রূপকারের বুননে ‘বার্তা২৪.কম’



সাব্বিন হাসান
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের অনলাইন সাংবাদিকতার জগতে প্রধান সম্পাদক হিসেবে আলমগীর হোসেন একজন পরীক্ষিত উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমি তখন দৈনিক ‘সমকাল’ পত্রিকার তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে কাজ করি। হঠাৎই একদিন উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দিলেন আলমগীর হোসেন।

আমি যেহেতু ফিচার বিভাগে কাজ করতাম সে সুবাদে নিয়মিত সাপ্তাহিক সভায় উপস্থিত থাকতে হতো। মূলত ওখানেই রুদ্ধদার বৈঠকিতে আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। আমি সেই সময় একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সে কথা থাক।

বয়সে তারুণ্য থাকার কারণেই হয়তো ওরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু একেবারেই অচেনা কেউ শুধু স্নেহের পরশে এভাবে রাতারাতি ওই সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারেন তা আমার সত্যিই আজও বোধগম্য হয়নি। যার কারণ একেবারেই অজানা। শেষ অবধি আলমগীর ভাইয়ের ইচ্ছার কাছেই পরাজয় মেনে নিয়েছিলাম। তবে এই হেরে যাওয়া আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। মানিয়ে নেওয়া, মেনে নেওয়া এসব এক কঠিন পরীক্ষা রপ্ত করতে পেরেছিলাম।

সমকাল অনলাইন বিভাগকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিলেন তিনি। দায়িত্ব দিলেন আমাকে পরিকল্পনা করার জন্য। এরপর নিয়মিত সভায় আলমগীর ভাই আমাকে বিভিন্ন ধরনের ইনপুট দিতেন। আমি তা নানাভাবে টুকে রাখতাম। সময় এলে সব গুছিয়ে উপস্থাপন করতাম।

আলমগীর ভাইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য উনি বয়সের ব্যবধানকে একেবারে বুঝতেই দেন না। আমি যখন ওনার সঙ্গে কাজ নিয়ে বসতাম বুঝতেই পারতাম না উনি আমার বাবার বয়সী একজন মানুষ। কথায় কথায় খুনসুটি করা ওনার একটা কৌশল। খুনসুটির মধ্যেই কখনো ভুল ধরিয়ে দিতেন। কখনো বা কাজের প্রশংসা করতেন।

সহজে হাল ছাড়ার ব্যক্তি ছিলেন না তিনি। খুব সকালে উঠে কাজ করা তার চিরদিনের অভ্যাস। আমি ঠিক উল্টো। অনেকটা বিপরীতমুখী হওয়ায় আমাকে অবশ্য মাঝেমধ্যে কিছু প্রশংসা (বকা) বাণী শুনতে হতো। নিয়মিত আড্ডায় কফি অফার করতেন। সে অড্ডা থেকেই সারাদিনের মিডিয়ার কথা আলাপ হয়ে যেত। বলতে দ্বিধা নেই, সম্পাদক আর একেবারেই বয়সে তরুণ কোনো কর্মীর মধ্যে এমন আলাপচারিতা অনেকের কাছেই খটকা লাগত। তবে সত্যিটা হচ্ছে, আলাপ হতো দেশি-বিদেশি মিডিয়ার সবকিছু নিয়েই। বিশেষ গুরুত্ব পেত তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আর টেলিযোগাযোগ। দূরদৃষ্টি না থাকলে প্রতিদিনের মিডিয়ায় প্রতিনিধিত্ব করা সত্যিই অসাধ্য। এ কৌশলটা আলমগীর ভাইয়ের কাছেই শেখা।

অনেকটা হুট করেই একদিন সমকাল ছেড়ে গেলেন আলমগীর ভাই। অবশ্য তার আগে তিনি সমকালের ‘নির্বাহী সম্পাদক’ হয়েছিলেন। সমকাল ছাড়লেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। প্রতিনিয়তই আইডিয়া শেয়ার হতো। নতুন কিছু করার প্রচণ্ড আগ্রহ তখন। সুযোগ আর সঠিক সময়ের অপেক্ষা চলছিল। অবশেষে (২৭ জানুয়ারি, ২০১০) সে সুযোগ এল। নতুন একটি অনলাইন করার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ তাকে প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব দিলেন। আমার আবারও সুযোগ হলো তাঁর সঙ্গে থেকে শুরু থেকে কাজ করার। ওই সময় পরিকল্পিতভাবেই ‘বাংলানিউজ’ যাত্রা শুরু করে। চারদিকে আলোড়ন সৃষ্টি করেই (১ জুলাই, ২০১০) আত্মপ্রকাশ করে ২৪ ঘণ্টার অনলাইন পোর্টাল বাংলানিউজ।

তবে যাত্রার সূচনায় কোনো জাকজমকপূর্ণতা করেনি বাংলানিউজ। অনেকটা নীরবেই পথচলার শুরু। কিন্তু প্রতিদিনই বাংলানিউজ নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় তারুণ্যনির্ভর সাংবাদিকতার অনন্য উদাহরণ তৈরি করে বাংলানিউজ। করপোরেট ব্র্যান্ডগুলো তাদের যেকোনো আয়োজনের খবর বাংলানিউজে প্রকাশের অপেক্ষায় থাকত। একেবারে শূন্য থেকে সফলতার শীর্ষে চলে আসে বাংলানিউজ। অ্যালেক্সা র‌্যাংকিংয়ে ‘প্রথম আলো’কে ছাড়িয়ে শীর্ষে এসে নিজের দাপুটে উপস্থিতির জানান দেয়।

ভালো কোনো কিছুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে আলমগীর ভাই কখনোই খুব বেশি সময় নেন না। এটা অনলাইন সাংবাদিকতার জন্য বড় একটি বৈশিষ্ট্য। কারণ অনলাইন সাংবাদিকতায় খুবই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

বাংলাদেশে অনলাইন সাংবাদিকতার রূপকার আলমগীর হোসেন এখন দিনরাত নেতৃত্ব দিচ্ছেন ‘বার্তা২৪.কম’। পরিসর সমৃদ্ধ হচ্ছে। বাড়ছে পরিবারের সদস্য।

ইতিমধ্যে এক পেরিয়ে মানে জন্মের কঠিনতম প্রথম বছর পার করে এসেছে বার্তা২৪.কম। গত ১৮ মে বার্তা২৪.কম ঢাকাস্থ গুলশান অফিসে তার প্রথম জন্মদিন উদযাপন করেছে। অপেক্ষাকৃত তরুণেরাই কাজ করছে এখানে।

উল্লেখ্য, বাংলানিউজের এক সময়ের তরুণ সাংবাদিকেরাই এখন দেশের বিভিন্ন অনলাইনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। অর্থাৎ আলমগীর হোসেন উদীয়মান সাংবাদিক তৈরি করেন। কে কোন বিষয়ে মেধাবী বা আগ্রহী তা খুঁজে বের করে তাকে সেই দায়িত্ব দেন।

ইতিমধ্যে দেশের গণমাধ্যমে ‘বার্তা২৪.কম’ নিজের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে। আর নতুন কিছুর প্রত্যয়ে প্রতিদিনই এগিয়ে চলেছে। সংবাদে ইনফোগ্রাফিক্স উপস্থাপন করে পাঠকদের আকৃষ্ট করার কাজটি করা হচ্ছে সযত্নে।

‘নিউ মিডিয়া’র মাল্টিমিডিয়াকেন্দ্রিক যে সাংবাদিকতার কথা আজ থেকে ১০ বছর আগে তিনি ভেবেছিলেন সেটাই আজ জনপ্রিয় ও বাস্তব। শুধু জনপ্রিয় নয়, এটি ব্যবসা সফল মিডিয়াও। সারা দেশজুড়ে অনেক অনলাইন মিডিয়া এসেছে আবার তা গুটিয়েও গেছে। কিন্তু গোছানো আর সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে অনলাইন মিডিয়ায় ব্যবসা সফল হয়ে টিকে থাকা সম্ভব। স্যোশাল মিডিয়ার কল্যাণে সাংবাদিকতার ধরন এখন অনেকটাই বদলে গেছে। সংবাদ হয়ে উঠছে সংক্ষিপ্ত তথ্য।

সংবাদ এখন ‘টু ওয়ে’ ইন্টারঅ্যাকটিভ মিডিয়া অর্থাৎ প্রতিটি সংবাদে পাঠক তার মন্তব্য দিয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করছে। এতে সাংবাদিকদের অনেকটাই চাপে থাকতে হয়। সামান্য কোনো ভুলেও পাঠক কঠিন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন।

নতুনত্বের এবারের যাত্রায় ‘বার্তা২৪.কম’ সাফল্য অর্জন করুক, হয়ে উঠুক সারা বিশ্বের কোটি বাঙালির জনপ্রিয় আর অন্যতম সংবাদমাধ্যম। ‘বাংলা, বাঙালির সংবাদ সারথি’ হয়ে বিরামহীনভাবে নিরন্তন এগিয়ে যাক অপ্রতিরোধ্য বার্তা২৪.কম। শুভকামনা...

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;