প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ পৌছে দেওয়ার আহ্বান

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-30 05:35:43

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালির মহাজাগরণের পথিকৃত। তিনি বাঙালির বৈষম্য ও বঞ্চনার ইতিহাস গভীরভাবে অনুভব করতে পেরে আজীবন তাদের মুক্তির জন্য লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। এ সময় তিনি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দেশপ্রেম ও সাহসিকতার নজির পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান।

সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সামনে (তয় তলা) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০১৯ উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, হুইপ ইকবালুর রহিম এবং হুইপ আতিউর রহমান আতিক বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা তোফায়েল আহমেদ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গসহ সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

স্পিকার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ উপহার দিয়ে গেছেন। বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবন-যৌবনের বড় অংশ কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি ছিলেন অকুতোভয়, নির্লোভ ও নির্মোহ, অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নত করেননি। মামলা-জেল-জুলুম ও মৃত্যুভয় তাঁকে লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি, ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও তিনি আপোষ করেননি বলে স্পিকার উল্লেখ করেন। পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার সকল প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুই ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের দিনপঞ্জিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সর্বক্ষণই বঙ্গবন্ধু সোচ্চার ছিলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে মানুষকে ভালবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন জনগণকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে না পারলে অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা উন্নয়ন কিছুই সম্ভব নয়। তাইতো ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে এক অঙ্গুলি হেলনে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন- - তাঁর এই ভাষণ অমর অক্ষয়। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ কবি গুরুর ১৪০০সাল কবিতার মতোই শত শত বছর পরেও প্রতিধ্বনিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনই ছিল বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের একমাত্র দর্শন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বজন হারানোর ব্যথা ভুলে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। এখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সকল সূচকে উন্নয়নের রোলমডেল। এ সময় তিনি সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীদের স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সঠিক ইতিহাস জানার আহবান জানান।

সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এ উপমহাদেশের উজ্জল নক্ষত্র। কিংবদন্তি নেতা ন্যালসেন মেন্ডেলার সঙ্গেই কেবল তার তুলনা করা যায়। বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ সময় জেল খানায় কাটিয়েছেন। তার মত নেতা আর আসবে না।

সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান এর সভাপতিত্বে এবং সংসদ সচিবালয়ের উপসচিব (আইন) মো. তারিক মাহমুদ ও উপ-পরিচালক সামিয়া রুবায়েত হোসেইন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক উপসচিব একেএমজি কিবরিয়া মজুমদার, সহকারী সচিব আসিফ হাসান, সহকারী পরিচালক মাসুম বিল্লাহ, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোস্তফা হোসেন, আতর আলী এবং আবুল খায়ের উজ্জ্বল বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যবৃন্দ ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। সংসদ সচিবালয়ের উপসচিব এস এম মঞ্জুর কবিতা আবৃতি করেন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় শোক সংগীত পরিবেশিত হয়।

পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।

এ সম্পর্কিত আরও খবর