সেই নৃশংসতা ভুলে থাকতে চায় রোহিঙ্গা তরুণীরাও

চট্টগ্রাম, জাতীয়

মুহিববুল্লাহ মুহিব, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-28 22:06:20

কক্সবাজার: মিয়ানমার সেনা ও মগদের নির্যাতনে মাকে হারিয়েছে রোহিঙ্গা যুবতী আনোয়ারা বেগম। সেই ভয়াবহতা এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আনোয়ারাকে। তবুও সাধ্যের মধ্যে নিজেকে পরিপটি করে সাজিয়ে ভুলে থাকতে চায় মিয়ানমার সেনাদের সেই নির্যাতনের নৃশংসতা। 

মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) রাতে এই দৃশ্যটি দেখা গেছে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে। রোহিঙ্গা আগমনের এক বছর উপলক্ষে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় ও ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ যৌথভাবে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ছবি নিয়ে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। সেখানে একটি ছবিতে এই দৃশ্য দেখা গেছে।

ছবির নিচের বর্ণনা অনুযায়ী, ২০১৭ সালের কোরবানির ঈদের কয়েকদিন পর আনোয়ারা কক্সবাজারের বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে পৌঁছে। বর্তমানে তার ঠাঁই হয়েছে বালুখালী- ২ আশ্রয় শিবিরে। সেখানে সে নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে থাকে।

প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে রোহিঙ্গা ঢলের সময়ের বিভিন্ন করুণ দৃশ্যের ছবি। বাবার হাতে গুলিবিদ্ধ সন্তান, সন্তানের কাঁদে বৃদ্ধ মা, সীমান্তে খাবারের জন্য হাহাকারসহ নানা ধরণের করুণ দৃশ্যের ছবি দর্শণার্থীদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই অতীতে।

তবে এখন আর সেই দৃশ্য নেই। উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় শিবিরে নিরাপদ আশ্রয়ের ঠিকানা পেয়েছে রোহিঙ্গারা। রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন তারা ভালই আছে। এমন দৃশ্যও প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীতে প্রায় ৭০টি ছবি দেখা যায়।

মঙ্গলবার রাতে প্রদর্শনী দেখতে যান দুর্যোগ ব্যবস্থা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাতিসংঘের বাংলাদেশস্থ আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সাপ্পো, উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, দুর্যোগ ব্যবস্থা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ফয়জুর রহমান, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম।

এছাড়াও প্রদর্শনী দেখতে যান জাতিসংঘের বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও বিদেশি এনজিও সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকতারা। এসময় সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় অংশ নেন অতিথিরা।

মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রদর্শিত এক একটি ছবি যেন তাদের দুঃখ দুর্দশার মহাকাব্য। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ হবে। বাংলাদেশ যদি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিত তাহলে এ অঞ্চলে একটি মহা মানবিক বিপর্যয় সংগঠিত হতো। কিন্তু এখন রোহিঙ্গা নাগরিকেরা বাংলাদেশের আর্থিক ও সামাজিক সমস্যা দৃষ্টি করছে। তাই তাদেরকে (রোহিঙ্গা) দ্রুত ফিরিয়ে নিতে হবে মিয়ানমারকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর