হাত কাটল বাবার, স্বপ্ন পুড়ল মেয়ের



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
আজিদা ও তার বাবা। ছবি: বার্তা২৪.কম

আজিদা ও তার বাবা। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বাবা ছিলেন দরিদ্র কাঠুরে। তার গাছ কাটার আয়ে পড়াশোনার খরচ তো দূরের কথা, ঠিকমতো সংসার চলত না। তাই জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পাশ করার পর টিউশনি ও বেত বুনে কিছু টাকা আয়ের পথ বের করি। ওই টাকা থেকে কিছুটা সংসারে দিতাম, আর বাকিটা নিজের ও ছোট ভাইয়ের পড়াশোনায় খরচ করতাম। অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে এভাবেই নিজের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম।

কিন্তু হঠাৎ একদিন গাছ কাটার সময় ডাল পড়ে বাবার ডান হাত ভেঙে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা বাবার জীবন বাঁচাতে ডান হাত কেটে ফেলেন। এরপর কর্মক্ষম হয়ে যায় বাবা। সংসারের বোঝা পড়ে আমার কাঁধে। এখন নিজের পড়াশোনা, বাবার চিকিৎসা ও সংসারের খরচ যোগাতে গিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি।’

বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথাগুলো বলার সময় বারবার চোখ ভিজে আসছিল গৌরীপুর ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসায় ফাজিল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আজিদা আক্তারের (২০)। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামে। তার বাবা আবুল কাশেম একজন কাঠুরে। মা সাহেরা খাতুন গৃহিণী।

সোমবার (৬ মে) বিকেলে সুনামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির উঠানে বসে আজিদা বেত বুনছেন। বেত বুনতে বুনতেই বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা চালিয়ে যান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি আর বাবা টানাটানি করে সংসারটা চালিয়ে নিচ্ছিলাম। গত ২২ মার্চ বাবা তাতীর পায়া গ্রামে একটি রেইনট্রি গাছ কাটতে গিয়ে ডাল ভেঙে আহত হন। এরপর বাবার ডান হাত কেটে ফেলা হয়। আমরা ষাট হাজার টাকা ঋণ করে বাবার চিকিৎসা করিয়েছি। বাবা সুস্থ থাকা অবস্থায় সংসারের খাবার-দাবার নিয়ে চিন্তা করতে হতো না। কিন্তু এখন তো তিনবেলা খেতেও পারি না। আমি মাসে যা আয় করি তার সবটাই সংসার ও বাবার ওষুধ কিনতেই চলে যাচ্ছে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/07/1557226924962.JPG

সুনামপুর গ্রামের একটি জরাজীর্ণ ঘরে আজিদার পরিবারের বসবাস। তার সাত ভাই-বোনের মধ্যে চার বোন ও এক ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়েছে। তারা পরিবারে কোনো সাহায্য করে না। ছোট ভাই শাহীন আলম এবার আলিম পরীক্ষা দিয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়ে পড়তে বসেন আজিদা। পড়া শেষে বাঁশ কেটে বেত বুনে চাটাই তৈরির কাজে বসেন। এরপর ক্লাস করতে মাদরাসায় যান। সেখান থেকে ফিরে টিউশনি করান। কিন্তু বাড়ি থেকে মাদরাসায় যেতে প্রতিদিন তার ষাট টাকা গাড়ি ভাড়া লাগে। প্রতিদিন মাদরাসায় আসলে বাবার ওষুধ কিনতে কষ্ট হয়। তাই কিছুদিন ধরে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

আজিদা আক্তার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-ফাইভ পেয়েছেন। আলিম শ্রেণিতে পড়ার সময় অভাবের তাড়নায় বই কিনতে পারেননি। তাই রেজাল্ট কিছুটা খারাপ হয়। বর্তমানে আজিদা ফাজিল প্রথম বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। তার পড়াশোনায় মাদরাসার শিক্ষকরাও সহযোগিতা করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/07/1557226945145.gif

আজিদার সঙ্গে কথা বলতে বলতে বিকেলের বেলা সন্ধ্যায় গড়িয়েছে। লাল বর্ণ ধারণ করা সূর্যটা তখন অস্ত যাওয়ার অপেক্ষায়। এমন সময় ছোট ভাই শাহীনে কাঁধে ভর দিয়ে ঘরে থেকে বেরিয়ে আসেন আজিদার বাবা। তিনি বলেন, ‘গাছের ডাইল যহন শইলে পড়ছিল তহন মইর‌্যা গেলেই ভালো অইতো। সংসার চালাইতে গিয়া মাইড্যা যে কষ্ট করতাছে আর সহ্য অয়না।’

বাবার কথা থামিয়ে দিয়ে ছোট ভাই শাহীন বলেন, ‘সন্ধ্যার সময় কী সব কথা বলো বাবা। আপা যখন পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষক হবে। তখন আর কষ্ট থাকবে না।’

ছোট ভাইয়ের কথার রেশ টেনে আজিদা বলেন, ‘গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করব এমন স্বপ্ন ছোট বেলা থেকেই দেখতাম। কিন্তু এখন যে অভাবে পড়েছি ভাই, শিক্ষক হওয়া তো দূরের কথা পড়াশোনাই ছেড়ে দেয়া লাগবে।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;