দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে আ. লীগ

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

রেজা-উদ্-দৌলাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 14:59:52


  • সিসিক নির্বাচনে মুহিত,সিরাজ ও আসাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা

  • দলীয় এমপির বিরোধীতা করে গ্রুপ করলে অবাঞ্চিত ঘোষণা
  • সোস্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দিতে পরামর্শ
  • সরকারের উন্নয়নগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা

দলীয় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কঠোর হচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের আগে নৌকার বিরোধিতাকারীদের সহ্য করা হবে না। বৃহস্পতিবার (৬সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্র জানায়।


আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ অনেক নেতাই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে বরগুনা, রাজশাহী এবং ঠাকুরগাঁওয়ে যারা নিজ দলের এমপিদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন তাদেরকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। সেসঙ্গে যেসব এমপিদের অবাঞ্ছিত করা হচ্ছে, তাদেরকেও চিঠি দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব ও বিভেদের কারণ জানতে চাওয়া হবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হারের পেছনে যারা কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বৈঠকে প্রথমে বক্তৃতায় আবদুর রহমান বরগুনার এমপি ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভুকে এলাকায় অবাঞ্ছিত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এছাড়াও সিলেট সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর হারের কারণ অনুসন্ধানের দাবি জানান।

এসময় উপস্থিত কয়েকজন নেতা বলেন, অর্থমন্ত্রী ভোট দিতে গিয়ে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেন, দুজন প্রার্থীই ভাল, আমি নৌকায় ভোট দিব। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজ ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের ভূমিকা রহস্যজনক ছিল। তারা বদর উদ্দিন কামরানকে মেয়র হতে দেন নি। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এতে সায় দেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে নির্বাচন, দলের বিরুদ্ধে গেলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। যারা নৌকার বিরোধীতা করেছে, তাদের দল করার দরকার নাই।


বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের টিম গঠন করে দেবেন। ওই তদন্ত কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে দলের সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দেবেন। একই সঙ্গে যারা বরগুনা, রাজশাহী এবং ঠাকুরগাঁওয়ে দলীয় এমপিকে অবাঞ্ছিত করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বহিষ্কার করা হবে। এমপিরাও কেন এলাকায় সবাইকে নিয়ে কাজ করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন সেটাও জানতে চাওয়া হবে। সতর্ক করা হবে তাদেরকেও।


এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেদের মধ্যে দলাদলি করে এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে অবাঞ্চিতকরণে দলের জন্য শুভফল বয়ে আনবে না। যারা দলের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যাদের অবাঞ্ছিত করা হয়েছে এবং অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে উভয়কেই ঢাকায় তলব করা হবে।


বৈঠকে রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, শুধু নমিনেশন দিলেই হবেনা, প্রার্থীর অবশ্যই নিজস্ব ভোটব্যাংক থাকতে হবে। তার কথার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী একমত পোষণ করে বলেন, বাইরে থেকে সাপোর্ট দিয়ে জয়লাভ করানো সম্ভব নয়। সে কারণে ব্যক্তিরও নিজস্ব ভোট থাকা উচিত

বৈঠক সুত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতা ও এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন,আমি সারাদেশে সার্ভে করেছি। আরও করবো। যথা সময়েই মনোনয়ন দেয়া হবে। একদিন অগেও নয়, পরেও নয়। সোস্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিদের্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে সরকারের উন্নয়নগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার করা কথা বলা হয়। ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর