যে কারণে জামায়াত ছাড়লেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের সংগৃহীত ছবি

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের সংগৃহীত ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

অধুনালুপ্ত ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে যুক্তরাজ্য থেকে দলের আমির মকবুল আহমদের নিকট পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে জামায়াতে ইসলামীর একটি সূত্র বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের এক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগ পত্র আমিরের নিকট পৌঁছেছে।

ঐ চিঠিতে পদত্যাগের কারণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে, জামায়াত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাইনি। একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতার আলোকে ও অন্যান্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনকে বিবেচনায় এনে দলটি নিজেদের সংস্কার করতে পারেনি।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মামলা পরিচালনাকারী অন্যতম প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও পদত্যাগ পত্রে যা উল্লেখ করেছেন তা বার্তা২৪.কমের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

'জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতি মুক্ত রাজনীতি, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও দলকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার মাধ্যমে দেশের জন্য অসংখ্য সৎ, দক্ষ ও কর্মনিষ্ঠ নাগরিক তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এতদসত্ত্বেও জামায়াত একবিংশ শতাব্দীতে ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অপারগ হয়ে পড়েছে।'

'একথা অনস্বীকার্য যে, জামায়াত স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব মেনে নিয়েছে। এই দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে জামায়াত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নয়। অধিকন্তু, জামায়াত গত শতাব্দীর ৬০-এর দশকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সকল সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে, যেমন, কম্বাইন্ড অপজিশন পার্টি (কপ), পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পি ডি এম) এবং ডেমোক্রেটিক একশন কমিটি (ডাক)।'

'একইভাবে গত শতাব্দীর ৮০ এর দশকে ৮-দল, ৭-দল ও ৫-দলের সাথে জামায়াত যুগপৎভাবে রাজপথে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। দলটির এ সকল অসামান্য অবদান ৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভুল রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে স্বীকৃতি পায়নি।'

'৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা পরবর্তীকালে জামায়াতের সকল সাফল্য ও অর্জন ম্লান করে দিয়েছে। এসব কারণে আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি এবং এখনও করি যে, ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে নেতিবাচক ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া শুধু নৈতিক দায়িত্বই নয় বরং তৎপরবর্তী প্রজন্মকে দায়মুক্ত করার জন্য অত্যন্ত জরুরি কর্তব্য।'

'আমি বিশ্বাস করি, ইসলাম ও স্বাধীনতা সংগ্রাম বাংলাদেশের সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সংস্কৃতির ভিত্তি। এ দুটি কোনো অবস্থাতেই আপোষযোগ্য নয়। জাতিসত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ এই দুইটি উপাদানকে বিচ্ছিন্ন করে চিন্তা করার সুযোগ নাই। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের উপলব্ধি ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে
দাঁড়িয়ে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর জুলুম, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে যখন পাকিস্তানী সামরিকজান্তা গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে নিস্তব্ধ করে দিতে চেয়েছে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেনি।'

'স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আজও দলের নেতৃবৃন্দ ৭১-এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে পারেনি। এমনকি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ প্রসঙ্গে দলের অবস্থানও ব্যাখ্যা করেনি। তাই অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জামায়াতের ক্ষতিকর ভূমিকা সম্পর্কে ভুল স্বীকার করে, জাতির কাছে নিজেদের সেই সময়কার নেতাদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে পরিষ্কার অবস্থান নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।'

'যে কোনো রাজনৈতিক দল ইতিহাসের কোন এক পর্বে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ত্রটি-বিচ্যুতির শিকার হতে পারে। কিন্তু তাকে ক্রমাগত অস্বীকার করে, সেই সিদ্ধান্ত ও তার ফলাফল মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অনড় অবস্থান বজায় রাখা শুধ অগ্রহণযোগ্যই নয় বরং আত্মঘাতী রাজনীতি। তা কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।'

'আমি বিগত প্রায় দুই দশক নিরবিচ্ছিন্নভাবে জামায়াতকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে, ৭১-এ দলের ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত এবং ওই সময়ে জামায়াতের ভূমিকা ও পাকিস্তান সমর্থনের কারণ উল্লেখ করে জাতির কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত। সুনির্দিষ্ট কারণসমূহ উল্লেখ করে যে যে সময় আমি বিষয়টি দলের শীর্ষ সংস্থা ও নেতৃত্বের কাছে উত্থাপন করেছি তার কয়েকটির বিবরণ দিতে চাই।'

ক) ২০০১ এর অক্টোবর মাসে জামায়াতের
তৎকালীন আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল মন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। বিজয় দিবস উদযাপনের আগেই ৭১-এর ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য আমি জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলাম। একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বক্তব্যের খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি।

খ) ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের বৈঠকে আবারো ৭১ নিয়ে বক্তব্য প্রদানের পক্ষে আমি জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করি । আমার সেদিনের বক্তব্য সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

গ) ২০০৭-২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময় জামায়াতের বিরদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ভিন্ন মাত্রা পায়। তখনও ৭১ প্রসঙ্গে বক্তব্য প্রদানের জন্য জামায়াতকে বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।

ঘ) আমি ২০১১ সালে মজলিসে শুরার সর্বশেষ প্রকাশ্য অধিবেশনে বিষয়টি পুনরায় উত্থাপন করি। দলের নেতৃত্ব প্রদানে এগিয়ে আসার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আমি বিশেষ আহ্বান জানাই। আমার সেই প্রস্তাব শীর্ষ নেতৃবৃন্দের একাংশের অবহেলার নিকট পরাজিত হয়।

ঙ) ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ আপনাকে পাঠানো ১৯ পৃষ্ঠার চিঠিতে ৭১ প্রসঙ্গে বক্তব্য প্রদানের জন্যে আমি পরামর্শ দিয়েছিলাম। তাতে পরিবর্তিতে বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে নতুন আঙ্গিকে রাজনীতি শুরু করার আহ্বান জানিয়েছিলাম।

চ) ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে আপনি আমির নির্বাচিত হওয়ার পর, এ বিষয়ে আমার মতামত চাওয়া হয়েছিল। আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া সংক্রান্ত একটি খসড়া বক্তব্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন করা হয়নি।

ছ) সবশেষে ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর জানুয়ারি মাসে জামায়াতের করণীয় সম্পর্কে আমার মতামত চাওয়া হয়। আমি যুদ্ধকালীন জামায়াতের ভূমিকা সম্পর্কে দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দেই। অন্য কোনো বিকল্প না পেয়ে বলেছিলাম, জামায়াত বিলুপ্তি করে দিন।

'কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আমার তিন দশকের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ৭১ প্রসঙ্গে গ্রহণযোগ্য বক্তব্য প্রদানের ব্যর্থতা এবং ক্ষমা না চাওয়ার দায়ভার আজ তাদেরও নিতে হচ্ছে যারা তখন এই সিদ্ধান্তের সাথে জড়িত ছিলনা। এমনকি যারা ৭১-এ জন্ম গ্রহণও করেনি। অধিকন্তু, অনাগত প্রজন্ম যারা ভবিষ্যতে জামায়াতের সাথে জড়িত হতে পারে তেমন সম্ভাবনাময় ব্যক্তিদেরকেও এই দায়ভার বহন করতে হবে। এই ক্রমাগত ব্যর্থতা জামায়াতকে স্বাধীনতা বিরোধী দল হিসাবে আখ্যায়িত করার ক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করছে। ফলে জামায়াত জনগণ, গণরাজনীতি এবং দেশ বিমুখ দলে পরিণত হয়।'

   

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্দেশনায় মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক। এতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া মন্ত্রী ও সাংসদদের স্বজনদের তালিকা করারও নির্দেশনা দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন প্রভাব মুক্ত রাখার যে কঠোর নির্দেশনা তা সবাইকে তিনি অবগত করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৈঠকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, ভাই বা নিকটাত্বীয়রা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী যেনো না হয় তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের জানিয়েছেন।

;

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বারিধারায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ অংশ নেন। ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন সারাহ কুক।

এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দুপুরের দিকে বৈঠক হয়েছে বলে আমি জানি। তবে, বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানা নেই।

;

জামিন না দেওয়া প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিথ্যা মামলায় দলের নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোকে আওয়ামী সরকার তাদের প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাকসুদ হোসেন এবং সদস্য মোহাম্মদ আরিফ হাসানকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ কয়েকজন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর দখলদার আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক জোরালোভাবে শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম—নির্যাতন। ডামি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিরোধী দল ও মতের মানুষদের ঘায়েল করতে লাগামহীন গতিতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের মাধ্যমে আদালতকে দিয়ে ফরমায়েশি সাজা দিচ্ছে। জামিন নামঞ্জুর করে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

;

গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই বিএনপির: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতবৃন্দ লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, একদিকে তারা অগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিরোধীদল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাত অপশক্তি সারাদেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে। সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না। বরং সন্ত্রাস ও সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে এবং জামিনে মুক্তিও পাচ্ছে। তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে- জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা ও মহামান্য আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে কারণে বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই, সে যে দলেরই হোক না কেন সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্হিভূত বক্তব্য প্রদান করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন গুরুত্ব অপরিসীম। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বরাবরের ন্যায় নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয় সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের ন্যায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

বিবৃতিতে তিনি বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

;