মানুষ তার পরিবেশের দ্বারা প্রভাবিত হয়, এটাই স্বাভাবিক। তাই তো প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। এই যেমন আপেল, পাখির ডাক, মেঘ, জলধারা শব্দগুলোর ইংরেজি শব্দ এখন প্রযুক্তির দখলে চলে গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন এ শব্দ গুলো ব্যবহারিক অর্থেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। এখন এগুলো দ্বারা অন্যকিছু বোঝানো হয় এবং মানুষ প্রকৃতির সব শব্দ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে।
ইংরেজিতে শব্দগুলো হচ্ছে অ্যাপেল (আপেল), টুইট (পাখির কিচিরমিচির ডাক), ক্লাউড (মেঘ) এবং স্ট্রিম (জলধারা)। উল্লেখিত এসব নামে প্রযুক্তি দুনিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তাই এখন সচরাচর শব্দগুলো এসব মাধ্যমকেই বোঝায়।
ন্যাশনাল ট্রাস্ট স্ট্যাডির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কথোপকথনে এখন 'টুইট' বলতে পাখির ডাক বোঝানো হয় এমন সংখ্যা মাত্র ১ শতাংশ।
কিন্তু ১৯৯০ এর দশকে প্রতিদিনকার কথোপকথনে স্ট্রিম বলতে জলধারা বা প্রবাহ বোঝানো হত ১০০ ভাগ। যা বর্তমানে ৩৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
সমীক্ষায় দেখা যায়, পরিবারে বয়স্ক মানুষেরা এ বিষয়ে অনেক উদ্বিগ্ন। কারণ বর্তমান প্রজন্ম এই শব্দের প্রাকৃতিক উৎস কি তা জানতে পারছে না।
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞানী এবং এ বিষয়ে গবেষণাকারী ডাঃ রবিই লাভ বলেন, 'প্রযুক্তির প্রভাবে বেশ কিছু নতুন শব্দ অভিধানে ঢুকে গেছে। যেগুলো বিমূর্ত এবং সহজে বোধগম্য নয়।'
কিন্তু একটি সহজ এবং ছোট্ট শব্দ অনেক সময় অনেক বেশি অর্থ বহন করে। এজন্য সেই শব্দের উৎস জানা থাকা উচিত। যেমন: স্ট্রিম শব্দের অর্থ জলধারা বা প্রবাহ। যখন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে তা বোঝাচ্ছে তথ্যের প্রবাহ। যা যথার্থ অর্থ বহন করে।
ডাঃ লাভ বলেন, শব্দের ব্যবহার ও অর্থের পরিবর্তনে ভালো খারাপের কিছু নেই। শব্দ সবসময় সময়, স্থানভেদে অর্থ পরিবর্তন হতে পারে।
ভিভিড ক্রিয়েটিভ ব্র্যান্ডি এজেন্সির ম্যানেজিং ডিরেক্টর গেরি আকারি বলেন, প্রতিষ্ঠান গুলো প্রকৃতি থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য নাম নিয়েছে। এর কারণ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্য, কার্যপ্রণালী গ্রাহকদের কাছে খুব ভালভাবে তুলে ধরতে তারা এই পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী গ্রাহকদের সঙ্গে কমিউনিকেশন করতে প্রতিষ্ঠানের জন্য এরকম নাম নির্ধারণ করা একটি সৃজনশীল প্রক্রিয়া। যা খুব সহজেই মানুষের মধ্যে একটি অর্থ তৈরি করতে পারে।
সূত্র: বিবিসি