশে ইউরোপ ও এশিয়া এসে মিশেছে যে অনিন্দ্য ভূগোলে, সেই ইস্তাম্বুলের নাগরিক জীবনে কফি মিশে আছে প্রাত্যহিক জীবনের অঙ্গ হয়ে।

পানের অভ্যাসের সঙ্গে বিচিত্র-বিভিন্ন পেয়ালায় পরিবেশিত কফি ইসলামী শিল্প ও রুচির বিকাশেও পালন করেছে অনন্য ভূমিকা। ইসলামিক মৃৎশিল্প সঞ্জীবিত হয়েছে কফির স্পর্শে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309957396.jpeg

কফি পান, চর্চা ও বিকাশের পাশাপাশি আরব মুসলিমরা একে সাহিত্য ও গবেষণার বিষয়েও পরিণত করেছেন। সর্বপ্রাচীন কফি বিষয়ক গ্রন্থের প্রণেতাও একজন মুসলিম। তার নাম শেখ আবু আল কাদির। ১৫৮৮ সালে তিনি কফি বিষয়ক একটি গবেষণা গ্রন্থ প্রণয়ন করেন, যাতে এর এনসাইক্লোপেডিক সকল তথ্যই রয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই হচ্ছে কফি নিয়ে লেখা পৃথিবীর সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রাচীন বই।

ঋপদী কফি গবেষক শেখ আবু আল কাদির অনেক তথ্য ও বিবরণের সঙ্গে সঙ্গে একটি চসৎকার অনুভূতির কথাও বলেছেন। তার সেই উক্তি এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে। তিনি জানাচ্ছেন: ‘Coffee is the common man’s gold, and like gold it brings to every person the feeling of luxury and nobility’. 

সত্যিই, প্রকৃত কফি পানের ক্ষেত্রে যে স্বাদের মজা আর অনুভূতির ছোঁয়া পাওয়া যায়, তা অতুলনীয়, অপূর্ব ও অতি মহার্ঘ্য।

আরও পড়ুন: পৃথিবী বিখ্যাত পাঁচ ব্যয়বহুল কফি!

আরও পড়ুন: কতটা উপকারী প্রিয় পানীয় কফি?

   

তাপপ্রবাহের কারণে হওয়া সাধারণ কিছু সমস্যা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে দেশ। আমাদের দেশে মূলত নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থাকে। তবে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল জলবায়ুর কারণে গত কয়েক বছরে আবহাওয়ায় বেশ পরিবর্তন এসেছে। এখন গরমে তাপমাত্রা বেশ বাড়তি থাকে। তাই গরমে এখন অসুস্থ হওয়ার ঘটনা বেড়ে গেছে। গরমের কারণে হওয়া সমস্যাগুলোকে অনেকেই গুরুত্ব দেয় না। তারা মনে করেন ঠান্ডা পানি পান করলেই সমাধান হবে। তবে গরমে অসুস্থ হওয়াকে অবহেলা করলে মৃত্যু ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। তাই উপসর্গ দেখার পরই সাবধান হতে হবে।

চিকিৎসক থমাস ওয়াটার্স এই নিয়ে সাবধান হওয়ার জন্য জোর দিয়েছেন। গরমে যে সব সমস্যা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে দেখা যায়, সেগুলো হলো-

১। ফুসকুঁড়ি বা হিট র‍্যাশ

গরমে ঘাম হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাপ অতিরিক্ত বেশি হওয়ার কারণে গরমে ঘাম এবং ঘাম জমেও বেশি। কনুই, হাঁটুর পেছনের অংশ, ঘাড় ইত্যাদি স্থানে ঘাম জমে লাল ছোট ছোট ঘামাচি ও ফুসকুঁড়ি দেখা যায়।


২। হিট ক্র্যাম্পস

গরম আবহাওয়ায় অনেকেই ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করেন। গরমের মধ্যে পেশিতে চাপ পড়ার কারণে অনেক সময় ব্যথা হতে পারে। একে হিট ক্র্যাম্প হতে পারে। কারণ এমনিতেই গরমে ঘাম বেশি হয়। এরপর যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন তাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ এবং তরল বের হয়ে যায়।

৩। ক্লান্তি বা হিট এক্সহসশন

প্রাকৃতিকভাবে মানুষের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখার কিছু কর্মকাণ্ড ঘটে থাকে। গরমের সময় শরীরের ভেতর থেকে ঘাম বের করে দেয়। এতে অভ্যন্তরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে শরীর ঘাম বের করা বন্ধ করে দেয়। কারণ শরীররের রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যায়। এই কারণে শরীর ঠান্ডা হতে পারেনা।


৪। হিট স্ট্রোক

অতিরিক্ত গরমে শরীরে তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেড়ে যায়। হঠাৎ এই পরিবর্তন শরীর নিতে পারে না। ১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা হলেই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। হিট স্ট্রোক অনেক গুরুতর হতে পারে। এমনকি এই কারণে মৃত্যুও হতে পারে।

দিন দিন তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিহীন একটানা খা খা রোদের কারণে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই জরুরি কাজ ছাড়া সকালে ১ টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন।

তথ্যসূত্রঃ ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক

;

জেনে নিন ওটস খাওয়ার অপকারিতা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুভ সূচনায় সুন্দর দিন। সকাল সক্রিয়তার সাথে শুরু করতে পারলে পুরোদিন অনেক ভালো কাটে।  তাই সকালের খাবার হতে হয় পুষ্টিসম্পন্ন। ব্রেকফাস্টে উন্নত পুষ্টির খাবার খেলে পুরোদিন শরীরে তা সরবরাহ হয়।  সকালে অনেকেই ভারী খাবার খেতে পারেন না। তাই হালকা কিন্তু পুষ্টি সম্পন্ন খাবার খেতে পছন্দ করেন, যা পেটও ভরাবে। 

সকালের নাস্তায় অনেকে ওটস খেতে পছন্দ করেন। ওটস একটি পুষ্টিকর খাবার, উচ্চ ফাইবার এবং প্রোটিন, এবং অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে, যেমন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো এবং হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি। বিশ্বাস করা হয়, ওটস খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। তবে এইটা কতটা সত্য, তা নিয়ে এখন সন্দীহান বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন চিকিৎসক স্টিভেন গুন্ড্রি ওটস বা ওট থেকে বানানো খাবার খাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।  

তিনি জানান, আমেরিকায় যেসব ওটস জাতীয় খাবারে গ্লাইফোসেটের উপস্থিতি রয়েছে,এই ব্যাপারটি তিনি বেশ জোর দিয়ে বলেন। তিনি উল্লেখ করেন গ্লাইফোসেট একটি ভেষজনাশক। স্টিফেন তার বর্ণনায় একে ‘সবচেয়ে  বিষাক্ত’ বলে অভিহীত করেন।

ওটস, ওটস দুধ এবং এই জাতীয় পণ্য প্রচুর পরিমাণে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে মেরে ফেলে। এছাড়া কিছু কোম্পানির ওটসে এক প্রকার  নিষিদ্ধ হার্বিসাইড সনাক্ত করা হয়েছে। এই হারবিসাইড ক্যান্সার সহ স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে।

প্রতিদিন ওটস খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও ব্যথা হয়। ওটস খাওয়ার কারণে পেটে গ্যাস জমিতে থাকে। যাদের বেশি পরিমাণে ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস নেই তারা হঠাৎ ওটস খাওয়া শুরু করলে সমস্যা দেখা যায়। তাদের পেট ফোলা ও ফাঁপা ছাড়াও অস্বস্তির সমস্যা দেখা যায়।

ওটস খাওয়া অন্ত্রের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এন্টারোকোলাইটিস, ক্রোনস ডিজিজ, ডাইভারটিকুলাইটিস ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংবেদনশীল খাবার খেতে হয়।  তাই এই ধরনের রোগীদের ওটস এড়াতে হবে।   

এছাড়া ওটসে বেশি পরিমাণে শ্বেতসার থাকে। তাই ডায়বেটিসের রোগীদের ওটস খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।  কারণ তাদের নিয়ন্ত্রিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া নিশ্চিত করতে হয়।

পাশাপাশি যারা রক্তশূণ্যতায় ভুগছেন তাদেরও ওটস এড়িয়ে চলা উচিত। অন্ত্রের ট্র্যাক্ট থেকে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার সময় আয়রন সম্পূর্ণভাবে শোষিত হতে পারে না ওটসের কারণে। 

তথ্যসূত্রঃ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস+এইচএসএন স্টোর

;

গরমে যেসব খাবার না খাওয়াই ভালো



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গরমে অতিষ্ঠি হচ্ছে জনজবীন। এই গরম থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই নানা রকম ঠান্ডা পানীয় ও ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা খাবার খাচ্ছেন। সাময়িকভাবে এই ঠান্ডা পানীয় ও খাবার খেয়ে শান্তি পাওয়া গেলেও ঠান্ডা এই খাবারগুলি শরীরকে আরও গরম করে দেয়। এই তালিকায় কী কী রয়েছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

 

টক দই

টক দই শরীরের জন্য উপকারী হলেও গরমের সময় না খাওয়াই ভালো। তা ছাড়া গরম বলে নয়, সারা বছরই অনেকে টক দই খেতে পছন্দ করেন। তবে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র কিন্তু অন্য কথা বলছে। অত্যধিক টক দই শরীরের ভেতর থেকে গরম করে তোলে। এতে গ্যাস ও অম্বলের সমস্যা সৃষ্টি করে। 


ফ্রিজের ঠান্ডা পানি

অনেকেই বাইরে থেকে ফিরেই ঢকঢক করে কিছুটা ঠান্ডা পানি পান করছেন। যা মোটেও শরীরের জন্য ভালো নয়। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ফ্রিজের ঠান্ডা পানি শরীরের জন্য একেবারেই উপকারী নয়। শরীর ঠান্ডা হচ্ছে মনে হলেও আদতে তা হয় না। বরং শরীরের উত্তাপ বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হজমের গোলমালও শুরু হয়।

পাতিলেবু

গরমে পাতিলেবুর শরবতের জনপ্রিয়তা কম নয়। রাস্তাঘাটে তো বটেই, এমনকি বাইরে থেকে ঘেমে ফিরে অনেকেই লেবুর শরবতে চুমুক দিতে ভালবাসেন। লেবুতে ভিটামিন সি ভরপুর পরিমাণে রয়েছে। তবে ঘন ঘন লেবুর শরবত খাওয়া কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। লেবুতে থাকা অ্যাসিড উপাদান শরীরের উত্তাপ বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বদহজম, গ্যাস-অম্বলের সমস্যা তো রয়েছেই।

;

প্রচণ্ড রোদে চোখের যত্নে করণীয়



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে নাজেহাল অবস্থা শহরবাসীর। ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৮টা বাজতে না বাজতেই চড়া রোদে চোখ ঝলসে যাওয়ার অবস্থা। এই গরমে শরীরের পাশাপাশি যত্ন নিতে হবে চোখেরও। চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত তাপ চোখের মারাত্মক ক্ষতি করে। দীর্ঘক্ষণ কড়া রোদ থাকলে চোখের ছানি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, এমনকি রেটিনার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

অনেক সময় ধরে রোদে থাকার পর অনেকের চোখ জ্বালাপোড়া করে, চোখ লাল হয়ে যায়, চোখের পাতা ফুলে যায়। কড়া রোদের কারণে অনেকেই ভাইরাল ও ব্যাক্টেরিয়াল কনজাংটিভাইটিসেও আক্রান্ত হন। এই সমস্যা ছাড়াও চোখের পাতার মূলে কিছু তৈল গ্রন্থি থাকে। এই গ্রন্থিতে সংক্রমণের ফলে আঞ্জনি সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা যায়। গরমের দিনে চোখের যত্ন না নিলে অন্ধত্ব এবং ক্যানসারের ঝুঁকিও থাকে।

চলুন জেনে নেই গরমে চোখ ভাল রাখতে গেলে কোন নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে-

১) কনট্যাক্ট লেন্স পরার সময়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অবশ্যই হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে তবেই লেন্স পরবেন। লেন্স পরিষ্কার না থাকলে সূর্যের তাপে এবং দূষণের জেরে চোখে সংক্রমণের আরও বেড়ে যায়।

রোদে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। 

২) সানগ্লাস দিয়ে চোখ ঢাকা শুধু ফ্যাশন নয়, এই গরমে তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বটে। তবে যে কোনও সানগ্লাস ব্যবহার করলেই চলবে না। ইউভিএ এবং ইউভিবি দুই ধরনের রশ্মির হাত থেকেই চোখকে সুরক্ষিত রাখবে এমন সানগ্লাস ব্যবহার করাই শ্রেয়।

৩) আপনার কনট্যাক্ট লেন্সটি যদি ইউভি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা প্রদান করে সে ক্ষেত্রেও আপনাকে সানগ্লাস পরতে হবে। সানগ্লাস ব্যবহার করলে তবেই পুরো চোখটি কড়া রোদের হাত থেকে সুরক্ষা পাবে।

৪) গরমে শরীরে পানির ঘাটতি হয়, এতে শরীর যেমন অসুস্থ হয়ে পরতে পারে, তেমনই চোখের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হয়। চোখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গেলে চোখে খচখচ করা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা য়ায়। তাই গরমে কোনও ভাবেই শরীরে অয়ানির ঘাটতি হতে দেওয়া যাবে না।

তথ্যসূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা

;