‘ফার্মার্স ব্যাংকে’ রাখা জলবায়ু ফান্ড ফেরত চায় সংসদীয় কমিটি

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 19:06:40

জলবায়ু ট্রাস্টফান্ডের টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখা হয়। নিয়াম অনুযায়ী সেই টাকা থেকে অর্জিত মুনাফা দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বিভিন্ন কাজ করে থাকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ।

এবার ফার্মার্স ব্যাংকে (বর্তমানে পদ্মা) রাখা জলবায়ু ট্রাস্টফান্ডের আমানত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সংসদীয় কমিটিতে। কীভাবে এক ব্যাংকে এতো টাকা রাখা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাছাড়া রক্ষিত টাকার যে পরিমাণ মুনাফা দেওয়ার কথা ছিল ব্যাংকটি সেটিও ঠিকমতো দিচ্ছে না বলে ধরা পড়েছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির কাছে।

তাই দ্রুত ওই ব্যাংকে রাখা টাকা ফেরত আনার সুপারিশ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব তথ্য উঠে আসে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বহুল সমালোচিত ফার্মার্স ব্যাংকে সর্বোচ্চ আমানত রাখা হয়েছে। ব্যাংকটিতে প্রায় ৫১৫ কোটি টাকা জলবায়ু ট্রাস্টফান্ডের আমানত রাখা হয়েছে। এই টাকা থেকে প্রতি বছর প্রায় ৪৭ লাখ টাকার মুনাফা আসার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত সেই টাকা ঠিকঠাকভাবে পরিশোধ করেনি ব্যাংকটি।
বৈঠকে কমিটির সভাপতি নিজেই প্রশ্ন তোলেন, এক ব্যাংকে কীভাবে এতো টাকা রাখা হলো। যেহেতু তারা সময়মতো রাজস্ব ফেরত দিচ্ছে না তাই তাদের টাকা দ্রুত তুলে আনার জন্য মন্ত্রণালয়কে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

বৈঠকে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের কার্যক্রম, সাংগঠনিক কাঠামো,কর্মবন্টন এবং এর অধীনস্থ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে বিস্তারিত আালোচনা করা হয়। কমিটি আগামী অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ৭০০ (সাতশত) কোটি টাকা দেওয়ার লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।

এছাড়া বৈঠকে ফারর্মার্স ব্যাংকে (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) রাখা জলবায়ু ট্রাস্টফান্ডের স্থায়ী আমানতের টাকা দ্রুত ফেরত পেতে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের ব্যবহার বন্ধের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ইনফোর্সমেন্ট বিভাগের কার্যক্রম আরো জোরদার এবং পলিথিন বর্জ্য আমদানি করে রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন করে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এছাড়া বৈঠকে আসন্ন বাজেটে ’গ্রিন বাজেট’ দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা এবং ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) বিল, ২০১৯’ এর বাস্তবায়ন, কার্যক্রম এবং অগ্রগতি সম্পর্কে পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, মো. রেজাউল করিম বাবলু এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন বৈঠকে অংশ নেন।

এছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর