৪৫ বছর ধরে সেহরি খেতে ডেকে তোলেন আকবর



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
মাইক ব্যবসায়ী আকবর আলী। ছবি: বার্তা২৪.কম

মাইক ব্যবসায়ী আকবর আলী। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘প্রায় ৪২ বছর আগের কথা। পবিত্র রমজান মাসের রাত। রাস্তা-ঘাট সব জনশূন্য। সেহরির সময় রোজাদারদের ডেকে তুলতে রিকশা নিয়ে মাইকিং করতে বের হই। শহরের অলি-গলি ঘুরে নতুন বাজার আসতেই দেখি সড়কে অনেকগুলো শিয়াল শুয়ে আছে। রিকশায় বসে অনবরত বেল বাজানোর পরও শিয়ালগুলো যাচ্ছিল না। উল্টো হিংস্র দৃষ্টিতে বারবার তাকাচ্ছিল।

রিকশা চালক সড়ক থেকে একটি লাঠি নিয়ে তাড়া করতেই শিয়ালগুলো উল্টো আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। ভয় পেয়ে চালক দৌড় দিল। আমিও ভয় পেয়ে মাইকে ডাক শুরু করলাম, ‘আমাদের শিয়াল তাড়া করেছে। আমাদের বাঁচান।’ পরে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে আল্লাহর রহমতে প্রাণে বেঁচে যাই।’

দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সেহরির মাইকিং করার সময় একটি ভয়ার্ত অভিজ্ঞতার কথা বার্তা২৪.কমের কাছে বলছিলেন মাইক ব্যবসায়ী আকবর আলী (৫৯)। তার বাড়ি গৌরীপুর পৌর শহরের পূর্ব দাপুনিয়া গ্রামে। বাবা মৃত আব্দুল আজিজ।

বুধবার (১৫ মে) রাত ১টার পর আকবর আলীর দেখা মিলে পৌর শহরের ধানমহাল এলাকায়। সেহরির সময় মাইকিং করতে হবে তাই রিকশা চালকের খোঁজ করছিলেন তিনি। চালকের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা হয় আকবর আলীর।

তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালে রোজার মাসে কোনো এক রাতে দোকানে বসে আছি। হঠাৎ মনে হলো সেহরির সময় রোজাদারদের ডেকে তুলব। এরপর রিকশায় চড়ে শহরের অলি-গলিতে মাইকিং করে রোজাদারদের ডেকে তুলি। কাজটি প্রশংসিত হওয়ায় এরপর থেকে প্রতি রমজানে স্বেচ্ছাশ্রমে সেহরির সময় মাইকিং করতাম। তবে আশির দশকে তৎকালীন কমিশনার আবু সাইদ ভাই দুই বছরের জন্য পারিশ্রমিক দেন। পরবর্তীতে তৎকালীন পৌর প্রশাসক কামাল উদ্দিনের সময় থেকে নিয়মিত পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করা হয়।

প্রতিদিন রাতে সেহরির শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত রোজাদারদের ডেকে তোলার জন্য রিকশায় করে মাইকিং করতে বের হন আকবর। শহরের নির্জন অলি-গলির ভেতর দিয়ে ভয়হীন ছুটে চলেন মাইক নিয়ে। ঝড়-বৃষ্টি, শীত-কুয়াশা ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ৪৫ বছর ধরে তিনি এই কাজ করে যাচ্ছেন।

আশির দশকে প্রথম দিকে সেহরির সময় মাইকিং করার জন্য আকবর পৌর পরিষদ থেকে ৪ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেলেও এখন সেটা সাড়ে ১০ হাজারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আকবরের দাবি, পারিশ্রমিক হিসাবে নয়, এলাকার মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই এই কাজ করেন তিনি। তবে পৌর পরিষদ তাকে সম্মানী দেয়, তাতে তিনি কৃতজ্ঞ।

জানা গেছে, এক সময় নিঃস্ব থাকলেও মাইকের ব্যবসা করে আকবর জমি-বাড়ি করেছেন। দাম্পত্য জীবনে তার রনি, জনি নামে দুই ছেলে ও জহুরা নামে এক মেয়ে রয়েছে। কয়েক বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।

আকবর ছোট-খাটো মাইকিংয়ের জন্য ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নেন। এতে প্রতি মাসে তার আয় হয় ৩০ হাজার টাকার মতো। তবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক কর্মসূচি ও ধর্মীয় সভায় মাইক ভাড়া কিংবা প্রচারণার জন্য ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা নেন তিনি। তবে দোকানের মালামাল চুরি, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাইক ভাঙচুর ও ভাড়া না পাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতাও আছে।

আকবরের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ঘড়ির কাঁটায় রাত দেড়টা বেজেছে। এমন সময় আগমন ঘটে রিকশা চালকের। এরপর দ্রুত রিকশায় মাইক ও ব্যাটারি বসিয়ে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সিটে বসেন আকবর। নির্জন শহরের পথ ধরে ছুটে চলছে রিকশা। মাইক থেকে আকবরের ভরাট কণ্ঠের আওয়াজ ভেসে আসছে, ‘অত্র এলাকার মুসলমান ভাই ও বোনেরা পবিত্র মাহে রমজানে সেহরি খাওয়ার সময় হয়েছে। উঠুন সেহরি খান, রোজা রাখুন।’ রিকশা ছুটে চলার সঙ্গে সঙ্গে তার আওয়াজটাও অন্ধকারে মিলিয়ে যেতে থাকে।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;