উত্তরাঞ্চল ঘুরে উন্নয়ন বার্তা প্রচার, নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

তপন কান্তি রায়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 11:05:22

নীলফামারী, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বহর থেকে: উত্তরাঞ্চল ট্রেনযাত্রা মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সফর শুরু হল। এই সফরের উত্তরাঞ্চল ঘুরে উন্নয়নের বার্তা প্রচার করে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু হয়। ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ঢাকা থেকে নীলফামারী যাওয়ার পথে টাঙ্গাইল, পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোর, বগুড়ার শান্তাহার, জয়পুরহাট, আক্কেলপুর, দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ি, পার্বতীপুর ও নীলফামারীর সৈয়দপুর স্টেশনে পথসভা হয়।

এসব পথসভা রীতিমতো নির্বাচনী জনসভায় রূপ নেয়। প্রতিটি স্থানেই ছিল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড়।

বর্তমান এমপি এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের শোডাউন ছিল চোখে পড়ার মতো।

স্টেশনের প্লাটফর্মের পাশে পথ সভার আয়োজন করা হলেও আশাপাশ এলাকায় ছিল জনতা ঢল। এসময় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বিভিন্ন নেতার নামে শ্লোগান দেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা।

নৌকা নৌকা স্লোগানে সভাস্থল প্রকম্পিত করেছিল স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তারা চায় সরকারের উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রেখে পুনরায় আওয়ামী লীগে ক্ষমতা দেখতে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নির্বাচনী এই ট্রেন সফর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি. এম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর বিপ্লব বড়ুয়া।

তৃণমূলে নৌকা মার্কার প্রতি সমর্থন আর পথসভায় জনতার উচ্ছ্বাস দেখেছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও। এসময় তারা পথসভাগুলোতে সরকারের সামগ্রিক উন্নয়ন তুলে ধরেন।

জয়পুরহাট স্টেশনের পথসভায় ওবায়দুল কাদের উপস্থিত নেতাকর্মী ও জনতার উদ্দেশে বলেন, চারদিকে নৌকার গণজোয়ার দেখছি। পথসভাগুলো রীতিমতো জনসভায় রুপ নিয়েছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের উন্নতি হয়। সমৃদ্ধির পথে দেশ এগিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বিশ্বের বুকে মর্যাদা বাড়ে। জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসা মানেই দেশের অর্থ লুটপাট করে নিজেদের ভোগ বিলাসের ব্যবস্থা করে।

বগুড়ার সান্তাহার স্টেশনের পথসভায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দলের ভেতরে কোন্দল করবেন না। যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। বিশৃঙ্খলা করলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির আন্দোলন প্রতিহত করে নৌকা মার্কায় বিজয় ঘরে তুলবো।

টাঙ্গাইল রেল স্টেশনের পথসভায় দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে  কাদের বলেন, বিশৃঙ্খলা করবেন না। বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন  শুরু হয়ে গেছে। তিন দিনের মধ্যেই শোকজ যাবে।

তিনি বলেন, ঘরের মধ্যে ঘর বানানোর চেষ্টা করবেন না। মশারির মধ্যে মশারি টানানোর চেষ্টা করবেন না। শেখ হাসিনার অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন।

পাবনার ঈশ্বরদীর মুলাডুলি রেল স্টেশনে পথসভায় কাদের বলেন, আন্দোলনের নামে বিগত নির্বাচনের মতো যদি আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরেও বিএনপি-জামায়াত নাশকতার  চেষ্টা করে, তবে তা প্রতিহত করা হবে।

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি জনতার নৌকা মার্কায় ভোট চান।

পথসভায় নাটোর রেলস্টেশনেও জনগণকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে ভুল না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

কাদের বলেন, বিএনপিকে ভোট দেয়ার মতো কোনো কারণ কি তারা দেখাতে পারবেন? দেশে তারা এমন কি উন্নয়ন দেখিয়েছেন- যা দেখে বিএনপিকে মানুষ ভোট দেবে। তাদের (বিএনপির) নেতিবাচক রাজনীতিতে তাদের জনপ্রিয়তা তিলে তিলে কমে গেছে।

আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে আছে, থাকবে। আমি আশা করি, নাটোরের বনলতাসেন নৌকা মার্কায় ভোট দিতে ভুল করবে না।

বিএনপির আন্দোলনের হুমকির কথা তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, ১০ বছরে ১০ মিনিটের জন্যও রাস্তায় নামতে পারেনি। ভেবেছিল খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর সাগরের উত্তাল নামবে, কিন্তু কি দেখলাম নদীর রিপলও (ঢেউ) হলো না। বিএনপির আন্দোলনের মরা গাঙে জোয়ার আর আসে না, আসবে না।

নীলফামারীর সৈয়দপুর বিহারী ও বাঙালিদের কাছেও নৌকায় ভোট চেয়েছেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর