ফিরে দেখা

মুনীর-খুকু এবং রীমা হত্যা ট্র্যাজেডি



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
সংবাদপত্রে মুনীর-খুকুর ফাঁসির খবর

সংবাদপত্রে মুনীর-খুকুর ফাঁসির খবর

  • Font increase
  • Font Decrease

সময়টা আজ থেকে অনেকদিন আগের। ১৯৮৯ সালের এপ্রিল মাসের শুরুর দিক, প্রকৃতিতে তখনও ফাগুনের আগুন হাওয়া বিদ্যমান। ভোরের আলো মাত্র ফুটে উঠছে, অদূরে মসজিদের মিনার হতে ভেসে আসছে মোয়াজ্জিনের দরদমাখা গলা। জীবিকার সন্ধানে মানুষ বেরিয়ে যাচ্ছে ঘরের বাইরে। ঠিক তখনই তাদের চোখে পড়ে একটি মর্মান্তিক দৃশ্য। ঢাকা চিটাগাং রোডের মুক্তি সরণির নিকট মিজমিজি গ্রামে যাওয়ার কাঁচা রাস্তার মোড়ে একটি লাশ পড়ে আছে। আরেকটু কাছে গেলে দেখা যায় লাশটা একজন মেয়ে মানুষের। পুরো শরীরে আঘাতের দাগ, চেহারায় আভিজাত্যের রঙ ফুটে আছে তখনও। গায়ে সোনার গহনা দেখে বুঝতে বাকি থাকে না মেয়েটি কোনো অবস্থাসম্পন্ন ঘরের। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরিস্থিতি দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় এটা কোনো ডাকাতি বা ছিনতাই নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তা না হলে গায়ে গহনা রেখে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। পাশে খালের মধ্যে পাওয়া যায় রক্ত মাখা প্যান্ট, আরেকটু দূরে দেখা যায় পড়ে আছে একটি ধারাল ছুরি। পুলিশ বুঝতে পারে কেউ তাকে হত্যা করেই ফেলে রেখেছে এখানে। কিন্তু কেন? এই মেয়েই বা কে? উপস্থিত জনতাসহ সকলের মুখে তখন এই একটাই প্রশ্ন।

এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে খুবই বেদনা-বিধুর এবং নির্মম এক তথ্য। সেই সময় সারা বাংলাদেশে চায়ের দোকানে, অফিস পাড়ায় কিংবা ট্রেনে বাসে সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এই ঘটনা। প্রতিদিন পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা হতে থাকে এই খুনের সংবাদ, বিচারের আপডেট খবর। সব জায়গা থেকে রব ওঠে খুনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। যেন আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে সন্ত্রাসী, সেই দাবিতে চলে নানা স্লোগান প্রতিবাদ। মোটকথা সারা বাংলাদেশ জড়িয়ে পড়ে এই ঘটনায়।

পুলিশের সূত্রে পরিচয় মেলে মেয়েটির। নাম শারমিন রীমা। শহিদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন হোসেনের মেয়ে। যে নিজাম উদ্দিন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মমভাবে নিহত হন, সেই নিজামুদ্দিনের মেয়েকে স্বাধীন দেশে এমন নির্মমতা বরণ করে নিতে হবে তা হয়তো তিনি ভাবেননি। যাকে বিয়ের মাত্র চার মাসের মাথায় নির্মমভাবে হত্যা করে তারই স্বামী। হাত থেকে তখনও যায়নি মেহেদির দাগ, বিয়ের এলবামগুলোতে তখনও জমেনি একটি ধুলো। কিন্তু তারই আগে সে লাশ হয়ে গেল। তার কবরে উঠে গেল ঘাস। পরিচয় পাওয়া যায় রীমার স্বামীরও। মুনির হোসেন সুরুজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল এবং ডাক্তারদের সংগঠন বিএমএ’র প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ আবুল কাশেম এবং সে সময়ের খ্যাতনামা গাইনি ডাক্তার মেহেরুন্নেসার ছেলে। নিজেও পড়াশোনা করেছেন আমেরিকায় উইসকনসিন ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।

নৃশংস খুনী এরশাদ শিকদারের শুরু ও শেষ

তাদের বিয়ে হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ১১ ডিসেম্বর। বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করে মুনির দেশে এসে শুরু করেছিলেন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি বিক্রয়ের ব্যবসা। সবকিছু ভালোই চলছিল। বাবা মা তাই ছেলেকে বিয়ে দিতে চান। মেয়ে খোঁজা হয়। রীমাকে পছন্দ হয় তাদের পরিবারের। মেয়ের পরিবারও ছেলের খোঁজ নেন। সম্ভ্রান্ত ফ্যামিলি, দেখতে শুনতে ভালো, ছেলে নিজেও শিক্ষিত এবং ব্যবসায়ী। ব্যাস, আর কী লাগে। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন রীমা এবং মুনির।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/22/1563795235721.jpg
পুরনো ছবিতে রীমা ও মুনীর ◢

 

ভালোই যাচ্ছিল তাদের দিনকাল। কিন্তু কিছুদিন পরে শুরু হয় অন্য যন্ত্রণা। স্বামীর ঘরে মন টেকে না। বউয়ের সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে শুরু হয় ঝগড়া। এরই মাঝে রীমা একদিন দেখতে পান স্বামীর শার্টের মধ্যে লিপস্টিকের দাগ। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে, পায়ের তল থেকে সরে যায় মাটি। এ কোথায় এসে পড়লেন তিনি! ভাবলেন যাই হোক, আজকে জিজ্ঞেস করতেই হবে। স্বামী বাসায় আসলে জিজ্ঞেস করেন রীমা, কিছুক্ষণ চুপ থাকেন মুনীর। এরপর এমন পরিস্থিতে পুরুষ যা করে, মিথ্যার পর মিথ্যা বলে এড়িয়ে যেতে চায় ঘটনা থেকে। যখন আর এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না তখন শুরু হয় উচ্চবাচ্য, হাতাহাতি। লাথি মেরে সরিয়ে দেন রীমাকে। রীমা সে রাতে আর ঘুমাতে পারেন না। বালিশ ভেজান কান্নায়। কাকে দুষবেন তিনি, বাবা মাকে, স্বামীকে নাকি তার কপালকে?

বছর খানেক আগের কথা। মুনিরের মা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মেহেরুন্নেসার ছিল একটি ক্লিনিক। সেখানে প্যারালাইজড হয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম পোর্টের ইন্সপেক্টর আবু জাফর। সাথে আসেন তার চল্লিশোর্ধ্ব স্ত্রী খুকু। দেখতে শুনতে খুব একটা মন্দ নয়। এ বয়সের শান্ত সচেতন নারীদের মতো তারও ছিল আকর্ষণীয় দেহাবয়ব। মুনীরের সাথে এখানেই পরিচয় ঘটে খুকুর। এ বয়সের নারীদের প্রতি অনেক তরুণের দুর্বলতা থাকে। অনেকে অনেক রকমের ফ্যান্টাসিতে ভোগে। দীর্ঘদিন সংসার যাপন করার ফলে একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে নারীরাও ক্ষেত্র বিশেষে এসব পুরুষদের সান্নিধ্যে আসে। অন্যতম কারণ হয়তো ঘরে থাকা সঙ্গী তার কথা শুনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। মুনীর-খুকুও নিজের দুঃখ শোনানোর, নিজের গল্প ভাগ করার একজন মানুষ পেলে একটু নির্ভার বোধ করত। কিন্তু কথা বলতে বলতে অনেক ক্ষেত্রেই সেসব সম্পর্ক আর খালি কথার ভেতর আটকে থাকে না। আর তখনই শুরু হয় বিপত্তি। মুনীর-খুকুর বেলাতেও ঘটেছিল এমন বিপত্তি।

অসুস্থ স্বামীকে চিকিৎসা করাতে আসা খুকুকে নানা বিষয়ে সাহায্য করেন মুনির। বেশ খানিকটা সময় তারা গল্প গুজব করেন প্রতিদিন। এতে মুনীরের যেমন ভাল্লাগে, খুকুর তেমন সময় কেটে যায়। কিন্তু কথা একটা সময় আর কথা থাকে না। হাসপাতালের বাইরেও তারা দেখা সাক্ষাত শুরু করেন। জড়িয়ে পড়েন সম্পূর্ণ অনৈতিক একটা সম্পর্কে। সহজে যোগাযোগের জন্য মুনীর, খুকুকে লাললামটিয়ায় একটা বাসাও ভাড়া করে দেন। চলতে থাকে তাদের এই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, যেটাকে আমরা পরকিয়া হিসেবে জানি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/22/1563795348682.jpg
পুরনো ছবিতে খুকু ◢

 

এই পরকিয়ায় আসক্ত মুনীর বিয়ের প্রথম দিকে তার বউকে নিয়ে সুখে থাকলেও কিছুদিনের মধ্যেই আবার খুকুর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। আর এর ফলেই ধরা পড়েন রীমার কাছে। তাদের আর বনাবনি হয় না একেবারেই। রীমা কাঁদতে থাকেন দিনের পর দিন। স্বামীর অবহেলা তিনি সহ্য করতে পারেন না। পাশাপাশি চলতে থাকে বিভিন্ন শারিরীক নির্যাতন। বেঁচে থাকাকে মৃত্যুর চেয়েও ভয়ঙ্কর মনে হতে থাকে তার।

কিন্তু এর কিছুদিন পরে ঘটে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। বদলে যেতে থাকে মুনীর। বাসায় এসে আর স্ত্রীকে মারধর করে না। রোজই কিছু না কিছু নিয়ে আসে তার জন্য। কথা বলে, গল্প করে, স্বামীসুলভ আদর সোহাগও করে। রীমাও খুশি হয়। স্বামীর এমন বদলে যাওয়া দেখে সে খুবই খুশি হয়। সেও আর পারতপক্ষে আগের কথা তোলে না। একপাশ থেকে ভালোবাসা আসলে অপর পাশ থেকে মানুষ দায়িত্ববোধ আশা করে। রীমাও তার ব্যত্যয় করে না। সে তার দায়িত্ব পালন করে অক্ষরে অক্ষরে। ভালোবাসার বিনিময়ে সেও আগলে রাখে তার স্বামীকে। মুনীর নিজেই রীমাকে বলে খুকুকে সে ছেড়ে দেবে। তার সাথে আর কোনো যোগাযোগ রাখবে না। এর কিছুদিন পরে মুনীর খুকুকে তার অফিসে আসতে বলে। রীমাও সেখানে উপস্থিত ছিল। সেখানে রীমা খুকুকে তার স্বামীর সাথে মিশতে বারণ করে। খুকু কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়। যাওয়ার সময় সে রীমাকে বলে যায়, আমি তোমাকে দেখে নেব। দেখব কে জেতে আর কে হারে। সেই রাত্রে মুনীর রীমার ইস্কাটনের বাড়িতে রাত্রি যাপন করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/22/1563795290586.jpg

রীমার ইস্কাটনের বাসা ◢

 

একদিন রাতে এমনই পাশাপাশি শুয়ে দুজন। মুনীর রীমার পাশ ঘেঁষে শোয়। তার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে। মুনীর রীমাকে বলে, তোমাকে নিয়ে তো আসলে খুব বেশি কোথাও যাওয়া হয়নি আমার। তাই চলো দুজন মিলে চিটাগাং ঘুরে আসি। রীমা খুশি হয়। তার ভেতরের কোনো এক পুকুরে ফোটে ওঠে একশো একটা পদ্মফুল। সেই ফুল দুলতে থাকে বাতাসে, যেই বাতাস এসে শীতল করে দেয় রীমার মনটাকেও।

পরদিন তারা রওয়ানা হয়। সারাদিন এখানে সেখানে ঘোরাঘুরি করে রাতে আশ্রয় নেয় হোটেল সৈকতে। সেখান থেকে ফিরে আসে পরেরদিন রাতে। বসন্ত আর হলুদ যেমন মাখামাখি, তেমনই বসন্তের সাথে বাতাসেরও আছে একটা গভীর সম্পর্ক। ১৯৮৯ সালের এপ্রিলের নয় তারিখ, বাংলা ক্যালেন্ডারে তখন বসন্ত বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এগিয়ে আসছে নতুন আরেকটি বৈশাখ। এমনই এক বাতাস ভরা রাতে খোলা আকাশের নিচে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল মুনীর এবং রীমা। গাড়ি যখন নারায়ণগঞ্জের মিজমিজি গ্রামের কাছে এসে পৌঁছল, তখন গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দিল মুনীর। রীমা কারণ জিজ্ঞেস করল। মুনীর চুপচাপ নেমে গেল গাড়ি থেকে। চুপচাপ ফিরে এলে রীমা জিজ্ঞেস করল শরীর খারাপ কিনা। মাথা টিপে দিতে চাইল রীমা। কিন্তু মুনীর ঝটকা মেরে সরিয়ে দিলেন তার হাত। গাড়িতে থাকা একটি বোতল দিয়ে সজোরে আঘাত করলেন মাথায়। রীমা কিছুই বুঝে উঠতে পারল না। তার স্বামীর কী হলো হুট করে! সে পড়ে গেল ঘোরের ভেতর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দ্বিতীয় আঘাত। রীমার পুরো দুনিয়া তখন ঘুরতে থাকে। চোখের সামনে হয়তো ভেসে ওঠে সকল ঘটনা। তার শহিদ বাবার কথা হয়তো ভেসে আসে মনে, কিংবা আদর করে মুখে তুলে মায়ের খাইয়ে দেওয়ার কথা। আটলান্টায় স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাকা বোনটার কথাও হয়তো চোখে ভাসে। মৃত্যুর সমইয় নাকি এমনই হয়। প্রিয়জনদের আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকতে চায় সবাই। যে আত্মহত্যা করে মারা যায়, সেও নাকি বেঁচে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে মুনীর গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। টেনে হিঁচড়ে নামায় রীমাকে। গাড়িতে রাখা একটা ধারাল চাকু দিয়ে পেটের মধ্যে আঘাত করতে থাকে। রীমা একবার হাতে ধরে, একবার পায়ে। এদিক সেদিক তাকায়, গভীর অন্ধকার ছাড়া তার চোখের সামনে আর কিছু ভাসে না। হাতে পায়ে ধরে রক্ষা হয় না মেয়েটার। খুকুর সাথে পরকিয়ায় আসক্ত মুনীরের আঘাতে জর্জরিত হয়ে একটা সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

মৃত্যু নিশ্চিত হলে মুনীর গাড়ি স্টার্ট দেয়। একটু দূরে ডোবায় গিয়ে নিজের পরনের প্যান্ট এবং রক্তাক্ত জামা ছুড়ে ফেলে ডোবায়। হাতে থাকা ছুরিটা ছুড়ে মারে আরেকটু দূরে। গাড়ি নিয়ে আগায় যাত্রাবাড়ির দিকে। নিজের গাড়িটি ফেলে রেখে যায় সায়েদাবাদের বাস টার্মিনালের উল্টো দিকে। গাড়িটি তালাবদ্ধ করে রাখে সে। অপরাধী যতই অপরাধ করুক, সে একটা না একটা চিহ্ন ফেলে যায় সবসময়। মুনীরও সেই কাজ করল। রক্ত মাখা সব জামা ফেলে দিলেও একটি গেঞ্জি রয়ে যায় গাড়ির ভেতর। আর গাড়ির গায়ে রয়ে যায় রক্তের কিছু চিহ্ন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গাড়িটি যখন পুলিশের হাতে আসে তখন পুলিশের কাছে বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়।

মুনীর গিয়ে আশ্রয় নেয় হোটেল বদরে। সেখানে সে বিশ্রামের জন্য গেলে হোটেলের দারোয়ান আলী হোসেন তাকে ২০৩ নাম্বার রুমে নিয়ে যায়। ডাঃ মেহেরুন্নেসার ছেলে পরিচয় পাবার পর আলী হোসেন তাকে জিজ্ঞেস করে বাসা ছেড়ে সে হোটেলে কেন এসে উঠল। মুনীর তার স্ত্রীকে হত্যার কথা বলায় কিছুটা ভয় পেয়েই হয়তো আলী হোসেন চলে যায়। এরমাঝে হোটেল কক্ষে সে আত্মহত্যা করার জন্য বিছানার চাদর গলায় বেঁধে উপরে ফ্যানের সাথে ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করলে পাশের রুমের লোকেরা তালা ভেঙে ভেতরে এসে তাকে উদ্ধার করে এবং সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সে তার মায়ের সাথে ফোনে আলাপ করে এবং একজন আইনজীবী নিয়ে হাসপাতালে আসতে বলে। এর মধ্যে পুলিশ তার খোঁজ পেয়ে যায়, তাকে গ্রেফতার করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/22/1563795440555.jpg
মুনীর খুকুকে নিয়ে প্রকাশিত ভিডিও নাটক ◢

 

গ্রেফতার হওয়ার পর মুনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। যেখানে সে বলে—যেদিন খুকুর সাথে তার অফিসে রীমার দেখা হয় সেদিন রীমা খুকুকে তার সাথে মিশতে মানা করলে খুকু তার কাছে জানতে চায় সে কী করবে। মুনীর তখন কোনো জবাব দেয় না। খুকুর চোখ বেয়ে টলটল করে জল নামে। এরপর যখন খুকু রীমাকে হুমকি দিয়ে মুনীরের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে যায় তখন তার খুব মায়া হয়। খুকুর প্রতি তার ভালোবাসা আবার জেগে ওঠে। আর যার ফলে সে তার জীবন থেকে রীমাকে সরিয়ে দিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

জেরা, শুনানির পর ১৯৯০ সালের ২১ মে আদালত এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় মুনীর ও খুকুকে। মোট ৬৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রদানের মাধ্যমে রায় হয় মামলাটির। কিন্তু পরে মামলাটি আবার হাইকোর্টে ওঠানো হলে আদলত মুনীরের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখলেও খুকুকে বেকসুর খালাস দেন। তখন সারা দেশেই এর প্রতিবাদ হয়েছিল। লোকে মুনীরের সাথে খুকুরও ফাঁসি চেয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত সে সব দাবি আমলে নেননি। এরপর মুনীরের প্রাণ রক্ষার জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে পুনঃ পুনঃ আবেদন করা হলেও প্রেসিডেন্ট সে আবেদনে সাড়া দেননি। মুনীর খুকুর এই ঘটনা এতটাই আলোচিত হয়েছিল যে এটা নিয়ে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মঞ্চনাটক, যাত্রা পালা এবং অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়। ১৯৯৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুনিরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সমাপ্ত হয় আলোচিত ওই হত্যার বিচারের।

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;