বাজেট পাস হচ্ছে রোববার

অর্থবিলে থাকছে যেসব পরিবর্তন



মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় সংসদে রোববার (৩০ জুন) পাস হচ্ছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। শনিবার (২৯ জুন) সংসদে উত্থাপন করা হবে অর্থবিল। নতুন অর্থবছরের বাজেটে বেশকিছু পরিবর্তন আসছে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে-আগাম কর, সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসে কর ও মূলধনী যন্ত্রে অগ্রিম কর প্রত্যাহার।

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানির রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভের উপর করও বাদ যাচ্ছে। বিদ্যুৎ সংযোগে টিআইএন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। আমদানির উপর পাঁচ শতাংশ গণ হারে কর প্রত্যাহার হতে পারে। ই-কমার্সের ভ্যাট প্রত্যাহার হতে পারে।

এছাড়াও তেল, চিনি, গুঁড়া দুধসহ ভোক্তাদের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসাবে বিবেচিত সব দ্রব্যে ভ্যাট কমানো বা প্রত্যাহার হতে পারে।

প্রত্যাহার হচ্ছে আগাম কর: মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আইনের আওতায় আগাম কর (আগাম ভ্যাট)আদায়ে ছাড়া দেওয়া হচ্ছে। মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানিসহ বেশ কিছু খাতে আমদানিপর্যায়ে আগাম কর দিতে হবে না। শনিবার বাজেটের অর্থবিল পাসের সময় এটি সংশোধন করা হতে পারে।

অর্থমন্ত্রী অসুস্থ্য থাকলে প্রধানমন্ত্রী অর্থবিল অনুমোদন ও পাসের জন্য উপস্থাপন করবেন।

নতুন ভ্যাট আইন: নতুন ভ্যাট আইনে এবার অগ্রিম ব্যবসায় ভ্যাটের (এটিভি) পরিবর্তে পাঁচ শতাংশ আগাম কর (এটি) বসানো হয়েছে। অর্থাৎ মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঢালাওভাবে পাঁচ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হবে।

এতে দেখা গেছে, প্রায় সাড়ে ছয় হাজার পণ্যে এ আগাম কর বসেছে। ভ্যাট রিটার্ন দিয়ে এই আগাম করের টাকা ফেরত নিতে হবে। এই টাকা ফেরত পাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে ব্যাংকের সুদ গুনতে হবে ঐ ব্যবসায়ীকে। ফলে আমদানি পর্যায়ে এসব যন্ত্রপাতি ও পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের উপর। বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে বাজেট পাসের সময় তা পরিবর্তন করা হচ্ছে।

বাজেট ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা আগাম কর নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছেন। তারা জানিয়েছেন, এতে পণ্যে বা সেবার মূল্য বাড়বে।

সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বন্ড প্রতিষ্ঠানসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের পণ্যে আমদানির ক্ষেত্রে ৩০ জুন পর্যন্ত আমদানি পর্যায়ে মূসক বা ভ্যাট আইনের আওতায় আগাম কর কাটা স্থগিত করা হয়েছে। এটির মেয়াদও বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে।

সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার হচ্ছে: প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে সমালোচিত বিষয় হলো, মধ্যবিত্তের ভরসাস্থল সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসে কর ধার্য। ২০১৯-২০অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উপর উৎসে কর পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্ধিত এই কর আরোপের প্রস্তাব পাস হলে সমাজের মধ্যবিত্ত, অবসরভোগী ও ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের আয়ের উপর সরাসরি আঘাত আসবে। এটি নিয়ে সংসদেও সমালোচনা হয়েছে। তাই সরকার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উপর বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে।

তবে এ নিয়ে এখনো দুটি চিন্তা রয়েছে। এর একটি হলো, বাজারে প্রচলিত সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের উপর থেকে বর্ধিত কর প্রত্যাহার করা হবে। অন্যটি হলো, শুধু পরিবারভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের উপর তা প্রত্যাহার করা হবে। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়াতে পারে। অবশ্য সব বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বোনাস শেয়ার ও রিজার্ভের উপর কর প্রত্যাহার: বাজেটে পুঁজিবাজার বিকাশেএকগুচ্ছ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে আলোচিত ও সমালোচিতহয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভ ৫০ শতাংশের বেশি হলে ১৫ শতাংশ কর ধার্য করার বিষয়টি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন, এই কর বহাল হলে কোম্পানির পুঁজি গঠনের পথ রুদ্ধ হবে। রিজার্ভ মূলত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বা ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যবহার করে কোম্পানি। এই কর থাকলে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত হবে। তাই এটি পরিবর্তন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটে স্টক ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ বা নগদ ডিভিডেন্ড প্রদানকে উৎসাহিত করতে কোনো কোম্পানি স্টক ডিভিডেন্ড প্রদান করলে এ লভ্যাংশের উপর ১৫ শতাংশ করারোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ সংযোগে টিআইএন: বিদ্যুতের নতুন সংযোগ নিতে ও পুরনো গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল দিতে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে ২০১৯-২০ সালের বাজেটে। এর আগে বিদ্যুতের সংযোগ পেতে আবেদনের সঙ্গে আবেদনকারীর দুই কপি ছবি, জাতীয়পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের ফটোকপি, জমির দলিল বা লিজের ফটোকপি, ১০ তলার বেশি হলেঅগ্নিনির্বাপণ সনদ, সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার মধ্যে হলে ভবন নির্মাণের বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের ফটোকপিএবং গ্রাহকের দুই কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ লোড হলে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের সনদ জমা দিতে হতো।

প্রস্তাবিত বাজেটেটিআইএন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন স্বয়ং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুলহামিদ। গত সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে পাঠানো এক চিঠিতে (ডিও লেটার) তিনি এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনাকরার কথা বলেছেন।

ই-কমার্সের ভ্যাট প্রত্যাহার:

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসা) ও ভার্চুয়াল বিজনেস বা অনলাইনে পণ্যবেচাকেনাসহ বেশ কিছু খাতে সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এ ভ্যাট হার কমানো হতে পারে।

সিমেন্ট ও রডে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার: বাজেটে সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। পাশাপাশি অগ্রিম আয়কর (এটি) ধরা হয়েছে অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ। এর ফলে এখন এ খাতে মোট ২০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। ভ্যাট ও অগ্রিম কর আরোপ করার কারণে সিমেন্টের এক টন কাঁচামাল আমদানিতে খরচ বাড়বে ৮৫০ টাকা। এক টনে ২০ ব্যাগ সিমেন্ট হয়। সে হিসাবে প্রতিব্যাগ সিমেন্টে দাম ৪২ টাকা বেড়ে যাবে।

বাজেটে রড শিল্পের ওপর ৬৫০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। কাঁচামালে আগাম কর আরোপ ও অগ্রিম আয়করের প্রভাবে টন প্রতি রডের দাম বাড়বে প্রায় ১১ হাজার টাকা। সিমেন্ট ও রডের দামবাড়ার সরাসরি প্রভাব পড়বে সরকারের উন্নয়নমূলক মেগা প্রকল্পে ও আবাসন খাতে। মধ্যবিত্তদেরও গৃহনির্মাণ খরচবাড়বে। এ দুটির নেতিবাচক প্রভাব এবং ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত অগ্রিম আয়কর বা এটি তুলে দেওয়াহচ্ছে।

এদিকে তেল, চিনি, গুঁড়ো দুধসহ ভোক্তাদের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হিসাবে বিবেচিত সব দ্রব্য ভ্যাটের আওতামুক্তরাখার দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ভ্যাট আইন কার্যকরহলে ভোক্তারা যাতে একই পণ্যে একাধিকবার ট্যাক্স দিতে বাধ্য না হন সেদিকেও লক্ষ রাখার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

জানা গেছে,সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কথা বলতে পারেন। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখেতেল, চিনি, গুঁড়ো দুধের ওপর ভ্যাট কমানো বা প্রত্যাহার হতে পারে।

পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব বিষয় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে সেগুলোতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। আগের কয়েকটি অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট পাসের আগে আলোচিত, সমালোচিত বিষয়ে পরিবর্তন আনবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর কর্মকর্তারা আশা করছেন, এসব পরিবর্তনে মধ্যবিত্ত ও ব্যবসায়ীরা খুশি হবেন। গত ১৩ জুন২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ও অর্থবিল-২০১৯ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়। এরপর প্রস্তাবিত বাজেটের বেশকিছু বিষয় নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে আলোচনা-সমালোচনাশুরু হয়।

   

ইসলামী ব্যাংকের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে। ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম-এর সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মে ২০২৪। এ ছাড়া সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সাথে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।

;

টেন মিনিট স্কুলের কোর্স ফি বিকাশ পেমেন্টে ১৫% ক্যাশব্যাক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিকাশ অ্যাপ থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল-এর নির্দিষ্ট কোর্স নিয়ে পেমেন্ট করলেই গ্রাহকরা পাচ্ছেন ১৫% ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক, সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত। বিকাশ অ্যাপের হোম স্ক্রিনের সাজেশনস সেকশন থেকে ‘টেন মিনিট স্কুল’ সিলেক্ট করে ৩০ জুন পর্যন্ত অফারটি গ্রহণ করা যাবে।

টেন মিনিট স্কুল-এর লাইভ কোর্স, স্পোকেন ইংলিশ, আইইএলটিএস, ফ্রিল্যান্সিং এর মতো ভাষা শিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ইংলিশ মাস্টার্স, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো বান্ডেল কোর্স, বুয়েট, মেডিকেল, ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার কোর্স, এসএসসি-এইচএসসি প্রস্তুতি ও অনলাইন ব্যাচের জন্য একাডেমিক কোর্স, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সহ নানা ধরনের কোর্স নিতে পারবেন বিকাশ গ্রাহকরা এই অফারের আওতায়।

অফারের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে https://www.bkash.com/campaign/10minuteschool-bkash-offer লিংকটিতে।

 

;

এক দিনের ব্যবধানে ফের কমল সোনার দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে সোনার দামের উত্থান-পতন অব্যাহত আছে। একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমছে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকায়। নতুন এ দাম আজ বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম কমেছে, সে জন্য সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, ২৩ এপ্রিল সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর গত ২১ এপ্রিল ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।

তার আগে, ২০ এপ্রিল সোনার দাম ক‌মিয়ে‌ছিল বাজুস। যা ওইদিনই কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা।

;

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিচ্ছে ৩ মেগা প্রকল্প



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন মেগা প্রকল্প বাংলাদেশের জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিতে যাচ্ছে। মেগা প্রকল্প তিনটি হলো, এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং), বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্প এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্প।

এর মধ্যে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ইতোমধ্যেই অপারেশনে এসেছে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন চলতি বছরেই শেষ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

এখন ভোক্তার হাতে জ্বালানি তেল পৌঁছাতে বহুঘাট ঘুরতে হবে না। আবার বৃষ্টি-বাদল কিংবা হরতাল, ধর্মঘটেও জ্বালানি তেল সরবরাহ থাকবে নির্ভার। শুধু কী নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চয়তা, তাও নয়, এক এসপিএম বছরে সাশ্রয় করবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা! কমে যাবে জ্বালানি তেলের সিস্টেম লসও।

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে পাল্টে দিচ্ছে মেগা তিন প্রকল্প

এজন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপন করা হয়েছে, এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন। এতদিন আমদানি করা জ্বালানি তেলের জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করতো। সেখান থেকে লাইটার জাহাজে করে রিফাইনারি ট্যাংকে পৌঁছাতে সময় লাগত ১১, ১২ দিন। এসপিএম হওয়ায় সমপরিমাণ তেল পরিবহনে সময় লাগবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এতে করে মাদার ভেসেলের ওয়েটিং চার্জ এবং লাইটারেজ জাহাজের পরিবহন খরচ আর থাকছে না।

মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে স্থাপন করা হয়েছে, ভাসমান বয়া। সেই বয়া থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের পৃথক দুটি পাইপলাইন পৌঁছে গেছে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে। একটি ক্রড অয়েল সঞ্চালনের জন্য। আরেকটি দিয়ে সফলভাবে ডিজেল পরিবহন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে বয়াতে এসে নোঙর করবে মাদার ভেসেল। সেখান থেকে পাাইপলাইনের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টায় তেল পৌঁছে যাবে চট্টগ্রামের জ্বালানি তেলের প্রধান স্থাপনায়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনা সাশ্রয়ী ও টেকসই করতে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) কার্যকরী অবদান রাখবে। প্রকল্পটি চালু হলে বছরে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২শ ২০ কিলোমিটার পাইপলাইনে পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ৬টি বিশালাকৃতির স্টোরেজ ট্যাঙ্ক; যার মাধ্যমে বাংলাদেশের তেল মজুত সক্ষমতা পৌঁছে গেছে নতুন এক উচ্চতায়।

এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বড় জাহাজ থেকে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ দিন সময় লাগে। কখনো কখনো এই তেল খালাস করতে আরো সময় লেগে যায়। বিশেষ করে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়লে তখন খালাস করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জাহাজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তির চেয়ে বেশি সময় লাগায় কখনো কখনো জরিমানা গুণতে হতো। এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ডিজেল ও ক্রুড অয়েল খালাস করা সম্ভব হবে। এতে একদিকে যেমন জাহাজ ভাড়া কমে আসবে, অন্যদিকে তেল পরিবহনে সিস্টেম লস ও নানান ধরনের চুরিও প্রতিরোধ সম্ভবপর হবে।

বাংলাদেশ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে না। গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে প্রাপ্ত কনডেনসেট থেকে পেট্রোল এবং ৪০ শতাংশের মতো অকটেন জোগান আসে। বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে জোগান দেওয়া হয়। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করা হয়, নদীপথে। কিন্তু নদী বন্দরগুলোতে নাব্যতার অভাবে বড় বড় জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। সে কারণে নির্ভর করতে হয় লাইটারেজ জাহাজের ওপর।

মেগা প্রকল্প বদলে দিচ্ছে জ্বালানি তেল পরিবহনের ব্যবস্থা

মাদারভেসেল থেকে লাইটার বা ছোট জাহাজে করে তেল আনা হয়, বিপিসি’র (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ডিপোতে।

বিপিসি থেকে আবার জাহাজে করে তেল দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে রেলের ওয়াগন এবং ট্যাংকলরিতে করেও তেল পৌঁছাতে নানান রকম ঝাক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ ও অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। সেখানেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।

অবশেষে, ঢাকা-চট্টগ্রাম তেলের পাইপলাইন করার কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে প্রাক-সমীক্ষা শেষ হলেও নানা কারণে নির্ধারিত গতিতে চলতে পারেনি প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ২শ ৩৭ কিলোমিটার, কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার, ফতুল্লা থেকে থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। পাইপলাইনটি চালু হলে বছরে ৬৫ কোটি টাকা পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছে বিপিসি।

প্রকল্পের আওতায় ২শ ৩৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চট্টগ্রাম ডেচপার্স টার্মিনাল ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রিসিভিং পয়েন্টের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। ডিসেম্বরের আগেই পাইপলাইনটি চালু করার বিষয়ে আশাবাদী জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।

অন্যদিকে, দেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থা ছিল খুবই জটিল ও বহুঘাট, হাত ঘুরে। লাইটারেজে করে তেল নেওয়া হতো। এছাড়াও ট্যাংকলরি, আরেকটি রুট হচ্ছে রেলওয়ের মাধ্যমে পৌঁছানো। এখন সেখানেও পরিবর্তন এনেছে, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন।

দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ৩ হাজার ৬শ ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ ৩১.৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের সময়কাল ছিল ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইপলাইনটি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইনের কারণে উত্তরাঞ্চলের দৈনিক অতিরিক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। সহজে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করা, উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় কম খরচে এবং দ্রুততম উপায়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে এই পাইপ লাইনের কারণে।

;