দুই উৎসব একইদিনে, শঙ্কায় ফুল ব্যবসায়ীরা

রাজশাহী, জাতীয়

হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-08-24 01:18:56

রাত পোহালেই পহেলা ফাল্গুন। বাঙালির প্রাণের বসন্ত উৎসব। এদিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও। বাঙলা পঞ্জিকা সংশোধনে এবার দুই উৎসবই পড়েছে একদিনে!

পহেলা বসন্ত ও ভালোবাসা উৎসব ঘিরে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। দুই উৎসব একদিনে পড়ায় লাভ নিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।

নগরীর জিরো পয়েন্টের সবচেয়ে বড় ফুলের দোকান রোজ পুষ্পবিতান। দোকানের মালিক আনোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা বছরে তো কয়েকটি দিন ব্যবসা করি। পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস, পহেলা বৈশাখ আর ২১ ফেব্রুয়ারি। ফেব্রুয়ারিতে ওতো ব্যবসা হয় না। ওটা বাদ দিলে থাকে মোটে তিনটে দিন। এবার আবারও দুই উৎসব একদিনে। এখনও বেচা-বিক্রি নেই। শুক্রবার হওয়ায় ভার্সিটি-কলেজের মামারা অনেকে বাড়ি চলে গেছে। এবার ব্যবসা লাঠে উঠবে!’

বেচা-বিক্রি এখনও জমে ওঠেনি

তার পাশের দোকানি জয়কৃষ্ণ রায়। তিনি বলেন, ‘অন্যবার পহেলা ফাল্গুনের আগের দিন থেকে ব্যাপক ভিড় লেগে যায়। এবার এখনও তেমন ভাব দেখছি না। সন্ধ্যার পর থেকে রাত অব্দি কী হয় দেখি। তবে দু’টো দিন একদিনে পড়ায় এবার আয় তো কমবেই।’

তবে এখনই হাল ছাড়ছেন না ফুল ব্যবসায়ীরা। রাত ও আগামীকাল দিনভরও ফুল বিকিকিনি চলবে প্রত্যাশা তাদের। তেমনি আশাবাদী একজন ফুল ব্যবসায়ী আরিফুল হক।

তিনি বলেন, ‘বেচাকেনা কম এটা সত্যি। তবে আমি হাল ছাড়ছি না। সারারাত জেগে দোকান খোলা রাখবো। ভোরেও খোলা থাকবে। ফুল যা এনেছি, বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় পোষাবে না।

 বাঙলা পঞ্জিকা সংশোধনে এবার দুই উৎসবই পড়েছে একদিনে

প্রিয়জনের জন্য ফুল কেনার হিড়িক না পড়লেও দোকানগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে বিকিকিনি কিছুটা বেশি ছিলো। তবে ঘুরে দেখার সংখ্যাটা ছিলো চোখে পড়ার মতো।

কথা হলো নিউ গর্ভমেন্ট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রাজিয়া সুলতানার সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এখন দেখতে এসেছি। কী ধরনের ফুল বা বেণী মানায়। সকালে বের হয়ে সেটা কিনে নেব। না হলে তো নষ্ট হয়ে যাবে!’

নিজের জন্যই সবাই কিনতে এসেছেন তাও নয়। কেউ এসেছেন প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে আবার কেউ-বা প্রিয়জনের অগোচরে। তাদেরই এজজন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থী সানোয়ার রাকিব।

অল্প-স্বল্প বিক্রি হলেও ফুলের বাজার চড়া!

তিনি বলেন, ‘এই প্রথম বসন্তে কারও জন্য ফুল কিনতে আসছি। কিছুটা লজ্জা লাগলেও ভিন্ন অনুভূতি। যাকে ফুলের বেণীটা দিব, সে জানেই না! সাইপ্রাইজ দেয়ার উদ্দেশ্যটা পূরণ হলেই খুশি!’

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর জিরো পয়েন্টে ফুলের দোকানগুলো ঘুরে তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। এখনও জমে ওঠেনি বেচা-কেনাও। অল্প-স্বল্প বিক্রি হলেও ফুলের বাজার চড়া!

প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ফুল কিনছেন কেউ কেউ

যশোর থেকে আনা প্রতিটি দেশি জাতের লাল গোলাপ ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। পলিথিনে মোড়ানো গোলাপগুলো কেউ ইন্ডিয়ান, কেউ চাইনিজ আবার কেউ-বা থাইল্যান্ডের গোলাপ বলে বিক্রি করছে। দোকানভেদে সেই গোলাপের দামেও আকাশ-পাতাল পার্থক্য! প্রিয়জনকে উপহার দিতে বাধ্য হয়ে ৮০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

রোজ পুষ্পবিতানের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গতকালও ২০ থেকে ২৫ টাকায় গোলাপ ফুল বিক্রি করেছি। তবে আজ দুপুর থেকে দাম বেড়েছে। আগামীকাল ভালোবাসা দিবসে দাম আরও বাড়বে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর