যে কারণে বন্ধ করে দেওয়া হলো চট্টগ্রাম কলকাতা অ্যাপোলো সেন্টার

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 11:09:39

চট্টগ্রাম: বন্দর নগরীর জামালখানের বেল ভিউতে অবস্থিত কলকাতা অ্যাপোলো হসপিটালের ইনফরমেশন সেন্টারটি বন্ধ করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৈধ অনুমোদন ও কাগজপত্র না থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটের যৌথ অভিযানে এ অফিসটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

বৈধ কোনো অনুমোদন ছাড়া এভাবে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের ইনফরমেশন সেন্টার কেন, কিভাবে খোলা হয়েছে সেটি নিয়েও স্থানীয় চিকিৎসকদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আর বিদেশী প্রতিষ্ঠানও কিভাবে এ ধরনের কাগজপত্রবিহীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসাযুক্ত হলো সে ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোরাদ আলী জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ অফিসটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফ্রি রোগী দেখবে বলে বিদেশ থেকে ডাক্তার এনে অতিরিক্ত ফি আদায় করার অভিযোগ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। অফিসের ঢোকার মুখে ইউনিক লেখা কিন্তু ভেতরে ঢুকে দেখা গেছে অ্যাপোলো ইনফরমেশন সেন্টারের সাইনবোর্ড। তারা নাকি আমদানি-রফতানির ব্যবসাও করে। আমরা কাগজপত্র দেখতে চাইলে কিছুই দেখাতে পারেনি। তাই বন্ধ করে দিয়েছি।

ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী সৈয়দ রিফাত ফারুক সম্রাটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ অফিসে বসে আমরা গার্মেন্টস এক্সেসরিজের ব্যবসা করি। সঙ্গে  রয়েছে কলকাতার অ্যাপোলো ইনফরমেশন সেন্টার।’

অভিযানের সময় কৌশলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন সৈয়দ রিফাত ফারুক সম্রাট। কলকাতার নামকরা অ্যাপোলো হসপিটালের ইনফরমেশন সেন্টারের নামে এ আগে অনেক ডাক্তার এসে চিকিৎসা দিয়ে গেছে। সরকারের কাছে দেয়া আবেদনের পত্রে ফ্রি চিকিৎসার কথা বলেও রোগীদের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা আদায় করা হতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজাম উদ্দীন আহমদ নামে একজন চিকিৎসাপ্রার্থী জানান, তিন বছর আগে ভারতীয় ডাক্তার দেখানোর সময় ফি নেয়া হয় এক হাজার টাকা। ডাক্তার দেখার পর বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেগুলো নিয়ে গেলে কলকাতায় পাঠানোর জন্য আরো এক হাজার দিতে হয়েছে।

ঢাকায় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইউনিক মার্কেটিং সেন্টারের নামে অনুমোদন নিয়ে বিদেশি চিকিৎসক এনে গত কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে রোগীদের কাছ থেকে বেশি ফি আদায় করার ব্যবসা ফাঁদ পেতেছে এ প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ডাগায়নস্টি সেন্টারের জন্য অনেক ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, ল্যাব ও ডাক্তার থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু এ অফিসটিতে ছিল না কিছুই।

এছাড়াও অভিযানে সেনসিভ প্রাইভেট লিমিটেডে অভিযান চালায়। একই সঙ্গে নগরীর পাঁচলাইশ শেভরণ, ফরটিস হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাইফুল্লাহিল আজম ও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর