‘রহস্যময়’ ব্যাটিংয়ে সমালোচনার তোপে ভারত

ক্রিকেট, খেলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 03:44:57

৩৩৮। নিশ্চিতই করেই দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইনআপের ভারতীয় দলের জন্য আকাশ ছোঁয়া লক্ষ্য নয়। অথচ কিছুটা সময় লড়লেও শেষে এসে চেষ্টাই করল না দলটি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের যেন কোন তাগিদই ছিল না ম্যান ইন ব্লু-দের। নতুন জার্সিতে মাঠে নামা মহেন্দ্র সিং ধোনি আর কেদার যাদব বিস্ময়কর ব্যাটিং দিয়ে এখন সমালোচনার তোপে।

ভারতকে ৩১ রানে রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকল ইংল্যান্ড। অন্যদিকে লড়াইটা কঠিন হয়ে গেল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। ভারতের ব্যাটিং চমকে দিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমকে। ‘বিস্ময় ব্যাটিংয়ে ধিক্কার জুটল ভারতের’- প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের শিরোনাম এটি।

প্রতিবেদনে ধীর গতির ব্যাটিংয়ের সমালোচনা করা হয়। বিশেষ করে ধোনির খেলা বিস্ময় জাগিয়েছে। যেখানে দলের চাই ৩০ বলে ৬০-এর মতো রান তখন ক্রিজে মহেন্দ্র সিং ধোনি। যাকে ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ‘ফিনিশার’ বলেন অনেকে। সঙ্গী কেদার যাদব। তারপরও কিছুও করতে পারল না দলটি।

এজবাস্টনের ম্যাচ শেষে আনন্দবাজার লিখেছে-রবিবাসরীয় এজবাস্টনে যা দেখা গেল, এই অন্তিম প্রশ্নেরও আগে একটা প্রশ্ন এসে গিয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি— ধোনি এবং কেদার জেতার চেষ্টা করবেন তো? এক-এক সময় এমনই উদ্ভট দেখাচ্ছিল ধোনি এবং কেদারের ব্যাটিং যে, নিজের গায়েই চিমটি কেটে দেখতে ইচ্ছে করছিল, সত্যিই লাইভ ম্যাচ হচ্ছে তো? নাকি কোনও ম্যাচের শুটিং?

প্রত্যেক ওভারে যখন দরকার ১২ বা ১৩ রান করে, তখন তাঁরা খুচরো রান নিয়ে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। বড় হিট হবে কি, চেষ্টাই তো নেই। শেষের আধঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারের মতো হওয়ার কথা ছিল। হয়ে দাঁড়াল ফ্লপ ছবি। হয়তো বলা হবে, নেট রানরেট ঠিক রাখতে সাবধানি ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ধোনিরা। কিন্তু পাঁচ উইকেট হাতে নিয়েও এমন ব্যাটিংয়ের যা ব্যাখ্যাই দেওয়া হোক, ক্রিকেট ভক্তদের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়া কঠিন। 

প্রতিবেদনে আরো লেখা হয়েছে-ধোনি এবং কেদার দু’জনে মিলে ৩১ বল খেললেন। তার মধ্যে ৭টা বলে কোনও রান নেই, কুড়িটা এক রান, তিনটে চার এবং একটা ছয়। ভারত শুধু বিস্ময়কর ব্যাটিং করে ম্যাচই হারল না এজবাস্টনে, লক্ষ লক্ষ ভক্তের হৃদয় থেকেও দূরে সরে গেল। ধোনির ব্যাটিং সব চেয়ে অবাক করার মতো। তিনি দলের সিনিয়র ব্যাটসম্যান। কেদারকে তাঁরই পরিচালনা করার কথা। কিন্তু সাউদাম্পটনের ম্যাচের মতোই নিজে খোলসের মধ্যে ঢুকে পড়লেন।  সঙ্গীকেও হাত খুলতে উদ্বুদ্ধ করলেন না। শেষ ওভারে গিয়ে যখন জেতার জন্য ভারতের ৪৬ রান দরকার, প্রথম বলে ছয় মারলেন ধোনি। কিন্তু তত ক্ষণে দর্শকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। বিদ্রুপাত্মক ধ্বনি ভেসে আসছে ভারতের দুই ব্যাটসম্যানের দিকে। দ্বিতীয় বলে ধোনি আবার এক রান নিতে অস্বীকার করলেন। এ বার দর্শকদের ক্ষোভ আরও ফেটে পড়ল।

ভারতের ব্যাটিংয়ে হতাশ সৌরভ গাঙ্গুলিও। সাবেক এই অধিনায়ক বলছিলেন, ‘দেখুন, ভারত ৩০০ রানে অল আউট হয়ে গেলে বোধহয় এতটা খারাপ দেখাত না! কিন্তু হাতে পাঁচ উইকেট রয়ে গেল, রান তাড়া করা গেল না, নিশ্চিত করেই অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার।’

এভাবে ভারত হেরে যাওয়ায় চাপটা বেড়ে গেল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। ইংল্যান্ড ম্যাচটাতে হারলে মাশরাফিদের সেমিতে উঠার সম্ভাবনাটা নিশ্চিত করেই আরো বেড়ে যেতো। কিন্তু ভারত বিনা যুদ্ধে হার মানায় শেষ চার থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেল টাইগাররা!

এ সম্পর্কিত আরও খবর