গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপির 'নতুন কৌশল'

, রাজনীতি

অন্তু মুজাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-26 09:14:29

ঢাকা: আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (গাসিক) নির্বাচন। আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রর্থীকে বিজয়ী করতে নতুন কৌশল তৈরি করেছে বিএনপি। তবে নির্বাচনকালীন প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত দেবে দলের হাইকমান্ড।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে আসছে দলটি। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতি কিংবা কারচুপির মতো অনিয়ম দেখতে চায় না বিএনপি সিনিয়র নেতারা। তাই যে করেই হোক মাঠ দখলে রেখে নিজেদের মনোনীত প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি।

সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দলের সিনিয়র নেতারা, সাংগঠনিক সম্পাদক, গাসিক নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থী ও ৫৭ টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত পরিকল্পনা নেয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন ৫৭ টি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি গঠন করে নেতাকর্মীদের মাঠে রাখা হবে। ৫৭টি টিমের পাশাপাশি সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হবে। নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সিনিয়র নেতারা সরাসরি অংশ নেবেন। এছাড়া খুসিক নির্বাচনে ভোটের আগে খুলনা সিটির নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি এড়াতে যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই এমন নেতাকর্মীদের বাছাই করে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে।

দলটি মনে করে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গাসিক নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের জয় পরাজয়ের মধ্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচনে জনসমর্থন কোন দিকে তা বিবেচিত হবে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে তাদের নিশ্চিত জয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। সেই দিক বিবেচনা করে এই নির্বাচনে ভোট ডাকাতি ঠেকাতে যে করেই হোক তারা মাঠ দখলে রাখবে।

ইতোমধ্যে খুলনা সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে অভিজ্ঞতা হয়েছে। ভিন্ন কৌশলে সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে গাসিক নির্বাচনে জয় পেতে টিম ওয়ার্ক করবে দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। সরাসরি কেন্দ্র থেকে পরিচালিত হবে নির্বাচনী কার্যক্রম। সেক্ষেত্রে দল ত্যাগী ও সাহসী কর্মীদেরকেই টীমে রাখবে। এছাড়াও খুলনা নির্বাচনে ছোট ভূল ক্রটি যা হয়েছে সেগুলোও শুধরে নিতেও জোর দেয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের সিনিয়র এক নেতা বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন, ভোট ডাকাতি ও প্রশাসনের নগ্ন ব্যবহার করে তারা (আওয়ামী লীগ) খুলনা সিটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। তারা যাতে গাজীপর সিটি নির্বাচনে একইভাবে ভোট ডাকাতি না করতে পারে সেজন্য আমাদের প্রতিরোধ মূলক কমিটি মাঠে থাকবে। সরকারের সকল কূটকৌশল মোকাবেলা করে কিভাবে দলের মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করা যায় সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে তা সহজ হবে না।

গাজীপুর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনের মতো গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করতে দেয়া হবে না। তবে নির্বাচনে বিএনপির নতুন কৌশল থাকবে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আমরা মাঠে থাকবো। ক্ষমতাসীনরা যদি খুলনার মতো গাজীপুরে ভোট ডাকাতির চেষ্টা করে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, গাজীপুরের জনগণ বিএনপিকে বিজয়ী করতে মুখিয়ে আছে। এখন দরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। খুলনার মতো কারচুপির নির্বাচন করতে চাইলে দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারন জনগন তা প্রতিহত করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর