আশরাফুল জানালেন তার বিশ্বকাপ দল

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 13:25:51

তিনটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার। বিশ্বকাপে দু’বার ম্যাচ সেরা হয়েছেন। বড় আসরে বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যাট হাতে পারফর্ম করার রেকর্ড যার, সেই মোহাম্মদ আশরাফুল, বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক এবারের বিশ্বকাপে তার সেরা ১৫ জনের নাম জানিয়েছেন বার্তা২৪.কমের কাছে-

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে কারা সুযোগ পাচ্ছেন সেটা মোটামুটি সবারই জানা। সবাই মুখচেনা। অনেক অভিজ্ঞ। লম্বা সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলছেন। ১৫ জনের দলে কারা থাকছেন তেমন ১৩ জনের নাম অন্তত সবাই বলতে পারবেন। যে দুজন বাকি থাকছেন, সেই শূন্যস্থান পূরণে সম্ভাব্য বেশ কয়েকজন তালিকায় রয়েছে।

সেই দুজন কে হতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে হয়তো ভিন্নমত থাকতেই পারে। সবাই হয়তো নিজস্ব ক্রিকেটীয় যুক্তি দিয়েই দল গড়ার চেষ্টা করবেন। সেই যুক্তির নিরিখেই চিন্তা করেই আমি আমার বিশ্বকাপের ১৫ জনের তালিকায় রেখেছি ফরহাদ রেজা ও ইয়াসির আলী চৌধুরীকে।

-কেন এই দুজন? সেই ব্যাখায় একটু পরে আসছি। আর আগে জানাই এবারের বিশ্বকাপে আমার টিমের কম্বিনেশন কেমন হবে। সহজ হিসেব, ১৫ জনের দলে ব্যাটসম্যান নয়জন। বোলার বাকি ছয়জন। আর স্ট্যান্ডবাই তালিকায় সুনির্দিষ্ট দু’চারজনকে নয়। আমি অনেককেই স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখতে চাই।

নয়জন ব্যাটসম্যানের কোটায় কারা থাকছেন সেটা প্রায় সবার মুখস্থ। আমি নিশ্চিত আমার এই তালিকার সঙ্গে খুব বেশি কেউ দ্বিমত হবেন না।

ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল অটোমেটিক চয়েজ। সঙ্গে লিটন দাস। দলের তৃতীয় ওপেনার সৌম্য সরকার। ব্যাটিং কোটায় বাকিরা হলেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান ও ইয়াসির আলী চৌধুরী। সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে আমরা অলরাউন্ডারের বাড়তি সুবিধাটা পাচ্ছি।

যেহেতু ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলা। তাই বোলিং বিভাগে পেস বোলারদের সংখ্যাই বেশি থাকবে। মাশরাফি বিন মতুর্জা, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং ফরহাদ রেজা-এই ছয় বোলার থাকছে আমার বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলে।

-প্রশ্ন উঠতে পারে, নয়জন ব্যাটসম্যানের মধ্যে আমি কেন ইয়াসির আলীকে বেছে নিলাম?

আমার উত্তর-মিডলঅর্ডার ও লোয়ার মিডলঅর্ডারে খুবই ভাল পারফর্মার ইয়াসির আলী। ব্যাট হাতে সাম্প্রতিক সময়ের প্রায় সব ক’টা টুর্নামেন্ট এবং লিগে প্রতিভার পরিচয় দিয়েছে সে। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে পাকিস্তান সফরেও ভাল পারফর্ম করেছে। যখন একজন ক্রিকেটার এমন ফর্মে থাকে তখন জাতীয় দলে খেলাটা সে ডিজার্ভ করে। তাছাড়া দলে তার জায়গায় অন্য যাদেরকে ভাবা হচ্ছে বা সম্ভাব্য যাদের নাম আমরা শুনছি বা মিডিয়ায় দেখছি তারা কেউ কিন্তু অমনভাবে পারফর্ম করতে পারছে না। আর ঠিক তখনই ইয়াসির আলী ব্যাট হাতে খুবই ধারাবাহিক।

-কেউ হয়তো যুক্তি তুলতে পারেন ইয়াসির আলীর তো কোন আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা নেই। বিশ্বকাপের মতো এতো বড় আসরে হঠাৎ করে এমন নতুন কাউকে সুযোগ দেয়াটা কি ঠিক হবে?

আমার উত্তর-আপনি যদি কাউকে দলেই না নেন, তাহলে তার নতুনত্ব কাটবে কিভাবে? তাছাড়া ওতো আর একেবারে বাচ্চা ছেলে না! লম্বা সময় ধরে ক্রিকেট খেলছে। টগবগে তরুণ। বড় পর্যায়ের ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করার একটা ক্ষিদে আছে তার ব্যাটে। একটু মনে করিয়ে দেই-আমি যখন নিজের অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করি তখন আমার বয়স ছিলো ১৭ বছর!

-বোলার হিসেবে আমার বিশ্বকাপ দলে সম্ভাব্য তাসকিন আহমেদ বা শফিউল ইসলামের জায়গায় ফরহাদ রেজা কেন?

এবারো আমার উত্তর-ফর্ম। হয়তো তাসকিন ও শফিউল গতির বিচারে একটু এগিয়ে। কিন্তু সার্বিক পারফরমেন্সের কথা যদি বিবেচনায় আনা হয় তবে ফরহাজ রেজা অনেক বেশি এগিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফরহাদ রেজার জন্য নতুন কোন জায়গা নয়। তাসকিন এখনো পুরোপুরি ফিট না। আর শফিউলের পারফরমেন্সও তেমন বড় কিছু নয়। এবারের বিশ্বকাপে আমাদের শুরুতে খেলতে হবে ৯টা ম্যাচ। টানা সব ম্যাচেই যে সবাই ভাল করবে, তা কিন্তু নয়। তাই সাইফুদ্দিনের যখন বাজে সময় যাবে তখন একাদশে ফরহাদ রেজা হতে পারে অধিনায়কের সেরা পছন্দ। সব ফরমেটের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়টা ফরহাদ রেজার চমৎকার কাটছে। ঢাকা লিগে তো ব্যাটে-বলে সেরা সময় পার করছে সে। অভিজ্ঞতা-ফর্ম সবমিলিয়ে আমার কাছে মনে হয় ফরহাদ রেজা নিজের খেলাটা বুঝতে পেরেছে এখন।

আমার বিশ্বকাপ দল: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, ইয়াসির আলী চৌধুরী, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ ও ফরহাদ রেজা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর