এবার ঈদের অপেক্ষায় আ’লীগ নেতারা

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

রেজা-উদ-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 17:18:20

'ঈদের পর আন্দোলন হবে, কিন্তু কোন ঈদের পর সেই আন্দোলন?' গেল কয়েক বছরে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম ও সামর্থ্য নিয়ে এমন রসিকতার প্রচলন আছে রাজনৈতিক মহলে। সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগের নেতারাও এই প্রশ্ন তুলে খোঁচা দেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে। এবার তারাই আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের অপেক্ষায় তাকিয়ে রয়েছেন। কেননা ঈদ শেষ হলে তৃণমূলে চষে বেড়াতে দল পাঠাতে চায় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।

কেন্দ্র, মহানগর, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে মিশন হিসেবে নিয়ে দলকে শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর লক্ষ্যে নিয়ে তৃণমূলের সফরে বেরিয়ে পড়বেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

চলতি বছরের অক্টোবর মাসে দলের ২১ তম সম্মেলন উপলক্ষে তৃণমূলকে ঢেলে সাজানোসহ দলকে শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেজন্য দলে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার কথাও জানিয়েছেন ক্ষমতাসীনরা।

এদিকে  চিকিৎসার কারণে সভাপতি শেখ হাসিনা লন্ডনে এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিঙ্গাপুরে থাকায় অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে দলীয় রাজনীতি। রোজা উপলক্ষে নেতারাও দলীয় কর্মসূচি রাখছেন কম।

গেল মাসে কেন্দ্রীয় সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে চাঙ্গা ভাব ছিল সেটাও অনেকটা চুপসে গেছে। গ্রীষ্মের তাপদাহ ও রোজায় রোজাদারদের কষ্টের কথা চিন্তা করে সম্মেলন বা সাংগঠনিক সফরের সিদ্ধান্ত বাদ দেয় আওয়ামী লীগ। তবে ঈদের পরেই পুরোদমে মাঠে নেমে পড়বে আওয়ামী লীগ। আর সে জন্য হাতে নিয়েছে গুচ্ছ পরিকল্পনা।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারাদেশে দলকে শক্তিশালী করতে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে মহানগর, জেলা ও উপজেলায় সর্বশেষ কবে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার দিন তারিখ দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।

কুষ্টিয়া, খুলনা, সিলেট ও নোয়াখালীতে দলের বর্ধিত সভা করে কেন্দ্রের নির্দেশ ও পরিকল্পনা জানানো হয়েছে। আগামী ১১ মে চট্টগ্রামে দলের নেতা ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, যেসব জেলা ও উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন হয়নি, কোন্দল বিরাজমান, সংগঠন দুর্বল, পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই, নেতৃবৃন্দ বয়স্ক ও অসুস্থ সেসব জেলা ও উপজেলায় সম্মেলন করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যেসব জায়গায় সংগঠনে বিএনপি-জামায়াত বা অন্য সংগঠনের অনুপ্রবেশ হয়েছে, বিতর্কিত কাজের কারণে সমালোচিত তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। দলের শুদ্ধি অভিযানে এসব বিতর্কিতদের বাদ দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

এছাড়া যোগ্য ও অযোগ্য নেতাদের তালিকাও করা হচ্ছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্র ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এদিকে কমিটি গঠনের জন্য গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমেও নেতাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঈদের পর পরই আওয়ামী লীগের আটটি টিম একযোগ সাংগঠনিক সফরে বেরিয়ে পড়বেন। তৃণমূল সংগঠনকে শক্তিশালী করতে যা যা করণীয় তাই করা হবে।

সম্প্রতি ৫ মে সিলেট বিভাগীয় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় তৃণমূল নেতাদের নানা বক্তব্য, অভিযোগ শোনেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ।

তৃণমূল নেতারা জানান, বর্তমান পদ-পদবী বহন করছেন এসব নেতারা চান না দলের সম্মেলন হোক। কারণ তারা জানেন বিগত সময়ে বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে তারা আর পদ পাবেন না। যেকোনোভাবে তারা পদে থাকতে পারলেই বাচেঁন। এছাড়া উপজেলা নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এমপিদের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ বলেন, আমাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চলমান। দলের সম্মেলনের আগে জেলা, মহানগর ও উপজেলাগুলোতেও সম্মেলন করা হয়, সে লক্ষ্য নিয়ে ঈদের পর সাংগঠনিক সফর শুরু করা হবে।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর