মানুষ যুদ্ধ করেছিল ভোটের জন্য, কিন্তু ভোট আজকে দুষ্প্রাপ্য: সরোয়ার

বরিশাল, জাতীয়

ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 10:58:28

বরিশাল: বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. মজিবর রহমান সরোয়ার বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন যদি আজ্ঞাবহ হয় প্রশাসনের কাছে এবং সরকারের কাছে। তাহলে বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। এদেশের সমস্ত নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। এই সিটি নির্বাচনই বড় নির্বাচন নয়, সামনে আরো একটি নির্বাচন রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিল এই ভোটের জন্য কিন্তু ভোট আজকে দুষ্প্রাপ্য ব্যাপার।

শনিবার (২৮ জুলাই ) দুপুরে নগরীর সদর রোডস্থ বিএনপির জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী সরোয়ার একথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এটাই কি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস!  আপনার আত্মীয় স্বজন এখানে ভোটে দাঁড়িয়ে কালিমা লাগিয়ে যে নির্বাচন করছে। তা বরিশাল বাসী কখনোই মেনে নিবে না।

নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকানোর হুমকি দিয়ে সরোয়ার বলেন, এই জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী কালকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই নির্বাচন কিভাবে হবে সেজন্য সমস্ত দলকে আহবান করে সঠিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যে আশ্বস্ত হয়েছিলাম যে, গাজীপুর ও খুলনার মতো বরিশাল সিটি নির্বাচন হবে না। বরিশালে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। তবে গাজিপুর খুলনার পরে একটা বিষয় নিশ্চিত হয়েছি যে দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এছাড়াও বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। এটি প্রমাণিত হয়েছে তারপরও আমরা অংশগ্রহণ করেছি।

সরোয়ার বলেন, বাংলাদেশের ২০১৪ সালের ৫ ই জানুয়ারী একটি ভোটার বিহীন নির্বাচন হয়েছে। এই সিটি নির্বাচনটি সামনের সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি পূর্বাভাস ছিলো। এই নির্বাচনটি কিভাবে হবে? আমরা দেখলাম গাজিপুর ও খুলনায় ভোট জালিয়াতি করে নির্বাচন করেছে। বিদেশী সংস্থা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কেহই এটা মানতে পারিনি।

তিনি আরো বলেন, ভেবেছিলাম আওয়ামী লীগের সুবুদ্ধির উদয় হবে আগামীর সংসদ নির্বাচনের কথা ভেবে এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন দিবে। আর এখানে সব দিক থেকেই আমাদের একটা অবস্থান রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিপক্ষ আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছে আর আমরা নির্বাচন কমিশনকে শুধুই বলতেই থাকব, আপনাদের গোয়েন্দা টিম কি কিছুই দেখছে না ?  যেদিন আমি প্রতীক পেলাম সেদিনও আমাকে বাধা দেয়া হয়েছে। আপনি মিছিল করতে পারবেন না। অথচ আমার পাশ থেকেই তারা একটি মিছিল করেছেন, কিন্তু পুলিশ তাদের বাধা দিলেন না। এভাবেই সর্বত্র তারা মিছিল করছে, আমাদের মিটিং করতে গেলে ডির্স্টাব করা।

 সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, এটা কেমন নির্বাচন যেখানে জনগনকে বাধা দেয়া হচ্ছে। আমি বার বার এই বরিশালে নির্বাচন করেছি, আপনারা কি কখনো বলতে পারবেন আমাদের নির্বাচনের সময় কোন দুঃশাসন চলেছে। আমরা ঈদের খুশির মতো নির্বাচন করেছি। আজকের নির্বাচনের সময় কেহ ঘুমাতে পারেনা, সবার চোখে জ¦ল, গত তিনদিন যাবত অভিযান চলছে। যারা নির্বাচন পরিচালনা করবে, পোলিং এজেন্ট থাকবে এবং নেতাকর্মীকেই যদি গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে ভোট করবে কে। এই ভোট তো বাংলার মানুষ চাইনি।

সরোয়ার বলেন, আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ মন্ত্রীর মর্যাদায় আছেন। প্রতিনিয়ত আসছেন। বরিশাল অবস্থান করছেন। কেউ কি লিখেছেন। এমপিরা প্রতিনিয়ত আসছেন। নির্বাচন কমিশন কিছুই করছে না।

তিনি আরো বলেন, যেভাবে বাহিরের লোক নিয়ে এসে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে এটা সিটি নির্বাচনের জন্য একটি বড় অন্তরায়। সিটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। আমাদের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ যারা হোটেলে ছিলেন তাদের হাতে চিঠি ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তাদের লোক এখনো এখানে আছে । তারা বরিশাল ক্লাব এবং সার্কিট হাউজে অবস্থান করে নির্বাচন পরিচালনা করছেন। ইসি কিছুই করছে না।

নির্বাচনের সময় অফিস পুড়িয়ে যারা মামলা দিবেন বা নির্বাচনে তাদের অনুপস্থিত রাখার জন্য চেষ্টা করবেন। সেজন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি তাহলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাবে। নির্বাচন আর হবে না। কারণ যারা নির্বাচনের সময় আইন নিজের হাতে তুলে নেন এবং নির্বাচনের সময় অফিস পুড়িয়ে মামলা দিতে চান। নিশ্চিত বুঝতে হবে এটা সরকারি দল, যাতে করে আমরা নির্বাচনে উপস্থিত হতে না পারি। আমরা এখনো চাই বরিশালে একটা সুষ্ঠ নির্বাচন হোক।

সংবাদ সম্মেলন থেকে লেভেল প্লেয়েই ফিল্ড তৈরিসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রিয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু, জেলা দক্ষিন সভাপতি এবায়দুল হক চান, সাবেক সাংসদ আবুল হোসেন, জেল উত্তর সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর