শুভ জন্মদিন তামিম; যার শূন্যও দলকে জেতায়!

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 14:42:34

আজ ২০ মার্চ। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় একটা শুভদিন। ১৯৮৯ সালের এইদিনেই জন্মেছিলেন তামিম ইকবাল খান। সবার আগে তামিম ইকবালকে পুরো বার্তা২৪ এর পক্ষ থেকে শুভ জন্মদিনের একরাশ ফুলেল শুভেচ্ছা।

বাংলাদেশ যখন টেস্ট খেলতে শুরু করেছিলো তখন তামিমের বয়স ১১! আজ সেই তিনিই শুধু টেস্ট ক্রিকেট নয়, সব ফরমেটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যান।

ক্রিকেটে তুলনা বা শ্রেষ্ঠত্বের প্রশ্ন এলে বিতর্ক উঠবেই। তবে এখন পর্যন্ত সব ফরমেটে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান কে? এই খোঁজে নিঃসন্দেহে বিতর্কহীন ভাবে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়বে তামিম ইকবালের নামের পাশেই।

ব্যাটিং রেকর্ডই তার সবচেয়ে প্রমাণ!

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান তার। ওয়ানডেতেও তাই। হ্যাঁ আপনি ঠিক পড়ছেন টি-টুয়েন্টিতেও দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান তারই। সেঞ্চুরির হিসেবেও আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে তিন ফরমেটেই দেশের হয়ে তিনিই সবাইকে ছাড়িয়ে। সবাইকে ছাপিয়ে।

আরো আছে। ছক্কা-চারের রেকর্ডেও তিনি শীর্ষে। শুধুমাত্র টি-টুয়েন্টিতে তার চেয়ে দুটি বেশি ছক্কার মালিক মাহমুদউল্লাহ। ৭১ ম্যাচে তামিমের ছক্কা আছে ৪০টি। ৭৬ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর রেকর্ড ৪২ ছক্কার।

একক হাতে বাংলাদেশকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন। তবে কখনো ভাবেননি নিজের কাজ শেষ। পরের ম্যাচের জন্যই আবার নিজেকে তৈরি করছেন নতুন শপথে। ক্রিকেট মাঠে চ্যালেঞ্জ জেতার অদম্য স্পৃহা, জেতার জেদ এবং নিজের শ্রেষ্ঠত্বকে দেশের জন্য বিলিয়ে দিতে পারার আনন্দের অন্য নাম-তামিম ইকবাল খান।

তার ক্রিকেট দর্শনের অন্য নামই চ্যালেঞ্জ জয়। বললেনও তা-‘আপনি দুনিয়ার যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিয়েও কিছুই করতে পারবেন না, যদি চ্যালেঞ্জ জেতার ইচ্ছে না থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেদের মধ্যে চ্যালেঞ্জ থাকাটা। ভাল করার স্পৃহা থাকতে হবে। আমাকে পারতেই হবে-এমন একটা লড়াইয়ের জন্য নিজের মধ্যেই জেদ তৈরি করতে হবে।’

তামিমের ব্যাটে সেই জেদ দেখেছে বাংলাদেশ। সেই জেদ তামিমের সেঞ্চুরিতে যেমন আছে। ঠিক তেমনি আছে তার শূন্যে রানের ইনিংসেও!

শুধু সেঞ্চুরি নয়, শূন্য রান দিয়েও যে দলকে জেতানো যায়-অবিস্মরনীয় সেই চ্যালেঞ্জ দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব তামিম ইকবালের ব্যাটে! এশিয়া কাপে গেল বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তামিম। কিন্তু দলের প্রয়োজনে সেই তিনিই গ্লাভস কেটে ব্যান্ডেজ বাধা হাত নিয়েই আবার মাঠে নেমে পড়েন ব্যাট করতে। একহাতে ব্যাট করেন! তাও আবার সুরঙ্গা লাকমালের মতো ফাস্ট বোলারকে খেলেন! এই দফায় একটি বলই খেললেন তিনি। কোন রানই করেননি। সারাক্ষণ একহাতে ব্যাট ধরে ইনজুরিতে থাকা বামহাত বুকের সঙ্গে লাগিয়ে খেলে যান। অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যান মুশফিক রহিমকে সঙ্গ দিয়ে গেলেন। অবিশ্বাস্য সেই লড়াইয়ে মুশফিক বাংলাদেশের স্কোর ২২৯ থেকে নিয়ে গেলেন ২৬১ রানে। দুজনের এই জুটিতে ১৬ বলে রান যোগ হলো ৩২। যার সব রানই মুশফিকের। তামিম তো খেলেন মাত্র একবল। কোন রান হয়নি তার সেই বলে। কিন্তু দাঁত চেপে লড়াইয়ের তার জেদ। দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেয়ার সেই চেষ্টাই যে খানিকবাদে বোলিংয়ে বাংলাদেশকে তাঁতিয়ে দিলো। ম্যাচ জেতালো।

সেঞ্চুরিতে তো বটেই, তামিমের শূন্যেও বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক বড় শক্তি!

এ সম্পর্কিত আরও খবর