একেই বলে ধস! একেবারে আকাশ থেকে ধরনীতে পতন!
ম্যাচ জিততে ২৪ বলে চাই মাত্র ৩০ রান। হাতে অক্ষত ৭ উইকেট। এমন ম্যাচও ব্যাটিং দল হেরে গেলো ১৪ রানে! শেষ ৭ উইকেট পড়লো স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ৮ রান যোগ করে। খরচ হলো ১৭ বল! দিল্লি ক্যাপিটাল এমন হারের দুঃখ ভুলবে কি করে?
আইপিএলের ইতিহাসে এটাকেই শেষের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় ধস বলে মানা হচ্ছে।
ম্যাচ শেষে দিল্লি ক্যাপিটালের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার কথা বলার জন্য কোন শব্দই খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ডাগআউটে কোচ রিকি পন্টি এবং মেন্টর সৌরভ গাঙ্গুলির যেন পাথুরে মুর্তি!
সমস্যার শুরুটা হলো দিল্লির ১৭ নম্বর ওভারে। মোহাম্মদ সামীর তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকানো রিভাস পান্থের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিলো দ্রুতই দিল্লি ম্যাচটা শেষ করে দিতে চাইছে। কিন্তু চতুর্থ বলেই সামী শোধ নিলেন। রিভাস পান্থ বোল্ড! পরের বলেই ক্রিস মরিস রান আউট!
সেই ওভারে খরচ হলো ৭ রান। উইকেট পড়লো ২টি। দিল্লির জয়ের লক্ষ্য দাড়ালো ১৮ বলে ২৩ রান। উইকেট বাকি ৫টি।
স্যাম কুরান ১৮ নম্বর ওভারে এলেন। সেটা ছিলো ম্যাচে তার দ্বিতীয় ওভার। দিল্লির ব্যাটসম্যানরা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভুল করে বসলো। ওভারের চতুর্থ বলেই কলিন ইনগ্রাম তাকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়লেন বাউন্ডারি লাইনে। ওভারের শেষ বলে হারিশ প্যাটেলকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করলেন স্যাম কুরান। তার সেই ওভারে খরচ হলো মাত্র ৪ রান। উইকেট মিললো ২টি।
প্রায় হারা ম্যাচে তখন জয়ের পথে ফিরে এসেছে কিংস এলেভেন পাঞ্জাব। শেষ দুই ওভারে চাই ১৯ রান। হাতে উইকেট বাকি ৩টি। মোহাম্মদ সামি এলেন ১৯ নম্বর ওভারে। এই ওভারেও সফল সামি। মাত্র ৪ রান খরচ হলো। উইকেট তুলে নিলেন ১টি, হনুমা বিহারি আউট।
শেষ ওভারে দিল্লির জয়ে প্রয়োজন ১৫ রান। স্যাম কুরানের হাতে বল তুলে দিলেন পাঞ্জাব অধিনায়ক বরিচন্দ্র অশ্বিন। প্রথম বলেই কাগিসো রাবাদাকে দুর্দান্ত ইয়র্কারে বোল্ড করলেন কুরান। পরের বলেই একই গতি ও কৌশলে সদ্বীপ চামিচানের স্ট্যাম্পও উপড়ে গেলো!
১৪৪ রানে ৩ উইকেটের দল দিল্লি অলআউট ১৫২ রানে! নাটকীয় কায়দায় ১৪ রানে ম্যাচ জিতলো কিংস এলেভেন পাঞ্জাব। টানা তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে স্যাম কুরান চলতি আইপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিক ম্যান।
চলতি আইপিএলে এটাই ছিলো স্যাম কুরানের প্রথম ম্যাচ। ক্রিস গেইল সামান্য ইনজুরিতে থাকায় একাদশে জায়গা পান ইংলিশ এই অলরাউন্ডার। প্রতিদ্বদ্বিতাপূর্ণ কোন বড় ম্যাচে এই প্রথম ওপেনার হিসেবেও নেমে পড়েন। ১০ বলে ২০ রান করেন। আর বোলিংয়ে মাত্র ১৪ বলে ১১ রান খরচায় ৪ উইকেট। এরমধ্যে শেষের তিন উইকেট আবার তিন বলে!
হ্যাটট্রিকের প্রথম উইকেটটি পান কুরান তার দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে। পরের দুটি তৃতীয় ওভারের প্রথম দুই বলে! ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে কুরান ম্যাচ সেরা।
অথচ এই ম্যাচে তার খেলারই কথা ছিলো না! ক্রিস গেইলকে এখন আরো কয়েকটি ম্যাচে বিশ্রামে রাখতেই পারে পাঞ্জাব!