ইন্ডাস্ট্রি ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে নাসিরুদ্দিন শাহ্’র প্রথাবিরোধী যত ভাবনা



যাকওয়ান সাঈদ, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
নাসিরুদ্দিন শাহ্

নাসিরুদ্দিন শাহ্

  • Font increase
  • Font Decrease

নাসিরুদ্দিন শাহ্ একজন বলিউড অভিনেতা। নানাসময়ে তিনি নানামুখী সাহসী বক্তব্যের মধ্যদিয়ে একটি বিতর্কিত অবস্থায় নিজেকে উপস্থাপন করে থাকেন। ফলে তার ব্যাপারে উপমহাদেশের মানুষদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া যায়। অনেকের মনে তার জন্য রয়েছে অসামান্য ভালোবাসা, আবার অনেকের কাছেই তিনি ঘৃণার পাত্র।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/20/1563613235548.jpg
তরুণ বয়সে নাসিরুদ্দিন শাহ্ ◢

 

কিছুদিন আগেও এই অভিনেতা ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিস্তর আলাপ-আলোচনার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময়কালে ভারতের একটি নামকরা দৈনিক পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “মানুষ স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে কেন বলতে পারেন? মূলত সে স্ক্রিনে তার নিজের নামটা একটু দেখতে চায়। এটা তাদের কাছে একটা আকর্ষণীয় ব্যাপার। আমি নিজেও স্বপ্ন দেখতাম, অভিনেতা হয়ে নিজের নামটা পর্দায় দেখতে পাব। আসলে যেইসব লোকেদের কাজবাজ নাই, তারাই মূলত স্যোশাল মিডিয়া থেকে এই সুযোগটা নিয়ে থাকে। অন্য লোকদের ব্যাপারে তারাই বিরূপতা তৈরি করতে চায়, ঘৃণা অথবা অশ্লীলতা ছড়ায়, এগুলোই তাদের কাজ।

নাসিরুদ্দিন শাহ্ সর্বদাই চলমান বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অর্থহীন সিনেমাসমূহকে প্রশ্নের মুখোমুখি রাখতে চেষ্টা করেছেন। মূলত তাকে, এবং ওম পুরি নামক আরেকজন অভিনেতাকে বলিউডের সবচেয়ে শক্তিশালী নন-কমার্শিয়াল অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কমার্শিয়াল সিনেমার ব্যাপার তিনি মন্তব্য করেছিলেন, “কমার্শিয়াল সিনেমাগুলো একটা বৃহৎ সংখ্যক সনাতনী ধ্যানধারণাকে সমাজে চালু রাখতে সাহায্য করে, যেগুলো আসলে পরিবর্তন হওয়া উচিত। দুঃখজনকভাবে এখানকার টেলিভিশন সিরিজগুলোও এই ধরনের চিরক্ষতিকর বিষয়গুলোর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে। এগুলো সেই পুরান আমলের নারীবিদ্বেষী প্রেক্ষাপটগুলোকেই প্রচার করছে। যেমন একজন মহিলা সর্বদাই তার স্বামীর পেছনে পেছনে চলছে, অথবা স্বামীর পায়ের ওপরে শুয়ে আছে, অথবা ‘মেরে তুলসি তেরে আগান কি’ জাতীয় কথা বলে বলে তার স্বামীর অপেক্ষা করছে। এই জাতীয় রাবিশ আর পশ্চাদমুখী পরিবার প্রথাগুলো কোনোভাবেই এই বর্তমান দুনিয়ার সঙ্গে মানানসই না।

কমার্শিয়াল সিনেমার প্রতি এধরনের মনোভাব পোষণ করা ছাড়াও নাসিরুদ্দিন নতুন সিনেমা, অর্থাৎ চিন্তাশীল নতুন চলচ্চিত্রকারদেরকে গুরুত্ব দিতে ভীষণভাবে তৎপর থাকেন। এবং তিনি নিজে ‘ইউটিউব জেনারেশন’-এর চলচ্চিত্রকারদের দ্বারা অভিভূত হতে চান, এমনটাই ব্যক্ত করেন।
এই প্রসঙ্গে তার বক্তব্যটি এমন, “আমি এইসব চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে আশা খুঁজে পাই। কেননা তারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে কোনো প্রকার প্রডিউসারের সঙ্গে বসাবসি ব্যতিরেকে। তারা বাজেট অথবা হলগুলো থেকে কী পরিমাণ টাকা রিটার্ন আসলো, এসব চিন্তা থেকে মুক্ত।

বলিউডের বিরাট বাজেটের সিনেমাগুলোর ব্যাপারে তিনি একপ্রকার হাস্যরসই করে থাকেন। সম্প্রতি কোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “লক্ষ করবেন, হয় বলিউডে বিরাট বিরাট বাজেটের ছবিগুলো হচ্ছে, আর নয়তো হচ্ছে স্বল্প বাজেটের ইন্ডিপেন্ডেট ছবি। মাঝামাঝি কিছু নেই। আর বড় ছবিগুলো একের পর এক শুধু ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু তাতে কি বলিউডের শিক্ষা হচ্ছে? এক ডজন অভিনেতাকে নিয়ে আরো বড় বড় ছবি বানিয়ে যাবে তারা, এন্ড হোপফুলি দে উইল কিপ লুজিং মানি।

নাসিরুদ্দিন শাহ্ পারিবারিক জীবনকেও সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। এবং বর্তমান ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিতে তিনি নিজের পরিবারকে নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম পরিবার থেকে আসলেও তার স্ত্রী একজন হিন্দু পরিবার থেকে আসা মানুষ, কাজেই তার সন্তানদের পক্ষে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের পরিচয়ে নিজেদেরকে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
এপ্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিন বলেন, “আমি আমার বাচ্চাদেরকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকি। কেননা, এই ইতর জনগণ আগামীকালকে যদি তাদেরকে ঘিরে ধরে জিজ্ঞাসা করে, তোমরা হিন্দু নাকি মুসলিম, সেক্ষেত্রে তাদের কোনো উত্তর দেওয়ার থাকবে না।” নাসিরুদ্দিনের ভিভান শাহ এবং ইমাদ শাহ নামে দুইজন পুত্র সন্তান আর হীবা শাহ নামে একজন কন্যা সন্তান রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/20/1563613579950.jpg
পরিবারের সদস্যদের সাথে নাসিরুদ্দিন শাহ্ ◢

 

স্ত্রী রত্না পাঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের সম্পর্কটা এক ধরনের কেমিস্ট্র, যা মূলত দুইজন অভিনয়শিল্পীর মধ্যে সুন্দর বিবেচনাবোধ হিসেবে বিরাজ করে, এবং যখন সম্ভব হয় একে অন্যকে সাহায্য করে।

নাসিরুদ্দিন শাহ্ রত্না পাঠকের ব্যাপারে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ, তার কিছু কথায় এধরনের অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। যেমন তিনি বলেন, “সে আমাকে চমৎকারভাবে সাহায্য করে, ঠিক ততটা সাহায্য আমিও তাকে করতে পারি না। প্রায় প্রত্যেকটা বিষয়ে আমি তার মতামতের ওপর ভরসা করে চলি, এমনকি আমার সিনেমার কাজগুলোর ক্ষেত্রেও। তার মতামত আমার জন্য বিরাট সুফল বয়ে আনে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/20/1563614014136.jpg
নাসিরুদ্দিন শাহ্ এবং ওম পুরি ◢

 

আজ ২০ জুলাই, এই বরেণ্য অভিনয় শিল্পীর জন্মদিন। নিচে তার বিখ্যাত কয়েকটি উক্তি বা কোটেশন উল্লেখ করা যাক। এর আগে, তার ব্যাপারে আমাদের কিছু বিষয় জেনে নিলে ভালো। ফুটনোট আকার ওই বিষয়গুলো প্রথমে উল্লেখ করা যাচ্ছে—

• সিনেমায় আসার আগে নাসিরুদ্দিন শাহ্ একজন শক্তিশালী থিয়েটার অভিনেতা ছিলেন। ১৯৭৭ সালে এই মর্মে তিনি ‘মটলি প্রডাকশন’ নামে একটি নাট্যদল গড়ে তুলেছিলেন। সেখানে তার সহযোগী ছিলেন অভিনেতা বেঞ্জামিন গিলানি এবং মার্কিন বংশোদ্ভুত অভিনেতা টম অল্টার।

• তার সিনেমা-জীবনের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। সিনেমার পর্দায় প্রথম কাজ হিসেবে ‘নিশান্ত’ নামের একটি ছবিতে তিনি খুব ছোট একটি রোল করেছিলেন।

• জীবনের ২০ বছর বয়সেই তিনি প্রথম বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু এই বিয়ে টিকেছিল মাত্র এক বছর। তার প্রথম স্ত্রীর নাম মানারা সিক্রি।

• নাসিরুদ্দিন শাহ্ কখনোই অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে এক পর্দায় অভিনয় করেননি।

• তিনি দিল্লির ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা’ থেকে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।

• এই পর্যন্ত তিনি একশোটিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

• ১৯৫০ সালের ২০ জুলাই তিনি ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বরাবাঁকি নামক একটি স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলে মোহাম্মদ শাহ, আর মাতার নাম ফাররুখ সুলতান।

• তিনি ১৯৭১ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

• ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিনি ভারত সরকার কর্তৃক দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ লাভ করেছেন, এর সময়কাল ছিল ১৯৮৭। আর ২০০৩ সালে তিনি ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননাও অর্জন করেন, এটি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা।

নাসিরুদ্দিন শাহ্’র বিখ্যাত ২৭টি উক্তি

১. আপনি হাসতে পারা আর কাঁদতে পারার পারদর্শিতার ওপরেই শুধু ভরসা রাখতে পারেন না, আর ভাবতে পারেন না যে এটাই অভিনয়ের একমাত্র নিহিত অর্থ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের দেশে কান্নাকেই সর্বদা ভালো অভিনয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২. ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখনো মনে করে, আপনি একজন অভিনেতা নিয়ে আসবেন আর তাতেই একটা ফিল্ম তৈরি হয়ে যাবে। একথাও অনেকাংশে সঠিক বটে, কিন্তু এমন কিছুকে আমি কখনোই সম্মতি দেব না।

৩. আমি পরবর্তীকালে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিলাম যে, একজন প্রথাবিরুদ্ধ অভিনেতা তাদের তৃতীয় বা চতুর্থ চয়েজ হিসেবে থাকে। এবং একমাত্র তখনই তাকে কাস্ট করা হয়, যখন তারকা অভিনেতারা সেই পার্টে অভিনয় করতে অনীহা প্রকাশ করে।

৪. মাসালা সিনেমাতে অভিনয় করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটা দেখতে-শুনতে ভালো শরীর। আর জানতে হবে কিভাবে পোশাক পরতে হয়, কিভাবে নাচতে হয়, কিভাবে মারামারি করতে হয়, বা কিভাবে হাসি-কান্নার অভিনয় করতে হয়। কিন্তু একজন মানুষ হয়ে ওঠার পক্ষে দরকারি জীবনদর্শন এবং চিন্তাচেতনার সঙ্গে আপনার কোনো বোঝাপড়া করতে হবে না। কেননা মাসালা সিনেমাগুলো এগুলোর কোনোটাই ধারণ করে না।

৫. বলিউডে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। সবকিছু এখানে তেমনই আছে, পঞ্চাশ বছর আগেও যেমনটা ছিল। হয়তো ফটোগ্রাফি আর এডিটিংটা ভালো হয়েছে, কিন্তু বিষয় বা সারাংশ সেই সত্তরের দশকে যেমন ছিল, আজও তেমনই ছেলেমানুষি রয়ে গেছে।

৬. এখানে প্রতিভা কিংবা সহজাত ক্ষমতা বলতে কিছু নেই। এখানে যা আছে তা প্রতিভার ঘাটতি বা অভাব। প্রতিভার অভাব পরিলক্ষিত হয় তখন, যখন কেউ তার নির্দিষ্ট স্থানে থাকে না।

৭. আমি কখনোই আমার চুল রঙ করার সিদ্ধান্ত নিইনি। কেননা এতে করে, একজন পুরুষকে মোটেও কমবয়স্ক লাগে না। বরং, আমার মনে হয়, পুরুষের মুখের বয়সচিহ্ণগুলো আরো স্পষ্ট হয়, যখন আপনি চুল রঙ করেন।

৮. সামহাউ, হলিউড ফিল্মগুলো আমার মধ্যে যেভাবে কাজ করে, হিন্দি সিনেমাগুলো মোটেও তেমনটা করে না। সেই পাঁচ বা ছয় বছর বয়সে আমি দেখতে পেয়েছিলাম, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ধরনেই এই দুই ঘরানার সিনেমার মধ্যে তফাৎ রয়েছে।

৯. স্বতন্ত্র সত্তা তার নিজস্ব পথকেই শুধু গ্রহণ করে। আমার বাবা তার চিন্তানুযায়ী সবচেয়ে উৎকৃষ্ঠ পন্থায় আমাকে গাইড করতে চেয়েছিলেন, এবং এটা কাজ করেনি। আমি আমার চাওয়া পথেই গিয়েছি।

১০. বোম্বের মাটিতে আমার পদার্পণটি খুব ভাগ্যমণ্ডিত ছিল। বোম্বেতে তখনই সবেমাত্র সিরিয়াস সিনেমার গোড়াপত্তন ঘটতে চলেছিল।

১১. মানুষ ভাবে আমি মজা করছি, যখন আমি বলি আমার ফেভারিট অভিনেতারা হলেন শাম্মি কাপুর আর দারা সিং।

১২. ফাইনালি আমি অনুধাবন করেছি যে, দেখতে ভালো হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।

১৩. আমি প্রত্যেকটা প্রজেক্টে যাই সমান উৎসাহ আর সমান আশাবাদ নিয়ে। কিন্তু সেসবের কোনো কোনোটা ফলে, আর কোনো কোনোটা বিফলে।

১৪. আমি মনে করি না, কারো জীবনকে পাল্টে দেওয়ার শক্তি সিনেমার আছে।

১৫. পড়াশোনাকে বাদ দেওয়ার জন্যে অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেবেন না।

১৬. আমি স্কুলে শেক্সপিয়ার পড়াতে চাই। কিন্তু, সমস্যা হলো, যদি আমি আমার পদ্ধতি প্রয়োগ করি তাহলে তারা আমার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহপ্রবণ হয়ে পড়বে।

১৭. থিয়েটার আপনাকে এমন একটা পৃথিবীর দিকে নিয়ে যাবে যেখানে আপনার কল্পনাশক্তি আরো শাণিত হবে, আপনার অভিমতগুলো আরো শক্তিশালী হবে, আর এভাবে অভিনয়কে উপভোগ করা আপনার পক্ষে আরো সহজ হবে।

১৮. থিয়েটারের সবচেয়ে সুন্দর সংজ্ঞাটা আমি ফেলে এসেছি, সেটা হলো, ‘একজন অভিনেতা, একজন দর্শক।’

১৯, রাজনৈতিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ লোকদেরকে আমি পছন্দ করি। এবং পছন্দ করি, যারা খুব যাচ্ছেতাই।

২০. আমি এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কোনো কিছুর কাছেই ঋণী না। আমি তাদেরকে নিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু করিনি। তারা আমার কাছে আসে, যখন তাদের একজন অভিনেতা প্রয়োজন হয়, যে ভালো ভালো বিষয় ডেলিভারি দিতে পারে।

২১. সবাই সন্তুষ্টি বিষয়টা নিয়ে অনেক কথা বলে। এখানে মূলত এমন একটা কিছু আছে, যেটাকে অর্থনৈতিক সন্তুষ্টি বলা যায়।

২২. আমি আমার বাচ্চাদেরকে গাইড করতে গিয়ে এই ভুল করিনি যে, তাদেরকে আমার পছন্দসই পথে চলতে হবে। আমি তাদেরকে তাদের নিজস্ব পথ খুঁজে নেবার স্বাধীনতা দিয়েছিলাম। আমার তাদের প্রতি বিশ্বাস আছে, এবং তারা এটার মূল্য রাখবে।

২৩. আমি সমালোচনাকে সমাদর করি। আমি তাদেরকে পছন্দ করি যারা আমাকে বলে, আমার কাজ তাদের পছন্দ হয়নি এবং কেন পছন্দ হয়নি। কাউকে প্রশংসা করার চাইতে সমালোচনা করাটা অধিক খাটুনির ব্যাপার।

২৪. ব্যর্থতা মানে হলো একজন মানুষ তার কাজ খুঁজে পায়নি। কারণ সে জানে না, তার কী কাজ। বেশিরভাগ অভিনেতার ব্যর্থ হবার পেছনে এটাই কারণ যে, তারা জানে না তাদের কী কাজ।

২৫. এরকম বিশ্বাস করা নিতান্ত বোকামি যে, থিয়েটারে আপনার পারফর্ম করা মানে সেটা একটা বিশেষ ব্যাপ্ত ঘটনা। ভালো অভিনয় মানে ভালো অভিনয়, সেটা মঞ্চে হোক আর সিনেমায় হোক।

২৭. একজন অভিনেতার মধ্যে থাকা নানামুখী আবেগ-অনুভূতির বৈচিত্রকে খুঁজে নিতে পারাই তার কাজ।

   

বরিশালের শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক শীতলপাটি



এস এল টি তুহিন, করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাটিকররা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি শীতলপাটির জন্য বিখ্যাত।

উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের কাজলাকাঠী গ্রাম, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া, রাজাপুর গ্রাম ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো তৈরি হয়, ঐতিহ্যের অনন্য স্মারক দেশ বিখ্যাত শীতলপাটি।

এই উপজেলায় এখন এক হাজারের বেশি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।

উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রবেশ করে যতদূর দু’চোখ যায়, দেখা মেলে পাইত্রাগাছের বাগান। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে দেখা মেলে বড় বড় পাইত্রা বা মোর্তাগাছের ঝোপ। বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত ফসলি জমি, পুকুর পাড়, সব জায়গাতেই বর্ষজীবী উদ্ভিদ তরতাজা পাইত্রাগাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের আভিজাত্যের স্মারক শীতলপাটি তৈরি হয়, এই পাইত্রাগাছের বেতি দিয়ে।

জানা গেছে, এসব গ্রামে পাইত্রাগাছের আবাদ হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে। পাটিকরদের পূর্বপুরুষেরা যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, আজও সেই পেশা ধরে রেখেছেন বাকেরগঞ্জের পাটিকররা।

এখনো এই সব গ্রামে ‘পাটিকর’ পেশায় টিকে আছে প্রায় এক হাজার পরিবার। আর তাদের সবার পেশাই শীতলপাটি বুনন। ফলে, উপজেলার এসব গ্রাম এখন ‘পাটিকর গ্রাম’ নামে পরিচিত।

সরেজমিন দেখা যায়, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ছোট ছোট টিনশেড ও আধাপাকা ঘরগুলোর বারান্দায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে নানান রঙের শীতলপাটি বুনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কাঁঠালিয়া গ্রামের সবিতা রানীর পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটান শীতলপাটি তৈরি করতে। একটু সামনে এগুতেই কথা হয়, প্রিয়লাল পাটিকরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে একটি পাটি তৈরি করতে কয়েকদিন চলে যায়। প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা করেও আসে না। তারপরেও কিছু করার নেই। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখনো শীতল পাটি বুনে যাচ্ছি। একদিকে, এখন গরম বেড়েছে, অপরদিকে, বৈশাখ মাস চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী মেলায় শীতলপাটির চাহিদা থাকে। তাই, পাইকাররা এসে আমাদের এলাকা থেকে পাটি কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।

স্থানীয় পাটিকররা জানান, এখানকার তৈরি শীতলপাটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু প্লাস্টিক পাটির কারণে বাজারে শীতলপাটির চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সরকারিভাবে বিদেশে শীতলপাটি রফতানির কোনো ব্যবস্থা করা হলে পাটিকরদের জীবন-জীবিকা ভালো চলতো।

পাশাপাশি শীতলপাটি টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। নয়ত এই পেশায় টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাসহ জাইকা সংস্থার মাধ্যমে উপজেলার পাটিকরদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে, নতুন নতুন ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা তাদের সরকারি বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

;

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;