শুধুমাত্র আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি দেখছে সরকার



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাবন্দী করা হয়। তার কারাবাসের ১৬ মাস ইতোমধ্যেই পেরিয়ে গেছে। দীর্ঘ এই সময়ে একাধিকবারই খালেদা জিয়ার মুক্তির গুঞ্জন ওঠে, কিন্তু প্রতিবারই সে গুঞ্জনের ধ্বনি সময়ের সঙ্গে বাতাসে মিলিয়ে গেছে।

গুঞ্জনের ধারাবাহিকতায় ফের আলোচনায় বেগম জিয়ার কারামুক্তি। সংসদ থেকে রাজনীতির ময়দান, হাইকোর্ট থেকে চায়ের টেবিলে, এছাড়াও খালেদার মুক্তি নিয়ে প্রতিদিনই গণমাধ্যমে কথা বলছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী। বিএনপির নেতারা যেখানে দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি না হওয়ার জন্য সরকারের সদিচ্ছাকে দায়ী করে রাজপথের আন্দোলনকে উপায় হিসেবে দেখছেন, সেখানে একমাত্র আইনি প্রক্রিয়াতেই বেগম জিয়ার মুক্তির সম্ভাবনা দেখছে সরকার।

কারাবন্দী বেগম জিয়ার মুক্তির গুঞ্জন জোরালো হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তখন টানা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। গুঞ্জন ওঠে, সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেওয়ায় খালেদার মুক্তির নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে। কারাগারে অসুস্থ খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সেসময় সরকারকে নমনীয় অবস্থান নিতে দেখা যায়।

সূত্র জানায়, প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে তখন সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতা করেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের তিন নেতা। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক উপদেষ্টা।

২৫ মার্চ অসুস্থ খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও বলতে শোনা যায়, 'অসুস্থ বেগম জিয়া প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করলে সক্রিয় বিবেচনা করবে সরকার।' শেষ পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে প্যারোলের আবেদন না করায় ভেস্তে যায় রাজনৈতিক সমঝোতা।

এরপর আসে এপ্রিল মাস। 'নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিলে মুক্ত হতে পারেন বেগম জিয়া'-নতুন এই রাজনৈতিক সমীকরণের গুঞ্জন ওঠে রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু ২৯ এপ্রিল, শপথগ্রহণের সর্বশেষ দিনে নানা নাটকীয়তা শেষে বিএনপির সংসদ সদস্যরা শপথ নিলেও বেগম জিয়ার মুক্তির গুঞ্জন আবারও চাপা পড়ে যায়।

সূত্র জানায়, বিএনপি যেখানে দলীয় চেয়ারপারসনের নিঃশর্ত মুক্তি চান সেখানে সরকারের বক্তব্য, আইনি প্রক্রিয়াতেই এগোতে হবে তাদের। অসুস্থ বেগম জিয়ার চিকিৎসার জন্য প্যারোলের আবেদন করলে সরকার ইতিবাচক বিবেচনা করবে। প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে গেলেও আপত্তি করবে না সরকার। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন তার 'আপসহীন' ইমেজ টিকিয়ে রাখতে প্যারোলে মুক্তি নিতে অস্বীকৃতি জানান।

তবে হ্যাঁ, আদালত যদি বিএনপি চেয়ারপারসনকে জামিন দেন সেক্ষেত্রে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। বিএনপির সঙ্গে প্যারোল সমঝোতা ভেস্তে যাওযায় সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলেও আদালতের মাধ্যমে খালেদা মুক্তি পেলে সরকার তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন। কোনো আন্দোলনের মাধ্যমে নয়, কেবলমাত্র আইনগত প্রক্রিয়াতে শুধু তার মুক্তি সম্ভব।’

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে রয়েছে ৩৬টি মামলা। সেনা নিয়ন্ত্রিত জরুরি অবস্থার সরকারের আমলে চারটি এবং আওয়ামী লীগের গত দুই মেয়াদে ৩২টি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা পাঁচটি, নাশকতার ১৬টি, মানহানির চারটি, হত্যা মামলা তিনটি, মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার দুটি, রাষ্ট্রদ্রোহের একটি, ভুয়া জন্মদিন পালনের একটি, সাবেক নৌ মন্ত্রীর ওপর বোমা হামলার একটি, জাতীয় পতাকার অবমাননার একটি, ড্যান্ডি ডাইংয়ের অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন একটি এবং বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের মালিকানা নিয়ে একটি দেওয়ানি মামলা রয়েছে।

এসব মামলার ১৬টিতে অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে। উচ্চ আদালতে ১১টির বিচার স্থগিত আছে। আর বাকি ২০টি মামলার কোনটিতে অভিযোগপত্র জমা পড়েছে, বা কোনোটি তদন্তের পর্যায়ে আছে।

২০১৪ সালে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি মানহানির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল নিম্ন আদালত। মানহানির এই দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবার (১৮ জুন) ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এখন তার কারামুক্তিতে বাধা মাত্র আর দুটি মামলা।

মুক্তির জন্য জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্ট বিভাগে জামিন পেতে হবে। ওই দুই মামলায় তিনি ১৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।

এদিকে সম্প্রতি কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি ভিআইপি কক্ষ আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে নতুন করে সাজানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন না হলে, আর চিকিৎসকরা ‘নিরাপদ’ মনে করলে খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু হাসপাতাল থেকে এই কারাগারে বন্দী রাখা হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'বেগম জিয়ার মু‌ক্তির বিষয়‌টি সম্পূর্ণ আদাল‌তের এখ‌তিয়ার। আদালত তাকে মু‌ক্তি দি‌লে তা‌তে সরকা‌রের কোনো হস্ত‌ক্ষেপ থাক‌বে না। এরই ম‌ধ্যে আদালত ৩০ থে‌কে ৩২টি মামলায় তাকে জা‌মিন দি‌য়ে‌ছে।'

আদলতে হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আদালত বেগম জিয়াকে মুক্তি দিলে সরকার সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ অতীতেও করেনি, বর্তমানেও করছে না, ভবিষ্যতেও করবে না।'

   

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্দেশনায় মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক। এতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া মন্ত্রী ও সাংসদদের স্বজনদের তালিকা করারও নির্দেশনা দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন প্রভাব মুক্ত রাখার যে কঠোর নির্দেশনা তা সবাইকে তিনি অবগত করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৈঠকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, ভাই বা নিকটাত্বীয়রা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী যেনো না হয় তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের জানিয়েছেন।

;

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বারিধারায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ অংশ নেন। ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন সারাহ কুক।

এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দুপুরের দিকে বৈঠক হয়েছে বলে আমি জানি। তবে, বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানা নেই।

;

জামিন না দেওয়া প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিথ্যা মামলায় দলের নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোকে আওয়ামী সরকার তাদের প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাকসুদ হোসেন এবং সদস্য মোহাম্মদ আরিফ হাসানকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ কয়েকজন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর দখলদার আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক জোরালোভাবে শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম—নির্যাতন। ডামি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিরোধী দল ও মতের মানুষদের ঘায়েল করতে লাগামহীন গতিতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের মাধ্যমে আদালতকে দিয়ে ফরমায়েশি সাজা দিচ্ছে। জামিন নামঞ্জুর করে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

;

গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই বিএনপির: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতবৃন্দ লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, একদিকে তারা অগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিরোধীদল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাত অপশক্তি সারাদেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে। সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না। বরং সন্ত্রাস ও সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে এবং জামিনে মুক্তিও পাচ্ছে। তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে- জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা ও মহামান্য আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে কারণে বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই, সে যে দলেরই হোক না কেন সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্হিভূত বক্তব্য প্রদান করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন গুরুত্ব অপরিসীম। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বরাবরের ন্যায় নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয় সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের ন্যায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

বিবৃতিতে তিনি বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

;