জনগণকে একটুখানি রেহাই দেন: রওশন

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, জাতীয় সংসদ ভবন থেকে | 2023-08-30 05:51:27

গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ফের প্রতিবাদ করে সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, আমরা উন্নয়ন চাই, তবে গ্যাসের দাম বাড়াতে চাই না। জনগণকে একটুখানি রেহাই দেন। অনেকেই আছেন তাদের এত দাম দিয়ে গ্যাস কেনার সামর্থ্য নেই।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ সব কথা বলেন রওশন।

বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, আমি সেদিন শুনেছি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের উন্নয়ন যদি চান, তাহলে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি মেনে নিতে হবে। আমরা উন্নয়ন চাই, তবে গ্যাসের দাম বাড়াতে চাই না। এটাই হলো আসল কথা। এটা আমার কথা না, জনগণের কথা।

যেদিন বাজেট পাস হলো সেদিন গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, সবার কাছ থেকে শুনলো গ্যাসের দাম বাড়ালে কী হবে, না হবে। গণশুনাননির পরে কী হলো, গ্যাসের দাম বেড়ে গেল। কিন্তু আমরা যখন গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিলাম, তখন ভারত গ্যাসের দাম কমিয়ে দিল। যে সিলিন্ডারে ঘরে রান্না করে সেটার দাম ১শ’ টাকা কমিয়ে দেওয়া হল। যদি এটাই হয় তাহলে আমাদের হঠাৎ বাড়ল কেন?

রওশন এরশাদ আরো বলেন, আমাদের সমুদ্রে যে গ্যাস আছে সেটা আমরা তুলি না কেন? এখন যদি চেষ্টা করা না হয়, অনেক সময় লাগবে, দু-তিন বছর চলে যাবে। আমরা কেন এখনই চেষ্টা করছি না? এখন না করলে পরে কখন করব? আমার মনে হয়, গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে যদি আবার বিবেচনা করা যায়, জনগণকে একটুখানি রেহাই দেন।

শিক্ষকদের প্রতি মানবিকতার হাত বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, এমপিওভুক্তি বঞ্চিত শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। তারা বেতন পাচ্ছেন না। এই অসহায় শিক্ষকদের প্রতি মানবিকতার হাত বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানাই।

বিরোধী দলীয় উপনেতা আরো বলেন, স্মার্টফোন ব্যবহার করে আমাদের ছেলেমেয়েরা অন্যরকম জগত তৈরি করছে। এর হাত থেকে যদি তাদের বাঁচানো না যায় তাহলে ভবিষ্যতে তারা কিভাবে নেতৃত্ব দেবে? এটা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের রাস্তা খুঁজতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের সঙ্গে দিনরাত পরিশ্রম করে তথ্য সরবরাহ করেন গণমাধ্যমকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের উন্নয়নে কোনো সরকারই গুরুত্ব দেয় না। যদিও বর্তমান সরকারের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড দ্রুত বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেবেন।

রওশন আরো বলেন, খাদ্যে ভেজাল এখনো বন্ধ হয় নাই। ওষুধ আর খাদ্য মানুষের মৌলিক উপাদান। এ দুটি উপাদান ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না, চলতেও পারে না। আমাদের ছোট ছোট শিশুরা যদি ভেজাল খাদ্য খায় তাহলে দেশ গড়ার কাজ করবে কীভাবে? বাচ্চাদের খাবারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এই বাচ্চারাই ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দেবে।

তিনি বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। স্কুলে-মাদ্রাসায় কোন জায়গায় আমাদের বাচ্চারা সুরক্ষিত না, নিরাপদ না। যদি নিরাপদ না হয় তাহলে লেখাপড়া করবে কীভাবে? নুসরাতের মতো যদি জীবন দিতে হয়, এটা দুঃখজনক। আমাদের দেশে আইন আছে। আমি সরাসরি বলতে চাই, এদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। ইদানিং দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি। কোন জায়গাতে বাচ্চারা নিরাপদ না। এই ধরনের অবস্থা আগে ছিল না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর