মাকামে ইবরাহিমের মর্যাদা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাকামে ইবরাহিম, যে পাথর খণ্ডে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের পায়ের চিহ্ন রয়েছে, ছবি: সংগৃহীত

মাকামে ইবরাহিম, যে পাথর খণ্ডে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের পায়ের চিহ্ন রয়েছে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কা (সৌদি আরব) থেকে: পবিত্র কাবা ঘর থেকে ১০ বা ১১ মিটার পূর্ব দিকে সাফা-মারওয়া অভিমুখে অবস্থিত একটি সোনালী রংয়ের মিনার দৃষ্টি কাড়ে সবার। এটাই মাকামে ইবরাহিম। এর ভেতরে একটি পাথর খণ্ড রয়েছে, যে পাথর খণ্ডে দু'টো পায়ের ছাপ বিদ্যমান।

এই পাথরটি নরম প্রকৃতির পাথর, কঠিন শিলা খণ্ড নয়। এর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা প্রায় পঞ্চাশ সেন্টিমিটার। প্রায় চৌকোণ বিশিষ্ট। পাথরটি আগে উন্মুক্ত ছিল, যে কেউ হাত দ্বারা স্পর্শ করতে পারত। কিন্তু পরবর্তীতে তা সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অত্যন্ত সুদর্শন ও মজবুত লোহা ও কাঁচের বেষ্টনীর ভেতর একটি ক্রিস্টালের বাক্সে রাখা হয়েছে। এটা ধরা, স্পর্শ করা, চুমো খাওয়া, তাতে কোনো কাপড় মুছে আনার কোনো আলাদা উপকারিতা নেই। তারপরও অনেক তাওয়াফকারী কাজগুলো করে থাকেন। এগুলো ভুল কাজ। ইসলামি শরিয়ত এসব করার অনুমতি দেয় না।

মাকামে ইবরাহিম। অর্থ হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দাঁড়ানোর স্থান। এটি একটি জান্নাতের অতি মূল্যবান ইয়াকুত পাথর। এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছি; হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহিম জান্নাতের দু'টো ইয়াকুত পাথর। আল্লাহতায়ালা এই দু'টির আলোকপ্রভা নিষ্প্রভ করে দিয়েছেন। এ দু'টির প্রভা যদি তিনি নিষ্প্রভ না করতেন তাহলে তা পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে যা কিছু আছে সব আলোকিত করে দিত। -তিরমিজি: ৮৭৮

এ পাথরটি আল্লাহতায়ালার অন্যতম নিদর্শন। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর। যা মক্কায় অবস্থিত এবং সমগ্র জগতের মানুষের জন্য বরকতময় ও পথ নির্দেশ (হেদায়েত)। এতে রয়েছে মাকামে ইবরাহিমের মতো প্রকৃষ্ট নিদর্শন। -সূরা আলে ইমরান: ৯৬ ও ৯৭।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/23/1566569071755.jpg

আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন, ‌মাকামে ইবরাহিম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- যে পাথরে তার পদযুগলের চিহ্ন রয়েছে।

আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমের দুই জায়গায় মাকামে ইবরাহিমের কথা উল্লেখ করেছেন। ওই দুই স্থান হলো- সূরা বাকারা ১২৫ ও সূরা আলে ইমরানের ৯৭ নম্বর আয়াত।

হজরত ইবরাহিম (আ.) এই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে কাবা ঘর নির্মাণ করেছেন। তার পুত্র হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম পাথর সংগ্রহ করে এনে এগিয়ে দিতেন। আর তিনি এই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে কাবা ঘরের দেয়াল নির্মাণ করতেন। এ প্রসঙ্গে বোখারির হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, অতঃপর ইবরাহিম (আ.) বললেন, হে ইসমাইল! আল্লাহ আমাকে একটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেন। হজরত ইসমাইল (আ.) বললেন, আপনার রব! আপনাকে যা আদেশ করেছেন, তা করুন। হজরত ইবরাহিম (আ.) বললেন, তুমি আমাকে সাহায্য করবে কি? হজরত ইসমাইল (আ.) বললেন, আমি আপনাকে সাহায্য করবো।

হজরত ইবরাহিম (আ.) বললেন, আল্লাহ আমাকে এখানে একটি ঘর বানাতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এই বলে তিনি উঁচু টিলাটির দিকে ইশারা করলেন যে, এর চারপাশে ঘেরাও দিয়ে। তখন তারা উভয়ে কাবা ঘরের দেয়াল তুলতে লেগে গেলেন। হজরত ইসমাইল (আ.) পাথর আনতেন, আর হজরত ইবরাহিম (আ.) নির্মাণ করতেন।

পরিশেষে যখন দেয়াল উঁচু হয়ে গেল, তখন হজরত ইসমাইল (আ.) (মাকামে ইবরাহিম নামে খ্যাত) পাথরটি আনলেন এবং হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর জন্য তা যথাস্থানে রাখলেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) তার ওপর দাড়িয়ে নির্মাণ কাজ করতে লাগলেন। আর হজরত ইসমাইল (আ.) তাকে পাথর যোগান দিতে থাকেন। তখন তারা উভয়ে এ দোয়া করতে থাকলেন, হে আমাদের রব! আমাদের থেকে কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সব কিছু শুনেন ও জানেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/23/1566569991338.jpg

তারা উভয়ে আবার কাবা ঘর তৈরি করতে থাকেন এবং কাবা ঘরের চারদিকে ঘুরে ঘুরে দোয়া করতে থাকেন, হে আমাদের রব! আমাদের থেকে কবুল করে নিন। নিশ্চয়ই আপনি সব কিছু শুনেন ও জানের। -সূরা আল বাকারা: ১২৭, -সহিহ বোখারি: ৩১২২

আল্লাহতায়ালা হজ ও উমরাকারীদের মাকামে ইবরাহিমের পেছনে নামাজ আদায়ের নির্দেশ প্রদান দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মক্কা এলেন সাতবার বায়তুল্লাহর তওয়াফ করলেন। তখন তাকে আমি পাঠ করতে শুনেছি, তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো।' -সূরা বাকারা: ১২৫

তারপর তিনি মাকামে ইবরাহিমের পেছনে নামাজ আদায় করলেন। -সুনানে তিরমিজি

এই পাথরের ওপরে যে দু'টি পদচিহ্নের মতো গর্ত আছে, সেগুলো ইবরাহিম (আ.)-এর পদচিহ্ন কিনা, এ প্রসঙ্গে উল্লেখিত আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে ইবনে জারির কাতাদা (রা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আল্লাহতায়ালা এ পাথরের নিকটে লোকদের নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন; হাত দ্বারা মাসেহ করতে বলেননি। কিন্তু এই উম্মত নিজেদের ওপর এমন কিছু কাজ চাপিয়ে নিয়েছে যা পূর্ববর্তী উম্মতগণ করেননি। যাহোক, যারা ওই পাথরের ওপর হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর পায়ের গোড়ালি ও আঙ্গুলের চিহ্ন দেখেছেন, তারা আমাদের কাছে বিবরণ দিয়েছেন। কিন্তু উম্মতের লোকেরা হাত দ্বারা স্পর্শ করতে করতে সেই পাথরের আলোকপ্রভা নিষ্প্রভ হয়ে গেছে এবং শেষ অবধি সেই চিহ্ন মুছে গেছে। -তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/১১৭

আর আল্লামা উসমাইমিন (রহ.) বলেন, মাকামে ইবরাহিম সুপ্রমাণিত। এতে কোনও সন্দেহ নাই। এই যে কাচে ঘেরা স্থাপনাটি সেটি মাকামে ইবরাহিম। কিন্তু তার মধ্যে যে গর্তটি রয়েছে তা দেখে মনে হয় না যে, এটি ইবরাহিম (আ.)-এর পদযুগলের চিহ্ন। কেননা এটি ঐতিহাসিকভাবে স্বতঃসিদ্ধ যে, দীর্ঘ কালপরিক্রমায় পদচিহ্ন মুছে গেছে এবং এটি সেখানে গর্ত করা হয়েছে বা কেবল চিহ্নিত করার জন্য বসানো হয়েছে। এটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না যে, এ গর্তটিই হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর পা রাখার স্থান।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/23/1566569176595.jpg

এই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে হজরত ইবরাহিম (আ.) হজের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে ফাকেহি ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে করেন, হজরত ইবরাহিম (আ.) কাবা ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করলে আল্লাহ তাকে হজের ঘোষণা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। অত:পর তিনি মাকামে ইবরাহিমে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলেন, হে লোকেরা! তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করেছেন। অতঃএব তোমরা তাতে হজ করো।

তখন পুরুষদের পৃষ্ঠদেশ ও নারীদের গর্ভাশয় থেকে মানুষ তার জবাব দিয়ে বলল, আমরা সাড়া দিলাম, আমরা সাড়া দিলাম। আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, হে আল্লাহ! তোমার দরবারে উপস্থিত। তিনি বলেন, সুতরাং বর্তমানে যত মানুষ হজ করে তারা ওই সব লোক যারা সেদিন ইবরাহিম (আ.)-এর ডাকে সাড়া দিয়েছিল।

পাথরটি হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর যুগ, তারপরে জাহেলি যুগ, রাসূল (সা.)-এর যুগ এবং সর্বশেষ হজরত আবু বকর (রা.)-এর যুগে কাবা ঘরের সঙ্গে লাগানো অবস্থায় ছিলো। পরবর্তীতে উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) একটিকে কাবা থেকে কিছুটা দূরে স্থাপন করেন।

ইমাম বায়হাকি সহিহ সনদে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, মাকামটি রাসূলুল্লাহ (সা.) ও হজরত আবু বকর (রা.)-এর যুগে কাবা ঘরের সঙ্গে লাগানো ছিল। অত:পর হজরত উমর (রা.) সেটিকে পেছনে নিয়ে আসেন।

এর উদ্দেশ্য ছিল, যেহেতু মাকামে ইবরাহিমের পেছনে নামাজ আদায়ের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে, সেহেতু সেটিকে এমন স্থানে স্থানান্তরিত করা প্রয়োজন যেন, লোকজন সুবিধাজনকভাবে নামাজ আদায় করতে পারে এবং তওয়াফকারীগণও বাধাগ্রস্ত না হয়। ইবনে হাজার আসকালানি (বহ.) বলেন, উমর (রা.)-এর কাজে কোনও সাহাবি প্রতিবাদ করেননি। সুতরাং এটি সাহাবিদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হিসেবে পরিগণিত।

   

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;

গরমে মুমিনের আমল



মুফতি উমর ফারুক আশিকী
গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব! আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে। আল্লাহতায়ালা তখন তাকে দুইটি নিশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিশ্বাস শীতকালে আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো।’ -সহিহ বোখারি : ৩২৬০

মুমিন বান্দারা দয়াময় আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী হয়ে গ্রীষ্মের এই গরম সময়ে অফুরন্ত সওয়াব লাভের জন্য বেশ কিছু আমল করতে পারেন। আশা করা যায়, মহান আল্লাহর দয়ায় পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে- ইনশাআল্লাহ।

তওবা করা : মানুষের পাপের কারণে মানুষের ওপর নানা ধরনের বিপদাপদ আসে, তাই প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে আনতে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করার কোনো বিকল্প নেই।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘আর বলেছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

ইবাদতে গাফিলতি না করা : গরমের কারণে ইবাদত-বন্দেগিতে গাফিলতি না করা। কারণ জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার গরমের চেয়ে বহুগুণে উত্তপ্ত। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘পেছনে থাকা লোকগুলো আল্লাহর রাসুলের বিপক্ষে বসে থাকতে পেরে খুশি হলো। আর তারা অপছন্দ করল তাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করতে এবং তারা বলল, ‘তোমরা গরমের মধ্যে বের হয়ো না।’ বলো, জাহান্নামের আগুন অধিকতর গরম, যদি তারা বুঝত।’ -সুরা তওবা : ৮১

পিপাসার্তকে পানি পান করানো : হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাদ ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, (এক দিন) আমি (নবীজিকে) বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন সদকা উত্তম? তিনি বলেন, পানি পান করানো। -সুনানে নাসায়ি : ৩৬৬৫

চলমান গরমের সময় শহরেরে বিভিন্ন স্থানে পথচারীদের জন্য ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা রাখা হয় বিভিন্ন অফিস, দাতব্য সংগঠন কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে। এটা অত্যন্ত ভালো কাজ, সওয়াবের কাজ।

কেউ পানি চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে নিষেধ করেছেন নবী কারিম (সা.)। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে, যা কেউ চাইলে না দিয়ে তাকে বিদায় দেওয়াটা ঠিক নয়?

তিনি বলেন, পানি, লবণ ও আগুন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি, কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেওয়া যাবে না? তিনি বলেন, হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করল, সে যেন ওই আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করল।
যে ব্যক্তি লবণ দান করল, ওই লবণে খাদ্য যতটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করল। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করল এবং যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করল। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৪৭৪

অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো : তীব্র গরমে অনেক সময় মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়োবৃদ্ধরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য বাইরে যেতে পারেন না, তখন তাদের সাহায্য করার মাধ্যমে সদকার সওয়াব মেলে।

হজরত আবু জার (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টিসম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথ থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। -জামে তিরমিজি : ১৯৫৬

পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া : গরমে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও কষ্টে পড়ে। তাই মানুষের উচিত তাদের পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়; সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল, কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, পানির পিপাসা কুকুরটাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে ওড়নার সঙ্গে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো), এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হলো। -সহিহ বোখারি : ৩৩২১

গরমের কারণে দুনিয়ার এই হাহাকার পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে, মহান রবের সন্তুষ্টি পেতে বর্ণিত আমলগুলো বেশি বেশি করা জরুরি।

 

;

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;