পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে শঙ্কা-উদ্বেগ

বিবিধ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 15:19:48

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দিনদিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। মাঠের শক্তি প্রদর্শনে ব্যস্ত প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য একদফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। অন্যদিকে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ রয়েছে দাবি করে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানে শান্তি সমাবেশ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। অন্যদিকে একই সময়ে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠনের ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।

দেড় কিলোমিটারের ব্যবধানে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ ঘিরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজধানীতে। একই সঙ্গে জনদুর্ভোগও বাড়বে বলে ধারণা সাধারণ মানুষের। সমাবেশ আর মহাসমাবেশ ঘিরে দুই দিনের টানাপড়েনের অবসান ঘটিয়ে বুধবার বিকেলে দুই দলকেই ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আমরা দুই দলকেই চৌহদ্দি নির্ধারণ করে দিয়েছি। বিএনপি নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত জায়গার মধ্যে তাদের সমাবেশ ও মাইকের ব্যবহার সবকিছু সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত তাদের সমাবেশ ও মাইকিং সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। দুই দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে কোনো লাঠিসোটা আনতে পারবেন না। কোন ব্যাগ বহন কারা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো বক্তব্য দেয়া যাবে না। এছাড়া জনদুর্ভোগ এড়াতে দলগুলোকে নিজেদের ভলান্টিয়ার রাখার পরামর্শ দেন তিনি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয় এমন কিছু না করার অনুরোধও জানান।

এদিকে সংঘাতের শঙ্কায় বৃহস্পতিবার কর্মদিবসেও রাস্তায় তেমন গাড়ি দেখা যায়নি। অজানা আতঙ্কে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হননি। অথচ অন্য সময় শেষ কর্মদিবসে দিনভর শহর যানজটে থমকে থাকে।

একই দিনে কাছাকাছি সময়ে দুই দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল মানুষের সমস্যা নিয়ে চিন্তা করে না। তারা ক্ষমতাকেই মূখ্য মনে করে। তা না হলে তারা একই দিনে এভাবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিত না। সবাই উদ্বেগের মধ্যে আছে। কখন যেন সংঘাত বেঁধে যায়। এই পরিস্থিতির উত্তরণ তখনই সম্ভব, যখন তারা আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন।

যদিও দুই দলের নেতারা বিশ্লেষণকে পাত্তা দিচ্ছেন না। বিএনপি বলছে, দেশের সাধারণ নাগরিকরা ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির আড়ালে বিএনপি যেন ‘নাশকতার’ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারে সে জন্যই তারা শান্তি সমাবেশ করছেন।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, মহাসমাবেশকে বাধা দিতে সরকার আবারও ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। দলটির দাবি, শুক্রবারের সমাবেশে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় এসেছেন। তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। তাদের ৫০০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে পুলিশ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে।

এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে গতকাল রাত থেকেই রাজধানী ঢাকার প্রবেশপথ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের আশুলিয়ায় চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর