বিক্ষোভেই ক্ষোভ প্রশমন বিএনপির

বিএনপি, রাজনীতি

মহিউদ্দিন আহমেদ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 14:20:06

গণতান্ত্রিক পরিবেশে রাজনৈতিক দলগুলো; বিশেষ করে রাজপথের বিরোধী দলগুলো বিভিন্ন উপায়ে প্রতিবাদ করে থাকে। এগুলোর মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচি। তার পরের ধাপেই আছে সমাবেশ বা মহাসমাবেশ। প্রতিবাদের জন্য লং মার্চও বেশ জনপ্রিয়। অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে আছে অবস্থান কর্মসূচি, অনশন ও মানববন্ধন। তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ হিসেবে মিছিল ও মশাল মিছিলের চল এখনো আছে। এছাড়া নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল তো রয়েছেই। প্রতিবাদ জানাতে বিএনপি কোন পন্থায় অভ্যস্ত?

বিএনপি সর্বশেষ উন্মুক্ত মাঠে মহাসমাবেশ করেছিলো ২০২১ সালের মার্চ মাসের ৩০ তারিখ। সেটা ছিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। তারপরও দলটি বড় ধরনের সমাবেশ করেছে তবে সেগুলো ছিল তাদের দলীয় কার্যালয় পল্টন অফিসের সামনে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিভাগীয় শহরগুলোতে মহাসমাবেশ করেছিলো।২০২২ সাল শুরু করেছিলো সাংগঠনিক জেলাগুলোতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে। সেগুলো বেশির ভাগ অনুষ্ঠিত হয়েছিল সংশ্লিষ্ট জেলার বিএনপি কার্যালয়কে ঘিরে। তবে এই সময়ের মধ্যে বিএনপি সবচেয়ে বেশি যে কর্মসূচি নিয়মিতভাবে পালন করে আসছে তার নাম বিক্ষোভ সমাবেশ। বিএনপির মূল দলসহ দলটির বিভিন্ন অংগ সংগঠনের ব্যানারে পালন হচ্ছে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়ে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারাদেশে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১০ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছিল বিএনপি। ৩১শে জুলাই জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ভোলা জেলার নেতা আবদুর রহিম পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় এবং এর ২ দিন পর আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম মারা যাওয়ার পর বিএনপি তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ সমাবেশ করে এবং আরও ৭ দিনের বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয়। যদিও ভোলাতে হরতাল দেয়া হয়েছিল। তবে বিভিন্ন অংগ সংগঠনের ব্যানারে রাজধানীতে কেবল বিক্ষোভ কর্মসূচিই চলমান রয়েছে। যেগুলোর বেশিরভাগ আবার অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেসক্লাবে।

নিজ দলের নেতা-কর্মীদের মৃত্যুর পরও বিএনপি কেন বিক্ষোভ কর্মসূচির বাইরে যেতে পারছে না এমন প্রশ্নে বিএনপির বরিশাল বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরীন বলেন,‘আজকে যে কারণে দুইজন মারা গেল এটা তো বিএনপির জন্য না, দেশ ও জনগণের জন্য। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদের একটি পোগ্রামে তারা গুলি করে দিল। কিন্তু এই দাবি তো শুধু বিএনপির দাবি না। বিএনপি জনগণের জন্য কাজ করে এবং জনগণকে সাথে নিয়েই কাজ করবে। দরকার পরলে বিএনপি জনগণের স্বার্থে অবশ্যই কঠিন থেকে কঠিনতর কর্মসূচি দিবে’।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলটি এখনই হরতাল বা অবরোধের মতো বড় কর্মসূচিতে যাবে না। তারা মনে করছে সরকার এবং সরকার পক্ষীয় লোকজন উস্কানি দিয়ে তাদের মাঠে নামাতে চাইছে। সঠিক সময়ের আগেই তাদেরকে মাঠে নামিয়ে দমন-পীড়নের মাধ্যমে নির্বাচনী ফায়দা নিতে চায় সরকার। এজন্যই তারা আন্দোলনে কৃচ্ছতা সাধন করছে এবং সঠিক সময়ের অপেক্ষায় আছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর