সিলেটে অবৈধ পশুর হাট বসানোর তোড়জোড় চলছে

সিলেট, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 10:33:55

 

সিলেট: পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ঘনিয়ে এলেও সিলেট নগরীতে কোনো অস্থায়ী পশুরহাটের ইজারা দেয়া হয়নি। বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে এবার হাট ইজারার ঝামেলায় যায়নি সিলেট সিটি করপোরেশন।

একটা সময় সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পশুরহাট হিসেবে ইজারা দিত। এর মধ্যে নগরীর রিকাবীবাজার, টিলাগড়, মাছিমপুর ও কদমতলী অন্যতম ছিল। বছর তিন আগেও এসব অস্থায়ী হাট ইজারা দিয়ে রাজস্ব পেত নগর কর্তৃপক্ষ। তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাটের দিকে নজর পড়লে পিছু হটে নগর ভবন। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায় সরকার।

নগরীর প্রধান এবং বৃহত্তম বৈধ পশুর হাট বসে কাজিরবাজারে। সেই বাজারে ধীরে ধীরে গরু আসতে শুরু করেছে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্যাপারীরা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারীরা এখানে যোগাযোগ করছে।

বাজার কর্তৃপক্ষের দাবি, গত বছর পথে পথে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক গাড়ি থেকে গরু নামিয়ে দেয়াসহ নানা ভয়ভীতির কারণে এবার অনেক ব্যাপারী অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে সিলেটে আসতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ খেলার মাঠ, মালনীছড়া, সুবিদবাজার, মদীনা মার্কেট, আখালিয়া, তেমুখী, বাগবাড়ী, ওসমানী মেডিকেল, রিকাবীবাজার, শেখঘাট, তালতলা, মেন্দিবাগ, টিলাগড়, মেজরটিলা, বালুচর, উপশহর, হুমায়ুন রশিদ চত্বর, কদমতলী, চন্ডিপুল, বাবনা পয়েন্ট এলাকায় অবৈধ হাট বসানোর তোড়জোড় চলছে। এরই মধ্যে জায়গায় জায়গায় খুটি বসিয়ে দখলে নেয়ার জন্য চিহ্নিত করে রেখেছে। সুযোগ পেলেই তারা হাট বসাবে। এমন অর্ধশতাধিক অবৈধ পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি চলছে। এর নেপথ্যে রয়েছে সরকারি দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

কাজিরবাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান জানান, পুরো নগরজুড়ে বাজার বসলে গরুর দামের ভারসাম্য থাকে না। এতে সাধারণ ক্রেতারা বিপাকে পড়ে। ব্যবসায়ীরাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে এলে তারা ইচ্ছে মতো বাজারে নিয়ে আসতে পারেন না। জোরপূর্বক গরু ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। আর তা না হলে ট্রাক প্রতি চাঁদা দিয়ে আসতে হয় তাদের।

নগরীর একমাত্র বৈধ এবং প্রধান গরুর হাটে গরু দেখতে আসা সুবিদবাজারের লন্ডন প্রবাসী আলতা মিয়া জানান, পুরো নগর বাজার হয়ে যায়। কোথায় কোন গরুর কতো দাম কিছু বোঝা যায় না। এর জন্য একটু আগে এসে বাজার দেখছেন। দামে মিললে কিনে নেবেন। প্রতিবছর হাট বসানোর প্রতিযোগিতা দেখলে মনে হয় এই নগরীর কোনো ‘মা-বাবা’ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আরিজুর রহমান জানান, গত বছরও কোনো হাট ইজারা দেয়া হয়নি। এর জন্য এবারো দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কারণ ইজারা দিলে ইজারাদারকে যথাযথভাবে বাজার বুঝিয়ে দেয়ার একটি বিষয় থাকে। অনেক সময় সেটা পারা যায় না।

সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান জানান, নগরীর প্রধান সড়কে কোনো অবৈধ হাট বসতে দেয়া হবে না। সাধারণ মানুষের চলাচলে যাতে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয় পুলিশকে সে ব্যাপারে যথাযত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব জানান, পশুর হাট নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কোনো ভাবেই রাস্তায় হাট করা যাবে না। তিনি সাধারণ ক্রেতাদের বৈধ বাজার থেকে গরু কেনার আহ্বান জানান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর