যা আছে রাহুলের পদত্যাগ পত্রে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত

রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের দায় কাঁধে নিয়ে ৩ জুলাই কংগ্রেস পার্টির সভাপতির পদ ছেড়েছেন রাহুল গান্ধী। এখানে তার পদত্যাগ পত্রের সম্পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

‘কংগ্রেস পার্টির জন্য কাজ করাটা আমার জন্য সম্মানের, যে পার্টির মূল্যবোধ ও আদর্শ আমাদের এই সুন্দর জাতির প্রাণশক্তি।

আমি আমার দেশের কাছে ঋণী এবং দলের অসাধারণ কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায় আমি ঋণী।

কংগ্রেস পার্টির সভাপতি হিসেবে ২০১৯ সালের পরাজয়ের জন্য আমি দায়ী। আমাদের দলের ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য জবাবদিহিতা অত্যন্ত জরুরি। এটাই আমার কংগ্রেস পার্টির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার কারণ।

পার্টি পুনর্গঠনের জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং ২০১৯ সালের পরাজয়ের জন্য অনেককে জবাবদিহি করতে হবে। দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব এড়িয়ে অন্যদের দায়ী করাটা অন্যায় হবে।

আমার অনেক সহকর্মী প্রস্তাব করেছিলেন যেন আমি পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি মনোনীত করি।

নতুন কারো নেতৃত্ব দেওয়াটা আমাদের দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেই ব্যক্তি কে হবেন, তা নির্বাচন করা আমার ঠিক হবে না। আমাদের দলের অসামান্য ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও মর্যাদাকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। ভারত বুননে এটি গাঁথা রয়েছে এবং আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দল সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যে কে সাহস, ভালোবাসা ও সততা দিয়ে দলের নেতৃত্ব দিতে পারবেন।

পদত্যাগের পরপরই আমি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডিব্লিউসি) সহকর্মীদের বলেছি, যেন কয়েকজনকে দলের নতুন সভাপতি খোঁজা শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি তাদের এই ক্ষমতা দিয়েছি এবং এই প্রক্রিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিতে ও সুন্দরভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য আমার লড়াই মোটেই সহজ ছিল না। বিজেপির প্রতি আমার কোনো ঘৃণা বা রাগ না থাকলেও আমার দেহের প্রতিটি জীবন্ত কণা দিয়ে আমি তাদের ভারত সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলোর বিরোধিতা করি। এই বিরোধিতার কারণ, আমি যে ভারতীয় মূল্যবোধ লালন করি, তার সঙ্গে তাদের ধ্যান-ধারণা সব সময় সরাসরি সাংঘর্ষিক। এ যুদ্ধ নতুন নয়, হাজার হাজার বছর আগে থেকেই আমাদের মাটিতে এটা চলছে। তারা যেখানে পার্থক্য দেখেন, আমি সেখানে দেখি সাদৃশ্য। তারা যেখানে ঘৃণা দেখেন, আমি দেখি ভালোবাসা। তারা যা ভয় করেন, আমি তা আলিঙ্গন করি।

এমন সহনুভূতিশীল ধ্যান-ধারণা আমার কোটি কোটি প্রিয় নাগরিকের হৃদয়ে রয়েছে। ভারতের এই মূল্যবোধ আমরা কঠোরভাবে রক্ষা করব।

আমাদের দেশ ও লালিত সংবিধানের ওপর আক্রমণ আমাদের জাতি সত্ত্বা ধ্বংসের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমি কোনোভাবেই এই লড়াই থেকে পিছপা হচ্ছি না। আমি কংগ্রেস পার্টির একজন বিশ্বস্ত সৈনিক এবং ভারতের অনুগত সন্তান। আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দেশকে সেবা দেব এবং রক্ষা করব।

আমরা একটি শক্তিশালী এবং মর্যাদাপূর্ণ নির্বাচন করেছি। আমাদের প্রচারণা ছিল ভারতের সব জনগণ, ধর্ম ও গোষ্ঠীর ভ্রাতৃত্ব, পরমতসহিষ্ণুতা ও সম্মানের জন্য। আমি আমার সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, আরএসএস এবং তাদের দখলে থাকা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। আমি ভারতকে ভালোবাসি বলেই এ লড়াই করেছি এবং ভারত যে আদর্শ নিয়ে গঠিত, সে আদর্শ রক্ষার্থে আমি লড়াই করেছি। এ লড়াইয়ে আমি সম্পূর্ণ একা ছিলাম এবং এজন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত। আমি আমাদের কর্মী এবং দলের নারী ও পুরুষ সদস্যদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, যারা আমাকে ভালোবাসা ও সৌজন্যবোধ শিখিয়েছেন।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষ থাকা প্রয়োজন; দেশের বিচারক তুল্য সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা, একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং স্বচ্ছ, বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন না থাকলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না । যদি একটি দলের কাছে দেশের সব আর্থিক সম্পদ কুক্ষিগত থাকে, তাহলেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

২০১৯ সালের নির্বাচনে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লড়াই করিনি। বরং আমরা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে পরিচালিত ভারতের পুরো মেশিনারিজ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এটা এখন স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ যে ভারতে এখন আর আমাদের লালিত প্রাতিষ্ঠানিক নিরপেক্ষতা নেই।

আরএসএস’র আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো দখলে নেওয়ার উদ্দেশ্য এখন পূরণ হয়েছে। আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আসল বিপদটা হলো এখন থেকে নির্বাচন ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের পরিবর্তে নিছক আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হবে।

এই ক্ষমতা দখলের ফলে ভারতের সহিংসতা ও কষ্ট অকল্পনীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে। কৃষক, বেকার যুব সমাজ, নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত ও সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে যাচ্ছেন। এটি হবে আমাদের অর্থনীতি এবং দেশের খ্যাতির জন্য ধ্বংসাত্মক। প্রধানমন্ত্রীর বিজয় তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বহর বাতিল করতে পারবে না; কোনো টাকা এবং প্রোপাগান্ডাই সত্যের আলো লুকিয়ে রাখতে পারে না। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার ও পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ভারতীয় জাতিকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কংগ্রেস পার্টি হবে এই পুনর্গঠনের যন্ত্র।

htt
রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত



এই গুরু দায়িত্ব অর্জন করতে হলে কংগ্রেস পার্টির আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। আজ বিজেপি রীতিমত ভারতীয় জনগণের কণ্ঠস্বর নিষ্পেষণ করছে। তাদের কণ্ঠস্বর রক্ষা করা কংগ্রেস পার্টির দায়িত্ব। ভারত কখনো এক কন্ঠস্বরের ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। এখানে সম্মিলিত কণ্ঠস্বর আছে এবং থাকবে। এটিই ভারত মাতার সত্য সার কথা।

দেশ বিদেশের হাজারো ভারতীয় জনতাকে ধন্যবাদ, যারা আমাকে মেসেজ এবং চিঠির মাধ্যমে সমর্থন দিয়েছেন। আমি অবশ্যই আমার সর্বশক্তি দিয়ে কংগ্রেস পার্টির আদর্শের জন্য লড়াই করে যাব। পার্টির যখনই আমার কোনো সেবা বা পরামর্শের দরকার হবে, আমি সঙ্গে আছি। 

যারা কংগ্রেস আদর্শে বিশ্বাস করেন, বিশেষ করে আমাদের নিবেদিত ও প্রিয় কর্মী, আমাদের ভবিষ্যতের ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস এবং আপনাদের প্রতি পরম ভালোবাসা রয়েছে।

ভারতে এই অভ্যাসটা রয়েছে যে শক্তিধররা ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চান, কেউ ক্ষমতা ছাড়তে চান না। কিন্তু আমরা ক্ষমতার বাসনা ত্যাগ না করে আমাদের বিরোধীদের পরাজিত করব না। আমরা গভীর আদর্শগত যুদ্ধ করছি। আমি কংগ্রেসম্যান হিসেবে জন্ম নিয়েছি, এই দল সব সময় আমার সঙ্গে আছে এবং এটি আমার জীবনের প্রাণশক্তি, যা সারা জীবন এভাবেই থাকবে।

জয় হিন্দ
রাহুল গান্ধী’

আরও পড়ুন: পদত্যাগ করলেন রাহুল গান্ধী

   

রাফাহর রাস্তায় মুখোশধারীদের টহল, আত্মগোপনে হামাস !



ডেস্ক রিপোর্ট, আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হামাস নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জনবহুল শহর রাফাহয় মুখোশধারী সশস্ত্র ব্যক্তিরা টহল দিতে শুরু করেছেন। তারা শহরের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছেন বলে জানা গেছে। তাদের হাতে অস্ত্র ও লাঠি দেখা গেছে।

এঘটনার পর থেকে ওই এলাকার হামাসের সদস্যরা পালিয়ে গেছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম আইনিউজ এ খবর জানিয়ে বলেছে, মূলত এলাকার একটি উপজাতীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা এ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।

তারা নিজেদের ‘দ্য পপুলার কমিটি ফর প্রটেকশন’-এর সদস্য বলে দাবি করেছেন।

তারা জানিয়েছেন, রাফাহয় যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থার মধ্যে ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ ঘটছে। সেসব প্রতিরোধে রাস্তায় নেমেছেন তারা।

জানা গেছে, হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় হামাসের সদস্যরা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ লিপ্ত থাকায় এলাকায় রসদের ঘাটতি পড়েছে। এতে করে শহরের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উপজাতীয় গোষ্ঠীর নেতৃত্বে এই সশস্ত্র ব্যক্তিরা রাফাহর দখল নিয়ে রাস্তাঘাট ও বাজারে টহল দিতে শুরু করেছেন।

এ বিষয়ে গাজায় বসবাসীকারী ফিলিস্তিনিরা আইনিউজকে জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে মুখোশধারী ব্যক্তিরা অস্ত্র ও লাঠি হাতে করে গাজার দক্ষিণ শহর রাফাহর রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছেন। তারা এলাকার নিরাপত্তার রক্ষায় কাজ করছেন।

‘দ্য পপুলার কমিটি ফর প্রটেকশন’-এর একজন মুখপাত্র ফ্রান্স নিউজ এজেন্সি এএফপি’কে জানিয়েছেন, মার্চ মাসের শুরু থেকে এলাকার নিরাপত্তা রক্ষা ও অসাধু ব্যবসায়ীদের নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে বাজার ও পরিবহন খাত নিরাপদ রাখতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

কারা এ নির্দেশ দিয়েছেন জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি তিনি। এর জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমরা জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি’!

এ বিষয়ে দক্ষিণ গাজায় বসবাসীকারী ফিলিস্তিনি এক ব্যক্তি নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের নাম না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকায় হামাস দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই ফাঁকে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধ, চুরি এমনকী খুনের মতো ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, হামাস এখন গাজায় এখন নিজেদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছে। এতে করে এলাকায় নিরাপত্তার ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে’।

তিনি বলেন, তারা (হামাস) যদি গাজা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতো, তাহলে এত চুরি, তারপরে একজন আরেকজনকে খুন করছে, এগুলো দেখতে পেতাম না। এছাড়া যখন এলাকায় ত্রাণ এসে পৌঁছাচ্ছে, তখন তা নিয়ে সবাই সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে।

আইনিউজ জানাচ্ছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীর এসব সদস্যরা অরাজকতা ঠেকাতে রীতিমতে হিমশিম খাচ্ছেন। কারণ, স্থানীয়দের কেউ কেউ অপরাধী চক্র গড়ে তুলেছে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী ও ত্রাণ সহায়তা সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এই অরাজক পরিস্থিতির মধ্যেও গাজায় ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে বলে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একজন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সংস্থার উপপরিচালক স্কট অ্যান্ডরসন ‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’-কে বলেছেন, ‘ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে আমাদের ত্রাণ পৌঁছানোর আগেই অপরাধী চক্র নিয়ে নিতে চাইছে। এটা ঠিক যেন হলিউডের সিনেমার মতো স্টাইলে ঘটছে’।

এদিকে, আইনিউজ জানাচ্ছে, হামাস এবং ইউএনআরডব্লিউএ-কে এড়িয়ে ইসরায়েল গাজার স্থানীয় পরিবারদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করতে শুরু করেছে।

অপরদিকে, যুদ্ধোত্তর গাজায় পশ্চিম তীরে স্থানীয় প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলো যাতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে পারে, সে বিষয়ে তাদের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে ইসরায়েল।

রাফাহ শহরের নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে, ‘দ্য ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি অব প্যালেস্টিনিয়ান ট্রাইবস’ গত সপ্তাহে একট বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, রাফাহয় সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ‘প্রটেকশন কমিটিগুলো’ কাজ শুরু করেছে।

বিবৃতিতে তারা জানায়, নিরাপত্তা রক্ষায় হামাসের যে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতেন, ইসরায়েল তাদের হত্যা করেছে। তাদের স্থলাষিভিক্ত হিসেবে ‘প্রটেকশন কমিটিগুলি’ নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে।

উপজাতীয় নেতারা বলেছেন, ইসরায়েলের প্রস্তাবনা অনুযায়ী হামাসকে সরিয়ে দিয়ে তারা এলাকা দখলে রাখতে চাইছেন না।

এ বিষয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় উপজাতি গোষ্ঠীর প্রধান আকেফ আল-মাস্রি বলেছেন, গাজা উপত্যকার প্রশাসন ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে তেমন একটা মাথা ঘামায় না।
তিনি বলেন, উপজাতীয় নেতারা শুধুমাত্র জরুরি ত্রাণ বিতরণ কাজের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছেন।

‘ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর গ্রুপ’-এর চেয়ারম্যান রামি আবদু বলেছেন, উপজাতীয় নেতারা হামাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। তাদের মধ্যকার চরমপন্থি নেতাদের কারণে হামাসকে সরিয়ে ইসরায়েলের প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

রাফাহর রাস্তায় টহল দিচ্ছে মুখোশধারী ব্যক্তিরা
গাজার জনবহুল এলাকা রাফাহয় মুখোশধারী ব্যক্তিরা পাহার দিচ্ছেন

তিনি বলেন, ধরুন, আমি যদি ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই, তাহলে প্রথমেই আমাকে গুলি করে হত্যা করা হবে।

কয়েক দশক ধরে প্যালেস্টাইন ও ইসরায়েলের একটি অংশ থেকে শরণার্থীদের গাজায় আসার কারণে এলাকার প্রভাবশালী পরিবারগুলির আধিপত্য খর্ব হয়েছে বলে জানান রামি আবদু।

যুদ্ধ শুরুর পর গাজা থেকে মিশরে আশ্রয় নেওয়া লেখক ও অনুবাদক জেসন শাওয়া জানান, উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলো যদি গাজা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে, তাহলেও তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।

তিনি বলেন, গাজাবাসী কোনোমতেই এটা হতে দেবে না। ২০ বছর আগে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে যে অরাজকতা বিরাজ করতো, সেই অবস্থায় দাঁড়াবে গাজা।

তিনি আরো বলেন, যুদ্ধের এই সময়ে কোনো কোনো গোষ্ঠী শরণার্থীদের ত্রাণ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।

লন্ডনের কিংস কলেজের প্রভাষক ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশ্লেষক ডা. অ্যাড্রিয়াস ক্রিগ বলেন, গাজা উপত্যকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা গোষ্ঠীরগুলোর বিষয়ে তেমন একটা আগ্রহবোধ করবে না ইসরায়েল।

তিনি বলেন, এর আগে এই উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলো অতীতে হামাসের সঙ্গে পাল্লা দিতে চোরাচালান এবং অপধারী চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস হামলার পরিকল্পনা করলেও এই গোষ্ঠীগুলো তখন বেশিরকমভাবে বাড়াবাড়ি করেছিল।

এ বিষয়ে ইনো বেন মেনাচেম নামে এক ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, গাজায় নিরাপত্তার রক্ষায় গোষ্ঠীগুলোর পেছনে ‘সাদা পোশাকে থাকা’ হামাস কর্মীরা যুক্ত রয়েছেন।

তবে তিনি এটাও বলেন, গাজা যুদ্ধে ইসরায়েল জয়লাভ করলে এ সব উপজাতীয় গোষ্ঠীর কোনো কোনোটি তাদের অবস্থান পাল্টে ফেলতে পারে।

;

পৃথিবীর বৃহত্তম দুর্নীতিতে বিজেপি: অর্থনীতিবিদ পরাকলা প্রভাকর



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচনী বন্ড শুধু ভারতের নয়, সারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। এর জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকারকে ভুগতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের স্বামী ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পরাকলা প্রভাকর। তিনি বলেন, এই দুর্নীতির কারণে কেন্দ্রের বর্তমান সরকারকে ভোটাররা শাস্তি দেবেন।

বুধবার (২৭ মার্চ) সংবাদমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থনীতিবিদ পরাকলা প্রভাকর বলেন, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা সবাই দেখতে পেয়েছেন। এটাও বুঝতে পেরেছেন, এটি শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীর সবচেয়ে ব়ড় দুর্নীতি। এটা বিজেপিকে ভোগাবে বলেই মনে হয়। এই নির্বাচনী বন্ড আগামী দিনে আরও বেশি করে প্রচারিত হবে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ডের যে তথ্য প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন, তাতে দেখা যায়- নির্বাচনী বন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে বিজেপি।

উল্লেখ্য ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিজেপি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৬ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা পেয়েছে। তালিকায় তাদের পরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। তারা ওই সময়ের মধ্যে পেয়েছে ১ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। কংগ্রেস পেয়েছে ১ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা।

;

আরও চারদিন বাড়ল কেজরিওয়ালের রিমান্ডের মেয়াদ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরও চারদিন বাড়ল কেজরিওয়ালের রিমান্ডের মেয়াদ

আরও চারদিন বাড়ল কেজরিওয়ালের রিমান্ডের মেয়াদ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবগারি দুর্নীতি মামলায় অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রিমান্ডের মেয়াদ আরও চার দিন বাড়িয়েছে ভারতের একটি আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, কেজরিওয়ালের রিমান্ডের মেয়াদ প্রথম দফায় বাড়িয়ে ১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে।

ভারতের জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে গত ২১ মার্চ দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) মদ নীতি কেলেঙ্কারির মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত তার রিমান্ড মঞ্জুর করে ইডি হেফাজতে পাঠিয়ে দেয়।

;

নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করতে রুশ গোয়েন্দা প্রধানের উ.কোরিয়া সফর : কেসিএনএ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের মধ্যে ঐতিহাসিক মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর হওয়ার প্রেক্ষিতে রুশ গোয়েন্দা প্রধান চলতি সপ্তাহের শুরুতে নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়া সফর করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ এ কথা জানায়।

রাশিয়ার বিদেশি গোয়েদা সংস্থা এসভিআর-এর প্রধান সের্গেই নারিশকিন ২৫ থেকে ২৭ মার্চ তার সফরকালে উত্তর কোরিয়ার সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রী রি চ্যাং ডে-এর সাথে বৈঠক করেন।

কেসিএনএ জানায়, কর্মকর্তারা শত্রু শক্তির ক্রমবর্ধমান গুপ্তচরবৃত্তি ও ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপের মোকাবিলা করতে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়া ও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়া উভয়ই বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলে শীর্ষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে কিম ঘোষণা করেন, রাশিয়ার সাথে তার দেশের সম্পর্ক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তবে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করা শুরু করেছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে।

এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে দক্ষিণ কোরিয়া জোর দিয়ে বলেছে, গত জুলাইয়ের দিকে স্থানান্তর শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ায় প্রায় ৭ হাজার কন্টেইনার অস্ত্র পাঠিয়েছে।

ওয়াশিংটন ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া বিনিময়ে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ও তার সোভিয়েত যুগের সামরিক সরঞ্জাম উন্নত করার মতো সামরিক সহায়তা চায়।

কেসিএনএ'র রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুই পক্ষ একটি বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনার টেবিলে থাকা বিষয়গুলোর ওপর সম্পূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

;