টি-টুয়েন্টিতেও আফগান আগুন, পুড়ল বাংলাদেশ

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-22 23:31:58

দু’দলের শুরুর হিসেব ছিল প্রায় সমান সমান। আফগানিস্তান প্রথম ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারায় ৬০ রানে। বাংলাদেশও তাদের প্রথম ১০ ওভারে তুলে ৫৯ রান। হারায় ৪ উইকেট।

শেষের ১০ ওভারে আফগানিস্তান তুলে ১০৪ রান। আর ম্যাচ জিততে শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১০৬ রান। শেষের এই দাবি মেটাতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষের এই হিসেবেই ম্যাচ জিতে নিল আফগানিস্তান ২৫ রানে। আফগানিস্তানের ১৬৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ থেমে গেল ১৩৯ রানে।

টি-টুয়েন্টিতে এনিয়ে টানা চার ম্যাচের চারটিতে বাংলাদেশকে হারালো আফগানিস্তান। চট্টগ্রামে টেস্ট ম্যাচে বড় হারের পর এবার টি-টুয়েন্টিতেও বাংলাদেশকে হারালো আফগানিস্তান। তিনজাতি টি-টুয়েন্টি সিরিজে টানা দুই ম্যাচ জিতে আফগানিস্তান ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখলো।

এই ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে নামে বাংলাদেশ। লিটন দাসের সঙ্গে ব্যাটিং ওপেন করতে আসেন মুশফিকুর রহিম। টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওপেনার হিসেবে নেমেও সুবিধা করতে পারেননি জাতীয় দলের এই উইকেটকিপার। ব্যাট হাতে সাম্প্রতিক সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না তার। তাই জায়গা বদলে ওপেনার হিসেবে নামলেন। কিন্তু ফর্মে ফেরা যে হলো না!

লিটন দাসও আরেক ম্যাচ ব্যর্থ। আরেকবার বাজে ভঙ্গিতে আউট। আফগান অফস্পিনার মুজিব উর রহমানের দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকানোর খায়েশ জাগলো তার। খেলতে চাইলেন মিডউইকেট দিয়ে। ক্যাচ উঠলো পয়েন্টে!

 সাকিব আল হাসানও মুজিবের স্পিনে কাটা পড়লেন। ৩০ গজের বৃত্তের বাধা পার করতে পারলেন না। ১৩ বলে ১৫ রান করে ফিরলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

 সৌম্য সরকার ও রানে ফেরার জন্য ‘মুশফিকের ফমূর্লা’ নিলেন। ওপেনিং ছেড়ে তিনি নামলেন মিডলঅর্ডারে। কিন্তু লাভ যে কিছুই হলো না। মুজিবের বলে পরিস্কার এলবি। শূন্য রানে আউট হয়ে সৌম্য অবশ্য দলের একটা উপকার করে গেলেন; বল বেশি নষ্ট করলেন না। একটা বল খেললেন। ওতেই আউট!

৩২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা তখন ত্রাহি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমান পঞ্চম উইকেট জুটিতে এসে উদ্ধার কাজের চেষ্টা চালান। কিছুটা সফল হলেন তারা। তবে সার্বিকভাবে নয়। এই জুটিতে ৫৮ রান এলো। কিন্তু আস্কিং রান রেট বাড়তে থাকায় বিগ শট খেলার ঝুঁকি নিতে বাধ্য হলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে গুলবাদিন নায়েবের যে বলে মাহমুদউল্লাহ উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এলেন, সেটা কোন মতেই উইকেট পাওয়ার বল নয়! অর্ধেক পিচে পড়া সেই লং হপ বলে একহাতে মাহমুদউল্লাহ যে শট খেললেন তাতে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ঠ। ৩৯ বলে ৪৪ রান করে আউট মাহমুদুল্লাহ।

সাব্বির রহমান অনেক বল নষ্ট করলেন। বলের চেয়ে কম রান করে ফিরেও এলেন। ২৭ বলে ২৪ রানের তার ইনিংসে বাউন্ডারি সংখ্যা মোটে ১!

১৪.৩ ওভারে ৯৫ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। উইকেটে জুটি তখন মোসাদ্দেক হোসেন ও আফিফ হোসেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুক্রবারের ম্যাচে বাংলাদেশকে জেতানো এই জুটি কি আরেকবার চমক দেখাবেন?

প্রতিদিন তো আর শুক্রবারের সুখ মিলে না!

আফিফ ১৪ বলে ১৬ রানে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। ম্যাচ জিততে তখন ওভার প্রতি প্রয়োজন দাঁড়ায় আঠারের মতো রান!

এত বিপুল চাহিদা মেটাতে পারেনি বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে ২৫ রানের হারের এই ম্যাচে আরেকটি বিষয় পরিস্কার; এই আফগান দলের স্পিন খেলতেই পারছে না বাংলাদেশ।
 
স্পিনার মুজিব উর রহমান ১৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা পারফরমেন্স দেখিয়ে ম্যাচ সেরা। রশিদ খানের শিকার ২৩ রানে ২ উইকেট।

এ সম্পর্কিত আরও খবর