ইসলাম প্রচারের অন্যতম মাধ্যম ওয়াজ মাহফিল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ওয়াজ মাহফিলে আগত শ্রোতা, ছবি: সংগৃহীত

ওয়াজ মাহফিলে আগত শ্রোতা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শহরে, গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় অবস্থিত মসজিদ, মাদরাসা কিংবা দ্বীনদরদী মুসলিম ভাইদের উদ্যোগে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন- বেশ পরিচিত একটি চিত্র। এমন দৃশ্য বিশ্বের অন্য কোনো মুসলিম দেশে সাধারণত দেখা যায় না।

আয়োজিত এসব ওয়াজ মাহফিলে প্রাজ্ঞ আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখ ও বুজুর্গরা সাধারণ মুসলমানদের জন্য ধর্মীয় নানা বিষয় নিয়ে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়ে থাকেন। দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে, সাইকেল বা বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ সব ওয়াজ মাহফিলে অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং গভীর নিয়ে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোচনা শোনেন। পর্দার আড়ালের মা-বোনেরাও নিজ বাসা বাড়িতে বা আত্মীয়ের বাড়িতে এসে ওয়াজ শোনে থাকেন। বাংলাদেশের মানুষ যে ধর্মপ্রাণ- এসব ওয়াজ মাহফিলের উপস্থিতি দেখে তা অনুমান করা যায়।

মানুষের ধর্ম সম্পর্কে জানার ইচ্ছা থেকেই প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে এসব মাহফিলে অংশ নিয়ে থাকেন। আর ধর্ম সম্পর্কে মানুষকে জানানো আলেম-উলামাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘(আমার ইন্তেকালের পর) লোকেরা তোমাদের অনুসারী হবে। বিভিন্ন দিক হতে তারা তোমাদের নিকট দ্বীনি জ্ঞান লাভ করার উদ্দেশ্যে আগমন করবে। অতএব, তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে তখন তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দেবে।’ -তিরমিজি/ ২৬৫০
 
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরেক হাদিসে আরও ইরশাদ করেন, ‘মুমিন ব্যক্তি কখনও উত্তম কথা শ্রবণে তৃপ্তি লাভ করতে পারে না; যে পর্যন্ত না তার শেষ পরিণামে জান্নাত হয়।’ –তিরমিজি/ ২৬৪৮

আসলে মুমিন বান্দা যতই দ্বীনি ইলম অর্জন করবে বা তার আলোচনা শোনবে ততই তার আকাঙ্খা বাড়তে থাকবে। ফলে তার এই আগ্রহ মৃত্যু অবধি শেষ হয় না। বরং সে আমরণ সে শোনতেই থাকবে; অবশেষে এটাই তাকে বেহেশতে পৌঁছে দিবে। অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই সে জান্নাতে পৌঁছে যায়।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আয়োজিত এসব ওয়াজ মাহফিলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্য এলাকার নামকরা মসজিদের ইমাম-খতিব, মুহাদ্দিস ও মুফাসসিররা ওয়াজ করে থাকেন। ওয়াজে তারা মানুষকে সৎ উপদেশ ও ইসলামের সঠিক পথের দিশা দিয়ে থাকেন। ওয়াজে সামাজিক নানা অনাচার বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ, যৌতুক, মিথ্যা ও ওজনে কম দেওয়াসহ নানা বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করেন। এসব কাজের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেন।

ওয়াজে হালাল-হারাম বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি সমাজে শান্তি বজায় ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার নিমিত্তে বড়দের সম্মান, পিতা-মাতার অধিকার ও খেদমত, স্ত্রীর অধিকার, শিক্ষা সচেতনতা, সমাজসেবার উপকারিতা বর্ণনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় মাসয়ালা নিয়ে আলোচনা করেন। এভাবে মানুষকে ইসলামের পথে আহবান করা প্রচুর সওয়াবের কাজ।

এভাবে ওয়াজ মাহফিলে কোরআন-হাদিসভিত্তিক আলোচনার জন্য বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ আলেমরা সময় উপযোগী নানা বিষয় নির্বাচন করেন। যেন সাধারণ মানুষ বেশি উপকৃত হয়, আমলের প্রতি উদ্ধুব্ধ হয়। বস্তুত এমন ওয়াজের মাধ্যমে পরকালে নাজাতের আশা করা যায়।

এ সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা কি বলতে পারো দানের দিক দিয়ে সর্বাপেক্ষা বড় দাতা কে? সাহাবিরা জবাব দিলেন আল্লাহ ও তার রাসূলই অধিক ভালো জানেন। তখন হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দানের দিক দিয়ে আল্লাহতায়ালাই সব চেয়ে বড় দাতা। তার আদম সন্তানদের মধ্যে আমিই সবচেয়ে বড় দাতা। আর আমার পরে বড় দাতা ওই ব্যক্তি যে ইলম শিক্ষা করে এবং তা বিস্তার (প্রচার-প্রসার) করে। কিয়ামতের দিন সে একাই একজন আমির হিসেবে উত্থিত হবে। -মিশকাত/২৪১, শোয়াবুল ঈমান/১৬৩২

দেশের সাধারণ মানুষের ধর্মের প্রতি হৃদয়ের টান সত্যিই প্রসংশনীয়। ধর্মের প্রতি সাধারণ মানুষের এমন আকর্ষণ বলে শেষ করা যাবে না। বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়, ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের দেখে। অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে, ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকরা হলেন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ। সেখানে আলোচক হিসেবে অভিজ্ঞ আলেম-উলামাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে থাকেন। তাদের অংশগ্রহণে ওয়াজ মাহফিল হয়ে উঠে আরও প্রাণবন্ত।

এক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতো সুন্দর করে বলেছেন, নিশ্চয়ই এ ইলম হচ্ছে দ্বীন। সুতরাং লক্ষ করো যে, তোমাদের এ দ্বীন কার নিকট থেকে গ্রহণ করছ। -মুসলিম শরিফ: ১/১৪

এ হাদিসের আলোকে বলা যায়, সত্যিকারের দ্বীন শিখতে হলে আমলদার, বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ আলেমের কোনো বিকল্প নেই। আর ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে আলেমরা সেই কাজটিই করে যাচ্ছেন।

   

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;

দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে যে আয়াতে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, মানুষ সবসময়ই তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অভাব নিয়েই দুনিয়ায় এসেছে। দুইভাবে মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে কিংবা বিপদে পড়ছে। এক. মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিকমতো চিহ্নিত না করা। দুই. ভুল পথে চাহিদা মেটানোর প্রবণতা।

এই দুই বিপদজনক পথ সঠিকভাবে অতিক্রমের জন্যই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নবীরা মানুষকে শিক্ষা দিতেন। যেমন কোরআনের বক্তব্য যদি মানুষ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার শক্তিসামর্থ্য যেমন বাড়বে তেমনি পরিত্রাণ পাবে এবং যেকোনো বিপদ বা ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে নাজাত পাবে।

কোরআন মাজিদের সুরা হাদিদের ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো- বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

বর্ণিত আয়াতটি আমাদের কাছে জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেছে এভাবে-
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এই- প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ।

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কোরআন মাজিদ বলে যে, এ সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী।

প্রকৃতপক্ষে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘মানুষ যখন শিশু থাকে তখন সে খেলা করে, সে তার যৌবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে অতিবাহিত করে, তার যৌবনে সে পৃথিবীর সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যে মগ্ন থাকে এবং তার মধ্য বয়সে ও বার্ধক্যে সে অহংকার এবং সম্পদ ও সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়!’

তাই পৃথিবীটা একটা খেলা। এমতাবস্থায় খেয়াল রাখা, কোনোভাবেই ধোঁকায় না পড়া। আমরা যদি কোনো উচ্চ অবস্থানে পৌঁছি তাহলে অহংকারী না হওয়া, যদি পতন ঘটে কিংবা অবস্থা নীচের দিকে চলে যায়- তাহলেও নিরাশ না হওয়া।

আয়াতে বর্ণিত পাঁচটি বিশেষ শব্দ দিয়ে মানবজাতির জন্য তাদের বাস্তবতাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে এর প্রতিটিই হচ্ছে একেকটি ফাঁদ এবং মানুষ এসবে জড়িয়ে পড়ে।

;

৯ বছর পর উমরার সুযোগ পেলেন ইরানিরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৯ বছরের বিরতির পর পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের নাগরিকরা পবিত্র উমরা পালনের জন্য তেহরান থেকে পবিত্র মক্কা নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল সোমবার পবিত্র উমরা পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবারও সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। আর উভয় দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল চীন।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এ ছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ছিল প্রায়ই অনেক বেশি।

গত বছর সম্পর্ক পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ইরানিরা শুধুমাত্র হজপালন করতে সৌদি আরব যেতে পারত।

রয়টার্স বলছে, তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে ৮৫ জন উমরাযাত্রীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ বিন সৌদ আল আনজি।

;