আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না, জনগণকেই ক্ষমতায় নিতে চাই: ফখরুল

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2023-08-31 21:32:06

আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না, জনগণকেই ক্ষমতায় নিতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় কীভাবে যাবা? ওই পুলিশ, ওই বিডিআর, অস্ত্র যন্ত্র দিয়ে? আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা জনগণকেই ক্ষমতায় নিতে চাই। আমরা ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই।

বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়িতে ‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে। যারা প্রতারণা করে, জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। জনগণের ওপর স্টিম রোলার চালাচ্ছে। এই সরকারের প্রধান বলেছিলেন, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। কিন্তু কই? যুবক ভাইয়েরা বাজারে যেতে পারে না। লবণের দাম বেড়েছে, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম বেড়েছে। তারা বলে, বাংলাদেশ নাকি ভালো আছে। হুম, তারা ভালো আছে। তারা টাকা পয়সা বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এমনকি তাদের সন্তানদেরও বিদেশে পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারি না। স্যাংশন দিয়েছে। আমেরিকা থেকে স্যাংশন। কেন? র‍্যাবকে কারা ব্যবহার করেছে। র‍্যাবকে কারা বলেছে, আমাদের ভাইদের তুলে নিয়ে গুম করতে। সেই সরকার। তারা বলে আমরা ভয় পাই না। ভয় পাই না। এমন ভয় পেয়েছে হাঁটু কাঁপতে শুরু করেছে। কারণ তাদের সব কিছুই তো বিদেশে। টাকা পাচার করেছে বিদেশে। এইবার যদি তুমি ভোটে আবার কারচুপি করতে যাও, এবার যদি দিনের ভোট রাতে করো। অথবা ওই কুত্তা মার্কা নির্বাচন করো, তাহলে তোমাদের রেহাই নাই। এইবার রেহাই নাই।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সমানে বলে- এ দেশে নাকি গণতন্ত্র আছে। এ দেশে নাকি সুস্থ ভোট হয়। অনেক হয়েছে, আপনি আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছেন। আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। আমরা কোর্টে যেতে পারি না। কোর্টে গেলে, সরাসরি জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মিথ্যা আর গায়েবি মামলা দিয়ে হাজির করা হয়। এরপর হাইকোর্টে যাই, আগাম জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতে গেলে আবার জেলে পাঠানো হয়। সেটাই শেষ না, জামিন নিয়ে বের হলে আবার মামলা দেওয়া হয়।

সাংবাদিকেরা লিখতে পারে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সাংবাদিকেরা লিখলে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল আইনে মামলা করা হচ্ছে। রোজিনা ইসলামকে আবার মামলা দেওয়া হচ্ছে। ফটোগ্রাফার শহিদুল ভাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। সাংবাদিক সাগর-রুনিকে বাড়ির মধ্যে নির্মমভাবে হত্যার এখনো বিচার হয়নি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে, মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে। শুধু আটক করে রাখেনি, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তাকে কারাগারে অনেক দিন আটক করে রাখা হয়েছিল। বারবার বলেছি, তাকে মুক্তি দিন। আমরা জানি না, তাকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে কিনা। কারণ তিনি এখন যে অসুস্থ হয়েছেন, এতটা অসুস্থ হওয়ার কথা নয়। তাকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

বরিশালের পীর সাহেব একজন আলেম মানুষ। তাকে সবাই শ্রদ্ধা করে। শেষ পর্যন্ত তাকেও মেরে রক্তপাত ঘটিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ফখরুল।

কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহাজাহান, বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর