কর্ণফুলী টানেলের ২৪ শতাংশ কাজ শেষ, অক্টোবরে বোরিং শুরু

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 05:08:37

চট্টগ্রাম: এগিয়ে যাচ্ছে উপমহাদেশের একমাত্র টানেল নির্মাণের কাজ। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ডিসেম্বরে (২০১৭) শুরু হওয়া টানেল নির্মাণের কাজ এ পর্যন্ত ২৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী অক্টোবরের শেষ দিকে শুরু হবে নদীর তলদেশ দিয়ে বোরিং নির্মাণের কাজ। আর প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী তা ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। একই সময়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ফৌজদারহট থেকে পতেঙ্গার নেভাল পর্যন্ত আউটার রিং রোডের নির্মাণ কাজও। আর উভয় প্রকল্প একসঙ্গে শেষ হলে সহজেই আউটার রিং রোড ও টানেল দিয়ে আনোয়ারা হয়ে কক্সবাজারের দিকে যাতায়াত করা যাবে।

শুক্রবার (২৪ আগস্ট) টানেলের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকল্পের শুরুতে অর্থায়ন নিয়ে কিছুটা সমস্যা থাকলেও এখন আর সেই সমস্যা নেই। এখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে টানেলের কাজ। গত ডিসেম্বরে কাজ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ২৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে নদীর তলদেশে বোরিংয়ের জন্য মেশিনটা এসে গেছে এবং কাজ শুরুর প্রস্তুতি চলছে। আগামী অক্টোবরের শেষ দিকে হয়তো বোরিং কার্যক্রম শুরু হবে।

সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে পতেঙ্গার নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে সিইউএফএল ও কাফকোর মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে নির্মাণ হতে যাওয়া টানেলের জন্য ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম প্রায় শেষ। ৩৮৩ একরের মধ্যে ২৩২ একর ভূমি ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডকে (সিসিসিএল) হস্তান্তর করা হয়েছে।

প্রকল্পের সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা অর্থায়ন করবে চায়না সরকার। ২০১৬ সালে চায়নার প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বাংলাদেশে সফরের সময় এই ঋণচুক্তি হয়েছিল।

জানা যায়, ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই টিউবের চার লেনের এই টানেলের উভয় পাশে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার এপ্রোচ রোড হবে। এরমধ্যে আনোয়ারা অংশে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ একটি ওভারব্রিজ হবে, যা দিয়ে টানেলের এপ্রোচ রোডের সঙ্গে আনোয়ারা শহরের যোগাযোগ রক্ষা পাবে।

উল্লেখ্য, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণের ঘোষণা ২০০৮ সালে লালদীঘি ময়দানে দেওয়ার পর ২০১০ সালে প্রকল্প আকারে উত্থাপন হওয়ার পর কর্ণফুলীর টানেল নির্মাণের স্থান ও সম্ভাব্যতা যাচাই রিপোর্ট নিয়ে পার হয়ে যায় বছর।

২০১২ সালের ডিসেম্বরে ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে সম্ভাব্যতা যাচাই রিপোর্ট চূড়ান্ত হওয়ার পর স্থান নির্বাচন নিয়ে কেটে যায় আরও দুই বছর।

২০১৪ সালের শেষ দিকে এসে কর্ণফুলীর মোহনায় টানেল নির্মাণে একমত হয় নগরবিদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরামর্শক ও সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা।

টানেল নির্মাণে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সিসিসিসির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। আর জিটুজি ভিত্তিতে টানেলটি নির্মাণ প্রস্তাব গত বছরের জানুয়ারিতে অনুমোদন করে চীন সরকার। এটি নির্মাণে ঋণ দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর