অ্যাপোলো হাসপাতাল হতাশ করল



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
অ্যাপোলো হাসপাতাল / ছবি: সংগৃহীত

অ্যাপোলো হাসপাতাল / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অ্যাপোলো হাসপাতালে (ঢাকা) রোগীর সঙ্গে সারাদিন অবস্থানের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমার এই লেখা। আগে কখনো এত লম্বা সময় ধরে এই হাসপাতালে অবস্থান করতে হয়নি। সম্প্রতি অ্যাপোলো হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে ভিন্ন রকমের এক অভিজ্ঞতা হয়েছে।

বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ প্রতিবেশি দেশ ভারতের বেশ কিছু হাসপাতাল পরিদর্শন করার সুযোগ হয়েছিল। কখনো রোগীর স্বজন হিসেবেও গিয়েছি। সেসব হাসপাতালের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করে শুধু হতাশাই বেড়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্বনামধন্য এই হাসপাতালটির ব্যাপারে। বিশেষ করে অন্দরের ব্যবস্থাপনা খুব একটা সুখকর হলো না। বলা চলে প্রত্যাশার সিকি ভাগ পূরণেও ব্যর্থ

হাসপাতালটির ব্যয়বহুল ভিভিআইপি সুইট রুমে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে হয়। অপারেশন পরবর্তী এই রুমে অবস্থানের সময়টা জুড়ে কখনো মনে হয়েছে গ্রামীণ কোনো রেস্টুরেন্টে আছি, কখনোবা মনে হয়েছে মাছ বাজারে আছি। টিনের চালা মেরামত করার সময় যেমন গ্রামের অপর প্রান্ত থেকে শব্দ পাওয়া যায়। এখানেও তেমনি শব্দ কানে এসে বাজতে থাকে।

অবাক করা ব্যাপার এসব শব্দ বাইরের গাড়ির হর্ন কিংবা অন্য কিছুর নয়। বরং খোদ হাসপাতালের বয়, ক্লিনার ও স্টাফদের সৃষ্ট। তাদের চলনে বলনে কোনো সাবধানতা নেই, ক্ষিপ্ত গৃহিণী যেমন কাজের সময় হাড়ি-বাসন আছড়ে আছড়ে কাজ করে অনেকটা তেমনই চিত্র এখানকার। সাইলেন্স জোন হওয়ায় সেই শব্দ কানে বিঁধছিল শুলের মতো। রোগীর কাতরতা আরো উদ্বিগ্ন করে তুলছিল।

খাবার পরিবেশন করতে আসা বয়রা তো যেন কয়েকধাপ বেশি। ধড়াশ ধড়াশ শব্দে প্লেট গ্লাস রাখছিলেন খাবারবাহী স্টিল শিটের ট্রলিতে। এত বিদঘুটে শব্দ হচ্ছিল, যেটা যে কারো বিরক্তির কারণ হতে বাধ্য। আবার নার্সদের উচ্চস্বরে হাঁকডাক রুমে বসেও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল। গ্রামীণ হাটবাজারে হাঁক ছেড়ে যেভাবে একে অন্যকে ডাকাডাকি করেন অনেকটা তেমন পরিবেশ। আবার টিফিন আওয়ারে স্কুলের কমন রুম থেকে যেমন গমগম শব্দ আসে এখানেও সারাক্ষণ তা বিদ্যমান।

অথচ তখন কেবিনে কেবিনে অনেক রোগী ঘুমাতে না পারায় ঘুমের ওষুধ প্রদান অব্যহত। জেগে উঠলেই যন্ত্রণা কাতর, স্বজনদের উদ্বিগ্ন অবস্থান। রোগী ও স্বজনদের সেই যন্ত্রণার বিষয়ে না আছে বয় বেয়ারাদের দৃষ্টি, না আছে নার্সদের কোনো ভাবান্তর। ভাবছিলাম ডাক্তার ও ম্যানেজমেন্ট বোধহয় বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। কিন্তু সেই ভুল ভাঙতেও বেশি সময় লাগল না। বিকেলে সার্জারি ডাক্তার এসে বন্ধ দরজায় যেভাবে নক করছিলেন মনে হলো ডাকাত পড়েছে, দরজা না খুললে ভেঙে ফেলতে পারে।

অথচ ঘণ্টা তিনেক আগে সেই রোগীর অপারেশন হয়েছে। তার যে তখন পূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন সেদিকে যেন কারোরই কোনো মনোযোগ নেই। বেশি হতাশ লাগল যখন দেখা গেল ডাক্তার পরিদর্শনের সময়েও নার্সদের আচরণে কোনো রকম ভাবান্তর হলো না।

রাত সাড়ে ৯টায় রোগীর স্যালাইন চলছে। রোগী যেতে চাইলেন টয়লেটে, বয়কে ডাকা হলো। নার্স জানালেন নিচে গেছে ফোন করা হয়েছে এলেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে দফায় দফায় খবর দিলে নার্স বারবার একই উত্তর দিচ্ছিলেন।

এভাবে ৩০ মিনিট অতিবাহিত হয়, নার্স জানালেন বয়ের ডিউটি ১১টা থেকে। রোগীর ত্রাহি অবস্থা দেখে ডিউটি অফিসারকে অভিযোগ দেওয়ার হুমকি দিলে আরো কয়েক মিনিট পর দেখা দিলেন বয়।
দেয়ালে দেয়ালে টানানো ডিউটি ম্যানেজারের নম্বর, আবার সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে মাঝে মাঝেই ভেসে আসছিলে মহীরূহ মুশকিল আসান ডিউটি ম্যানেজারের নম্বর। যে কোনো সমস্যায় তাকে জানানোর জন্য অনুরোধ। কিন্তু সেই ডিউটি ম্যানেজারকেও পাওয়া গেল কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর।

তাকে জানানো হলো বয়ের সংক্ষিপ্ত সার। প্রথমে বললেন অভিযোগ দেন ব্যবস্থা নিচ্ছি। জানতে চাইলেন নার্সের নামও। সাক্ষাতে বিস্তারিত জানানোর আগ্রহ দেখিয়ে বলা হলো আপনি কোথায় আছেন দেখা করতে চাই। তখন বললেন, আমিই আসছি। রাত পৌনে ১০টায় কথা হয়, আর ডিউটি ম্যানেজার এলেন রাত ১টার দিকে। যখন রোগী, স্বজন সবাই ঘুমাচ্ছে।

আমাদের রোগীরা গণহারে বিদেশগামী হচ্ছে। এ বিষয়ে ডাক্তারদের বক্তব্য হচ্ছে বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে অন্যদেশের বেসরকারি হাসপাতালের তুলনা করা হয়। যে কারণে হতাশ হয় রোগীরা। ডাক্তারের এই বক্তব্যের যুক্তি খুঁজে মনকে সান্ত্বনা দেওয়া যেত এতদিন। কিন্তু দেশের একমাত্র জেএমআই সার্টিফায়েড হাসপাতালের এমন করুণ হাল মনকে বড়ই হতাশাগ্রস্ত করল।

বাইরে বেরিয়ে দেখি পার্কিংয়ে রাখা বাইকের ওপর থেকে হেলমেট উধাও। সিকিউরটিকে জানালে তিনি বললেন, পরদিন দেখা করতে। কথা অনুযায়ী পরদিন দেখা হলে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রুহুল আমিন প্রথম চোটেই বলে দিলেন, সামান্য কয়টা টাকা দাম, এটার খোঁজ করে আর কী করবেন। আপনি হাসপাতালে ছিলেন প্রায় ১২ ঘণ্টা, সিসি ক্যামেরার রেকর্ড দেখতে হলে ১২ ঘণ্টা লাগবে। এতক্ষণ সময় দেওয়া কঠিন। টেনে টেনে দেখলেও অনেক সময় লাগবে।

পাশে দাঁড়ানো সহকারী মুবিন বললেন, আপনি কি মনে করতে পারবেন কখন চুরি হয়ে থাকতে পারে। সবিনয়ে তাকে জানালাম, এইটা যদি জানতাম তাহলে তো চোরকেই পাকড়াও করতে পারতাম। এবার সিকিউরিটি অফিসার বললেন, দেখে কী করবেন, আপনার মতো কোনো বাইকার হয়ে নিয়ে গেছে। তাকে জানালাম, হ্যাঁ সেই বাইকারের নম্বর হলেই তাকে পাওয়া সম্ভব।

প্রায় ২০ মিনিট ধরে বোঝাতে চাইলেন, এটা জটিল বিষয়, আর দেখেই বা লাভ কী। আপনি তো আর হেলমেট ফিরে পাচ্ছেন না। আমিও নাছোড়বান্দা, তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখবই। পরে জানালেন, এই ফুটেজ থাকে বড় অফিসারের রুমে। সেখানে যখন তখন যাওয়া যাবে না। আমি দেখছি কী করা হয়। বিকেলে ফোন দিয়ে জানালেন, ভাই, যেখানে বাইক ছিল সেই জায়গায় লাইট কম ছিল, সিসি ক্যামেরায় বোঝা যায় না। বললেন, ছয় জনের একটি গ্রুপ আপনার হেলমেট চুরি করেছে। এবার জবাব দিলাম তাহলে তো বিষয়টি সহজ। ওরা যখন মেইন গেট দিয়ে বের হয়েছে সে সময়ের ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেন।

এবার যেন আগ্রহ কমে গেল রুহুল আমিনের। আবোল তাবোল বলা শুরু করলেন, সাদা কালো দেখলেও চেনা যায় না। আপনার হেলমেট চুরি হয়েছে রাত সাড়ে ১১টায়। একটু আগে যে সন্ধ্যা ৭টার কথা বললেন। এরপর বললেন, আমরাতো হেলমেটের দায়িত্ব নিই না। নোটিশ দেওয়া আছে।

তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু এ রকম একটি উচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকায় চুরির ঘটনা নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। উল্টো জানালেন, মাঝেমধ্যেই নাকি এমন হেলমেট চুরি হয়। তাদের এই নীরবতা চরম হতাশ করল। অনেকে মনে করেন নিরাপত্তা কর্মীরাও কেউ কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। সে কারণে এ বিষয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখান না।

   

স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসার সরকারি হাসপাতাল নিউরোসায়েন্সেস



রুহুল আমিন ও রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

হাসপাতালের মূল ফটক দিয়ে ঢোকার পথে বামে পরিষ্কার সাজানো ফুলের বাগান। চারদিক বেশ পরিপাটি। হাসপাতালে ঢোকার পথটিও বেশ পরিচ্ছন্ন। বামদিকে একটি নির্মাণাধীন ভবন। পাশে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবনটিও হতে চলেছে এই হাসপাতালের অংশ। মূল ভবনে ঢুকতেই সিঁড়ির বাম পাশে টিকিট কাউন্টার। পাশে ফার্মেসি। সেখান থেকে দেওয়া হচ্ছ, সরকারি বিনামূল্যের ওষুধ। কাউন্টারে এসে রোগীদের যেন হয়রানি শিকার না হতে হয়, সে জন্য আছে বিশাল বোর্ডে সরকারি ওষুধের তালিকা।

এছাড়াও ইমার্জেন্সিতে আসা রোগীদের জন্য স্ট্রেচার ও হাঁটাচলা করতে না পারা রোগীদের জন্য রাখা আছে পর্যাপ্ত হুইল চেয়ার। হাসপাতালের লবি থেকে হাতের বামে ইমার্জেন্সি ও ডানে বহিঃবিভাগ। ওদিকটায় একটু বেশি ভিড়। তবে চারদিকটাই সাজানো গোছানো ও সুন্দর।

অপরিচ্ছন্ন, অপরিষ্কার আর নোংরা পরিবেশই যেন সরকারি হাসপাতালের নিয়মিত চিত্র। তারই বিপরীতে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে, উন্নত মেশিনারিজ আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেবামূলক আচরণে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল।

সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় খুশি সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনেরাও। পুরো হাসপাতাল সিসি ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকায় নেই দালালের উৎপাতও। ওয়ার্ড বয়, স্ট্রেচার বয় ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহারেও আছে সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। কম খরচে এমন উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারায় মাত্র ১০ বছরের মধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছে দেশ জুড়ে এই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল।

এমন নাম কুড়িয়েও শয্যা সংখ্যার অপ্রতুলতায় ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে অনেককেই। তবে আশার কথা হলো, ৪শ ৫০ শয্যা থেকে ৯শ ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। পুরোপুরি কাজ শেষ হলে সে আক্ষেপ অনেকটাই ঘুচবে বলে আশা করছেন সবাই।

ইতিমধ্যেই হাসপাতালটিতে চালু হয়েছে, অত্যাধুনিক ১০০ শয্যা বিশিষ্ট স্ট্রোক ইউনিট। জানা যায়, অত্যাধুনিক এই স্ট্রোক ইউনিটে স্ট্রোক হওয়ার চার থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে নিয়ে আসতে পারলে লাঘব করা যাবে পঙ্গুত্বসহ নানা শারীরিক সমস্যা। এছাড়াও রয়েছে মাথাব্যথা, এপিলেপসি, মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার ক্লিনিক। নিউরোলোজি, নিউরোসার্জারি, পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি, পেডিয়াট্রিক নিউরোসার্জারি, নিউরোফিজিওলজি, নিউরোইন্টারভেনশন, নিউরোরিহাবিলিটেশন, নিউরোরেডিওলজি, নিউরোপ্যাথোলজি, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং মেডিসিনসহ আরও বেশ কিছু বিভাগ। আছে অপারেশন থিয়েটার, ক্যাথ ল্যাব, ল্যাবরেটরি সার্ভিস ও আইসিইউর মতো জরুরি প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার ব্যবস্থাও।

সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আদলে গড়ে তোলা হাসপাতালটি চালু হয়, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এই হাসপাতালের প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০০৩ সালে। তবে দীর্ঘদিন পরিকল্পনায় আটকে থাকার পর ২০০৯ সালে শুরু হয়, হাসপাতাল নির্মাণ কার্যক্রম। দেশের বৃহত্তম নিউরোলজি ও নিউরো সার্জারিবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবার এই হাসপাতালটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২শ ৩১ কোটি টাকা। চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিবছর নিউরোলজি ও নিউরো সার্জারিবিষয়ক উচ্চতর ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিন হাসপাতালটিতে ঢুকতেই চোখে পড়ে এর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকগুলো। হাসপাতালের লবি থেকে হাতের বামে ইমার্জেন্সি ও ডানে বহিঃবিভাগ। এখানে মানুষের জটলাটা একটু বেশি। জানা গেল, কয়েক হাজার রোগীর তুলনায় বহিঃবিভাগ ছোট হওয়ায় ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে রোগীদের থাকতে হয় দীর্ঘ অপেক্ষায়। এছাড়াও নেই পর্যাপ্ত বসার স্থান। সে কারণে অসুস্থ শরীর নিয়েও বাধ্য হয়ে সেবা প্রত্যাশীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। 

হাসপাতালটিতে আসা সেবাপ্রত্যাশীদের অনেকেই বার্তা২৪.কম প্রতিবেদককে জানান, তাদের সন্তুষ্টির কথা। হাসপাতালের পরিবেশ, সেবার মান ও উন্নত সরঞ্জামাদি থাকায় অনেকটায় নিশ্চিন্তে সেবা নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেন অনেকে। রোগী ও তাদের স্বজনরা বলেন, সরকারি হাসপাতালে এমন উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা কখনো কল্পনাও করতে পারেননি তারা। এখানকার খাবারের মানও অনেক ভালো। রোগীর সেবায় থাকা নার্স ও ওয়ার্ডবয়রাও রোগীর সেবাযত্নে কোনো ত্রুটি রাখেন না। অনেক বেসরকারি নামিদামি হাসপাতালের চেয়েও এখানকার চিকিৎসা সেবা উন্নত বলেই মনে হয় আমাদের, বলছিলেন একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনেরা।

বাগেরহাট থেকে স্ট্রোক করা মা-কে নিয়ে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে এসেছেন নজরুল মিয়া। জানালেন, চারদিন আগে হাঁটতে গিয়ে বাড়ির উঠানেই পড়ে যান তার মা। পরে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রেফার করেন ঢাকার এই হাসপাতালে। এখানে নিয়ে আসার পর থেকে গত চারদিনে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন তার মা। দুই-একদিনের মধ্যে ছুটিও দিয়ে দিতে পারে বলে জানান তিনি।

বার্তা২৪.কমকে নজরুল মিয়া বলেন, কখনো ভাবিনি সরকারি হাসপাতালে এমন সেবা পাবো। হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে কোথাও কোনো দালাল নেই। কর্মচারীদের ব্যবহারও ছিল ভালো। ওয়ার্ডে থাকার জন্যও আমাদের কিছু নিয়ে আসতে হয়নি বাইরে থেকে। আমার মায়ের দেখভালের জন্যও আমাকে থাকতে হয়নি। তারাই দায়িত্ব নিয়ে আমার মাকে সুস্থ করে তুলেছেন।

পটুয়াখালী থেকে শাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন বিল্লাল হোসেন। সিট না পাওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করলেও হাসপাতালের পরিবেশ ও ডাক্তারদের ব্যবহারে অনেকটাই সন্তুষ্ট জানিয়ে বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, ‘আমি তো নিউরোসাইন্সের কথা আগেও শুনছি। এখানকার ডাক্তার নাকি অনেক ভালো। ডাক্তার ভালোই। চিকিৎসাও তো ভালোই হইতাছে। শাশুড়ি স্ট্রোক করছে। হেরে নিয়া আইছি। এইখানকার ডাক্তার দেখছে। দেইখা কইছে, ভর্তি করাইতে হইবো। কিন্তু আজকে নাকি সিট খালি নাই। কইছে কালকে আইতে।‘

হাসপাতালে আসা অধিকাংশ রোগীদের বক্তব্যই ছিল এমন। সিট না-পাওয়া ও লম্বা সিরিয়াল থাকায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করলেও হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থায় সন্তুষ্টির কথায় জানান তারা। বিনামূল্যে ঔষধ, কম খরচে উন্নত টেস্টের ব্যবস্থা ও ওয়ার্ড-কেবিনের পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতায় তাদের সন্তুষ্টির মূল কারণ বলেও জানান সেবাপ্রত্যাশীরা।

তবে ৫০০ শয্যার বর্ধিতাংশ প্রস্তুত হয়ে গেলে সে সংকটও কাটবে, এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সবার। 

;

সামেক হাসপাতালে ডায়ালিসিস মেশিন বিকল, দুর্ভোগে রোগীরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরা জেলার প্রত্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার বংশিপুরের আজিজ মোড়ল। অনেকদিন ধরেই তার ছেলে জয়নাল ক্রনিক কিডনি রোগে (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ- সিকেডি) আক্রান্ত।

পরিবারে স্বচ্ছল অবস্থা না থাকায় ভালো প্রাইভেট হাসপাতালে ডায়ালিসিস করাতে পারছেন না। তবে তারই জেলা শহর সাতক্ষীরায় অবস্থিত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতাল। সেখানে কিডনি ডায়ালিসিস করাবেন, তারও উপায় নেই। কারণ, সামেক হাসপাতালের ১৯টি ডায়ালিসিস মেশিনের মধ্যে ১৬টিই মেশিন বর্তমানে বিকল।

এ নিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন জয়নালের মতো অসহায় কিডনি রোগীরা।

জয়নাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার মা ভিক্ষা করে আমার ডায়ালিসিসের খরচ চালান। এখন যদি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা বন্ধ করে দেয়, তাহলে যেকোনো সময় আমার মৃত্যু হবে। কারণ, প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ডায়ালিসিস করানোর সামর্থ্য আমাদের নেই।

শুধু জয়নাল নয়, তার মতো একজন জহুরুল কবীর। সাতক্ষীরা শহরের বাসিন্দা তিনি। পেশায় একজন সংবাদকর্মী। তার স্ত্রী অনেকদিন ধরেই সিকেডিতে আক্রান্ত। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় জমি বিক্রি করে তার চিকিৎসা করাচ্ছিলেন।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে তিনটি সেশনে ১২ ঘণ্টা করে ডায়ালিসিস করা প্রয়োজন। কিন্তু সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের একাধিক মেশিন বিকল থাকায়, দুই সেশনে চার ঘণ্টা করে সপ্তাহে আট ঘণ্টা ডায়ালিসিস করানো হতো। কম খরচে এই হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়ে স্ত্রীকে কোনো রকমে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।

কিন্তু গত মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে আসা ফোন কলে তিনি চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। এখন থেকে তার স্ত্রী সপ্তাহে সর্বোচ্চ একবার ডায়ালিসিস করার সুযোগ পাবেন। ১৯টির মধ্যে মাত্র তিনটি মেশিন এখন সচল রয়েছে। রোগীর চাপের কারণে সপ্তাহে একবারের বেশি ডায়ালিসিস সেবা পাওয়া যাবে না।

জহুরুল কবীর বলেন, ‘সপ্তাহে চার ঘণ্টা ডায়ালিসিস করালে অধিকাংশ রোগীই বাঁচবে না। খবরটি শুনে অনেক কেঁদেছি!’ স্ত্রীকে বাঁচাতে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯টি ডায়ালিসিস মেশিনের মধ্যে ১৬টি বিকল। একটি পুরোপুরি সক্রিয় থাকলেও দুটোর কাজ চলছে জোড়াতালি দিয়ে। ফলে নিয়মিত চিকিৎসা করা কিডনি রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। এ অবস্থায় তিনটি সচল মেশিন দিয়ে সপ্তাহে একদিন রোগীদের ডায়ালিসিস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, অদক্ষ ব্যক্তি দিয়ে মেশিন পরিচালনা করায় হাসপাতালের ১৬টি ডায়ালিসিস মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি তিনটিও নষ্ট হওয়ার পথে।

কিডনি ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা ছাড়াও আশপাশের জেলার রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। ইউনিটের চালু থাকা প্রতিটি যন্ত্র দিয়ে দিনে দুই থেকে তিনজন রোগীর ডায়ালিসিস করানো হতো। ইউনিটে গড়ে ৩৫-৪০ জন রোগীর প্রতিদিন নিয়মিত ডায়ালিসিস করানো হতো। পর্যায়ক্রমে ৬০-৭০ জন সিরিয়ালে থাকতেন। একজন রোগীর সপ্তাহে দুদিন করে ডায়ালিসিস করা হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ডায়ালিসিসের জন্য ২শ টাকা ফি নেওয়া হয়। এতে সাধারণ ও দরিদ্র রোগীরা কম খরচে সেবা পান। জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকেও রোগী আসেন।

কয়েক মাস আগেও ১৯টি যন্ত্রের সবগুলো চালু ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও সঠিক পরিচর্যার অভাবে একটি একটি করে যন্ত্রগুলো নষ্ট হতে থাকে। ফলে চাপ বাড়তে থাকে বাকি যন্ত্রগুলোর ওপর। অকেজো মেশিনগুলো সময়মতো মেরামত না করায় বর্তমানে তিনটি চালু আছে। তা দিয়ে তালিকাভুক্ত শতাধিক কিডনি রোগীকে ডায়ালিসিস সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

ফলে গত মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২০ মার্চ থেকে সপ্তাহে দুটির পরিবর্তে মাত্র একটি ডায়ালিসিস করানো হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণার পর বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। বর্তমানে আতঙ্কে ভুগছেন তারা।

হাসপাতালের কিডনি ডায়ালিসিস ইউনিটের ইনচার্জ নমিতা রানী বলেন, ‘১৯টি মেশিনের মধ্যে একটি ভালো থাকলেও অপর দুটি মেশিনে জোড়াতালি দিয়ে রোগীদের ডায়ালিসিস চলছে। ফলে এখন থেকে সপ্তাহে দুই অথবা তিনবার ডায়ালিসিস দেওয়া সম্ভব হবে না।’

এ ব্যাপারে সামেক হাসপাতালের পরিচালক শীতল চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের মোট ডায়ালিসিস মেশিন ১৯টি। এর মধ্যে বর্তমানে তিনটি সচল আছে।

মেশিন নষ্ট হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, অদক্ষ ব্যক্তি দিয়ে মেশিন পরিচালনা করায় মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

নষ্ট মেশিনগুলো মেরামত প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। মেরামতের জন্য কয়েক দফায় টেকনিশিয়ান এসেছেন। কিন্তু খুচরা যন্ত্রাংশ না পাওয়া যাওয়ায় মেশিনগুলো ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না।

নষ্ট মেশিনগুলো দ্রুত মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

;

'কিডনি সুরক্ষা বিমা' চালুর দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কিডনি রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। চিকিৎসা করতে গিয়ে পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। অনেকে টাকার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারেন না। ফলে কিনডি রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। তাই 'কিডনি সুরক্ষা বিমা' চালুর দাবি করেছে 'কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)।

শনিবার (৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক আলোচনা সভায় এ দাবি উত্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি। 'বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২৪' উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দেশের শীর্ষস্থানীয় কিডনি বিষয়ক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'ক্যাম্পস' এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। 

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পাসের প্রতিষ্ঠা ও সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোতে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে হয়। রোগীর পকেট থেকে দিতে হয় না। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আংশিক খরচ সরকার বহন করে থাকে। আশা করি, শীঘ্রই আমাদের দেশে 'কিডনি সুরক্ষা বীমা' চালু হবে। যার ফলে হয়তো কিডনি রোগীদের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হবে এবং সবাইকে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে। 

ডা. সামাদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করবে। বর্তমানে ৮৫ কোটির অধিক লোক দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য এরমধ্যে ৭৫ কোটি রোগী জানে না যে মরণঘাতী কিডনি রোগ নীরবে তাদের কিডনি নষ্ট করে চলেছে। প্রতি বছর ১ কোটি ৩০ লাখ লোক আকস্মিক কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত হয় যার ৮৫ ভাগই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে। উন্নত দেশে কিডনি বিকলের চিকিৎসা করতে গিয়ে সরকার হিমশিম খাচ্ছে।

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর হার শতকরা ১৬-১৮ ভাগ। কিডনি রোগের শেষ পরিণতি কিডনি বিকল। একবার কিডনি বিকল হয়ে গেলে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। কিন্তু এই চিকিৎসা এতটাই ব্যয়বহুল যে, শতকরা ১০ জন কিডনি বিকল রোগী তা বহন করতে পারে না। তাই আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে প্রায় ৯০ ভাগ রোগী বিনা চিকিৎসায় অথবা আংশিক চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করে। পক্ষান্তরে, সবাই যদি কিডনি রোগের ব্যাপকতা, ভয়াবহতা, পরিণতি ও কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপন করে তা হলে ৫০-৬০ ভাগ ক্ষেত্রে এই মরণঘাতী কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।

কিনডি রোগ প্রতিরোধে পরামর্শ তুলে ধরে ডা. সামাদ বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম করা, পরিমিত স্বাস্থ্যসম্মত বা সুষম খাবার গ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান পরিহার করা, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করা, তীব্র মাত্রার ব্যাথার ঔষধ পরিহার করা। তাছাড়া যারা ঝুঁকিতে আছেন যেমন যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বেশী, বংশে কিডনি রোগ আছে, যারা ধূমপায়ী, যারা তীব্র মাত্রার ব্যাথার ঔষধ খেয়েছেন, যাদের পূর্বে কোন কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে তাদের বছরে অন্তত ২ বার প্রস্রাব ও রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ। কেননা প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ শনাক্ত করতে পারলে চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, রোগ হয়ে গেলে অনেক ঝামেলা। আমাদের টার্গেট থাকবে কিডনি রোগ হওয়ার আগে। আমাদের সচেতনার মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে হবে। সাংবাদিক, ধর্মীয়গুরু, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাকসহ সমাজের নেতৃত্ব পর্যায়ের সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, দেশে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ রয়েছে যারা বিভিন্ন ধাপে কিনডি রোগে আক্রান্ত। সমঅধিকার যদি চাই তাহলে বিমা ছাড়া কোনো উপায় নাই। একজন মানুষ চিকিৎসা করতে যেয়ে কেন দেউলিয়া হবে। এটা মেনে নেয়া যায় না। আমাদের সেদিক নজর রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের শস্য অনেক ভালো, আমাদের খাদ্যে কোন ঘাটতি নাই। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের খাদ্যগুলো তৈরি করার জন্য অনেক পরিমাণ কীটনাশক দেয়া হয়। এই কীটনাশকযুক্ত খাবারগুলো আমাদের কিডনির সমস্যার জন্য দায়ী, এটা প্রমাণিত। তবে আমরা কিন্তু দেখিনি খাদ্যে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কী পরিমাণ কিডনি রোগ বাড়ছে। এই গবেষণাগুলো করা আমাদের খুবই প্রয়োজন। বাত ব্যথার ওষুধ সঠিক নিয়ম অনুযায়ী না কিনলে কিডনির ভয়ংকর অবস্থা হতে পারে। পাশাপাশি আমি বলবো এন্টিবায়োটিক যত্রতত্র ব্যবহার করলে, নির্দেশিত নিয়ম অনুযায়ী না খেলে কিডনির জন্য সমস্যা। এই নির্দেশিত নিয়মের জন্য আমরা কাজ করছি।

জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, কিডনি রোগ ৭০-৮০ ভাগ প্রতিরোধে সম্ভব। আমরা প্রতিরোধের কথা বলি, মানুষ শুনছে না। কিন্তু আমরা কেউ গবেষণা করিনি যে কোনভাবে বললে মানুষ শুনবে।

কিডনি রোগকে ‘নিরব দুর্যোগ' বলে উল্লেখ করে কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশিদ বলেন, এ রোগের জটিলতা ও চিকিৎসা ব্যয়ের আধিক্য বিবেচনায় প্রতিরোধকেই একমাত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন, সাবেক ক্রিকেটার গাজী আশরাফ হোসেন প্রমুখ।

;

নিউরোস্পাইন সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক হলেন ডাক্তার বারী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের সকল নিউরোসার্জনদের সমন্বয়ে গঠিত চিকিৎসকদের অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন নিউরোস্পাইন সোসাইটি অব বাংলাদেশ। সংগঠনটির কার্য নির্বাহী কমিটির ২০২৪-২০২৫ মেয়াদের জন্য যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর নিউরোসার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাহনেওয়াজ বারী।

শনিবার (২ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাহনেওয়াজ বারী দ্বিতীয় বারের মতো এই সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে নির্বাচিত হওয়ায় সংগঠনের সম্মানিত সকল নিউরোসার্জনদের প্রতি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এসময় তিনি স্পাইন সার্জারীতে বাংলাদেশের নিরোসার্জনদের অবদান সমুন্নত রাখতে এবং দক্ষতা ও সম্পৃক্ততা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার দৃড় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

;