মুশফিকের চিটাগংও প্লে’অফে, টেনশনে সাকিবের ঢাকা

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম থেকে | 2023-08-23 14:59:07

অবশেষে জিতলাম!

চিটাগং ভাইকিংসের অধিনায়ক মুশফিক রহিম এখন স্বস্তি পেতেই পারেন। ঢাকাকে ১১ রানে হারিয়ে চিটাগং নিজ শহরে নিজেদের শেষ ম্যাচে এসে হাসলো। এই জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চিটাগং ভাইকিংসও নাম লেখালো টুর্নামেন্টের প্লে’অফে। আর ১০ পয়েন্টে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটসের অপেক্ষা বাড়লো, সঙ্গে টেনশনও।

নিজ মাঠে টানা তিন ম্যাচ হেরে চিটাগং ভাইকিংসের দুঃশ্চিন্তা বাড়ছিলো। কিন্তু এই মাঠে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে জয়ে চিটাগং ভুলে যাওয়া হাসি ফিরে পেলো যেন!

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে এই ম্যাচে মুশফিক ব্যাটিং বেছে নিলেন। পাওয়ার প্লেতে ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ বাজে শটস খেলে আউট হলেও অন্যপ্রান্তে ক্যামেরুন ডেলপোর্ট দলকে বড় স্কোরের পথে রাখেন। ৫৭ বলে ৭১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি। মুশফিক রহিমের ব্যাটও দলকে চমৎকার সমর্থন দিলো। ২ ছক্কা ও ৪ বাউন্ডারিতে মুশফিক করেন ৪৩ রান। ১৭৪ রানের স্কোর চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটের জন্য তেমন বড় কোন চ্যালেঞ্জ নয়। কিন্তু চিটাগং ভাইকিংসের বোলাররা এই ম্যাচে ডিসিপ্লিন বোলিং করে নিজ শহরের দর্শকদের সামনে জয়ের আনন্দ পেলো। 

শেষ ৩০ বলে ম্যাচ জিততে ঢাকা ডায়নামাইটসের সামনে প্রয়োজন দাড়ায় ৫৩ রানের। উইকেটে তখন ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসান ও আন্দ্রে রাসেল। টি-টুয়েন্টির বিশ্বসেরা দুই অলরাউন্ডার। দুজনেই তখন উইকেটে সেট, ৩০ এর বেশি রান দুজনের ব্যাটেই। কিন্তু এই ম্যাচে যে ফিনিসার হতে পারলেন না ঢাকার এই দুই সেরার একজনও।

বোলিংয়ে হ্যাটট্রিক করা রাসেলের সামনে সুযোগ ছিলো এই ম্যাচকে ব্যাটে-বলে স্মরণীয় করে রাখার। ভাগ্যও সঙ্গে ছিলো বেশ। ডেলপোর্টের বলে ২২ রানে একবার বোল্ড হলেও দেখা গেলো সেটা ছিলো ‘নো বল’! সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না রাসেল। ৩৯ রান করে শানাকার বলে রাসেলের আউটের পরে ম্যাচ জেতার দায়িত্ব চাপে সাকিব ও শুভাগত হোমের ওপর। শুভাগত আরেকবার ব্যর্থ। ১৮ নম্বর ওভারে নাঈম ইসলাম মাত্র ৫ রান খরচ করে শুভাগত হোমকে বিদায় করেন। এরপর সাকিবও দলকে জেতানোর চেষ্টা চালান। কিন্তু এবারো সেই শানাকা দৃশ্যপটে হাজির। শানাকাকে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় সাকিব তুলে মারলেন। বল বাউন্ডারি পর্যন্ত পৌছালো না। ৫৩ রানে সাকিব ক্যাচ হয়ে যখন ফিরছেন ততক্ষনে ম্যাচ পুরোটাই হেলে পড়েছে চিটাগং ভাইকিংসের পালে।

সাকিব ও রাসেলের চেষ্টার আগে উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন এই ম্যাচে তারকা হওয়ার। কিন্তু এই ম্যাচটা যেন নিজের করে নেয়ার জন্যই নেমেছিলেন দেলপোর্ট। ২৩ বলে ৩৩ রান করা সোহানের উইকেটও তিনিই শিকার করেন। পরের বলেই কাইরন পোলার্ড ছেলেমানুষি কায়দায় শূন্য রানে রানআউট হন।

সাকিব ও রাসেল সেই ধাক্কা প্রায় সামলে দিয়ে ঢাকাকে জয়ের পথ দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু এই ম্যাচের শুরুর মতো শেষের অংশেও চিটাগং ভাইকিংসের পারফরমেন্সটা ছিলো বেশি উজ্জ্বল।

ম্যাচ জয়ের পর চিটাগং ভাইকিংস দল বেঁধে মাঠের চারধারে দৌড়ে উইনিং ল্যাপ দেয়। গ্যালারির দর্শকদের ধন্যবাদ জানায়। নিজ মাঠে একেবারে শেষ ম্যাচে এসে এই জয়টা চিটাগংয়ের জন্য কতবেশি প্রয়োজন ছিলো, তাগিদটা বোঝা গেলো তাতেই!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: চিটাগং ভাইকিংস: ১৭৪/৫ (২০ ওভারে, শাহজাদ ২১, ডেলপোর্টস৭১, ইয়াসির আলী ১৯, মুশফিক ৪৩, রাসেল ৩/৩৮, নারিন ২/২০)। ঢাকা ডায়নামাইটস: ১৬৩/৯ (২০ ওভারে, মিজানুর ১১, সাকিব ৫৩, নুুরুল হাসান ৩৩, রাসেল ৩৯, আবু জায়েদ ৩/২৫, শানাকা ২/৩৪, ডেলপোর্ট ১/৩১, নাঈম হাসান ১/৩৭)। ফল: চিটাগং ভাইকিংস ১১ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: ক্যামেরুন ডেলপোর্ট।

এ সম্পর্কিত আরও খবর