বরাদ্দের তিন গুণ বেশি খরচ করেও ধন্যবাদ পাচ্ছে ইসি  

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা, জাতীয় সংসদ ভবন থেকে | 2023-08-21 16:14:24

চলতি অর্থবছরে বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে বেশি খরচ করেছে ৩৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। আর ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারেনি।

বেশি খরচ করা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অতিরিক্ত খরচের দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে। তবে বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি অর্থ খরচ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বেশি টাকা খরচ করলেও সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী।

রোববার (১৬ জুন) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এর আগে বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘চলতি অর্থ বছরের বাজেট ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। ৬২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বেশি খরচ করেছে আর ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খরচ করতে পারেনি। সম্পূরক বাজেটের আকার হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।’

বেশি খরচ করা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হচ্ছে-নির্বাচন কমিশন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ এবং জননিরাপত্তা বিভাগ।

এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। কিন্তু তারা খরচ করেছে ৪ হাজার ৩৪৩ কোটি ৪৩ দশমিক ১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২ হাজার ৪৪৭ দশমিক ৮৮ কোটি টাকা বেশি খরচ করেছে।

নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘দেশের নির্বাচনী কর্মযজ্ঞ হিসাব করলে দেখা যায়, তাদের খরচ অমূলক নয়। তারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচন করেছে। এসব নির্বাচনকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কৌশলী ও সহনশীল নেতৃত্বের কারণে বিরোধী দল শুধু সংসদেই আসেনি, সংসদে এসে কথাও বলছে।’

বিএনপির এমপি রুমিন ফারহানার বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আজকে অনেকে বলছেন সংসদ অবৈধ। অবৈধ হলে এলেন কেন? কেউ চরণ ধরে সাদাসাধি করেছে এমন তো নয়। এসেছেন, এখন গণতন্ত্রের চর্চা করলে ভালো কথা। কিন্তু অবৈধও বলবেন, আবার শপথও নেবেন, এমপি হিসেবে সব সুযোগ সুবিধা নেবেন। আপনাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়, জলে নামব কিন্তু জল তো ছোঁব না। আমার মাথার বেণি শুকিয়ে রবে, চুলতো ভেজাব না। মাথার বেণি ঠিক রেখে চুল না ভেজানোর গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ করছেন। সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ। তাদের এ খরচ প্রাপ্যই ছিল। তাই সবাই মিলে অনুমোদন দেব।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ৬৬ দশমিক ২১ কোটি টাকা। তারা খরচ করেছে ৩০ হাজার ৬৭০ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ হাজার ৬০৪ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা বেশি খরচ করেছে। সমস্ত উসকানি উপেক্ষা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে কাজ করছে, প্রয়োজনে আরো দেব।’

‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ১৫৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা। তারা খরচ করেছে ৩০ হাজার ৬৯৬ দশমিক ৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ হাজার ৫৪২ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে। রাস্তাঘাট তো আর ফু দিয়ে হবে না। কাজেই এতে টাকা দরকার ছিল, আমরা সবাই এ টাকার অনুমোদন দেব,’ যোগ করেন মতিয়া চৌধুরী।

প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর এক অর্থনীতিবিদের করা বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, উনি এসব দেখেন না। উনি কাল্পনিক চৌকাঠে আসমানে বিচরণ করলে করুক। দেশের মানুষের আয় বেড়েছে, দেশ ভালো চলছে, কে কি বলল তাতে কিছু আসে যায় না।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর