রওশন এরশাদ যাদের সমর্থনের কথা বলছেন, কী বলছেন তারা

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 23:36:48

যাদের সিদ্ধান্তে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হওয়ার কথা জানিয়েছেন রওশন এরশাদ, তারা অনেকেই এ তথ্যকে মিথ্যা বলে বিবৃতি দিয়েছেন। আর জাতীয় পার্টির মহাসচিব একে ফেক তথ্য বলে মন্তব্য করেছেন।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রওশন এরশাদ নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি লিখেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ কো-চেয়ারম্যানদের পরামর্শ ও সিদ্ধান্তক্রমে দলের গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।

বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কো-চেয়ারম্যানদের সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি ভিড়িও বার্তায় ওই তথ্য সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, সংবাদটি ভুয়া ও অসত্য। যিনি সংবাদটি গণমাধ্যমে প্রেরণ করেছেন তারা দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।

তিনি বলেছেন, জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে বহাল রয়েছেন। আমরা তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি।

রওশন এরশাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে গত বছরের ১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একটি সভার কার্যবিবরণী প্রেরণ করা হয়। সেখানে প্রেসিডিয়াম সদস্য ঢাকা উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টুর স্বাক্ষরও বিদ্যমান। তিনিও একে ফেক ও বানোয়াট নিউজ বলে মন্তব্য করেছেন।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এক বিবৃতিতে বলেছেন, জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে বহাল রয়েছেন। আমার মনে হয় জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত কিছু নেতাকর্মী রওশন এরশাদের নাম ব্যবহার করে ওই ফেক নিউজ ছড়াচ্ছে।

সংখ্যাগরিষ্ঠ কো-চেয়ারম্যানদের সিদ্ধান্তে রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন একটি চিঠি গণমাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে। আড়াই লাইনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রওশন এরশাদ লিখেছেন, পার্টির সিনিয়র নেতাদের পরামর্শ ও সিদ্ধান্তক্রমে দলের গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।

ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রওশন এরশাদের স্বাক্ষর দেখা যাচ্ছে। তবে সেই স্বাক্ষর তিনি দিয়েছেন কিনা এ বিষয়ে রওশন এরশাদের মতামত নেওয়া যায়নি। কাজী লুৎফুল কবীর নামের একজন সিনিয়র সাংবাদিক ওই চিঠিকে সত্য বলে দাবি করেছেন। যিনি রওশন এরশাদ মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশীদের প্রেস উইং প্রধান হিসেবে কাজ করেন।

তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেছেন, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর তারিখের একটি সভার কার্যবিবরণী প্রেরণ করেছেন। ওই কার্যবিবরণীতে জাতীয় পার্টির ৬ জন কো-চেয়ারম্যানের মধ্যে ৪ জনের স্বাক্ষর রয়েছে। তারা হলে, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও এড. সালমা ইসলাম এমপি। এছাড়া অপর একজন সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্যের স্বাক্ষর রয়েছে। সেখানে পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে। ওই কার্যবিবরণীর ভিত্তিতে এতদিন রওশন এরশাদ দায়িত্ব গ্রহণ করেননি, এখন গ্রহণ করেছেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ভারত সফরে রয়েছেন যে কারণে তারা মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি তিনি একাধিক বক্তৃতায় বলেছেন, আওয়ামী লীগ তার দল ভাঙার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ সব সময় জাতীয় পার্টিতে বিভক্তি সৃষ্টি করে রেখেছে। ২০১৪ সালের পর থেকে জাতীয় পার্টির মধ্যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। জাতীয় পার্টিকে সব চেয়ে বেশি দুর্বল করেছে আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে সমর্থন দিয়েছিলো জাতীয় পার্টি। তারপর থেকেই জাতীয় পার্টির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বিঘ্নিত করেছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে, জাতীয় পার্টি অনেকটা দুর্বল হয়েছে। আমরা এই অবস্থা থেকে বের হতে চাই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর